মিনাজ দরজার নবটা ধরে দাড়িয়ে রইলো । দরজাটা খুলতে ভয় পাচ্ছে । গতকাল যা দেখেছিলো আজকেও হয়তো সেটাই দেখতে পাবে । গতকালের ভয়ংকর দৃশ্য সে মোটেই দেখতে চায় না । কিন্তু জুইকে ওভাবে একা রেখে দরজার এই পাশে থাকতেও ওর ইচ্ছে করছে না । মিনাজ আস্তে আস্তে নবে চাপ দিল । দরজাটা খুলে গেল নিশব্দে ।
ঘরে কোন আলো নেই । তবে জানালা খোলা থাকার কারণে বাইরে থেকে চাঁদের আলো আসছে। মিনাজ ঘরের ভেতরটা পরিস্কার দেখতে পাচ্ছে । মিনাজের বুকের ভেতরটা ধক করে উঠলো । গতদিনের মতই আজও একটা তীব্র ভয়ের অনুভূতি হল মনের ভেতরে । তবে গতদিন যেমন করে পালিয়ে গিয়েছিলো নিজের ঘরে আজকে পালিয়ে গেল না । বরং দরজার সামনেই দাড়িয়ে রইলো কিছুটা সময় । নিজের প্রিয়তমা স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে রইলো একভাবে। আপনা আপনি চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে এল ।
আজকে অবশ্য আর গতদিনের মত ভয় পেল না সে । দরজা দিয়ে ভেতরে পা বাড়ালো । তখনও একই ভাবে জুইয়ের দেহটা ঘুরতেই । প্রথমবার দেখলে যে কারো মনে হবে যে জুই বুঝি ফ্যানের সাথে ঝুলে আছে । গতকাল যখন প্রথম জুইকে দেখে তখন সত্যিই মনে হয়েছিলো জুই বুঝি ফ্যানের সাথে দড়িয়ে ফাঁস নিয়েছে । কিন্তু তারপরেই ভুলটা ভাঙ্গলো ওর । জুই ঝুলে আছে সত্যিই তবে জুইয়ের গলাতে কিছু নেই । মানে হচ্ছে জুই অনেকটা শূন্যে ঝুলছে । ফ্যানটা ঘুরছে সাথে সাথে সেও ঘুরছে । এই দৃশ্য দেখার পরে মিনাজের পুরো শরীর জুড়ে একটা তীব্র ভয় খেলে গেল । সে ছুটে পালিয়ে গিয়েছিলো ।
ভোরের আযানের পরে যখন আবারও ফিরে গেল পাশের ঘরে তখন দেখলো জুই সেই খাটে ঘুমাচ্ছে । চারিদিকে কোন অস্বাভাবিকতা চিহ্ন পর্যন্ত নেই । শরীরে স্পর্শ করতেই চোখ মেলে তাকালো । তারপর মিনাজের দিকে তাকিয়ে বলল, আজকেও এখানে চলে এসেছি ?
মিনাজ বলল, মানে?
-মানে কিছুই বুঝতে পারছি না । কয়েক দিন ধরে খেয়াল করছি যে রাতে তোমার পাশে ঘুমালেও সকালে আমার এখানে ঘুম ভাঙ্গছে । এমনটা কেন হচ্ছে বুঝতে পারছি না । আমার কোন দিন স্লিপ ওয়াকিংয়ের অভ্যাস ছিল না । এমন কি রাতে আমি ওয়াশ রুমে যাওয়ার জন্যও জাগি না । কিন্তু কদিন থেকেই এমন হচ্ছে !
মিনাজ ভয়ে ভয়ে জানতে চাইলো কবে থেকে হচ্ছে এমন ?
-এই সপ্তাহ খানেক।
-রাতে কিভাবে আসো তারপর কি হয় কিছু মনে থাকে না?
-উহু । কিছু মনে থাকে না । ভোরের সময় ঘুম ভেঙ্গে যায় বলে আবার উঠে ওঘরে চলে যাই ।
মিনাজ বুঝতে পারলো এমন ঘটনা কেবল সেদিনই প্রথম না আরও ঘটছে । ও নিজে কেবল দেখতে পেল প্রথম । আরও একটা ব্যাপার বুঝতে পারলো যে যা হচ্ছে সেই রাতে যা ঘটুক না কেন সেটা জুইয়ের কিছু মনে নেই । ওর ধারণার বাইরে । কিন্তু যা হচ্ছে তো তা সত্য । হয়তো নিজেকে বুঝ দিতে পারতো এই বলে যে ও নিজে হয়তো ভুল দেখেছে কিংবা স্বপ্ন দেখেছে কিন্তু রাতে জুই এই ঘরে কিভাবে আসে?
আজকে যখন একই ঘটনা দেখলো তখন প্রথমে ভয় পেলো ঠিকই তবে গত রাতের মত পালিয়ে সে গেল না । জুইয়ের দিকে আস্তে আস্তে এগিয়ে গেল । জুই তখনও ফ্যানের সাথে অদৃশ্য দড়ির সাহায্য ঘুরেই চলেছে । মিনাজ কি করবে ঠিক বুঝতে পারলো না । ঘরের পরিবেশ কেমন যেন ওর কাছে একটু ভারী ভারী মনে হচ্ছে । একটা দম বন্ধ করা পরিবেশ । শান্তি লাগছে না । মিনাজ জুইয়ের শরীরে হাত রাখলো । আর তখনই যেন জুইয়ের শরীরটা ছেড়ে দিলো একেবারে । মিনাজের শরীরের টানটান ছিল বিধায় সে জুইকে ধরে ফেলল সাথে সাথেই । এবং একটু পরেই জুইয়ের ঘুম ভেঙ্গে গেল । সে চোখ মেলে মিনাজকে দেখে একটু অবাক হল । তারপর বলল, আজকেও এসেছি ?
-হুম ।
-তোমার মুখ এমন কেন লাগছে?
মিনাজ কি বলবে সেটা খুজে পেল না । তবে জুইকে কিছু বলতেও হল না । দুষ্চিন্তার ছাপ দেখেই জুই বুঝতে পারলো কিছু একটা অস্বাভাবিকত ব্যাপার ঘটেছে । ওর এখানে এই ঘরে আসাটা মোটেও স্বাভাবিক কিছু না । কিছু একটা অস্বাভাবিক এবং ভয়ংকর ব্যাপার ঘটেছে ।
দুই
জুইয়ের মনে শান্তি নেই একদম । বারবার মনে হচ্ছে ওর সাথে কিছু একটা ঘটছে । কিন্তু কি ঘটছে সেটা সে বুঝতে পারছে না । গত দুইদিন ধরে মিনাজের মুখ একেবারে গম্ভীর । কি হচ্ছে না হচ্ছে এসব সে কিছুই বুঝতে পারছে না । মিনাজও কিছু খুলে বলছে না । তবে ওর মুখের অবস্থা ওকে বলে দিচ্ছে যে কিছু একটা ঠিক নেই । অফিস থেকে বের হয়েই মিনাজকে দেখতে পেল । মিনাজের সাথে আজকে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার কথা রয়েছে । মিনাজ ওর এক বন্ধুর কাছেই নিয়ে যাবে বলেছে । রিক্সা নিয়ে ওরা পুরান ঢাকার দিকে রওয়ানা দিল । জুই অনেক টা সময় চুপ করে থেকে এক সময়ে বলল, তোমার বন্ধু কি সাইক্রায়াটিস্ট? আমার তো কোন শারীরিক সমস্যা নেই ।
মিনাজ ওর দিকে তাকিয়ে আবার সামনের দিকে দিকে তাকালো ।
জুই বলছে যে ওর নিজের কোন শারীরিক সমস্যা নেই । কিন্তু মিনাজ জানে এই কদিনের জুইয়ের শরীরটা বেশ ভেঙ্গে গেছে । মুখের উপরে একটা ছাপ পড়ছে । মিনাজ ওকে কোন সাইক্রায়াটিস্টের কাছে নিয়ে যাচ্ছে না । নিয়ে যাচ্ছে একজন মানুষের কাছে । লোকটার নাম রাফায়েল । কেবল এই কথাটাই সে জানে । আর কিছু জানে না । ওর বন্ধু অনিক ওকে লোকটার ঠিকানা দিয়েছে । অনিকের কাছে সব কিছুই খুলে বলেছিলো । খুলে বলার পর অনিক বলেছে কোন ডাক্তারের কাছে গিয়ে কোন লাভ হবে না । মিনাজ নিজেও জানে কোন ডাক্তারের কাছে গিয়ে আসলেই লাভ হবে না । পেশাতে সে নিজেও ডাক্তার । তার ডাক্তারি জ্ঞানে সে এসব কিছুই ব্যাখ্যা করতে পারছে না । বিশেষ করে ওভাবে শূন্যে ঝুলে থাকাটা কোন ভাবেই ব্যাখ্যা করতে পারছে না । একজন মানুষ কোন ভাবেই এই ভাবে ঝুলে থাকতে পারে না ।
পুরান ঢাকার একটা ভাঙ্গাচোড়া বাড়ির সামনে থামলো ওদের রিক্সা । সেটা থামার সাথে সাথেই বাড়ির দরজা দিয়ে একজন যুবক ছেলে বের হয়ে এল । অনিক রাফায়েলের যে বর্ণনা দিয়েছে তাতে এই লোকটাই যে রাফায়েল সেটা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই । লোকটা সম্ভবত বাইরে যাচ্ছে । অবশ্য আশার সময়ে সে কোন প্রকার যোগাযোগ করে আসে নি, আসতে পারেও নি । কোন ফোন নম্বর পাওয়া যায় নি । অনিক কেবল বলেছে যে গেলেই হবে । কোন চিন্তা নেই ।
-এই যে শুনছেন?
রাফায়েল দাড়ালো ।
-আপনি কি রাফায়েল?
-হ্যা ।
-একটু দরকার ছিল আপনার সাথে ।
রাফায়েল থামলো । তারপর জুইয়ের দিকে কিছু সময় তাকিয়ে রইলো । বলল, এখন তো সময় নেই । আমি একটু কাজে যাচ্ছি ।
-আমরা সেই ধানমণ্ডি থেকে এসেছি ।
রাফায়েল আরও কিছু সময় জুইয়ের দিকে তাকিয়ে রইলো । তারপর পকেট থেকে একটা হলুদ ফলের মত বের করে জুইয়ের হাতে দিল ।
-এটা নিন ।
-কি এটা ?
-এটা ধরে থাকবেন । সব সময় কাছে রাখবেন । তাহলে সে আর কাছে আসবে না আপনার ।
-কে আসবে না ?
রাফায়েল সেই প্রশ্নের জবাব দিল না । তাকালো মিনাজের দিকে । বলল, আপনার স্ত্রীকে নিয়ে যান বাসায় । একটু সাবধানে নিয়ে যাবেন । তার ভেতরে নতুন প্রানের সৃষ্টি হয়েছে । এখন তার যত্ন দরকার । আমি সময় মত আপনার সাথে দেখা করবো ।
এই বলে রাফায়েল আর দাড়ালো না । চিপা গলির ভেতরে ঢুকে পড়লো । মিনাজ আর জুই দুজনেই অবাক হয়ে কিছু সময়ে তার চলে যাওয়া পথের দিকে চেয়ে রইলো । জুইয়ের অবাক হওয়ার কারণ হচ্ছে ও যে প্রেগনেন্ট এটা সে এখনও কাউকে বলে নি । এমন কি মিনাজকেও না । এই লোকটা কিভাবে জানলো? ওর দিকে কিছু সময়ে তিক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে ছিল । তাতেই টের পেয়ে গেল সে ! কিভাবে ?
মিনাজ বলল, তুমি …..
-হ্যা । গত কালই টের পেয়েছি ।
-ও মাই গড !
-কিন্তু এই লোক কিভাবে জানলো?
-জানি না । চল বাসায় ফিরে যাই । আর ঐটা আছে তো তোমার কাছে ?
জুই হলুদ লেবুর মত ফলটা দেখালো । হাত দিয়ে ধরে রেখেছে ।
জুই বলল, লোকটা যে বলল, আমাদের বাসায় যাবে । কিভাবে ? ঠিকানা তো নিলো না ।
মিনাজ নিজেও ব্যাপারটা ভাবলো কিছু সময় । তবে কিছু বলল না । ও এখনও রাফায়েলের আচরন নিয়ে ভাবছে । লোকটা কিভাবে বুঝলো জুই সন্তান সম্ভবা !
তিন
পরপর সাত দিন কেটে গেল কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়াই । এই কদিনে জুই একবারের জন্যও ঘুমের ভেতরে অন্য ঘরে যায় নি । কোন রকম অস্বাভাবিক ঘটনাও ঘটে নি । ঘুমানোর সময় লেবুটা ওর কাছেই থাকতো। কিন্তু আট নম্বর দিনে এসে লেবুটা আর কোথাও খুজে পেল না । এই কয়দিনে মিনাজ আর জুই বলতে গেলে একেবারে চিন্তাহীন হয়ে পড়েছিলো । কিন্তু রাতের বেলা ঘটলো ঘটনা । মিনাজ ঘুমানোর এক পর্যায়ে লক্ষ্য করলো জুই উঠে চলে যাচ্ছে বিছানা থেকে । মিনাজ ডাক দিলো কিন্তু জুই শুনলো না । মিনাজ উঠে গিয়ে জুইয়ের হাত ধরলো এবং তখনই মিনাজের পুরো শরীর ভয়ে জমে গেল । জুই ওর দিকে ফিরে তাকিয়েছে । সে দেখতে পেল জুই রক্তলাল চোখে ওর দিকে তাকিয়ে রয়েছে ।
জুই এবার মিনাজকে একটা ধাক্কা দিল । ধাক্কাটা এতোই জোরে যে মিনাজ ছিটকে গিয়ে খাটের ওপাশে পড়লো । মিনাজের উঠে দাড়িয়ে নিজেকে সামলে নিতে মিনিট খানেক সময় লাগলো । আবার যখন উঠে দাড়ালো তখন তাকিয়ে দেখে জুই ঘরের বাইরে চলে গেছে ।
মিনাজ দৌড়ে ঘরের বাইরে আসতেই অদ্ভুত এক দৃশ্য দেখলো । দেখতে পেল জুই মাটিতে শুয়ে রয়েছে । ঠিক সামনে ওর উপরে হাত রেখে একটা মানুষ দাড়িয়ে রয়েছে । ডাইনিংয়ে জ্বলতে থাকা ডিম লাইটের আলোতে মিনাজ দেখতে পেল মানুষটাকে । একদিন মাত্র দেখেছে তাকে কিন্তু চিনতে মোটেও কষ্ট হল না ।
রাফায়েল !
মিনাজের মনে এই প্রশ্ন এল না যে লোকটা কিভাবে এই রাতের বেলা ওর ঘরে ঢুকলো । কেবল অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো সামনের দিকে ।
রাফায়েল জুইয়ের শরীরে হাত দেয় নি । উপরে চাপ দেওয়ার মত করে ধরেছে । কিন্তু মিনাজের মনে হল রাফায়েল যেন মেঝের সাথেই জুইকে চেপে ধরে আছে । মুখ দিয়ে কিছু একটা শব্দ করছে । কিছু পড়ছে ।
জুই ছোটার জন্য চটফট করছে । কিন্তু নিজেকে কিছুতেই ছাড়াতে পারছে না । একটা সময় জুইয়ের মুখ থেকে চিৎকার বের হয়ে এল ।
আমাকে ছেড়ে দাও, আমাকে ছেড়ে দাও।
মিনাজ কেবল অবাক হয়ে লক্ষ্য করলো এই আওয়াজটা জুইয়ের মুখ থেকে বের হলেও আওয়াজটা মোটেও জুইয়ের নয় । রাফায়েল বলল, মেয়েটাকে ছেড়ে দাও, আমিও তোমাকে যেতে দিবো।
-না আমি ওকে ছাড়বো না ।
রাফায়েল আবার কিছু একটা পড়লো ।
জুইয়ের মুখ থেকে চিৎকার বের হয়ে এল । অন্য স্বরে । রাফায়েল বলল, কেন এসেছো ওর কাছে?
-আমি আসি নি । ও এসেছে আমার ঘরে । এটা আমার ঘর । আমি থাকি ওখানে ।
-ওকে কালই জুই বাসা ছেড়ে চলে যাবে ।
-না না না । ওরা এখন যেতে পারবে না । যেতে পারবে না । যেতে পারবে না ।
-অবশ্যই পারবে ।
-ওর বাচ্চাটা আমার চাই । ওর বাচ্চাটা আমার চাই । বাচ্চাটা আমার চাই ।
আরও কিছু বলতে যাচ্ছিলো কিন্তু আর কিছু বলতে পারলো না । রাফায়েল আরও জোরে কিছু পড়লো এবং সাথে সাথে মনে হল দুরে কোথাও বাজ পড়ার মত আওয়াজ হল । রুমে জ্বলতে থাকা ডিম লাইট টা ফেটে গেল সাথে সাথে । ঘর অন্ধকার হয়ে গেল । মিনাজ একটুও নড়ে নি এর মাঝে । কি করবে ঠিক বুঝতে পারছিলো না ।এক সময়ে রুমের আলো জ্বলে উঠলো । মিনাজ দেখলো রাফায়েল সোফার উপরে বসেছে । জুই তখনও মেঝেতে শুয়ে রয়েছে । মিনাজ দ্রুত জুইয়ের কাছে গিয়ে দেখলো ও ঘুমাচ্ছে । শান্তির ঘুম ।
রাফায়েল বলল, আপনার স্ত্রী ভাল আছে । ঘুমাচ্ছে ।
-বিপদ কেটে গেছে?
-না এখনও । সে এখনও আছে ।
-কোথায় ? কি ওটা !
রাফায়েল বলল, ধারণা করতে পারি মেয়েটা ঐ ঘরেই মারা গিয়েছিলো। এমন অবস্থাতে আত্মা ঐখানেই আটকে থাকে । আপনারা এক কাজ করুন । কালই আপনার স্ত্রীকে নিয়ে অন্য কোথাও সিফট করুন । এখানে থাকাটা ওর জন্য মোটেও ভাল হবে না । যতই প্রটেকশন দেওয়া হোক সেটা কোন না কোন কারণে ভেঙ্গে যাবেই । সুতরাং দরকার নেই । এই বাসার বাইরে গেলে আশা করি আর সমস্যা হবে না ।
মিনাজ জুইকে কোলে করে নিয়ে শোবার ঘরে নিয়ে গেল । ওকে শুইয়ে দিয়ে আবার বসার ঘরে এসে দেখলো রাফায়েল নেই । চলে গেছে । পুরো ফ্ল্যাট খুজে দেখলো কিন্তু রাফায়েলকে কোথাও খুজে পেল না ।
পরিশিষ্টঃ
পরদিন সকালে জুইকে ওর মায়ের বাসায় দিয়ে আসলো । এবং পরের সপ্তাহেই বাসাটা ছেড়ে দিল সে । যাওয়ার আগে পাশের এক ফ্ল্যাটের আঙ্কেলের কাছে জানতে পারলো যে বছর দুয়েক আগে এখানে তাদের মতই এক দম্পত্তি থাকতো ভাড়ায় । স্বামীর সাথে ঝগড়া করে মেয়েটা এক রাতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে । পাশের ঘরেই স্বামী ছিল । সারা রাত মেয়েটা ফ্যানের সাথে ঝুলে ছিল। অটোপসি রিপোর্টে জানা যায় যে মেয়েটা চার সপ্তাহের প্রেগনেন্ট ছিল তখন ।
এরপর অবশ্য জুইয়ের আর কোন সমস্যা হয় নি । সময় মত জুইয়ের একটা ফুটফুটে মেয়ে বাবু হয়েছে । একদিন মিনাজ গিয়ে হাজির হয়েছিলো সেই পুরান ঢাকার গলিতে ধন্যবাদ দেওয়ার জন্য কিন্তু কিছুতেই সেই গলির বাড়িটা খুজে পায় নি। যেন কেবল দরকারের সময় ওটা হাজির হয়েছিলো । ঠিক যেমন টা প্রয়োজনের সময় রাফায়েল হাজির হয়েছিলো ।
অসাধারণ ❤️❤️
👌👌👌