চিতংবুড়া (২য় পর্ব)

4.6
(20)

আবারও নীতু একা হয়ে গেল। সাং এর কথাগুলো মাথার ভেতরে ঘোরাফেরা করল কিছু সময়। আসলে এই পরিবেশটাই বুঝি এমন ! যদি এই কথাগুলো সে নিজের অফিসের বসে শুনতো তাহলে পুরো ব্যাপারটা একেবারেই তার কাছে অন্য রকম মনে হত কিন্তু এই নির্জন পাহাড়ি পরিবেশে কথাগুলো মনের ভেতরে একটা অস্বস্তির অনুভূতি জাগিয়ে তুলছে। নীতু জোর করে চিন্তাটা সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করল । এই পাহাড়ি এলাকাতে মানুষের মনে নানান রকম কুসংস্কার থাকাটা স্বাভাবিক। ঋদ্ধ রায়হানকে নিয়ে পুরো দেশের মানুষের ভেতরেই নানান রকম মিথ চালু হয়ে আছে সেখানে এই পাহাড়িদের ভেতরেও যে মিথ থাকবে সেটাই সেটাই স্বাভাবিক।

আজকে সারাদিনটা নীতু কিভাবে কাটাবে সেটাই চিন্তা করতে লাগল । রান্না ঘরে গিয়ে এককাপ কফি বানালো নিজের জন্য। চুলাটা ক্যারোসিনের । তবে একটা মাটির চুলাও রয়েছে পাশে। এখানে সম্ভবত দুপুরের ভারী রান্না হয়। তবে চা কফির জন্য এই কেরোরিনের স্টোভটাই ব্যবহার করা হয় । কফির কাপটা হাতে নিয়ে সে সামনের বারান্দায় এসে হাজির হল। তারপর মন দিয়ে চারিদিকের আওয়াজ শুনতে চেষ্টা করল । সাং সত্যিই বলেছিল । এখানে আসলেই কোন আওয়াজ শোনা যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে যেন পরিবেশ একেবারে শান্ত । এতো নির্জনতা নীতু এর আগে কোনদিন অনুভব করে নি। হঠাৎ করে নীতুর মনে হল বাইরের পৃথিবীর সব কিছু ছেড়ে এখানে চলে আসতে পারলে আর বাকি জীবনটা এখানেই পার করে দিতে পারলে মন্দ হত না। হয়তো লেখক ঋদ্ধ রায়হানও ঠিক এই মনভাব নিয়ে এই নির্জন পাহাড়ে পড়ে আছে । অবশ্য প্রথম প্রথম সবারই ভাল লাগবে। কিন্তু কয়েকদিন পার হতেই এখানে সে টিকতে পারবে না।
ঋদ্ধ রায়হানের ঘরে বেশ কিছু বই পাওয়া গেল। নিজের লেখা বই ছাড়াও অন্যান্য লেখকদের বইও রয়েছে। বইগুলোর ভেতরে কয়েকটা আবার এই বছরের বই মেলাতে প্রকাশিত। এছাড়া এই মাসের সদ্য প্রকাশিত কয়েকটা ম্যাগাজিনও রয়েছে। এগুলো নিশ্চিত ভাবে তার সম্পাদকরা তার কাছে সরবারহ করে থাকে। তার মানে দাড়াল যে বাইরের জগত থেকে একেবারে সে আলাদা নয়। বাইরর বিশ্বের খবরাখবর তার কাছে ঠিকই আসছে।

সকালের সময়টা নীতুর কেটে গেল বই পড়েই। দুপুরের কিছু আগে সে রান্না বসাল । সকালের মত করেই খিচুড়ি চাপিয়ে দিল। তারপরই নীতুর কাছে মনে হল সে পেছনের ঝর্ণা থেকে গোসলটা সেরে আসা যাক। খিচুড়ি হতে বেশ কিছু সময় লাগবে। এই সময়টা কিছুই করার নেই।
নীতু ঝর্ণার সামনে গিয়ে দাড়াল । ঠিক ঝর্ণা বললে ভুল হবে। ছোট পানির উৎস বলবেই ভাল । বেশ কিছুটা স্থান জুড়ে পানি জমে আছে । নিচের দিকের একটা অংশ খোদায় করা । স্পষ্টই এটা গোসল করার জন্য আলাদা ভাবে খোদাই করা হয়েছে। নীতু পানিতে যখন নামতে যাবে তখনই একটা খেয়াল মাথায় এল ওর। পুরো এলাকাতে কেউ নেই এখন । কাপড়ে পরে পানিতে নেমে সেটা ভেজানোর কোন মানে নেই। এমনিতে কাল আসার সময়ে ওর পরনের পোশাকটা ভিজে গেছে। আবার আরেকটা পোশাক পরে গোসলের কোন মানে নেই। এখানে ভেজা পোশাক কখন শুকোবে তার কোন ঠিক নেই।
নির্জন ঝর্ণার পাশে নীতু ধীরে নিজের শরীরের সব পোশাক খুলে ফেলল । তারপরই ঝর্ণার ঠান্ডা পানিতে শরীর ডুবিয়ে দিল । অদ্ভুত একটা অনুভূতি এসে জড় হল নীতুর মনে। এভাবে এমন খোলা জায়গাতে একেবারে বিবস্ত্র হয়ে গোসল করার সাহসটা ওর ভেতরে কিভাবে এল ! এমনটা যে আগে কোন দিন করেছে বলে মনে হয় না । তাহলে এখন কেন এমন কিছু করতে ইচ্ছে ওর?
তবে চোখ বন্ধ করে ঠান্ডা পানিতে পুরো শরীর ডুবিয়ে রাখতে অদ্ভুত একটা শান্তি লাগছে নীতুর। নীতুর বাসায় কোন বাথটাব নেই। কয়েকবার গিয়েছে কক্সবাজার। সেই কক্সবাজারের যে হোটেলগুলোতে ছিল তাদের ভেতরে দুইবার বাথটাবওয়ালা বাথরুম ছিল। সেখানে শরীর ডুবিয়ে বসে গোসল করেছিল। আজকেও সেই একই ভাবে আরাম করে ঝর্ণার পানিতে বসে রইলো।
কত সময় সে চোখ বন্ধ করে শুয়েছিল সেটা বলতে পারবে না তবে হঠাৎ ওর মনে হল যে কেউ ওর দিকে তাকিয়ে আছে। মেয়েদের এ অনুভূতিটা প্রায়ই হয়। যখন কেউ তাদের দিকে তাকায় তখন মেয়েটা বুঝতে পারে। নীতুরও ঠিক সেই রকম অনুভূতি হল । সাথে সাথে সে চোখ খুলে ফেলল। চারিদিকটা একেবার তাকিয়ে দেখল । কাউকে দেখতে পেল না। দেখতে পাবে না এটাই স্বাভাবিক । এই এলাকায় দুর-দুরান্তে কারো থাকার কথা না। এক হতে পারে ঋদ্ধ রায়হান ফিরে এসেছে । কিন্তু তিনি তো সামনের দিকে দিয়ে ফিরবেন। ঝর্ণার এই দিকে আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। চারিদিকেই উপর পাহাড় আর বন জঙ্গল । এখান দিয়ে কারো আসার কথা না।
গোসল শেষ করে একই ভাবে সে বাসায় ফিরে এল ঘরে। খিচুড়ি ততক্ষণে হয়ে এসেছে । একেবারে রাতের খাবারও তৈরি হয়ে গেছে। রাতে আর রান্না না করলেও চলবে।

খাওয়া দাওয়া শেষ করে নীতুর ঘুম চলে এল । বেশি বিছানায় শুয়ে কিছু সময় বই পড়তে পড়তে ঘুমে ঢোলে পড়ল।আর সেই ঘুমের ভেতরেই নীতু স্বপ্ন দেখল সেই ঝর্ণাতে গোসলের। একই ভাবে সে পোশাক খুলে গোসল করছে। এবং অবাক করার ব্যাপার হচ্ছে ওর থেকে একটু দুরে পাহাড়ের উপর থেকে ঋদ্ধ রায়হান অনেকটা বানরের মত বসে রয়েছে। নীতুর দিকে তাকিয়ে রয়েছে একভাবে । নীতু তখনও চোখ বন্ধ কর গোসল করছে। দৃশ্যটা নীতু নিজের স্বপ্নে দেখতে পাচ্ছে। ঋদ্ধ রায়হানের তাকানোর ধরণটা নীতুর কাছে মোটেই স্বাভাবিক মনে হল না। চোখের দৃষ্টি ঠিক লোলুপ নয়, অন্য রকম, জান্তব ভয়ানক। পুরুষ মানুষ মেয়েদের দিকে কামনার চোখে তাকায়। এই দৃষ্টি প্রতিটা মেয়ে ছোট বেলা থেকে চিনে আসছে । কিন্তু এই দৃষ্টি ঠিক তেমন নয় !

ঘুমের মধ্যেই নীতু নড়ে চড়ে উঠল । কয়েকবাররের চেষ্টার পরে নীতু ঘুম থেকে জেগে উঠল । ঘুম ভাঙ্গার পরেও বুকের ভেতরে একটা অস্বস্তি কাজ করেই গেল । সেই ঘরের ভেতরের ঘুরঘুটে অন্ধকার সেই অস্বস্তিকে আরো বহুগুণে বাড়িয়ে দিল। কিছু সময় বুঝতে পারল না যে এতো গাঢ় অন্ধকার এল কোথা থেকে। হাতের কাছে হাতড়ে মোবাইলটা বের করল । আলো জ্বালতেই অবাক হতে হল ওকে। রাত সাড়ে আটটা। সমতলে রাত আটটা কোন রাতই না, কিন্তু পাহাড়ে রাত আটটা অনেক রাত । পাড়াগুলোতেই রাত আটটার মধ্যে সবাই খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে । আর নিরব এই বাসাতে তো সব কিছু একেবারে নির্জন আর ভুতুড়ে মনে হবেই !
নীতু এতো লম্বা সময় ধরে ঘুমিয়েছে?
দুপুরের খাওয়ার পরে একটু বই পড়েছিল । সেই বই পড়তে পড়তেই ঘুমিয়ে পড়েছে। অন্তত ছয় ঘন্টার বেশি। রাতের বেলাতেই নীতুর এতো লম্বা সময় ঘুম হয় না একটানা । তাহলে এখন এই সময়ে এমন ঘুম কেন হল? অবশ্য এই পাহাড়ে এসে সব রুটিনই অন্য রকম হয়ে যাচ্ছে তবে দুপুরবেলা এতো লম্বা সময় ঘুমানোর ব্যাপারটা নীতুর কাছে একটু অবাকই লাগল ।

বাসায় কোন আলো নেই । তার মানে ঋদ্ধ রায়হান এখনও ফেরে নি? এতো রাত পর্যন্ত কী করছে সে? প্রশ্নটা তার মনে বেশ কয়েকবারই এসেছে। এই পাহাড়ে সে আসলে কী করতে গেছে? কোন উত্তর পেল না। পাওয়ার কথাও না।
নীতুর মোবাইলের আলো নিয়ে এবিছানা ছেড়ে উঠল । তারপর ঘরের আলো জ্বালল । আলো বলতে সোলারের টিমটিমে আলো। এখানে নাকি একটা জেনারেটরও আছে। সেটা মূলত দরকারে চালু করা হয়। মেঘলা যেসব দিনে আলো আসে না সূর্যের আলো পাওয়া যায় না তখন সেটা চালু হয়। এছাড়া বাদ বাকি দিনে সোলার দিয়েই কাজ চলে।

নীতু ঘরের প্রধান দরজায় এল। বাইরে একদমই চাঁদের আলো নেই। তবে একেবারে ঘুরঘুটে অন্দকারও নয়। অন্ধকার চোখে সয়ে আসার পরে নীতু বাইরের দিকে কিছু সময় তাকিয়ে রইল। সত্যিই, কোনদিন সে ভাবেও নি যে এমন একটা পরিবেসে সে এসে পড়বে। এমন নির্জন স্থানে এমন একটা রাত সে একা একা কাটাতে পারবে, কোন দিন ভাবে নি। কেমন যেন ঘোর লাগা অনুভূতি হল মনের ভেতরে । নীতুর মনে হল যে জীবনের বাকি সময়টা আসলেই কি এখানে এভাবে কাটিয়ে দেওয়া সম্ভব? যেমন করে ঋদ্ধ রায়হান কাটিয়ে দিচ্ছে?

এইভাবনাটা আজকে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ওর মনে উদয় হল ! এমন কেন হল?

এক ভাবে যখন নীতু সামনের দিকে তাকিয়ে রইয়েছে ঠিক সেই সময়ে ওর চোখে একটা নড়াচড়া ধরা পড়ল। একটা মানুষের আকারের কিছু একটা যেন দাঁড়িয়ে রয়েছে দুরে । তবে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে নেই। কিছু সময় পরপরই সেটা একবার এদিকে যাচ্ছে আবার অন্য দিকে। অনেকটা বানরের মত লাফিয়ে লাফিয়ে চলছে ! এই দুর থেকেও সেটার সেই লাফগুলো চোখে পড়ছে !

নীতুর আর দেখার সাহস হল না । সে চট করে দরজা বন্ধ করে দিয়ে ঘরের ভেতরে চলে । তারপর গেস্ট রুমে গিয় চুপচাপ বসে রইলো । বারবারই কেবল মনে হচ্ছিল যে এই বুঝি কিছু একটা চলে আসবে দরজার কাছে । দরজাটা ঝাকি দিবে কিংবা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে পড়বে। যদি কিছু একটা চলেই আসে তাহলে নীতু খুব ভাল করেই জানে ওকে রক্ষা করার মত কেউ নেই। কেউ ওকে বাঁচাতে আসবে না। কেউ জানবেই না এখানে ও বিপদে পড়েছে।
ভয়ে ভয়ে সে বিছানার উপরে বসে রইলো চুপচাপ । একটা সময়ে অনুভব হল যে প্রচন্ড ক্ষুধা লেগেছে। ভয় পেলেও মানুষের এই ক্ষুধার অনুভূতি যাওয়ার নয়। মানুষকে খেয়েই হয় । দুপুরের রান্না করা খিচুড়িটা গরম করে রাতের খাওয়া দাওয়ার পরে নীতুর ভয়টা একটু কমে এল । ক্ষুধা পেটে সব অনুভূতিই একটু তীব্র হয়ে থাকে ।
খাওয়ার পরে আরও কিছুটা সময় নীতু অপেক্ষা করল ঋদ্ধ রায়হানের জন্য। রাত দশটা বেজে যাওয়ার নীতুর ঘুম আসতে শুরু করল । এক সময় বিছানাতে শুয়েও পড়ল।

আগের দিনের মত করেও আজকে সকাল বেলা ঘুম ভাঙ্গল । বটে ঘুম ভাঙ্গার কিছু সময় পরে গত রাতের কথা মনে পড়ল । মনে পড়ল যে ঋদ্ধ রায়হান গতকাল রাতে বাসায় আসে নি । তার ঘুমিয়ে পড়ার পরে কি এসেছিল? এই কথা মনে হতেই সে লাফ দিয়ে বিছানা থেকে উঠে দাড়াল । তারপর দ্রুত দৌড় গেল পাশের ঘরে। এবং অবাক হয়ে খেয়াল করল যে বিছানাটা ফাঁকা। পুরো বাড়ি এবং পরে বাড়ির পেছনে গিয়ে হাজির হল । নেই । তার মানে সে সত্যিই আসে নি ।
এবার নীতুর সত্যিই চিন্তা হল। কারণ সে বলে গিয়েছিল সন্ধ্যায় সময় ফিরবে। সেটা না হয় রাত হতে পারে । কিন্তু এখন সকাল হয়ে গেছে। এখনও সে ফেরে নি। তার মানে কোন না কোন বিপদে পড়েছে। কিন্তু কী বিপদ হয়েছে? আর নীতুরই বা কী করার আছে এখানে?
সাং আগামীকালের আগে আসবে না। আজকের পুরোদিনটাও নীতুকে এখানেই থাকতে হবে। সারা দিন একা একা সে কী করবে?

এসব চিন্তা করতে করতে সকালের নাস্তা শেষ করল । নাস্তা বানানোর সময়েই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে ঋদ্ধ রায়হানকে খুজতে যাবে। খাওয়া শেষ করে বের হয়ে পড়ল। কাধে একটা ব্যাগ নিল ছোট। সেখানে অল্প কিছু খাবার আর পানি নিল। সাথে করে যে চর্টটা নিয়ে এসেছিল সেটাও নিয়ে নিল । যদি ভাগ্য কোন প্রকার খারাপ হয়ে যায়, আর ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে যায় তখন এই আলো কাজে দিবে। যদিও নীতু নিশ্চিত না যে রাতের বেলা সে কিভাবে পথ চিনে আসবে।
বাসা থেকে বের হওয়ার আগে বড় ছুরিটাও সাথে নিল। যদিও নীতু ঠিক জানে না যে সে কিভাবে নিজেকে রক্ষা করবে তবে একেবারে নেই মামার কানা মামা ভাল ।

যখন হাটা শুরু করল তখন বারবার মনে হচ্ছিল যে এসব ঝামেলার কোন দরকার নেই। ঘরের ভেতরে চুপচাপ বসে থাকো। তারপর কাল সাং এলে চলে যাও। চাকর গেলে যাক। চাকরীর থেকে জীবন বেশি বড় । এই গহীন পাহাড়ে কোনো বিপদে পড়লে তখন কে উদ্ধার করতে আসবে ?
কিন্তু নীতু তবুও এগিয়ে গেল। কেন যে এগিয়ে যাচ্ছে সেটা নীতু নিজেও জানে না।

আগের পর্ব / পরের পর্ব

ফেসবুকের অর্গানিক রিচ কমে যাওয়ার কারনে অনেক পোস্ট সবার হোম পেইজে যাচ্ছে না। সরাসরি গল্পের লিংক পেতে আমার হোয়াটসএপ বা টেলিগ্রামে যুক্ত হতে পারেন। এছাড়া যাদের এসব নেই তারা ফেসবুক ব্রডকাস্ট চ্যানেলেও জয়েন হতে পারেন।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 4.6 / 5. Vote count: 20

No votes so far! Be the first to rate this post.


Discover more from অপু তানভীর

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

About অপু তানভীর

আমি অতি ভাল একজন ছেলে।

View all posts by অপু তানভীর →