প্যারা ইউনিভার্স ভালোবাসা

অপু তানভীরের গল্প
4.3
(43)

নিশির মনে একটা অদ্ভুত অনুভূতি হল । ইচ্ছে হল সামনে বসা মানুষটার কথা বিশ্বাস করে নিতে । কিন্তু এমন আজব কথা সে জীবনেও শুনে নি । এমন কথা কি বিশ্বাস করার কোন কারণ আছে ! তারপরেও সামনে বসে মানুষটার চোখের দিকে তাকিয়ে তার কেন জানি মনে হল মানুষটা মিথ্যা কথা বলছে না । অথবা এমনও হতে পারে যে সামনে বসা মানুষটা ওকে যা বলেছে সেটা সে নিজে বিশ্বাস করে । নিজের ভেতরেই এমন একটা জগত হয়তো সে স্থাপন করে নিয়েছে ।

নিশি বলল, মিস্টার আরমান, আপনি যা বলছেন সেসব যে আজগুবি সব কথা এটা কি আপনি জানেন না ? দেখুন আপনাকে দেখে আমার ভদ্র মানুষ বলেই মনে হয়েছে । তাই আমি কিছু বলছি না । তবে দয়া করে এসব কথা আর বলবেন না । আমি এখন আসি । আমার লাঞ্চ আওয়ার শেষ ।

-আপনি বিশ্বাস করলেন না আমার কথা?
-বিশ্বাস করার কি কোন কারণ আছে বলুন?
আরমান কিছুটা সময় যেন চুপ করে রইলো । তারপর বলল, আমি যদি আপনাকে দেখাতে পারি? মানে প্রমাণ যদি দেখাতে পারি তাহলে কি বিশ্বাস করবেন ?
-জ্বী না । আমার আসলে প্রমাণ দেখার কোন দরকারই নেই । আই এম নট ইন্টারেস্টেড ! আপনি দয়া করে আর আমার সাথে দেখা করার চেষ্টা করবেন না । ঠিক আছে !

এই বলে মিতু উঠে দাড়ালো । তারপর চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতে যাবে তখন আরমান বলল, চলে যাচ্ছেন যান তবে আপনি মনে রাখবেন আমি আপনার এখানে আসতে কতগুলো ইউনিভার্স পার করে এসেছি ।
কথা যদিও বড় হাস্যকর শোনালো তবে নিশির কেন জানি ব্যাপারটা হাস্যকর মনে হল না । বরং মনে হল যে কথাটা ও বিশ্বাস করে নেয় ।

নিশি বলল, আচ্ছা আপনাকে একটা সুযোগ আমি দিতে পারি তবে সেটা আপনার নিজেকে খুজে বের করতে হবে । আমাদের আবার দেখা হতে পারে । কোথায় দেখা হবে কিভাবে হবে সেটা আমি আপনাকে বলবো না । আপনি যদি খুজে বের করতে পারেন তাহলে আপনার সাথে আপনার সেই ইউনিভার্সে একবার ঘুরে আসতে পারি ।
নিশি আর দাড়ালো না । নিজের অফিসের দিকে রওয়ানা দিল ।

অফিস শেষ করে বাসার দিকে যাওয়ার জন্য যখন উবারে উঠে বসলো। রাস্তায় এই সময়ে বেশ খানিকটা জ্যাম থাকে রাস্তায় । পুরো সময় বসে থাকতে হয় । অফিস থেকে বাসায় ফেরার সময়ে নিশি বেশির ভাগ সময়ে মোবাইল ব্রাউজ করে নয়তো বই পড়ে । ব্যাগে সব সময়ই একটা বই থাকে ওর ।

নিশি আর থামলো না । আরমানে নামের অদ্ভুত মানুষটাকে টেবিলে রেখেই নিজের অফিসের দিকে হাটা দিল ।

দিনের বাকিটা সময় কাজেই কেটে গেল । তবে মনের ভেতরে আরমান নামের মানুষটার বলা অদ্ভুত কথা গুলো ঠিকই ঘুটপাক খাচ্ছিলো । সে নাকি অন্য পৃথিবীতে থেকে এসেছে । এই পৃথিবীর মত নাকি আরো পৃথিবী আছে অনেক । প্যারালাল ওয়ার্ল্ডয়ের গল্প এতোদিন নিশি গল্পে পড়ে এসেছে । আজকে এই লোক সত্যি করে বলছে এটা নাকি আসলেই আছে । কী হাস্যকর শোনালো । তবে আরমান নামের মানুষটা এমন ভাবে বলছিলো কথা গুলো যেন ছেলেটা আসলেই এই সব বিশ্বাস করে ।
তবে একটা ব্যাপার আরমানের ভেতরে ছিল । নিশি যখন তার দিকে তাকিয়ে কথা বলছিলো নিশির কেবল মনে হচ্ছিলো যেন এই মানুষটা ওর যেন অনেক দিনের চেনা । অথচ নিশি খুব ভাল ভাবেই জানে যে এই মানুষটার সাথে ওর এই প্রথম দেখা হল । এর আগে সে এই মানুষটাকে দেখে নি । তারপরেও এতো পরিচিত কেন মনে হল মানুষটাকে !

আর কী সব অদ্ভুত গল্প । সে নাকি এসেছে অন্য একটা পৃথিবী থেকে । আরমান একজন বিজ্ঞানী । সে এই প্যারালাম বিশ্বে যাওয়ার পথ আবিস্কার করেছে । হাতে ঘড়ির মত একটা যন্ত্র সে দেখালো । এটার সাহায্য যে কোন বিশ্বে একই সময়ে যাওয়া যায় । আমাদের বিশ্বের মত আরও অনেক বিশ্ব নাকি আছে । কী সব আজগুবি কথা । আরমান জানালো যে সে ঐ বিশ্বের নিশি ছিল আরমানের ভালোবাসার মানুষ । সেখানেই একটা কার দুর্ঘটনায় নিশি মারা গিয়েছিলো । তাকে খুজতেই নাকি আর এই পৃথিবীর পর পৃথিবীতে ঘুরে বেড়াচ্ছে । তার বিশ্বাস যে এমন আরেকটা বিশ্ব ঠিক ঠিক আছে । কারণ যখন নিশি বেঁচে ছিল তখনই ওরা নাকি আরো কয়েকটা পৃথিবীতে গিয়েছিলো এটা দেখার জন্য যে অন্য পৃথিবীতে নিশি আর আরমানের কী অবস্থা । প্রতিটা বিশ্বেই তারা দেখেছে যে নিশি আরমান খুব সুখে রয়েছে । এমন ভাবে বেঁচে আছে যেন মনে হবে নিশি আরমান একে অন্যের জন্যই জন্ম গ্রহন করেছে ।
কিন্তু তখনই ছন্দ পতন হল আরমানের নিশি মারা পরলো । তারপর আরমান আবারও ঘুরে বেড়ালো সেই আগের পৃথিবী গুলোতে এটা দেখার জন্য যে অন্য নিশিরাও কি মারা গেছে কিনা !
অন্য কোথাও মারা যায় নি । সবাই দিব্যি বেঁচে আছে । সুখে রয়েছে ।
তাহলে কেবল আরমানের নিশির সাথে কেন এমন হল?

প্রকৃতি কখনই শূন্য স্থান পছন্দ করে না । নিশিকে কেড়ে নেওয়ার কোন না কোন কারণ অবশ্যই রয়েছে । আরমানের মনে হয়েছে আরমানকে শূন্য করা হয়েছে, নিশির কাছ থেকে আলাদা করা হয়েছেই অন্য কোন নিশির জন্যই । নয়তো এমন হওয়ার কথা ছিল না । কারণ মোটামুটি ভাবে যখন এক বিশ্বে কেউ মারা যায় অন্য সব প্যারালাম বিশ্বেই সে মারা যায় । সব গুলো ঘটনা হুবাহু একই রকম না হলেও কাছাকাছি ভাবে চলতে থাকে । অথচ এখানে দেখা গেল যে কেবল এক বিশ্ব থেকে নিশি গায়েব হয়ে গেছে । অন্য কোথা থেকে আর হয় নি ।

তারপরই আরমান খোজ শুরু করে । এই পর্যন্ত ১৭৭টা বিশ্বে সে গিয়েছে । সব স্থানেই দেখতে পেয়েছে জটি ঠিকঠাক আছে । কেবল এই বিশ্বে এসে দেখে এখানে আরমানের অস্তিত্ব নেই । আরমান এই বিশ্বে নিজের বাসায় গিয়ে খোজ নিয়েছে । সেখানেও আরমান ছিল না । অনেক খুজে আরমান জানতে পেরেছে স্কুলে থাকতেই আরমান পানিতে ডুবে মারা যায় । এই কারণ এই পৃথিবীতে নিশি এখনও একা । এবং সারা জীবন একাই থাকবে । নিশি কাউকে কখনও মন থেকে ভাল বাসতে পারবে না । কারণ তার সোলমেট মারা গেছে অনেক আগেই।

উবার বাসার সামনে চলে এল । নিশি গাড়ি থেকে নেমে বাসার গেটের কাছে পৌছালো তখনই কী মনে হতে আবার ঘুরে দাড়ালো । সন্ধ্যা নেমেছে অনেক আগেই । ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো আটটা প্রায় বেজে গেছে । কী মনে হল আবারও সে রাস্তায় নেমে এল ।
একটা জিনিস সে পরীক্ষা করতে চায় । যদিও জানে যে এটার আসলে কোন মানে নেই ।
আরমান নামের ঐ মানুষটাকে সে বলেছিল এতোই যখন সব কিছু জানে তাহলে নিশি কোথায় যেতে পারে সেটাও তার জানার কথা । মন খারাপ কিংবা মন ভাল থাকলে নিশি ঢাকার বেশ কয়েকটা স্থানে যায় । কয়েকটা পছন্দের রেস্টুরেন্ট রয়েছে যেখানে । মিতু ঠিক করলো এখন তেমন একটা রেস্টুরেন্টেই যাবে । সেখানে গিয়ে ডিনার করবে । আরমানের আসলে কোন ভাবেই সেখানে গিয়ে পৌছানোর উপায় নেই । কারণ নিশি কোন ভাবেই বলে নি যে কবে যাবে । জায়গা আর সময়টা বের করা আরমানের পক্ষে একেবারে অসম্ভব একটা ব্যাপার !

রিক্সাটা যখন আবার চলতে শুরু করলো নিশি তখন নিজের কাছেই প্রশ্ন করলো যে কাজটা সে কেন করতে যাচ্ছে?
কোন দরকার আছে কি?
নিজের মনকে শান্তনা দেওয়ার জন্য কাজটা করতে নাকি আরমান নামের অদ্ভুত মানুষটাকে ভুল প্রমাণের জন্য কাজটা করতে যাচ্ছে সে ?
অথবা সে আসলেই কি চাইছে যে আরমানের নামের মানুষটা আসুক !

নিশি কখনো কাউকে ভালোবাসতে পারে নি । এমন না যে সে একেবারে পুরুষ বিবর্জিত ছিল । কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে দুজনের কাছাকাছি এসেছিলো । মনে হয়েছিলো কাউকে সে ভালোবাসতে পারবে । কিন্তু সম্পর্কে গড়ে তোলার কয়েক দিনের ভেতরেই সে বুঝতে পারে সে সামনের মানুষটার জন্য বিন্দু মাত্র আকর্ষণ অনুভব করছে না সে । দুজনের সাথে কয়েকদিন পরেই সম্পর্ক নষ্ট করে দেয় । তারপর আর ঐ দিকে যে এগোই নি । সে জানে যে কারো সাথে এক সাথে বসবাস করা তার পক্ষে সম্ভব হবে না । তাই আর সে ঐদিকে যায় নি । বাসায় এটা নিয়ে বেশ ঝামেলা করেছে ওর বাবা মা কিন্তু নিশি যখন বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা বলেছে তখন তারা আর কিছু সাহস পায় নি । অফিসের রাজিন সাহেব নিশির প্রতি বেশ আগ্রহী । একবার সরাসরি বলেছে নিজের মনের কথা । নিশি সবিনয়ে সেটা প্রত্যাখান করেছে ।
আরমান বলেছিল তার সৌলমেট এই পৃথিবীর আরমান মারা গেছে অনেক আগে । এই কারণেই কি নিশি অন্য কাউকে ভালোবাসতে পারে নি কোন দিন । এই আরমানকে ভালোবাসতে পারবে?

রেস্টুরেন্টে ঢুকেই দেখতে পেল কয়েকজন মানুষ সেখানে বসে আছে । স্বাভাবিক দৃশ্য । নিশির চোখ প্রথমে ঘুরলো পুরো রেস্টুরেন্টে । আরমান নামের মানুষটাকে সে কোথাও দেখতে পেল না ।
নিজের মনের কাছে একটু হাসলো কেবল ।
দেখতে পাওয়ার কথা ছিল কি?
ও ভাবছিল বুঝি মিরাকেল হবে ! এসব কি হয় ?
জীবন কি অপু তানভীরের গল্প ।

নিশির একবার মনে হল ফিরে যায় । কোন দরকার নেই এখন রেস্টুরেন্টে খাওয়ার । কিন্তু তারপরই মনে হল যে যখন চলেই এসেছে কিছু খেয়েই যাওয়া যাক । এখানকার রামেনটা ওর সব থেকে বেশি পছন্দ । কোনার দিকে একটা টেবিলে গিয়ে হাজির হল সে । বসতে বসতেই একজন ওয়েটার এসে হাজির হল । তার হাতে একটা ড্রিংস ।
নিশি একটু অবাক হয়ে বলল, আমি তো অর্ডার দিই এখনও?
-ম্যাম এটা আপনার জন্য । আমাদের বলা হয়েছে আপনি বসতে বসতেই যেন আপনাকে দেওয়া হয় !
-বলা হয়েছে মানে?
ওয়েটার কিছু বলল না । কেবল মুখে একটু হাসি দিয়ে চলে গেল ।

নিশি একটু অবাক না হয়ে পারলো না । বুঝতেও পারলো না । তবে যখন মিনিট দশেক পড়ে রামেন এসে হাজির হল তখন সত্যিই অবাক হল সে । ও তখনও কোন অর্ডার দেয় নি। তখনই নিশির মনে হল কিছু যেন অস্বাভাবিক ব্যাপার ঘটছে । সত্যিই তাই ঘটলো । হঠাৎ করেই রেস্টুরেন্টের আলো একটু যেন কমে এল । এবং রেস্টুরেন্টে যারা বসে খাবার খাচ্ছিলো তারা সবাই এক সাথে উঠে পড়লো । এবং সবার প্রায় লাইন ধরেই বাইরে চলে গেল ।

নিশি তীব্র বিস্ময় নিয়ে খেয়াল করলো যে একটু পরে পুরো রেস্টুরেন্টে কেবল সে একা রইলো ।

নিশির এখন কী করা উচিৎ ?
নিশির মনে হল এখনই ওর এই রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে যাওয়া উচিৎ । কিন্তু সে বের হতে পারলো না। কারণ তার মনে তখন অন্য কিছু এসে জড় হয়েছে । নিশি তখনই দেখতে পেল তাকে !

দরজা ঠেলে ঢুকলো ভেতরে !

আরমান একবার অন্য দিকে তাকালোও না । সরাসরি ওর দিকেই তাকিয়েছে সে । যেন সে জানতোই নিশি কোথায় বসবে!

নিশির মন হঠাৎ সিক্ত হয়ে উঠলো । আরমান কি তাহলে ঠিক বলেছিল?
সে কিভাবে জানলো যে আজকেই সে আসবে আর এখানেই আসবে?
নিশির আর ৪/৫টা পছন্দের রেস্টুরেন্ট রয়েছে । একটা তো ওর বাসার ঠিক কাছেই রয়েছে । সেখানেই নিশি যায় বেশি । আজকে এই দুরের টায় যে সে আসবে সেটা আরমানের কোন ভাবেই জানা ছিল না ।

আরমান সামনে এসে বসলো । হাসি মুখেই । বলল, কী বলেছিলাম না ! আমি তোমার ব্যাপার সব জানি । এবার বিশ্বাস হল তো !
নিশি তখনও তাকিয়ে রয়েছে আরমানের দিকে । ওর তখনও ঠিক হজম করতে সমস্যা হচ্ছে ব্যাপার ! এমন টা কি হতে পারে?
এমনটা সম্ভব?

পরিশিষ্টঃ

-এটা কত নম্বর?
-এটা ১৯৭ !
-আচ্চা এই রকম কত গুলো পৃথিবী আছে?
-আমার জানা নেই । অসীম হওয়ার কথা ।
-সব গুলোতেই তুমি আমি এক সাথে ।
-নিজের চোখেই তো দেখতে পাচ্ছো !

সত্যি নিজের চোখেই সে দেখতে পাচ্ছে নিজেকে । নিজের ভিন্ন ভার্শনকে । প্রতিটা পৃথিবীতেই নিশি রয়েছে আরমানের সাথে বিভিন্ন ভাবে । কেবল ওর নিজের পৃথিবীতেই সে ছিল না আরমানের সাথে । এখন নিশির নিজেকে পরিপূর্ণ মনে হচ্ছে । আরমানকে ভালোবাসার সাথে সাথে ওকে মনে হচ্ছে যেন ওর নিজের কাছেই নিজেকে ফিরে পেয়েছে । আগে সব কিছু থেকেও যেমন মনে হত কী যেন নেই সেই অনুভূতিটা এখন আর নিশির ভেতরে নেই । নিশি নিজের ভালোবাসাকে পেয়েছে । হোক সেটা অন্য পৃথিবীর !

তবে সেদিন নিশির সামনে ওভাবে হাজির হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটা কিন্তু আরমানের বুদ্ধির খেলা ছিল । তবে কিছুটা যে ভাগ্য ছিল না সেটা বলবে না । আরমান ঠিক ঠিক জানতো যে নিশি ঠিক কোন কোন রেস্টুরেন্টে খেতে পছন্দ করে তবে কোন রেস্টুরেন্টে সে সেদিন যাবে সেটা আরমান কেন কারো পক্ষেই জানা সম্ভব ছিল না । আরমান তাই সেদিন লাঞ্চে নিশির সাথে দেখা করেই এই প্রতিটা রেস্টুরেন্টে গিয়ে হাজির হয় । নিশির ছবি দিয়ে জানায় যে যদি এই নিশি এখানে হাজির হয় তাহলে যেন তাকে তাৎক্ষণিক জানায় । বিনিময়ে বেশ ভাল পরিমানের টাকা অফার করে । সেই সাথে কারণটাও বলে যে নিশি নামের মেয়েটাকে সে নিজের ভালোবাসা প্রমান করতে চায় । প্রতিটা রেস্টুরেন্টের মালিকই রাজি হয়ে যায় কেবল একটা বাজে । সেটা হচ্ছে নিশিদের বাড়ির কাছের যে রেস্টুরেন্ট রয়েছে সেটা । যদি নিশি ঐদিন ওখানে যেত তাহলে আরমান বিপদে পড়ে যেত ।
-আর ঐ যে গেস্টদের চলে যাওয়ার ব্যাপারটা !
-ওটাও আগে থেকেই বলা ছিল। আমার কেবল ধারণা ছিল যে আজকেই তুমি যাবে । এই কারণে রিস্ক নিয়ে এই ব্যবস্থা করে রেখেছিলাম । ওদের বলাই ছিল অফিস আওয়ারের পরে মোটামুটি নয়টা পর্যন্ত গেস্ট আসবে সবার বিল আমিই দেব তবে শর্ত একটাই যে যখন উঠে যেতে বলা হবে তারা যাবে । কোন গেস্ট যদি রাজি না হয় তাহলে তাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে রাজি করতে হবে !

নিশি আসলে রাগ করতে পারে নি । একজনকে অন্য আরেকজন যতই ভালবাসুক সে ৫/৬টা রেস্টুরেন্ট থেকে কোন রেস্টুরেন্টে যাবে এটা আগে থেকে জানা অসম্ভব একটা ব্যাপার। তবে বুদ্ধিমান হলে কাজটা করা সম্ভব । আরমান সেটাই করে দেখিয়েছেন । ভালবাসার জন্য সে এক বিশ্ব থেকে অন্য বিশ্বে চলে এসেছে আর সামান্য এই কাজটুকু করতে পারবে না !

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 4.3 / 5. Vote count: 43

No votes so far! Be the first to rate this post.

About অপু তানভীর

আমি অতি ভাল একজন ছেলে।

View all posts by অপু তানভীর →