পেত্নী ও প্রেমিকা

oputanvir
4.3
(41)

-তো আপনি আমাকে বিয়ে করতে চান না?

-চাই না সেই কথা তো বলি নি ।

-তাহলে?

-বলেছি আমাদের ভেতরে বিয়ে হবে না ।

-আপনি রাজি আপনার বাবা মা রাজি আমার বাবা মাও রাজি । ধরেন আমিও যদি রাজি হই তাহলে কেন বিয়ে হবে না শুনি?

নিধির এই কথা শুনে অর্ক হাসল একটু । ছোট বাচ্চাদের কথা শুনে যেমন বড়রা তেমন হাসে ঠিক তেমন ভাবে হাসল । নিধির কেন জানি মনে হল ছেলেটা ওকে ঠিক পছন্দ করছে না । হয়তো বাবা মায়ের কারণেই এখানে সে এসেছে । নিধিও ঠিক এই কারণেই আজকে অর্কের সাথে দেখা করতে এসেছে । ওর নিজের বিয়ে করার কোন ইচ্ছে নেই এখন। কিন্তু বাবার কথা কোন ভাবেই এড়ানো যায় নি । 

অর্ক বলল, তারপরেও হবে না?

-কেন হবে না?

-সে হতে দিবে না ।

-কে?

-যদি বলি পেত্নী। বিশ্বাস করবেন?

নিধি এবার হেসে ফেলল । বেশ কিছু সময় হাসল খুব। তারপর বলল, মানে আপনি বলতে চাচ্ছেন আপনার সাথে জ্বীন আছে । সেই জ্বীন আপনাকে অন্য কারো সাথে বিয়ে হতে দিবে না?

-অনেকটা এমনই ব্যাপারটা।

-এই ২০২৪ সালে এসেও আপনি এমন কথা বিশ্বাস করতে বলেন?

-কেন জ্বীনে আপনি বিশ্বাস করেন না ।

-আমি যেহেতু উপরওয়ালাতে বিশ্বাস করি সেই হিসাবে জ্বীনেও বিশ্বাস করি । কিন্তু জ্বীন মানুষ জনের উপরে ভর করে এই জিনিসে আমি বিশ্বাস করি না । ওদের ও খেয়ে দেয়ে কাজ নেই । আমি আজ পর্যন্ত এমন কোন মানুষ দেখি নি সে নিজে বলেছে সে নিজের চোখের জ্বীন দেখেছে। সবাই বলে যে ওমুকের মুখে শোনা তমুক দেখেছে । 

-তার মানে আপনি বলতে চান যে এই এতো এতো মানুষ ভয় পায় সব মিথ্যা?

-মিথ্যা বলছি না । ওগুলো ওরা ভয় পায় । কিছু আছে মানসিক রোগ আর কিছু আছে বিশ্বাস । যদি সঠিক ভাবে কারণ খুজতো তাহলে এই সব বয় চলে যেত !

ছেলেটা আরও কিছু বলতে যাচ্ছিল তবে বলল না ।  নিধি বলল, আচ্ছা আপনার পরীতে ধরার কাহিনী বলেন দেখি।

-এই না বললেন আপনি এসবে বিশ্বাস করেন না?

-তাতে কী ! গল্পতো পছন্দ করি । বলুন বলুন শুনি আপনার পরীর গল্প !

-ওটা কোন পরী না । পেত্নী বলতে পারেন।

-সবই জ্বীন । ভিন্ন ভিন্ন রূপে । যাই হোক বলুন দেখি । কবে থেকে এই পরী আপনার সাথে আছে?

অর্ক কী যেন ভাবল । তারপর বলল, প্রায় চার পাঁচ বছর ।

-ভয় দেখায় আপনাকে?

-নাহ । আগে ভয় লাগতো । তবে এখন  সয়ে গেছে । আর সে আমার কোন ক্ষতি করে না । তবে আমার ক্ষতি কিংবা আমাকে কেউ বিয়ে করতে চাইলে তাকে ভয় দেখায় । আমার আগে একটা প্রেমিকা ছিল । মানে সে আসার আগেই । এই প্রেমিকাকে সে ভয় দেখিয়েই দূর করেছে। 

-রিয়্যালি?

-হুম । এখন মিতু আমাকে দেখলে দৌড়ে পালায় । আমার আশে পাশে পর্যন্ত আসতে চায় না । 

-এতো ভয়ংকর অবস্থা?

অর্ক হাসল । মেয়েটা যে সবের কিছুই বিশ্বাস করছে না সেটা সে তার মুখের ভাব দেখেই বুঝতে পারছে। এই কথা আসলে কেউই প্রথমে বিশ্বাস করে না । তবে একটা সময়ে সবাই বিশ্বাস করে । অর্ক জানে নিধি নামের এই মেয়েটাও এক সময়ে ঠিকই বিশ্বাস করবে। 

নিধি আবার বলল, এই আমি আপনার সাথে কথা বলছি, আমার কাছেও কি আসবে?

-না । অন্তত যত সময় আপনি আমাকে মারতে না আসছেন এবং আমাকে বিয়ে না করতে যাচ্ছেন তত সময়ে আপনার কোন ভয় নেই। 

-তা কিভাবে সে আপনার কাছে এল ?

-আসে নি । আমি তাকে ডেকে নিয়ে এসেছি।

নিধি একটু কৌতুহল নিয়ে তাকাল । ডেকে নিয়ে এসেছেন?

-হুম । 

-কিভাবে?

-প্লানচেট!

নিধি কিছু বলল না । অর্ক বলল, আমার আসলে এই ব্যাপারে অনেক আগ্রহ ছিল । সেই ছোট বেলা থেকেই। তারপর একদিন আমি প্লানচেট শুরু করলাম । প্রথম কয়েকদিন কিছুই হল না । এক সময়ে হাল ছেড়েও দিয়েছিলাম ।

-তারপর?

-তারপর আবারও শুরু করেছিলাম । বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে একজনের সাথে পরিচয় হয়েছিল। আমরা তখন দুইজন মিলে এই কাজটা শুরু করলাম । 

-সফল হলেন কবে?

-পড়াশোনার শেষের দিকে । সেদিন আমরা আলাদা কিছু করি নি। আমরা প্রতিদিন যেমনটা করতাম সেদিনও ঠিক একই কাজটা করেছিলাম । এবং সেদিন সে এসেছিল। 

-তারপর কী হলো? 

-কী আর হবে! আমরা ডাকলাম এবং সে এলো! আমরা এমন একজন ডাক দিয়েছিলাম যে কয়েকদিন আগেই মারা গিয়েছিল! এবং সে আমাদের পরিচিত একজন ছিল! কয়েকদিন আগে মেয়েটি মারা গিয়েছিল । সে আমাদের ক্লাসেই পড়তো! বেশি লাজুক চুপচাপ ছিল সে ! আমি তাকে ডাকতে লাগলাম। 

অর্ক থামল । কিছু সময় কাঁচের দেয়াল দিয়ে সে বাইরে তাকিয়ে রইল। তারপর আবার যেন বাস্তবে ফিরে এল। বলল, 

-হঠাৎ আমাদের ঘরে যে মোমবাতিগুলো ছিল, সেসব ধপ করে নিয়ে গেল। তারপর একেবারে সবকিছু অন্ধকার হয়ে গেল। একেবারে নিশ্চুপ যেন । আপনি জানেন যে ঢাকা শহরে কখনই কিছু নিশ্চুপ হয় না । কিন্তু সেবার আমাদের মনে হয়েছিল যেন আমরা কবরের ভেতরে চলে এসেছি। একেবারে সব নিশ্চুপ । আমি আর আমার সেই বন্ধু অনুভব করতে পারছিলাম সে আমাদের ঘরের ভিতরে কিছু না কিছু হাঁটাচাড়া করছে। এবার সেই বন্ধুটি ভয় পেয়ে ছুটে দরজার খুলে বাইরে চলে গেল। তবে আমি কেন জানি বাডইরে যেতে পারলাম না। সেই ঘরের মধ্যে পড়ে রইলাম। আমি ঠিক ঠিক সেই অশরীরির অস্তিত্ব অনুভব করতে পারছিলাম একেবারে পরিস্কার । আমার চারিপাশে সে হাটাচলা করছিল। আমার পুরো শরীর যেন ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছিলো ।

নিধি দেখতে পেল এই টুকু বলতেই অর্কের পুরো মুখের ভাব কেমন যেন বদলে গেছে । যেন সে সত্যিই সেই অভিজ্ঞতা অনুভব করতে পারছে। নিধির কাছে মনে হল যে অর্ক যা বলছে তা সত্যি । অন্তত তারা যে প্লানচেট করেছিল এবং সেখান থেকে ভয় পেয়েছে এটা সত্যি । হয়তো অর্ক যা বলছে তার পেছনে অন্য কোন ব্যাখ্যা আছে । এই সব করার সময়ে মানুষের মন এমনিতেই দুর্বল থাকে। সেই হিসাবে অনেক কিছুই সে অন্য ভাবে দেখে । এই কারণে মনে বিশ্বাস জন্মে যে সে ভুত এসেছে । অর্ক বলে চলল,

-এক সময় অজ্ঞান হয়ে গেলাম। কখন যে ঘুম ভেঙেছিল সেটা ঠিক মনে নেই। কেমন একটা ঘোর লাগা সময়ের ভিতরে চলে গিয়েছিলাম। তবে একসময় আবার সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যায।

-কখন বুঝলেন যে আপনার পেছনে পরী লেগেছে?  

-যদিও আমার মনে হতো যে কেউ না কেউ আমাকে ফলো করছে। কিংবা কেউ যদি আপনার উপরে চোখ রাখে একটা অদ্ভুত অনুভূতি হয় না ঠিক তেমন সব সময় সবসময় আমার সাথে ছিল। হ্যাঁ, দিনের বেলার থেকে রাতের বেলাতে বেশি মনে হতো।

-কখন দেখলেন তাকে? 

-আরও মাসখানেক পরে এবং ঠিক দেখিনি, অনুভব করছি, বুঝতে পারলাম। তারপর থেকে সে আছে আমার সাথেই আছে। ক্ষতি করে না। আমাকে ভয় দেখায় না তবে আমার আশেপাশের মেয়েদের গুলোকে, মানে যারা আমার সাথে প্রেম করতে চায় বা আমাকে বিয়ে করতে চায় এমন মানুষকে ভয় দেখায়। যারা আমার ক্ষতি করতে চায় তাদেরকেও ভয় দেখায়।

নিধি এক সময় বলল, আপনার গল্পটা বেশি ইন্টারেস্টিং। তবে আমার মনে হয় আপনার পেত্নী প্রেমিকের সাথে দেখা হবে না। কারণ আমি তো আর আপনাকে বিয়ে করতে চাচ্ছি না। আসলে আমি এখন বিয়ে করতে চাই না। তার মানে এই না যে আমি বিয়ে করতে চাই না । তবে এখনা । কিন্তু বাবা এই সহজ কথাটাই বুঝতে চান না।

তারপর অর্কের কাছে একটু মাথাটা সরিয়ে এনে বলল, শুনুন, পরে যখন বিয়ে করতে চাইব সেই সময়েও যদি মানে সেই সময় পর্যন্ত যদি আপনার পেত্নী প্রেমিকা অন্য কোন মেয়েকে আপনার ধারে কাছে ফিরতে না দেয় তাহলে চান্স নেব একটা । আপনার ফোন নম্বরটা আমি সেভ করে রাখলাম । সেই সময়ে আমি আপনাকে নক দিব।

অর্ক হাসলো। তারপর বলল, তাহলে মনে হচ্ছে চান্স এখনো আছে। আমাদের বিয়ে হওয়ার একটা চান্স আসছে এখনও। 

নিধিও হাসলো । তারপর দুজন নিজেদের বাসার দিকে চলে গেল।

দুই

রাতের বেলা খাওয়া দাওয়া শেষে নিধি একটু দ্রুতই ঘুমোতে গেল। আসলে পরদিন জরুরী রিপোর্ট সাবমিট করতে হতো এই কারণে একটু জলদি জলদি দ্রুত শুয়ে পড়ল। সকালে দ্রুত উঠতে হবে। এছাড়া আরো একটা কারণ হচ্ছে সে তার বাবার সাথে বিয়ে কথা বলতে চাইছে না। এই কারণেই দ্রুত শুয়ে পড়ল। 

তবে সে জানতো না তার জন্য রাতে অন্য কিছু অপেক্ষা করছে।

রাত তখন দুইটা কিংবা আরেকটু বেশি বেশি বাজে । ঘড়ির দিকে নিধি তাকায় নি। নিধির ঘুম ভেঙে গেল। নিধির মনে হল যেন নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। নিঃশ্বাস নিতে পারছে না। যখন ওর ঘুম ভাঙলো তখনই ব্যাপারটা ওর কাছে পরিষ্কার হয়ে গেল। ও এত সময় স্বপ্ন দেখছিল। কিন্তু এত স্পষ্ট স্বপ্ন এর আগে সে কখনো দেখেনি। স্বপ্নে একটা মেয়ে গলা চেপে ধরেছিল। গলাচিপে ধরে বলেছিল, খবরদার অর্কের ধারে গেছে গেলে, তোকে মেরে ফেলবো। একেবারে মেরে ফেলবো। 

প্রথমটা বুঝতেই পারেনি ব্যাপারটা। তখন নিধির প্রথম এবং প্রধান লক্ষ্যই ছিল নিজের জান বাঁচানো। সে নিজের হাত দিয়ে তার হাতটা ছাড়ানোর চেষ্টা করছিল। একটা সময় যখন না পেরে অজ্ঞান হয়ে গেল, তখনই তার ঘুমটা ভেঙে গেল। নিধি ঘুম ভাঙ্গার পরে পুরোটা রাত আর ঘুমালো না । ওর কেবলই মনে হচ্ছিল চোখ বন্ধ করলেই আবার সে একই স্বপ্ন দেখবে। আর সে আসবে তারপর তার গলা চেপে ধরবে। যখন সকাল হলো তখন নিধির মনের ভিতর অদ্ভুত একটা চিন্তায় হাজিয়ে হলো। অদ্ভুত এই চিন্তা এসে হাজির হলো কেন সেটা সে নিজেও জানেনা। কিন্তু মনের ভেতর থেকে সে এই চিন্তাটা কোনভাবেই বের বের করতে পারলো না। বারবার মনে হল এই কাজটাই তাই করতে হবে। এবং যেকোনো ভাবে করতেই হবে। 

তিন

-কেমন আছেন? 

একটু অবাক হল অর্ক। নিধিকে সে আজকে এখানে আশা করে নি। আজকে সরাসরি ওর অফিসে এসে হাজির হয়েছে মেয়েটা। এখন বাজে মাত্র দশটা। এক ঘণ্টা আগেই সে অফিসে এসেছে। তারপরেই পিয়ন এসে জানালো যে একজন তার সাথে দেখা করতে এসেছে। 

কে আসতে পারে সেটাই ভাবছিল। প্রথমে ভেবেছিল হয়তো অফিসের কেউ। কিন্তু গত কালকেই নিধির সাথে দেখা হল। তখন মনে হয় নি যে মেয়েটার সাথে আবারও দেখা হবে। রাতে কী এমন ঘটল ! কী কারন সেটা অর্ক জানে না। অবশ্য এতকিছু ভাবলো না। হয়তো কালকে বাসায় কোন সমস্যা হয়েছে। কিংবা বাবা বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে। এটা নিয়ে কথা বলতে এসেছে । 

নিধিকে নিজের কেবিনে নিয়ে আসলো। বসতে বসতে বলল, কফি নাকি চা? 

নিধি বলল, চা কফি কিছু খাব না।

-তাহলে অন্য কিছু খান। 

-না এখন কিছু খাব না। সকালের নাস্তা করেই বের হয়েছি। একটা জরুরী কথা বলার জন্য এসেছি।

-জি বলুন কী কথা? 

-আসলে আজকে আমার একটা রিপোর্ট আমাদের কথা ছিল। এইতো আর ঘন্টাখানেক পরেঅ।

-আচ্ছা! 

-মানে আমি ওইখানে  আপনার কাছে এসেছি খুব জরূরী বলতে! 

-জি বলুন ! 

-জরুরি ব্যাপারটা হচ্ছে, আপনার পেত্নী প্রেমিকা গতকাল রাতে আমার বাসায় এসেছিল। 

-কি? 

-হ্যাঁ স্বপ্নে ! আমি যতদূর বুঝতে পারছি তার স্বপ্নে এসেই ভয় দেখানোর ক্ষমতা আছে। বাস্তবে আসতে পারে না। সে বাস্তবে আসতে পারে না। 

-ওকে! এটাই কি আপনার জরুরী কথা?

-জিনা! এটা জরুরী কথা না। 

-তাহলে জরুরি কথাটা কী? 

-জরুরী কথাটা হচ্ছে সে আমাকে হুমকি দিয়েছে!

-ওকে!

-এবং  ….এবং… এবং এটাই আমার সহ্য হচ্ছে না। মানুষ হোক কিংবা পেত্নী আমাকে কেউ বলবে না আমাকে কি করতে হবে! কেউ বলবেনা, কোন অপরিচিত পেত্নি তো বলবেন না! 

অর্ক কিছুই বুঝতে পারছিল না। কেবল অবাক হয়ে কিছু সময় নিধির দিকে তাকিয়ে রইল। মেয়েটা আসলে কী বলতে চাচ্ছে? 

নিধি বলল, আমি ঠিক করছি আপনাকে বিয়ে করব এবং এখনই!

-কী? কী বলছেন? 

-হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন! আমি আপনাকেই বিয়ে করবো! 

-এখনই না মানে হঠাৎ করে? না মানে হঠাৎ এভাবে বিয়ে করা যায় নাকি!

-আপনার তো সে প্রেমিকা না, তাই না?

-না না সেইটা না! 

-তার প্রতি তো কোন প্রেম ভালোবাসা নেই? 

-অবশ্যই নেই! 

-গুড, চলুন এখন বিয়ে করে ফেলি! 

-না মানে, …….. 

-কোন মানে না। আপনার বাসায় রাজি। আমার বাসায় রাজি। আপনার অমত নেই, আমিও বিয়ে করতে চাচ্ছি তাহলে আটকানোটার মানে আছে কি?

-না একটু অবাক হচ্ছি আপনার সাহস দেখে!

-এখানে সাহসের কিছু নেই! এখন চলুন দেখি কিভাবে আপনার পেত্নী প্রেমিকা আমাকে আটকায়! সে আমাদের বিয়ে আটকায় সেটা আমি দেখতে চাই।

সত্যি সত্যি অর্ক আর নিধি বিয়ে করে ফেলল তখনই। অফিস থেকে বের হয়ে সোজা গিয়ে হাজির মগবাজার কাজী অফিসে। সেখানেই ওরা বিয়ে করে ফেলল। বাসায় যখন ফোন করে জানালো তখন দুই বাসাতেই অবাক হল একটু । নিধি ওর বাবকে বলল যে অনুষ্ঠান পরে করুক । তবে এখনই সে করবে। কারো কথা শুনবে না ! তা করেও ফেলল ! 

কাজী অফিসে যাওয়ার পরে যদিও অর্কের মনে হচ্ছিল কোন কারনে হয়তো বিয়েটা হবে না। তবে হল কোন ঝামেলা ছাড়াই!

পরিশিষ্ট

নিধির মনের ভেতরে একটা অস্বতির অনুভূতি এসে জড় হয়েছে । সে বুঝতে পারছে সে আবারও স্বপ্ন দেখছে । স্বপ্নে সেই পেত্নী আবারও এসে হাজির হয়েছে । তবে এইবার সে নিধির গলা চেপে ধরে নি । সামনে দাড়িয়েছে । নিধি একটু দেখার চেষ্টা করল । স্বপ্নের ভেতরেই নিজেকে বোঝানোর চেষতা করলো যে কোন ভয় নেই । দরকার হলে সেও পেত্নীর গলা চেপে ধরবে! এটা তার স্বপ্ন । 

তবে আজকে তেমন কিছু হল না।

বরং তার বদলে সে নিধির দিকে তাকিয়েই রইল। নিধির মন থেকে হঠাৎ ভয়টা চলে গেল । মনে হল যেন মেয়েটা মানে পেত্নীটা ওকে কোন ক্ষতি করবে না । 

তখনই দেখল মেয়েটার মুখে এক চিলতে হাসি । সে নিধির দিএক তাকিয়ে একটু হাসল কেবল । তারপর ধীরে ধীরে সে দুরে চলে গেল । একেবারে মিলিয়ে গেল যখন তখন নিধির ঘুমটা ভেঙ্গে গেল । 

চোখ মেলে তাকালো নিধি !

পাশ ফিরে তাকিয়ে দেখল অর্ক একেবারে ওর শরীর ঘেষেই শুয়ে আছে । অর্কের মুখের দিকে তাকিয়ে সে কিছু সময় ভাবল মেয়েটার কথা ! মেয়েটা ওভাবে হাসল কেন? আর এভাবে চলে গেল কেন?

অর্ক যদিও প্রথম প্রথম ওকে নিয়ে চিন্তা করত। বিশেষ করে প্রতিদিন ঘুম ভাঙ্গার পরেই জানতে চাইতো যে স্বপ্নে সে এসেছিল কিনা ! 

নিধির কেন জানি মনে হল যে মেয়েটা আর কখনই আসবে না ।

কিন্তু কেনই বা সে অর্কের পেছনে পড়েছিল? কেন অন্য মেয়েদেরকে অর্কের কাছে আসতে দিত না আর নিধির ক্ষেত্রেই বা কেন আসতে দিল? কেন এভাবে মেনে নিল?

প্রিয় পাঠক কোণ ব্যাখ্যা আছে কি আপনাদের কাছে?

কমেন্ট সেকশনে জানান দেখি ।

আমার অনুবাদ কৃত একটা বই বের হচ্ছে । প্রি-অর্ডার করুন এই স্থান থেকে

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 4.3 / 5. Vote count: 41

No votes so far! Be the first to rate this post.

About অপু তানভীর

আমি অতি ভাল একজন ছেলে।

View all posts by অপু তানভীর →