পাঁচ
সময় মত আমি ঠিকই টের পেলাম । আরিয়ানার চুমু খাওয়ার সংবাদ আস্তে ধীরে পুরো অফিস জেনে গেল । সবাই বুঝে গেল আমার সাথে কোম্পানীর মালিকের নাতি জোর প্রেম চলছে । এবং এই সংবাদ আরিয়ানার বাবা এবং দাদার কাছেও পৌছে গেল । যথারীতি আমার ডাক পড়লো । তবে এবার ওদের বাসায় । আক শুক্রবার দুপুর বেলা আমি হাজির হলাম আরিয়ানাদের বনানীর বাসায় । বিশাল তিন তলা বাড়ি । গেটের কাছ থেকেই আরিয়ানা আমাকে নিয়ে গেগল ভেতরে । ওকে দেখে মোটেই চিন্তিত মনে হচ্ছে না । বরং মনে হচ্ছে আমাকে ওদের বাসায় নিয়ে যেতে পেরে সে খুব খুশি । আমাকে প্রথমে ওর মায়ের কাছে নিয়ে গেল । আরিয়ানার মাকে দেখলাম একেবারে পুরোদস্তুর হাউজওয়াইফ । আরিয়ানা আমাকে সরাসরি রান্না ঘরেই নিয়ে গেল । আমার সাথে খুব স্বাভাবিক ভাবে কথা বলল । আমার সাথে এমন আচরন যেন আমাকে তারা কতদিন ধরেই না চেনে । আমি যেন তাদের অনেক কাছের মানুষ ।
আরিয়ানার দাদীর আচরনে আমি সব চেয়ে বেশি অবাক হয়ে গেলাম । তিনি আমাকে দেখে খানিকটা তাড়াহুড়া করে এগিয়ে এলেন । তারপর আমাকে খানিকটা অস্বস্তির ভেতরে ফেলে দিয়েই আমাকে জড়িয়ে ধরলেন । আমি সত্যিই কিছু বুঝতে পারছিলাম না । আসলে কি হচ্ছে আর কেন হচ্ছে ! একটা সময়ে আমি লক্ষ্য করলাম তিনি কাঁদছেন । আমি সত্যিই অবাক না হয়ে পারলাম না । আসলে কি হচ্ছে এখানে ?
একটা সময়ে আরিয়ানা আমাদের কাছে এল । আমার থেকে ওর দাদীকে আলাদা করে বিছানাতে শুইয়ে দিল । আমার দিকে তাকিয়ে আরিয়ানার দাদী বলল, তুই কিন্তু আর যাবি না । আমাকে ছেড়ে আর যাবি না, বুঝছি?
আরিয়ানা ওর দাদীকে শান্ত করতে করতে বলল, হ্যা দীদা অপু আর যাবে না । এখন থেকে এখানেই থাকবে ।
একটু পরে আমাকে নিয়ে আরিয়ানা ঘর থেকে বের হল । তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বলল, দিদা মাঝে মধ্য এমন করে । তুমি কিছু মনে কর না কেমন !
আমার মনে করার কিছু ছিল না । সত্যি বলতে কি প্রথমে একটু অস্বস্তি লাগছিলো ঠিকই তবে একটা সময়ে কেন জানি আরিয়াানর দিদাকে খুব আপন মনে হল । থাকে না এমন একটা ব্যাপার যে আপন মানুষ গুলো কাছে আসলে ভেতর থেকেই একটা অনুভূতি আসে ঠিক সেই রকম । আমার ভাল লাগছিলো !
আরিয়ানা আমাকে সব কিছু ঘুরিয়ে দেখাচ্ছিলো । এক সময়ে আরিয়ানার দাদার সাথে দেখা হল । তখন কেন জানি কোন কারণ ছাড়াই মনে হল এই মানুষটাকে আমি অনেক আগে থেকেই চিনি । কেমন যেন পরিচিত ঠেকলো আমার কাছে তর চেহারাটা। এমনটা কেন মনে হল সেটা আমার নিজের জানা নেই । আমি কোন ব্যাখ্যা খুজে পেলাম না । অফিসে আমি জয়েন করার পরে আফসার আহমেদ চৌধুরী একদিনও অফিস যান নি। তিনি বাসা থাকতেন । এখান থেকেই কাজ কর্ম করতেন । তবে এখন অফিস সামলায় আরিয়ানা আর তার বাবা । আফসার আহমেদের সাথে আমার এই প্রথম দেখা ।
আমার দিকে কিছু সময় তিনি এক ভাবে তাকিয়ে রইলেন । তারপর আমারকে তীব্র ভাবে অবাক করে দিয়ে বললেন, তুমি কি ভেবেছো তোমাকে আমি চিনতে পারি নি!
আমি কি বলবো ঠিক বুঝতেই পারলাম না । খানিকটা অবাক হয়েই তাকিয়ে রইলাম । আমাকে সে চিনতে পেরেছে বলতে কি বুঝিয়েছে সেটা ঠিক বুঝতে পারলাম না । যদি তার কোম্পানীর একজন হিসাবে চিনতে পেরে থাকে তাহলে আলাদা কথা । কিন্তু আমার কেন জানি মনে হল সে অন্য কিছু বুঝাচ্ছে !
আফসার আহমেদ আবার বলল, আযু ভেবেছে কি ! ও তলে তলে এতো কিছু করবে আর আমি বুঝবো না ?
আযু সম্ভবত আরিয়ানার বাবাকে বুঝিয়েছে । আমি আনিয়ানার দিকে তাকিয়ে দেখলাম সে মুখ কালো করে তাকিয়ে রয়েছে তার দাদুর দিকে । ওর দাদু ওর দিকে তাকিয়ে বলল, তুই জানিস এই ছেলে কে !
আরিয়ানা আমার দিকে তাকালো । তারপর তার দাদুর দিকে তাকিয়ে বলল
-জানি দাদু !
-তার পরেও একে বাসায় নিয়ে এসেছিস ?
আরিয়ানা কিছু না বলে আমার দিকে তাকালো । আমি আসলেই এবার চমকে গেছি । কি হচ্ছে এখানে !
আরিয়ানা বলল, দাদু ভাই আমি অপুকে পছন্দ করি ।
-তুই জানিস আমার মতের বাইরে গেলে কি হবে !
-জানি খুব ভাল ভাবেই ।
এমন সময় এমডি স্যার মানে আরিয়ানার বাবা ঘরে ঢুকলো । তাকে ঢেকে আফসার আহমেদ বলল, তোর মেয়ে কি বলছে শুনেছিস ? এসবের পেছনে তাহলে তুই আছিস ?
-বাবা ! আরিয়ার মতের উপরে আমার কিছু বলার নেই । ওকে যাকে বিয়ে করতে চায় করতে পারে । এখানে আমি বাবা হিসাবে ওকে বাধা দিবো না । আর কাউকে বাঁধা দিতে দিবোও না ।
-বাহ ! খুব বড় হয়ে গেছিস মনে হচ্ছে তুই ।
-বড় হই নি । কেবল যে কাজটা ৩০ বছর আগে করা দরকার ছিল সেটা করছি । আর অপুর ব্যাপারে বলতে গেলে মনে হয় ও আর ফাজু ভাই যথেষ্ঠ কষ্ট করেছে । অন্তত অপু এটা ডিজার্ভ করে না ।
আমি সত্যিই মাথা মন্ডু কিছুই বুঝতে পারছি না কি হচ্ছে এখানে । সত্যিই সব কিছু আমার মাথার উপর দিয়েই যাচ্ছে । আমি কেবল অবাক হয়ে সবার কথা শুনছি । ফাজু ভাই বলতে কি আমার বাবাকে বুঝিয়েছে সে ! আমার বাবার নাম ফাজহার আহমেদ ।
আফসার আহমেদ এবার খানিকটা চিৎকার করে বললেন, এই ছেলে এখনই আমার বাসা থেকে বের হয়ে যাবে । আমি আর একটা কথা শুনতে চাই না ।
আমি দরজার দিকে পা বাড়াতে যাবো এমন সময়ে আরিয়ানা আমার হাত ধরলো । তারপর বলল, চল আমিও যাচ্ছি তোমার সাথে ।
-না না । তোমাকে যেতে হবে না ।
আরিয়ানা বলল, যা বলছি শোন । চল আমিও যাচ্ছি ।
তারপর সে ওর বাবার দিকে তাকিয়ে বলল, অপুর ফ্ল্যাটটা বেশ বড় বুঝেছো । চারটা বেড রুম রয়েছে । তুমি আম্মুকে নিয়ে চলে এস বিকেলের দিকে । আমি গেলাম !
আমি আসলেই কিছু বুঝতে পারছিলাম না । আমার মাথায় ঢুকছে না কিছু । আরিয়ানা যখন দরজার কাছে গিয়েছে তখন পেছন থেকে আফসার আহমেদের চিৎকার শুনতে পেলাম । আরিয়ানা তোকে কিন্তু আমি কিচ্ছু দেব না ।
আরিয়ানা থামলো । তারপর ঘুরে দাড়ালো ওর দাদুর দিকে । বলল, তুমি কি ভেবেছো যে ঢাকা পয়সা ভয়ে সবাই তোমার আশে থাকবে! তোমার বড় ছেলে থেকেছে ? থাকে নি ! আমার আন্তত আর যাই হোক তোমার টাকার দরকার নেই । হ্যা তোমাকে দরকার আছে । আমার দাদুকে দরকার । মানুষকে নিয়ন্ত্রন করার তোমার যে স্বভাব সেটা বদলাও । ইগোকে একপাশে রেখে নিজের নাতি আর নাতনির কাছে এসো ! যদি না আসো এই বুড়ো বয়সে একা থাকতে হবে ।
আরিয়ানা আমাকে নিয়ে বাড়ির বাইরে বের হয়ে এল । গাড়ি নিলো না ও । উবার ডেকে আমার ফ্ল্যাটে ফিরে এলাম । আমি এতোটা সময়ে একটা কথাও বলি নি । বাসায় এসে ওর দিকে তাকিয়ে বলল, বলবা কি হল এতো সময়ে !
-এখনও বুঝো নি ?
-আসলে আমি কিছুই বুঝতে পারছি না । আমার বাবাকে কি তোমার বাবা দাদুরা চেনে ?
-আরে গাধা, তোমার বাবা সম্পর্কে আমার বড় চাচা । আপন বড় চাচা !
কথাটা হজম করতে আমার কিছুটা সময় লাগলো । আরিয়ানা বলল, ভাগ্যই বল আর যাই বল প্রথম যেদিন তোমার এখানে এলাম সেদিন তোমার বেড রুমের পাশের ঘরে ঢুকেছিলাম আমি । সেখানে তোমার বাবা মায়ের ছবি দেখি । সেখানেই চিনতে পারি তোমাকে !
-আমি আসলে কিছু বুঝতে পারছি না ।
-বুঝবে কিভাবে গাধা ! তোমার মনে এই প্রশ্ন আসে নি যে কেন তোমার কোন আত্মীয় স্বজন নেই ? কেউ নেই ?
এই কারণটা আমি জানি কিছুটা । আমার বাবা আর মা পরিবারের অমতে বিয়ে করেছিলো । দুই পরিবারের কেউ ই মেনে নেয় নি বিয়েটা । কারণটা সম্ভবত ছিল যে আমার মা অন্য ধর্মের ছিল । বাইরে পড়তে গিয়ে বাবা মাকে পছন্দ করে এবং সেখানেই বিয়ে করে । অনেক দিন সেখানেই ছিল । বাবার মৃত্যুও কিছুদিন আগে বাবা দেশে এসেছিলেন আমাদের নিয়ে । আমাদের থাকার জন্য এই বিশাল ফ্ল্যাটটা কিনেছিলেন । তারপর একদিন এখানেই মারা গেলেন । মা আর আমি ছিলাম এখানে । একদিন মাও চলে গেল। রয়ে গেলাম আমি একা ।
আরিয়ানা বলল, আফসার আহমেদ চৌধুধী তোমার দাদা । আপন দাদু । দাদু যেমন তোমার বাবাকে বিয়ের কারণে মেনে নেয় নি তোমার বাবাও দ্বিতীয়বার তার কাছে যান নি । একই রক্ত তো ! ইগো ভর্তি ! বাবা লুকিয়ে ঝুকিয়ে তোমার বাবার সাথে যোগাযোগ রাখতে চেয়েছিলো তবে আমার বাবা একটু ভিতু টাইপের । দাদুকে খুব ভয় পেত । আর তখন তো যোগাযোগের এতো ভাল মাধ্যম ছিল না । এক সময়ে যোগাযোগ একদম বন্ধ হয়ে গেল । আমরা জানতামই না তোমরা কোথায় আছো দেশে এসেছো সেটাও না । তারপর ঐদিন তাদের ছবি দেখলাম । বাবার কাছে একটা লুকানো ফটো এলবাম ছিল । সেটা আমাকে দেখিয়েছিলো । দেওয়ালে টাঙ্গানো ছবির একটা ছবি তুলে নিয়ে বাবাকে দেখাতেই চিনতে পারলো সে । তারপর খোজ খবর নিয়ে আরও নিশ্চিত হল ।
আরিয়ানা চুপ করলো । আমি হঠাৎ করেই আরিয়ানা কে জড়িয়ে ধরলাম । আগের থেকেও কেন জানি ওকে বড্ড বেশি আপন মনে হল আমার !
বিকেলের ভেতরে সত্যি সত্যিই আরিয়ানার বাবা আর মা চলে এল । এবং সব চেয়ে অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে ঠিক তার ঘন্টা খানেক পরে দাদী এসে হাজির হল । আমাকে জড়িয়ে ধরে আরও কিছু সময় ধরে কান্নাকাটি করলো সে ।
এমন আনন্দ আমি আর আগে কোন দিন অনুভব করেছি কিনা কে জানে ! বাবা আর মা যদি এখন এখানে থাকতেন তাহলে বুঝি আনন্দের বন্যা বয়ে যেত । তবে দাদুর জন্য মন খারাপ লাগলো । এতো ইগোস্টিক কেন হতে হবে তার !
দুটো দিন কিভাবে পার হয়ে গেল কে জানে । এই দুই দিন আমরা কেউ ই অফিসে যাই নি । না আমি না আরিয়ানা আর না ওর বাবা। সবাই সব কিছু ছেড়ে চলে এসেছে । ঠিক হল সামনের শুক্রবারই আমাদের বিয়ে হবে । আরিয়ানাকে যখন ভালোবেসেছিলাম আমি তখন জানতাম না যে সম্পর্কে সে আমার কাজিন হয় । এখন জানার পরেও কিছু যায় আসে না । আপাতত ঠিক হল যে বিয়ের হবে ঘরোয়া ভাবে । পরে আনুষ্ঠান করা হবে ।
আসলে এটা আরিয়ানার ইচ্ছে ছিল । আমার কেন জানি মনে হল এই বিয়ে করতে চাওয়ার ভেতরেও আরিয়ানার কোন প্লান রয়েছে । বিয়ের দিন সেই ব্যাপারটা আমি ভাল করে টের পেলাম । বিয়ের দিন সকালে আরিয়ানাকে বললাম, আচ্ছা একটা কথা বল দেখি, তুমি বিয়ের জন্য একটু তাড়াহুড়া করছো না । মানে একবারেই অনুষ্ঠান হোক না কেন !
আরিয়ানা মুচকি হেসে বলল, কারণ তো আছেই ।
-কি কারণ শুনি ?
আরিায়না একটু কাছে এসে বলল, দাদু আজকেই এসে হাজির হবে দেখবা ।
-মানে?
-মানে হচ্ছে আফসার আহমেদ চৌধুরীর নাতি নাতনির বিয়ে এমন সাধারন ভাবে তো হতে পারে না । সে ঠিক ঠিক হাজির হয়ে যাবে । তার কাছে খবর চলে গেছে । আমিই পাঠিয়েছি ।
আমি একটু অবাক হয়ে আরিয়ানার দিকে তাকিয়ে রইলাম ।
সন্ধ্যার সময়ে আমাদের বিয়ে হওয়ার কথা । আরিয়ানার কথা যে ঠিক সেটা সন্ধ্যার সময়ই টের পেলাম। ঠিক সন্ধ্যার সময়ই আফসার আহমেদ এসে হাজির । আমিই দরজা খুললাম । আমার দিকে চোখ গরম করে তাকালেন । তারপর আমাকে খানিকটা সরিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়লেন ।
সবাই তখন ড্রয়িং রুমেই বসে ছিল । বিয়ে নিয়েই কথা বার্তা হচ্ছিলো । সেই সময়েই সে হাজির । সবাই চুপ করে তার দিকে তাকিয়ে রইলো । ঘরে ঢুকেই সে সবার দিকে তাকিয়ে বলল, এই বিয়ে হবে না ।
আমরা কেউ কিছু বলতে যাবো তার আগেই দাদী চিৎকার করে বলে উঠলো, আফসার মিয়া, তোমারে জিগায় নাই । তুমি বিয়া আটকানোর কেউ না ।
এবার দাদু চিৎকার করে বলল, চুপ । আমি বিয়া আটকানোর কেউ না মানে ! আমার নাতি আর নাতনীর বিয়া !
আমরা একে অন্যের দিকে তাকিয়ে রইলাম । দাদু আবার বলল, বিয়া হবে না মানে আজকে হবে না । আমার নাতি আর নাতনির বিয়া এমন ভাবে হতে পারে না । আমাকে এক সপ্তাহ সময় দাও । বিয়ের আয়োজন করতে দাও ।
আমি ভেবেছিলাম দাদু বুঝি চলে যাবে তবে তিনি গেলেন না । ঘরের ভেতরের দিকে চলে গেলেন । আরিয়ানা আমাকে চোখের ইশারা করলো দাদুর পেছনে যেতে । আমি দ্রুত দাদুর পেছনে হাটা দিলাম ।
পেছন থেকেই বললাম, ডানের দিকের ঘরটা বাবা মায়ের ।
দেখলাম দাদু সেই ঘরেরই ঢুকলেন । আমিও পেছন পেছন ঢুকলাম । এই ঘরের জিনিস পত্র সব আগের মতই রয়েছে । বাবা মারা যাওয়ার পরে মা সব কিছু তেমনই রেখে দিয়েছিলেন । আমিও মায়ের মৃত্যুর পরে একই ভাবে সব রেখে দিয়েছি । দাদু ঘরটা ঘুরে দেখতে লাগলো । এক সময় বলল, আমি না বাবা হয়ে রাগ করেছিলাম, ছেলে হয়ে ও কি একটু আসতে পারতো না !
আমি বললাম, আপনারই তো ছেলে ! আপনার মতই রাগ !
দাদু এবার আমার দিকে ফিরলেন, তুই তোর বাবার মত হোস না, আমার মতও না । বুড় বয়সে একা কাছের মানুষ গুলো ছেড়ে গেলে বড় অসহায় লাগে রে ! আমাদের উপরে রাগ করে থাকিস না ! কেমন !
এই প্রথম দাদুর কন্ঠে আমি অন্য কিছু দেখতে পেলাম । মনে হল এখন দাদুকে জড়িয়ে ধরা উচিৎ । আমি তাই করলাম !
পরিশিষ্টঃ
এক সপ্তাহ নয়, এগারো দিন পরে আমাদের বিয়ে হল । আমি অন্তত কোন দিন ভাবি নি যে আমার বিয়ে এতো আয়োজন করে হবে । কত মানুষ যে এসেছিলো সেটার কোন ঠিকানা নেই । কোন কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করা হয় নি । গাজিপুরে একটা বিশাল রিসোর্ট ভাড়া করা হয়েছে । মানুষ এসেছেও খুব । এতো চেহারার মাঝে একটা চেহারা আমার ঠিকই চোখে পড়লো । সেটা হচ্ছে আনিকার চেহারা । বেচারী জানতে পেরেছে যে আমি আফসার আহমেদের নাতি । আমাকে ছেড়ে যে সে ভুল করেছে সেটা তার চোখের দিকে তাকালেই টের পাচ্ছিলাম ।
অবশ্য আমাকে যদি ও না ছাড়তো তাহলে হয়তো কোন দিন আমি এখানে আসতেই পারতাম না । না ও ছেড়ে যেত, না আমি ঐদিন ক্লাবে যেতাম না আরিয়ানার সাথে দেখা হত । সেই রাত না আসলে হয়তো এখনকার কিছুই ঘটতো না ।
আরিয়ানাকে এই কথা বলতেই আরিয়ানা বলল, বাহ এক্সের জন্য এতো প্রেম !
-আরে বাবা প্রেম কই দেখলে ! জাস্ট বললাম আর কি !
-রাখো তোমার বলাবলি ! ঐ মেয়ের দিকে আর কোন দিন তাকিয়েছো তো খবর আছে তোমার !
-আরে বাবা কি যে বল । তুমি থাকতে অন্য দিকে তাকানোর উপায় আছে আমার !
আরিয়ানা হাসলো । তারপর বলল, অবশ্য তোমার কথায় যুক্তি আছে ! যাও ওকে প্রোমোশন দিয়ে দিবো একটা !
আমাদের গল্প এখানেই শেষ অথবা এখান থেকে আমাদের নতুন গল্প শুরু…..
Discover more from অপু তানভীর
Subscribe to get the latest posts sent to your email.
Ager sob golper moto
Atao Khubi valo laglo
Dark Queen er golpo ta ses korar anurodh korchi plz