দেয়াল

অপু তানভীর
4.6
(34)

রিয়াদ নওরিনের দিকে একটা বিস্মিত চোখ নিয়ে তাকিয়ে রইলো। নওরিন যে এমন একটা কথা বলেছে সেটা সম্ভবত বিশ্বাস করতে পারছে না। একটা সময় সেই বিস্ময় ভাবটা একটু প্রশমিত হল। রিয়াদ নিজেকে একটু শান্ত করে বলল, তুমি তাই বিশ্বাস কর?
-দেখুন আমি কী বিশ্বাস করি না করি তার থেকেও বড় ব্যাপার হচ্ছে ফ্যাক্ট। আপনি জানেন আমার অফার লেটার আসার পরে আমার বাসায় কয়টা বিয়ের প্রস্তাব এসেছে। আমার ইনবক্সে কতজন আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছে। এর ভেতরে বিসিএস ক্যাডারসহ আমাদের ডিপার্টমেন্টের লেকচারার পর্যন্ত আছে।
-তার মানে তুমি ধরেই নিয়েছো যে আমিও তাদেরই একজন! তুমি কি জানো….

রিয়াদ লাইনটা শেষ করল না। মাঝ পথেই থেমে গেল। তারপর বলল, আচ্ছা যাক বাদ দিই ব্যাপার। তুমি যখন বিয়ে করতে চাচ্ছো না, আমি এই ব্যাপারে আর এগোবো না। ঠিক আছে?

নওরিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকেই বাইরে গিয়ে পড়াশোনা করতে চেয়েছিল। ভাল একটা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বড় ডিগ্রি নেওয়ার আগ্রহ সেই ছোটবেলা থেকেই। অর্নাস পাশ করে তাই সেই চেষ্টায় নেমেছিল। এর ফল আসতেই সময় লাগে নি। মাস খানেক আগেই সে এমআইটির অফার লেটার পেয়েছে। এই খবর আত্মীয় স্বজন বন্ধুবান্ধবদের জানাজানি হওয়ার পরে একটা নতুন উপদ্রোপ শুরু হয়েছে। একের পর এক বিয়ের প্রস্তাব আসা শুরু করেছে। সবার লক্ষ্য যে কোন ভাবেই হোক নওরিনকে বিয়ে করতে হবে। এই লিস্টে কত পরিচিত অপরিচিত মানুষ যে রয়েছে তার কোন ঠিক নেই।
ব্যাপারটা নওরিনকে বিরক্তই করেছে। কী রে ভাই একটা মেয়ে আমেরিকা যাচ্ছে তাই বলে তোকেও সেই মেয়ের শাড়ি ধরে বিদেশ যেতে হবে? নওরিন খুব ভাল করেই জানে যে এই বিয়ের আগ্রহ কোন ভাবেই নওরিন নিজে নয়, এই আমেরিকান ভিসা। আজকে এই ভিসা যদি চলে যায় এই বিয়ের আগ্রহও চলে যাবে। তাই নওরিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে কোন ভাবেই বিয়ে করবে না। সবাইকে মানা করে দিবে।
রিয়াদও এই বিয়ের প্রস্তবা পাঠানোদের একজন। রিয়াদকে সে অনেক আগে থেকেই চেনে। এক সময় রিয়াদরা ওদের পাশের বাসাতেই ভাড়া থাকত। স্কুল কলেজের সময় ওরা পাশাপাশিই থাকত। নওরিন যখন যখন অর্নাসে ভর্তি হয় তখন রিয়াদ এইচএসবিসিতে চাকরি পেয়ে যায়। তার কয়েক দিন পরে ওরা ভাড়া বাসা বাদ দিয়ে নিজেদের ফ্ল্যাটে ওঠে। তারপর আর দেখা হয় নি। তবে ওর বাবা মায়েদের সাথে রিয়াদের বাবা মায়ের একটা ভাল সম্পর্ক ছিল সব সময়। অন্তত কথা বার্তায় নওরিনের তাই মনে হয়েছে।

রিয়াদ আর বেশি কথা বলল না। চুপচাপ কফি শেষ করল । তারপর নওরিনকে রিক্সায় তুলে দিল। নওরিনের হঠাৎ মনে হল এভাবে রিয়াদকে কথাগুলো না বললেও হত। রিয়াদকে সে ভাল করেই চেনে । ভদ্র ছেলে বলতে যা বোঝায়, একজন মেয়ে তার প্রেমিক কিংবা স্বামী হিসাব ঠিক যেমন ছেলে পছন্দ করে রিয়াদের ভেতরে সেই সব গুণ রয়েছে। ওর নিজের বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই রিয়াদ পড়াশোনা শেষ করেছে। তারপর ভাল জায়গা চাকরিও পেয়েছে। রিয়াদ আসলে এতোদিন বিয়ে করে নি এটা জেনে নওরিন একটু অবাকই হয়েছিল। তবে যখন জানল যে পারিবারিক ভাবে বিয়ের প্রস্তাব এসেছে তখন নওরিন একটু বিরক্তই হয়েছিল। এই বিরক্তিটা কদিন থেকেই আসছে। বিয়ের কথা শুনলেই বিরক্তি আসছে। ওর বাবামাকে বলেছে যাওয়ার আগে সে কোন ভাবেই বিয়ে করবে না। মাস্টার্স শেষ করে দেশে আসবে তখন বিয়ে, তার আগে নয়। ওর বাবা বলেছিল যে কথা বলে আসতে। কথা বললেই তো বিয়ে হয়ে যাচ্ছে না। সে কথা মত আজকে রিয়াদের সাথে সে দেখা করতে এসেছিল। তবে আগে থেকেই সে ঠিক করেছিল যে রিয়াদকে মানা করে দিবে। যাওয়ার আগে সে কোন কমিটমেন্টে যাবে না।
তবে রিক্সাতে যেতে যেতে নওরিনের মনে হল যে এভাবে সরাসরি কথাগুলো না বললেও চলত। আরও নম্র ভাবে মানা করা যেত। রিয়াদের মুখটা বিস্মিত অপমানে কালো হয়ে গিয়েছিল। রিয়াদ সম্ভব অবাক হয়েছিল খুব।

রাতের বেলা ওর বাবা নওরিনের সাথে খুব চেঁচামিচি করল। রিয়াদের কাছ থেকে ফোনে এসেছে। নওরিন যা বলেছে সবই সে নওরিনের বাবাকে জানিয়েছে। এটা জানার পর থেকে নওরিনের বাবা নওরিনের উপরে খুব চটেছে। এবং তারপর সে কথাটা সে নওরিনকে জানাল তাতেই নওরিন বুঝতে পারল যে সে কেবল ভুলই নয়, রীতিমত অন্যায় করেছে।

সে রিয়াদকে অন্য আটদশটা মানুষের মতই ধরে নিয়েছিল। ধরে নিয়েছিল তার আমেরিকান ভিসা পাওয়ার কথা শুনেই বুঝি সবাই তাকে বিয়ে করতে চাচ্ছে। কিন্তু তার বাবা জানাল যে রিয়াদ যখন চাকরি পেয়েছিল, যখন নওরিন অর্নাসে সবে ভর্তি হয়েছিল সেই সময়েই রিয়াদের বাসা থেকে নওরিনের জন্য বিয়ের প্রস্তাব এসেছিল। তখন নওরিনের বাবা জানিয়েছিল যে এখন মেয়েকে বিয়ে দেবে না, তবে ছেলে হিসাবে রিয়াদকে তার খুব পছন্দ। সে যদি নওরিনের পড়াশোনা শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারে তবে বিয়ের কথা চলবে। রিয়াদ সেই অপেক্ষাই করেছিল। এই কথাটা জানার পরে নওরিন রীতিমত নিজেকে অপরাধী ভাবছে। যে মানুষটা নিরবে চার-পাঁচ বছর ওর জন্য এভাবে অপেক্ষা করতে পারে তাকে ভিসা লোভী বলে অপমান করাটা অন্যায় ছাড়া আর কিছু নয়।

দুইটা দিন নওরিন বাসা থেকে বের হল না। তারপর নিজের লজ্জাকে এক পাশ কাটিয়ে সে রিয়াদের সাথে দেখা করতে তার অফিসে গিয়ে হাজির হল। লবিকে প্রায় ঘন্টা খানেক অপেক্ষা করে তারপর রিয়াদ এসে হাজির হল ওর সামনে। ওর দিকে তাকিয়ে বলল, সরি মিটিংয়ের ভেতরে ছিলাম। মাত্রই জানলাম তুমি এসেছো! আর কিছু বলার ছিল?
নওরিন মাথা টা নিচু করে বলল, অন্য কোথাও গিয়ে কথা বলা যাবে?
-আজকে তো হবে না। অফিসে বেশ ব্যস্ততা দেখতেই পাচ্ছো?
-আমি আসলে সরিই বলতে এসেছি।
-কোন ব্যাপারে সরি?
-গতদিন আপনাকে ঐ কথাগুলো বলা আমার ঠিক হয় নি।
-ইটস ওকে নওরিন। এটা নিয়ে মন খারাপ কর না। আমি কিছু মনে করি নি। তোমার জায়গায় থাকলে আমিও হয়তো এমন কিছুই বলতাম।

নওরিন হঠাৎ কথা হারিয়ে ফেলল। এরপর সে কী বলবে তা আর ভেবে আসে নি। এখন কি সে বলবে যে আমি আসলে আপনাকে বিয়ে করতে চাই? আপনাকে বিয়ে করতে আমার কোন আপত্তি নেই? এমন কথা কি চাইলেই বলা যায়?

নওরিন ভেবেছিল যে সে যখন অন্য কোথাও কথা বলতে চাইবে রিয়াদ সাথে সাথেই রাজি হয়ে যাবে তবে এখানে এসে দেখে রিয়াদ বেশ ব্যস্ত।
-আচ্ছা আপনি সম্ভবত খুব ব্যস্ত। আমি আজকে আসি।
-আচ্ছা। বেস্ট অব লাক ফর ইয়োর ফিউচার ।

রিয়াদ সত্যিই আর পেছন না ফিরে কাঁচের দরজা ঠেলে ভেতরে চলে গেল। নওরিনের মন খারাপ হয়ে এল। অনুভব করল সে চোখ দিয়ে একটু পানিও যেন বের হয়ে এসেছে। খুব দ্রুত সে অফিস থেকে বের হয়ে গেল। তবে খুব বেশি দুরে গেল না। অফিসের ঠিক সামনেই একটা ক্যাফে ছিল সেখানেই গিয়ে হাজির হল। চুপচাপ বসে রইলো সেখানে। কয়েককাপ কফির অর্ডার দিল। সে কেন এখানে বসে অপেক্ষা করছে আর কেনই বা অপেক্ষা করছে সেটা তার নিজেরও জানা নেই। নওরিনের সাথে সব কিছু কেমন অর্থহীন মনে হচ্ছে।

তবে নওরিনকে খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হল না। লাঞ্চ আওয়ারের সময়েই রিয়াদ এসে হাজির হল ওর সামনে। নওরিন কিছুটা অবাক হল বটে। রিয়াদ বলল, আমার অফিস থেকেই এই ক্যাফেটা ভাল করেই দেখা যায়। এখন বল তুমি এখানে কেন অপেক্ষা করছো?
নওরিন আস্তে করে বলল, জানি না।
-এখানে অকেক্ষা করার কোন কারণ নেই?
-না !
-আচ্ছা। আমি তাহলে গেলাম।
-শুনুন।
-বল।
-লাঞ্চটা আমার সাথে করবেন?
-লাভ কী বল? কোন লাভ আছে?
-আমি সরি তো বলেছি।
-আমিও তো বলেছি যে ইটস ওকে। তাহলে?

নওরিন বুঝতে পারল যে রিয়াদ খুব ভাল করেই জানে যে নওরিন কেন এখানে বসে আছে। তবে সেটা ওর মুখ থেকেই সে শুনতে চায়। সে গতদিন রিয়াদকে অপমান করেছে। হোক সেটা না জেনে। পুরুষ মানুষ এই অপমান খুব সহজে ভুলে যায় না। রিয়াদ চাইছে নওরিন যেন ওর সামনে নত হয়েই কথাটা বলে। নওরিন সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। সে কী করবে?
তবে নওরিনকে খানিকটা অবাক করে দিয়ে রিয়াদ তার সামনে বসল। তারপর বলল, আমি বুঝতে পারছি যে তোমার মনের ভেতরে কী চলছে। আমি তোমাকে কিছু কথা বলি। মন দিয়ে শোন।
রিয়াদ একটু স্থির হয়ে নওরিনের দিকে তাকাল। নওরিন একটু নড়েচড়ে বসল। রিয়াদ তারপর বলল, আমি অনেক দিন থেকেই তোমাকে পছন্দ করতাম। একেবারে বলতে পার সেই প্রথমদিন থেকেই। আমরা পাশাপাশি ছিলাম। তোমাকে দেখতাম প্রতিদিন। এই ভাল লাগা এক দিনে তৈরি হয় নি। আমি জানি না আমার প্রতি তোমার কেমন অনুভূতি ছিল। তবে এই টুকু বলতে পারি যে আমাকে তুমি খারাপ মানুষ ভাবতে না। তাই না ?
-আপনাকে সবাই ভাল জানত। আমার মা আপনাকে অনেক ভাল জানত।
-হ্যা। তাই ঠিক করেছিলাম যে একেবারে প্রতিষ্ঠিত হয়েই তোমাকে বিয়ের প্রস্তাব পাঠাব। করলামও তাই। চাকরি পাওয়ার সপ্তাহ খানেক পরে তোমার আব্বাকে জানালাম আমার পছন্দের কথা। তোমার আব্বা খুশি হলেন তবে সেই সাথে এটাও জানালেন যে তুমি পড়াশোনা করতে চাও। এখন বিয়ে করবে না। আমাকে তিনি অপেক্ষা করতে বললেন। আমি সেটা খুশি মনেই করলাম। এর মাঝে আমার অনেক কয়টায় বিয়ের প্রস্তাব এসেছিল। যাক সেই কথা বাদ দিই। এটা আমার চয়েজ ছিল। যখন আবার সময় এল তখন তুমি আমাকে এমন কিছু কথা বললে যা আমার ভালবাসাকে অপমান করেছে। তোমার প্রতি আমার যে ভাল লাগা জন্ম হয়েছিল সেটা চলে গেল ।

লাইনটা বলে রিয়াদ কিছু সময় চুপ করল। মনে হচ্ছিল যেন লাইনটা ঠিকমত সে বলে নি। তারপর বলল, না চলে গেছে বললে ভুল হবে। বলা যায় যে এই ভাল লাগার সামনে একটা দেয়াল এসে হাজির হয়েছে। এই দেয়াল ভেদ করে আমি কোন ভাবেই তোমাকে সেই আগের মত করে পছন্দ করতে পারছি না। বুঝতে পারছো কি?
নওরিন কেবল একবার মাথা ঝাঁকাল।
রিয়াদ আবারও বলা শুরু করল, আমি জানি না তুমি আসলে কী চাও? যদি কেবল গতদিনের আচরণের জন্য সরি বলাই তোমার কাছে মূখ্য ব্যাপার হয়ে থাকে, তাহলে সেটা সমাধান হয়ে গেছে। তুমি যদি আজকে এখানে না বসে চলে যেতে তাহলে সত্যিই আমাদের মাঝে আর কোন দিন দেখাও হত না। কিন্তু তুমি এখানে বসে আছো কয়েক ঘন্টা ধরে। আমি হয়তো গেস করতে পারছি তুমি কেন বসে আছো। তোমার মন চাইছে আমি ঠিক আগের মত করেই তোমাকে পছন্দ করি কিংবা আমাদের মধ্যে বিয়ে হোক! এটাই কি তুমি চাও?

নওরিন মাথা নিচু করে রইলো। মনের ভেতরে ঝড় চলছে। তবে সে খুব ভাল করেই জানে তার মন কি চাইছে। নওরিন যখন চোখ তুলে তাকাল তখন রিয়াদ তার চোখের দিকে তাকিয়েই উত্তর পেয়ে গেল। রিয়াদ বলল, তবে সমস্যা কী জানো? ঐ যে বললাম যে দেয়াল তৈরি হয়েছে সেটা আমি ভেদ করে তোমার কাছে আসতে পারছি না।
নওরিন এবার অনুভব করল তার চোখকে পানি জমতে শুরু করেছে আপনাআপনি। সে খুব করে চাইছে এই পানি যেন গড়িয়ে না পড়ে তবে সে নিজেও জানে যে কত সময় ধরে সে এটাকে ধরে রাখতে পারবে।
রিয়াদ বলল, মাস্টার্স করে এসো। পিএইচডির জন্য নিশ্চয়ই অফার পাবে। এর মাঝে তো দেশে আসবে। আমি তখন যদি দেখি যে তোমার মনে তখনও একই অনুভূতি রয়েছে, আমার জন্য এই দুই বছর অপেক্ষা করছো তখন হয়তো এই দেয়াল ভেঙ্গে যাবে। বুঝতে পেরেছো আমি কী বলেছি?
নওরিন আবারও মাথা ঝাকাল। তারপর বলল
-পরীক্ষা নিয়ে চাইছেন?
রিয়াদ হাসল।
-ধর তাই। তবে এমন না যে অপেক্ষা করতেই হবে। এখন হয়তো তোমার মনের ভেতরে আবেগ জমা হয়েছে। সময়ের সাথে এটা কমে যেতে পারে। তুমি যদি অন্য কাউকে পছন্দ করে বিয়ে করে ফেল তাহলে আমার কোন আপত্তি থাকবে না।
-আপনি অপেক্ষা করবেন আমার জন্য?
-আমার বিয়ে করার এখনও দেরি আছে। যাই হোক লাঞ্চ আওয়ার শেষ হয়ে যাচ্ছে। আমি যাই। বেস্ট অব লাক।

রিয়াদ আর বসল না। নওরিন আরো কিছুটা সময় সেখানে বসে রইলো। তারপর এক সময়ে বাসার দিকে রওয়ানা দিল।

দেখতে দেখতে এক সময়ে নওরিনের ফ্লাইটের সময় হয়ে এল। বিদায়ের দিন সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে নওরিন যখন প্লেনে বসল তখন তীব্র এক বিস্ময় নিয়ে নওরিন খেয়াল করে দেখল যে রিয়াদ ঠিক তার পাশের সিটে বসে রয়েছে। চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে রইলো রিয়াদের দিকে।
রিয়াদ খানিকটা হেসে বলল, আরে তুমি এই ফ্লাইটে যাচ্ছো নাকি?
-আপনি?
-অফিস থেকে সেমিনার এটেন্ড করতে করতে আমাকে পাঠাচ্ছে আমেরিকাতে। আরও কয়েকজন আছে ।
নওরিন নিজেকে সামলে নিয়ে বলল, তাই বলে একেবারে আমার পাশের সিট? এতোটা কাকতালীয় ঘটনা ঘটে?
রিয়াদ এবার একটু হাসল। তারপর বলল, একই দিনে ফ্লাইটের তারিখ পড়েছে এটা সত্যিই কাকতালীয় । তবে এই তোমার পাশে সিট পরাটা কাকতালীয় নয়। আমার দুজন বস ভেতরে বিজনেস ক্লাসে বসেছে। আমার সিটও ওখানে ছিল। কিন্তু যখন তোমাকে দেখতে পেলাম তখন এই লোভ টুকু আসলে সামলানো গেল না।

নওরিনের মনটা হঠাৎ করেই ভাল হয়ে গেল। একটু আগে সবাইকে ছেড়ে আসার কষ্ট যেন এক নিমিষের চলে গেল। নওরিনের এখন মনে এই বিশ্বাস জন্মেছে যে রিয়াদের সাথেই তার জীবনের পথ জুড়ে আছে। রিয়াদ যতই তার উপর অভিমান করে থাকুক না কেন, যতই মনের ভেতরে দেয়াল উঠে থাকুক না কেন, সেই অভিমান, সেই দেয়াল ভেদ করে নওরিন ঠিকই তার কাছে পৌছে যাবে।

ফেসবুকের অর্গানিক রিচ কমে যাওয়ার কারনে অনেক পোস্ট সবার হোম পেইজে যাচ্ছে না। সরাসরি গল্পের লিংক পেতে আমার হোয়াটসএপ বা টেলিগ্রামে যুক্ত হতে পারেন। এছাড়া যাদের এসব নেই তারা ফেসবুক ব্রডকাস্ট চ্যানেলেও জয়েন হতে পারেন।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 4.6 / 5. Vote count: 34

No votes so far! Be the first to rate this post.


Discover more from অপু তানভীর

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

About অপু তানভীর

আমি অতি ভাল একজন ছেলে।

View all posts by অপু তানভীর →