মায়া নেকড়ে (সমাপ্তি)

4.7
(36)

কালো জোব্বা পরা লোকটা আমার দিকে কিছুক্ষণ একভাবে তাকিয়ে রইল। চোখের দৃষ্টি এতটাই কঠিন আর তীক্ষ্ণ যে আমার বুকের ভেতরটা কেমন যেন কাঁপতে শুরু করল। আমি যখন নিজের চোখ সরিয়ে নিতে চাইলাম, তখন অবাক হয়ে খেয়াল করলাম যে আমি সেটা পারছি না। আমাকে বাধ্য হয়ে লোকটার দিকে তাকিয়ে থাকতে হলো।

তবে একটা সময় খেয়াল করলাম যে লোকটার দৃষ্টি নমনীয় হয়ে এসেছে। তখন আমি সাথে সাথে চোখ সরিয়ে নিলাম। সে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, “ওটা কি প্রতিদিন আসে?”

‘ওটা’ বলতে আসলে লোকটা যে কাকে বোঝাচ্ছে সেটা আমি পরিষ্কার বুঝতে পারলাম। তবে সেটা মুখে প্রকাশ না করে বললাম, “কোনটার কথা বলছেন?”

আমার এই ছেলে মানুষী দেখে লোকটা যেন মজা পেল। তারপর বলল, “তুই খুব ভাল করেই জানিস আমি কোনটার কথা বলছি। আমি জানি ওটাকে তুই মুক্ত করেছিস। তবে এতে তোর কোনো দোষ আমি দেখি না। তোকে কেউ সাবধান করেনি। তুই কিভাবে জানবি! তবে ওটা যতদিন মুক্ত থাকবে, এই এলাকার মানুষের জন্য ততই বিপদ বাড়বে। আর তোর বিপদ সবচেয়ে বেশি!”

“আমার বিপদ!”

আমি খানিকটা অবাক হয়েই তাকালাম তান্ত্রিকের দিকে। আমার কাছে প্রায় প্রতিদিনই সেই সাদা নেকড়েটা এসেছে। আমার কখনই মনে হয়নি যে আমি বিপদে আছি। বরং একটা পোষা প্রাণী যেমনভাবে তার মালিকের আশেপাশে থাকে, আমার নিজেরও ঠিক তেমনই মনে হয়েছে প্রতিবার। প্রতিবার আমার শরীর ঘেঁষে যখন ওটা হাঁটাচলা করে, তখন আমার মনে অদ্ভুত এক মায়া জন্মে। ওটাকে যখন আদর করি, তখন আনন্দে তার চোখে বুঝে যাই। আমি শুনেছি, নেকড়ে নাকি কখনও পোষ মানে না, তবে আমার নিজের কাছে সেটা মোটেই মনে হয়নি এই কয় দিনে!

তান্ত্রিক যেন আমার মনের কথাই বুঝতে পারল। সে বলল, “তোর কাছে এসব ঠিক বিশ্বাস হচ্ছে না, কারণ তুই ওর মায়ায় পড়েছিস। মায়া কেটে গেলেই সব কিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে। আয় এদিকে আয়!”

আমি কিছু বলার আগেই দেখলাম তান্ত্রিক আমার হাত চেপে ধরল। আমি প্রথমে কিছু বুঝতে না পারলেও কিছুক্ষণ পরেই অনুভব করলাম যে তান্ত্রিক যেখানে আমার হাত ধরেছে, সেখানে গরম হয়ে উঠছে। একটা সময় আমার মনে হলো আমার হাত পুড়ে যাবে। আমি নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলাম কিন্তু অবাক হয়ে খেয়াল করলাম যে আমার শক্তিতে আমি কিছুতেই লোকটার সাথে পেরে উঠলাম না। এই চিকন লোকটার গায়ে এত শক্তি থাকতে পারে সেটা আমি ভাবতেও পারিনি। একটা সময়ে যখন আমার মনে হলো যে আমার হাত একেবারে পুড়ে যাবে, তখন তান্ত্রিক লোকটা আমার হাত ছেড়ে দিল এবং আমি দ্রুত আমার নিজের হাতের দিকে তাকালাম। ভেবেছিলাম সেখানে আমি পোড়া মাংস দেখব, কিন্তু অবাক হয়ে দেখলাম যে সেখানে কোনো ব্যথা নেই, কোনো পোড়া অংশও নেই। সব স্বাভাবিক। এমনকি আমি নিজের হাতে কোনো ব্যথাও অনুভব করলাম না। সব কিছু আমার কাছে একেবারে স্বাভাবিক মনে হলো। অথচ একটু আগেই আমার মনে হচ্ছিল যেন আমার হাত পুড়ে গেছে একেবারে!

আমি আবার তান্ত্রিকের দিকে ফিরে তাকাতেই দেখলাম সে আমার দিকে কৌতুকের চোখে তাকিয়ে রয়েছে। বড়রা বাচ্চাদের ম্যাজিক ট্রিক দেখিয়ে যেমন মজা পায়, ঠিক তেমন একটা চেহারা দেখতে পেলাম তার চোখে। সে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, “এবার তুই মুক্ত। আর চিন্তা নেই। রাতে বাইরে বের হবি না, খবরদার। অবশ্য ওটা আর তোর কাছে আসতে পারবে না।”

তান্ত্রিক আর আমার সামনে দাঁড়িয়ে রইল না। দেখলাম সে চলে গেল। আমি নিজের কাজে মন দিতে চাইলাম বটে, তবে কাজ হলো না। ঘুরে ফিরে আমার কেবল ঐ নেকড়ের কথাই মনে হতে লাগল। আজকে কি আসবে না ওটা? আর আসলে কি আমার কাছে আসতে পারবে না?

সত্যি সত্যি রাতের বেলা সেটা এল না। আমার মনটা একটু খারাপই হলো। প্রতিদিনের একটা অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল। ওটার সাথে বনের ভেতরে ঘুরে বেড়াতাম। এই বনের এমন সব জায়গায় যেতাম, যেখানে আমি দিনের বেলাতেও যেতে পারতাম না। রাতের বেলা হাঁটতে আমার বেশ চমৎকার লাগত। নিজের কাছেই খুব শান্ত আর মুক্ত লাগত। এত চমৎকার লাগত যে বলে বোঝানো যাবে না। আর সাথে ও নেকড়েটা থাকার কারণে আমার কেন জানি নিজেকে মোটেই অনিরাপদ মনে হত না। মনে হত যে এটা আমাকে ঠিকই নিরাপদে রাখবে!

পরের দিন সকালে ভয়ংকর এক সংবাদ পেলাম। রফিক মিয়া এসে জানাল যে সে চাকরি ছেড়ে দেবে। আমি অবাক হয়ে বললাম, “সেকি কেন?”

রফিক মিয়া জানাল যে কেবল সে না, এই গ্রামে যতজন গার্ড রয়েছে তারা সবাই চাকরি ছেড়ে দেবে। তারা আর এখানে থাকবে না। এখানে থাকলে নাকি সবাই মারা পড়বে! ঐ তান্ত্রিক নাকি গতকাল রাতে মারা গেছে। একমাত্র সে-ই ছিল যে ওদের বাঁচাতে পারত। সে যখন পারেনি, তখন আর কেউ পারবে না। একে একে সবাই মারা পড়বে। গ্রামের লোকজন নাকি গ্রাম ছেড়ে পালাচ্ছে।

আমি বেশ চিন্তায় পড়লাম। যদি সবাই চলে যায় তাহলে আমি বিপদে পড়ে যাব। এই এত বড় ফরেস্ট এরিয়া গার্ডদের ছাড়া দেখে শুনে রাখা মোটেই সম্ভব না। তাহলে এখন উপায় কি?

দুই দিন পর রাতের বেলা আমি একা একা বাংলোয় শুয়ে আছি। গতকালই হেড অফিসে সংবাদ পাঠিয়েছি। জানিয়েছি যে এখানে বন্য প্রাণীর ভয়ে মানুষজন গ্রাম ছেড়ে পালাচ্ছে। পুলিশও এখানে আসছে না। তাদের নাকি আরও অনেক কাজ রয়েছে। তারা জানিয়েছে যে কোনোভাবে সামলে নিতে। সব ব্যবস্থা নিতে নাকি সপ্তাহ খানেক সময় লাগবে!

আমি এই সময়ে কী করব সেটা বুঝতে পারছিলাম না। একবার মনে হলো এখান থেকে চলে যাই সদরে। ওখানে গিয়েই ক’দিন থেকে আসি। এখানে কেউ নেই, সেই হিসাবে বন থেকে কাঠ চুরির কোনো ভয় নেই। বন নিরাপদই থাকবে।

রাতে ঠিক সেই একই ভাবে আমার ঘুম ভেঙে গেল। আমি অভ্যাস মত বাংলোর বাইরে বের হয়ে এলাম। আমি ভেবেছিলাম সেই সাদা নেকড়েটাকেই দেখতে পাব, তবে আজকে আমি সেটাকে দেখলাম না। তার বদলে দেখতে পেলাম সে ছোট নেকড়েটাকে, যেটা আমাকে প্রথম দিন পথ দেখিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। আজকেও দেখতে পেলাম সেটা একইভাবে আমার দিকে তাকিয়ে রয়েছে। তারপর সেদিনের মত একটু এগিয়ে যাচ্ছে, আবার থামছে। স্পষ্টই আমাকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে।

আমার মনের ভেতরে দ্বিধা দেখা দিল। একবার মনে হলো আজকে আমার যাওয়া মানেই বিপদে পড়া। যাওয়ার কোনো দরকার নেই। দরজা বন্ধ করে বসে থাকি। আবার অন্যদিকে মনের ভেতরে যাওয়ার জন্য একটা তীব্র আকুতি অনুভব করলাম। আমার কাছে মনে হলো যে আমাকে ওটাকে আরেকবার দেখতে হবে। ঘরের ভেতর থেকে টর্চটা হাতে নিলাম, তারপর জুতো পায়ে দিয়েই বের হয়ে এলাম। দরজাটা আটকানোর খুব একটা দরকার মনে করলাম না। এ তল্লাটে এখন কেউ নেই যে ঘরে ঢুকে চুরি করবে।

আমি নেকড়ের পেছনে ছুটে চললাম। কতক্ষণ যে চলেছিলাম সেটার হিসাব আমার নিজেরও নেই। কেবল সামনের দিকে এগিয়েই চলেছি। তারপর সেদিনের সেই গুহার সামনে এসে হাজির হলাম। আজকে অবশ্য গুহার সামনে আমি নেকড়ের দল দেখতে পেলাম না। তবে গুহার ভেতর থেকে আমি আলোর একটা আভা দেখতে পেলাম। দ্রুত পায়ে সেদিকে পা বাড়ালাম।

গুহার মুখে যখন ঢুকলাম তখন তীব্র এক বিস্ময় আমাকে হতবাক করে দিল। আমি সেই সাদা নেকড়েটাকে দেখার আশা করেছিলাম। যদিও আমি এটা নিশ্চিত ছিলাম না যে আলো কিভাবে আসছে, তবে নেকড়াটাই আমি দেখতে পাব এটাই আশা করেছিলাম। কিন্তু আমি যা দেখতে পেলাম সেটা দেখার জন্য মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না।

আমি দেখতে পেলাম ছোট গুহার একপাশে আগুন জ্বলছে। আর আগুন থেকে একটু দূরে একটা ২০/২১ বছরের মেয়ে পড়ে রয়েছে। মেয়েটির শরীরের নানান স্থানে ক্ষত। মনে হচ্ছে যেন কারো সাথে লড়াই করেছে। মেয়েটা চোখ বন্ধ করে মাটিতে পড়ে আছে। এছাড়া মেয়েটির শরীরে কোনো পোশাক নেই। আমি এর আগে এভাবে সরাসরি কোনো নগ্ন মেয়ে দেখি নি। ক্ষত সত্ত্বেও মেয়েটির রূপ, দেহ, আয়বয় আমাকে যেন একেবারে পাগল করে দিল।

আমি এক পা এগিয়ে যেতেই মেয়েটি চোখ মেলে তাকাল। সেখানে আমি তীব্র হিংস্র এক ভাব দেখতে পেলাম। তবে আমার দিকে তাকাতেই দেখলাম সেটা কমে এলো। আমার দিকে তাকিয়ে যেন হাসল একটু। আমি আরও কাছে গেলাম। দেখলাম মেয়েটির শরীরে বেশ কিছু ক্ষতের দাগ। আমি হাঁটু গেড়ে বসলাম। মেয়েটির পুরো শরীরে যেন রূপের আগুন জ্বলছে। এই শরীর থেকে চোখ সরানো মুশকিল। আমি যেন মন্ত্রমুগ্ধের মত সেদিকেই তাকিয়ে রইলাম। আর একটু কাছে যেতেই আমি সে পরিচিত গন্ধটা পেলাম যেটা আমি সে নেকড়ের শরীর থেকে পেতাম। মেয়েটি যখন আমার চোখের দিকে তাকাল, আমি সেই পরিচিত নীল চোখ দেখতে পেলাম।

আমার মস্তিষ্কের একটা অংশ কিছুতেই এটা মানতে চাইছিল না যে এই মেয়েটা আসলে ঐ নেকড়েটা। কোনোভাবেই এটা হতে পারে না। এটা আসলে সম্ভবই না। কিন্তু মস্তিষ্কের আরেকটা অংশ বলছিল যে আমি যা ভাবছি আসলে সেটাই সত্য। আরও একটা ব্যাপার আমাকে ব্যাপারটা মানতে বাধ্য করল। মেয়েটার গলাতে ঠিক সেই লোহার বেড়ি দেখতে পেলাম, যেটা ঐ নেকড়ের গলাতে ছিল।

আমি মেয়েটির পাশে গিয়ে বসলাম। তখনও একভাবে তাকিয়েই রয়েছি মেয়েটির দিকে। কিছুতেই ওর কাছ থেকে চোখ সরাতে পারছি না। দেখলাম মেয়েটি উঠে বসল। তারপর আস্তে আস্তে আমার একদম কাছে এগিয়ে এলো। আমার কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলল, “আমি জানতাম তুমি আসবে! তোমার জন্যই আমি অপেক্ষা করছিলাম।”

তারপর আলতো করে আমার গালে একটা চুমু খেল। এরপরের চুমুটা এল আমার ঠোঁটের উপর। আমার হাত থেকে টর্চ লাইটটা পড়ে গেল। আমি নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ একেবারে হারিয়ে ফেললাম।

কতক্ষণ যে আমাদের এই আদিম খেলা চলল আমি জানি না। আমার কেবল মনে হলো যে জীবনের শ্রেষ্ঠ সুখের মুহূর্তে আমি রয়েছি।

যখন ঘুম ভাঙল, তখন দেখি আমি সেই গুহার মেঝেতে পড়ে আছি। চারিদিক আলো থইথই করছে। মানে সকাল হয়ে গেছে। আমার টর্চটা পড়ে আছে একপাশে। আগুন যেখানে জ্বালানো হয়েছিল, সেখানে কিছু কয়লা পড়ে আছে। আর একটা জিনিস পড়ে আছে আমার পাশে।

সেই লোহার বেড়িটা। আমি টর্চ আর লোহার বেড়িটা নিয়েই বাইরে বের হয়ে এলাম। বাইরে কাউকে দেখলাম না। সেই মেয়েটি নেই। আর কোনো নেকড়েও নেই। আমি ফিরে যাওয়ার জন্য হাঁটতে শুরু করলাম। যদিও আমি ঠিকমতো রাস্তা চিনি না, তারপরেও রাস্তা চলতে শুরু করলাম। কেন জানি মনে হলো যে আমি ঠিক ঠিক রাস্তা চিনে চলে যেতে পারব। গতরাতে আমি যে পথে এখানে এসেছি, সেই পথেই আমি এগিয়ে চললাম। আমার কাছে অবাক করার ব্যাপার মনে হলো যে আমি সত্যিই সেই রাস্তা মনে করতে পারছি।

ঘন্টা খানেকের মধ্যে আমি আমার বাংলোর সামনে এসে হাজির হলাম। কিভাবে আমি ফিরে এলাম, নিজেই ঠিক বুঝতে পারলাম না। আমার কাছে মনে হলো যেন আমি গন্ধ শুকে শুকে চলে এসেছি এখানে।

কিন্তু আমার জন্য বিস্ময়ের আরও কিছু বাকি ছিল। আমি যখন নিজের বাংলোর বারান্দায় পা দিতে যাব, তখন দেখলাম সেই মেয়েটিকে। আমারই ঘর থেকে বের হয়ে এলো। আমার দিকে তাকিয়ে মোহনীয় কন্ঠে বলল, “এত সময় লাগল।”

মেয়েটির পরনে আমারই একটা টিশার্ট আর ট্রাউজার প্যান্ট।

মেয়েটি বলল, “তোমাকে সাথে করে নিয়ে আসতাম, তবে আমার পরনে কিছুই ছিল না। আমার খুব লজ্জা করত তাই আগে আগে চলে এসেছি। এসো।”

আমি বারান্দায় পা দিতেই মেয়েটি আবার বলল, “গ্রামের লোক সবাই আবার ফিরে আসবে।”

“আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।”

“বুঝবে। কেবল এটুকুই জেনে রাখো যে তুমি আমাকে মুক্ত করেছ। এমন একটা অভিশাপে আমি আটকে ছিলাম অনেক দিন। এখন আমি মুক্ত। তা কেবল তোমার জন্য। আমি আবারও স্বাধীনভাবে বনে চলাফেরা করতে পারব। তোমার জন্যই।”

সেদিন সন্ধ্যায় মেয়েটি আবারও ফিরে গেল জঙ্গলে। তারপর প্রায় সপ্তাহ খানেক কেটে গেল। হেড অফিস থেকে লোক এলো। বনের ভেতরে নেকড়ে হান্ট হলো তবে কাউকে পাওয়া গেল না। এবং তারপর দিনই গ্রামের লোকেরা ফিরে আসতে শুরু করল। রফিক মিয়া ফেরত এলো একদিন পরে। আমাদের কাজ আবারও আগের মতো শুরু হয়ে গেল।

পরে আমি রফিক মিয়ার কাছে শুনেছি যে অনেক আগে এক তান্ত্রিক নিজের স্বার্থের জন্য বনের এক দেবীকে বন্দী করেছিল নেকড়ের শরীরে । পরে সে নেকড়ে সে তান্ত্রিককেই হত্যা করে বনে ছড়িয়ে পড়ে । পরে তাকে অনেক কষ্টে বন্ধ করে রাখা হয় ঐ গুহাতে । তবে সেটাকে মুক্ত করার সাহস কারো ছিল না । সবার ভয় ছিল যে মুক্ত হলেই বুঝি দেবী প্রতিশোধ নিবে সবার উপরে । তবে দেবী মুক্তি পেয়ে তেমন কিছুই করে নি । সেদিন নাকি সবার স্বপ্নে সে দেখা দিয়ে নির্ভয়ে গ্রামে ফিরে আসতে বলেছিল । তাই সবাই আবার ফিরে এসেছে ।

সব কিছু আগের মতো চললেও একটা ব্যাপার নতুনভাবে ঘটতে শুরু করল আমার সাথে। প্রতিরাতে সে এসে হাজির হত আমার বাংলোর সামনে। সে আসলেই আমার ঘুম ভেঙে যেত। আমি আপনা আপনি বের হয়ে আসতাম বাংলো থেকে। বাংলোর বারান্দা থেকে একটু দূরেই তাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখতাম। অন্ধকারে তার মাতাল করা দেহের আকার আমাকে পাগল করে দিত! কখনও সে আসতে নেকড়ের রূপে আবার কখনও সে আসত দেবীর রূপে । আমি কেবল অপলক চোখে সেদিকে তাকিয়ে থাকতাম !

আগের পর্ব

ফেসবুকের অর্গানিক রিচ কমে যাওয়ার কারনে অনেক পোস্ট সবার হোম পেইজে যাচ্ছে না। সরাসরি গল্পের লিংক পেতে আমার হোয়াটসএপ বা টেলিগ্রামে যুক্ত হতে পারেন। এছাড়া যাদের এসব নেই তারা ফেসবুক ব্রডকাস্ট চ্যানেলেও জয়েন হতে পারেন।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 4.7 / 5. Vote count: 36

No votes so far! Be the first to rate this post.


Discover more from অপু তানভীর

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

About অপু তানভীর

আমি অতি ভাল একজন ছেলে।

View all posts by অপু তানভীর →