এই সব মিথ্যা গল্প 2.6

oputanvir
4.9
(58)

মিতুকে আমি কোন দিন ভালবাসি নি । কিন্তু মিতু আমাকে ঠিকই ভালবেসেছিলো । বলা যায় মনপ্রাণ উজাড় করে ভাল বেসেছিলো । প্রথম জীবনের ভালবাসা যাকে বলে । কোন চিন্তা ভাবনা না করেই প্রেমে পরা । কেবল ভাল লাগা থেকে ভালোবাসা কিংবা অন্য যে কোন কারণে ভালোবাসা । বড় বেলার প্রেম গুলো বড্ড হিসাব নিকেশ করেই হয় । সেখানে অনেক লাভ ক্ষতি আর পাওয়া না পাওয়ার ব্যাপার থাকে । কিন্তু প্রথম জীবনের প্রেমের ব্যাপারে এই সব কিছু থাকে না । সেখানে থাকে কেবল প্রিয় মানুষটার প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসার অনুভূতি । আমার প্রতি মিতুর প্রেমও বুঝি সেই রকম ছিল ।

ঠিক কোন জিনিসটা দেখে সে আমার প্রেমে পড়েছিলো আমি ঠিক তা বুঝতে পারি নি । তবে একদিনের কথা আমার পরিস্কার মনে আছে । সেদিন কলেজ ছুটির সময় হঠাৎ করেই বৃষ্টি এসে হাজির । আমি ভাগ্য গুণে একটা রিক্সা পেয়ে গেলাম । কিছুদুর যেতেই লক্ষ্য করলাম মিতু একটা একটা গাছের নিচে দাড়িয়ে বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচার চেষ্টা করছে । ঐ গাছে আরও কয়েকজন পুরুষ মানুষ দাড়িয়ে রয়েছে । ব্যাপারটা মিতুর জন্য বেশ বিব্রতকর ছিল । আবার গাছের তলা থেকে ঠিক বের হতে সাহসও হচ্ছিলো না । আমি রিক্সা থাকিয়ে ওকে তুলে নিলাম রিক্সাতে ।

প্রথমে রিক্সাতে উঠতে চাচ্ছিলো না কিন্তু পরে ভেবে দেখলো যে এই বৃষ্টির ভেতরে এতো গুলো অপরিচিত পুরুষ মানুষের সাথে থাকাটা মোটেই নিরাপদ নয় । এর থেকে আমার সাথে রিক্সাতে ওঠাই বরং ভাল ।

রিক্সাতে উঠে দেখলাম মিতু একটু একটু কাঁপছিলো শীতে । অনেক খানিই ভিজে গেছে সে । আমি পকেট থেকে রুমাল বের করে দিলাম । বেশ খানিকটা পথ তখনও বাকি । আর তীব্র বৃষ্টির কারনে রিক্সা খুব দ্রুত চলছিলোও না । বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা পেতে আমরা পলিথিনের ভেতরে বসেছি । শরীরের কাছাকাছি চলে এসেছি অনেকটাই । সেই সময়ে সবে মাত্র আমি এই ব্যাপার গুলো বুঝতে শিখেছি । আর সাবিহার সাথে প্রেমটাও শুরু হয়েছে । মিতুকে দেখলাল কেমন যে জড়সড় হয়ে বসে রয়েছে । আমি টুকটাক কথা বলতে শুরু করলাম ।

মিতু আর আমাদের বাসা পাশাপাশি । আমরা একই স্কুলে আর একই ক্লাসে পড়ে এসেছি সেই ছোট বেলা থেকে । একই কলেজে ভর্তি হয়েছি আমরা । ভাল ছাত্রী হিসাবে ওর নাম ডাক পুরো এলাকাতে । আমার মা তো প্রায়ই আমাকে মিতুর পায়ে ধোয়া পানি খেতে বলে । কেবল আমাকে না আমার ধারণা আমাদের এলাকার সকল মায়েরাই এই কথা বলে । ক্লাস ফাইভ আর এইটে বৃত্তি পাওয়া মেয়ে । এসএসসি পুরো জেলার ভেতরে সব থেকে ভাল রেজাল্ট ওর । এই ইন্টারেও যে খুব ভাল কিছু করবে সেই ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই ।

যখন ওকে ওর বাসার সামনে নামিয়ে দিলাম তখন বৃষ্টি ধরে এসেছে । নামার সময়ে ও কেবল মৃদু স্বরে বলল ধন্যবাদ । তারপর নেমে গেল ।

বলা চলে তারপর থেকেই ওর সাথে আমার কথা বলা শুরু হয় । এর আগে ক্লাসে দেখা হলেও ঠিক কথা হত না । দুর থেকেই কেবল চিনতাম ওকে ।

মিতুকে আমি গম্ভীর আর কম কথা বলা মেয়ে হিসাবেই চিনতাম । কিন্তু একটা সময় আবিস্কার কালম যে মেয়েটা প্রচুর কথা বলে । অন্য মানুষের সামনে কথা বলতে লজ্জা বোধ করতো কারন তাদের সাথে কথা বলে ও মজা পেত না । আমি ছিলাম ওর কমফোর্ট জোন । একবার মেয়েরা যদি নিজেদের কোমফোর্ট জোনের ভেতরে ঢুকে পড়ে তাহলে তাদের আর থামানো মুস্কিল ।

এর ভেতরে ওকে সাবিহার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলাম । সাবিহা তখন অন্য কলেজে পড়ে । সাবিহার সাথেও মিতুর বেশ ভাব হয়ে গেল । মাঝে মাঝেই আমরা তিনজন এদিক ওদিক চলে যেতাম । আমি তখনও বুঝতে পারি নি যে মিতু আমাকে ভালবাসে । একদিন সাবিহা আমাকে বলল কথাটা । আমি শুনে আকাশ থেকে পড়লাম !

সাবিহা বলল,তুমি কি বুঝতে পারো যে মিতু তোমাকে পছন্দ করে ?
আমি অবাক হয়ে বললাম, মানে ? পছন্দ বলতে ? ফ্রেন্ড হিসাবে পছন্দ নাকি তোমার আমার পছন্দর মত পছন্দ?
সাবিহা বলল, তুমি আসলেই একটা গাধা । মেয়েদের পছন্দের ধরন বুঝতে পারো না । তোমার আমার পছন্দের মত পছন্দ !
আমি বললাম, নাহ ! এতো দিন ধরে ওকে চিনি । ওর মত মেয়ে এইদিকে আসবে না । ওর ধ্যান ধারণা সব পড়ালেখা নিয়ে । আমি তো কিছু বুঝলাম না !
-তুমি বুঝবাও না কোন দিন ! একটা মেয়ে একটা ছেলের দিকে কোন ভাবে তাকায় সেই দৃষ্টিতে কি বলে এটা একটা মেয়ে খুব ভাল করে বোঝে !

কথা সত্য । আমরা যেন অন্য ছেলের দৃষ্টি বুঝতে পারি তারা মেয়েদের দিকে কিভাবে তাকায় মেয়েরাও মেয়েদের এই চাহনী ঠিকই বুঝে ! আমি বললাম, তো ? আমাকে কি করতে বল ?
-কিছুই না । দেখো মিতু ভাল মেয়ে । আমার কোন সমস্যা নেই তাতে কিন্তু ও তোমাকে পছন্দ করে এটা বুঝতে পেরে আমার ওকে সহ্য হচ্ছে না । ও তোমার আশে পাশে থাকলে ভাল লাগে না ।

এমনটা হওয়াই স্বাভাবিক । আমি সাবিহার স্থানে হলে হয়তো আমারও ভাল লাগতো না । আমি সাবিহাকে বললাম
-আচ্ছা আমি ওর সাথে কথা বলে ব্যাপারটা এখানেই মিটিয়ে ফেলবো !

পরদিন মিতুকে কথাটা বলতেই ও চোখ সরিয়ে নিল অন্য দিকে । যেন ওর একটা অপরাধ ধরা পড়ে গেছে । আমি কি বলবো বুঝতে পারলাম না । কিছু সময় তাকিয়ে রইলাম অন্য দিকে । মিতুই বলল, দেখো এটা একদমই আমার নিজের ব্যাপার ! তোমার এই ব্যাপারে চিন্তিত হতে হবে না । সাবিহাকে বল যে ওকে চিন্তা করতে হবে না । আমি কোন দিন তোমাদের দুজনের মাঝে আসবো না ।
-আমি জানি ।
মিতু বলল,আমি জানি সাবিহা যেদিন থেকে বুঝতে পেরেছে সেদিক থেকে ও আমাকে ঠিক পছন্দ করছে না । কিন্তু কি করবো বল? আমি তোমার প্রতি অনুভূতিটা কিছুতেই নিয়ন্ত্রন করতে পারছি না । কিছুতেই পারছি না । তোমার থেকে দুরে যাবো সে শক্তিও আমার নেই । আমি জীবনে এতো অসহায় বোধ করি নি কোন দিন ।
আমি আসলে সেই সময়ে বুঝতে পারলাম যে আমার প্রতি এই মেয়েটার অনুভূতি কতটা তীব্র !

কি অদ্ভুত এক পরিস্থিতিতে পড়ে গেলাম আমি ! এখানে এমনটা ঘটনা ঘটেছে যে আমার মিতুর কারোই কিছু করার নেই !

এভাবেই কয়েকদিন চলে গেল । আমি মিতুর সাথে আগের মত মিশতে গেলেই বারবার কেবল ঐ কথা মন হয় । সাবিহার চেহারা ভেসে ওঠে । একটা সময় আমাদের মাঝে দুরুত্ব তৈরি হয়ে গেল । আমি জানি এটা ওকে কষ্ট দিত কিন্তু মনে হল যে এটাই সব থেকে ভাল উপায় । বেশি বেশি মিশলেই বরং আমার প্রতি ওর আকর্ষন আরও বেড়ে যাবে ।

কলেজ শেষ করে আমরা যখন ইউনিভার্সিটি কোচিংয়ের জন্য ঢাকা যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি মিতু তখন আমাদের এলাকা ছেড়ে পাড়ি দিল ওর মামার কাছে সিলেটে । ও নাকি ঢাকাতে কোচিং করবে না । ও করবে সিলেট গিয়ে । যাওয়ার আগে শেষ বারের মত আমার সাথে দেখা করতে চাইলো ।

সেদিন রাতে ওর বাস ছিল । সন্ধ্যা বেলা আমি হাজির হলাম ওর বাসার পাশের বাগানটাতে । বেশ কিছুটা সময় কেবল বসে রইলো । কেউ কোন কথা বললাম না । হঠাৎ মিতু আমাকে জড়িয়ে ধরে হুহু করে কেঁদে উঠলো । সে কান্নার যে তীব্রতা ছিল সেটা আমাকে পুরোপুরি নাড়িয়ে দিল । কেউ আমার জন্য এমন ভাবে কাঁদছে এটা ভাবতেই মনটা সিক্ত হয়ে উঠলো ।

চলে আসার কেবল ও ঠোঁটে মৃদুর ভাবে একটা চুমু খেল । আর বলল, ভাল থেকো আমার ভালবাসা । তোমাকে কোনদিন ভুলবো না ।

তারপর জীবনটার মোড় ঘুড়ে গেল । আমি ঢাকা চলে এলাম । মিতু চলে গেল সিলেট । আর সাবিহা ঢাকাতে এল না । ওর বাসা থেকে ওকে একা একা বাইরে থাকতে দিতে রাজি হল না । তখন অবশ্য আমাদের দেশের মফস্বলের বাবা মায়েরা এতো উদার ছিল না মেয়েদের ব্যাপারে । আর সেই সময়ে একটা ধারণা ছিল যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়া মেয়েদের নাকি ভাল বিয়ে হয় না, ওখানে গেলে মেয়েরা খারাপ হয়ে যায় ।

আমি ঢাকাতে চান্স পেয়ে গেলাম । সাবিহা আমাদের এলাকার কলেজে ভর্তি হল । মিতুর খবর আমি আর জানি না । এক বছর দেখলাম ওর পরিবারও আমাদের এলাকা থেকে চলে গেল । সেই সময়েই জানতে পারলাম যে মিতু নাকি লন্ডন চলে গেছে । কেন জানি মনের ভেতরে একটা কষ্টের অনুভূতি এসে নাড়া দিল ।

মিতুর সাথে আর কখনই দেখা হবে না এমনটাই ভেবেছিলাম আমি । তবে আমাদের কপালে অন্য কিছু লেখা ছিল । আমি যখন অনার্স শেষ বর্ষে পড়ি তখন সাবিহার একজন সরকারি অফিসারের সাথে বিয়ে হয়ে গেল । আমি যে খুব কষ্ট পেয়েছিলাম ব্যাপারটা আসলে তেমন না । দুরত্বের কারণে আমাদের ভেতরকার সেই প্রেম আর আগের মত ছিল না । ছোট বেলার প্রেম বড় হতে মিলিয়ে যায় । আমরা যত বড় হই আমাদের আবেগ তত পরিপক্ষ হতে থাকে । আমরা ততই বাস্তবা বুঝতে শিখি । এই কারণে আগের মত আর ভালোবাসা অনুভব হয় না আমাদের । কিন্তু সবার বেলাতে এমনটা হয় না সম্ভবত । অন্তত মিতুর বেলাতে এমনটা হয় নি । ছোট বেলার সেই আবেগ তার ভেতরে সেই একই ভাবে কাজ করছিলো ।

আমি পড়াশোনা শেষ করে কিছুদিন এদিক ওদিক ঘুরে বেড়ালাম । তারপর চাকরিতে ঢুকে গেলাম । শুরু হল কামলার জীবন । প্রতিদিন অফিস যাই বাসায় আসি ঘুমাই খাই । ছুটির দিনে বন্ধুবান্ধবদের বিয়েতে যাই । অন্য দিকে বাসায়ও মেয়ে দেখা শুরু হল আমার বিয়ের জন্য ।

এক ছুটির দিনের বিকেলে মা আমাকে প্রস্তুত হতে বলল । আমি বললাম, কোথায় যাবো ?
-মেয়ে দেখতে । গত সপ্তাহে না বললাম ।
বললাম, মা তোমরা যাও । পছন্দ হলে আমাকে জানিও । আমি তখন মেয়ের সাথে কথা বলব।
-আমরা আগেই দেখে ফেলেছি । মেয়ে আমাদের পছন্দ । আজকে আমরা আংটি পরাতে যাচ্ছে ।

আমি একটু অবাক হয়ে বললাম, কী আশ্চর্য একেবারে আংটি ! আমার বউ আমি দেখবো না, কথা বলবো না?
-শোন এই মেয়েকে দেখার কিছু নেই । এই মেয়েকে তোর পছন্দ হবেই ।
-তুমি কীভাবে জানো যে পছন্দ হবেই ।

মা কোন কথা বলে কেবল হাসলো । আমি আসলে কিছুই বুঝতে পারলাম না । তখনও আমি আসলে ঠিক জানতে পারি নি যে আমার জন্য কী অপেক্ষা করছে । তবে বিয়ে যেহেতু করবোই মায়ের পছন্দ করতে খুবএকটা সম্যা নেই তবে একবার তো দেখতে হবে ।

আমরা সন্ধ্যার দিকে মেয়ের বাসায় হাজির হলাম । একজন ভদ্রলোক দরজা খুলে দিলেন । আমার কেন জানি তার চেহারাটা একটু পরিচিত মনে হল । তবে ঠিক মনে করতে পারলাম না । বাবার কোন বন্ধু হবে হয়তো । হয়তো আগে আমাদের বাসায় এসেছিলেন এই জন্য পরিচিত মনে হচ্ছে ।
আমি বাবা মায়ের পেছনে ঢুকলাম বাসায় । বেশ সাজানো গোছানো বাসা । বিশেষ করে ড্রয়িং রুমে সাজানো বইয়ের দিকে তাকিয়ে একটু খুশিই হয়ে উঠলো মনটা । বই গুলো যে কেবল সাজিয়ে রাখার জন্য কেনা নয় সেটা দেখেই বুঝতে পারলাম । যদি মেয়ের বাবার পড়ার অভ্যাস থাকে তাহলে নিশ্চিত মেয়েরও থাকবে । এটা আমার জন্য বেশ ভাল একটা ব্যাপার !

তারপর ঘটলো জীবনের সব থেকে আশ্চর্য জনক ঘটনা । আমি মিতুকে দেখছি প্রায়৭/৮ বছর পরে । কিন্তু ওকে চিনতে আমার একটু সময় লাগলো না । একটা নীল রংয়ের সেলোয়ার কামিজ পরে, হাতে ট্রে নিয়ে সে ঘরে ঢুকলো । আমাদের সামনে সেটা রেখে বসলো সামনের সোফাতে । আমি তখনও কেবল তাকিয়ে রয়েছে ওর দিকে । চোখের পলক যেন পড়ছে না ।

আসলে তারপর কে কি বলছিলো সেটা আমার কানে ঢুকলো না কিছুতেই । দেখলাম মা মিতুর হাতে আংটি পরিয়ে দিল আমার সামনেই । তারপর একটা লাইন কানে এল যে ওরা নিজেদের ভেতরে কথা বলুক । আমাকে মিতু ইশারা করলো ওর পেছন পেছন আসতে ।

মিতুর ঘরে এসে বসলাম ওর বিছানার উপর । মিতু বসলো পাশের একটা চেয়ারে । আমার দিকে তাকালো না । অন্য কিছু ভাবছে না । আমার দিকে তাকাতে লজ্জা পাচ্ছে । আমি বললাম, তুমি দেশে এসেছো কবে?
-গ্রাজুয়েশনের পর পরেই ।
-আমার খবর জানতে?
-হ্যা । জানবো না কেন?
-তাহলে যোগাযোগ কেন কর নি?
-তোমাকে বিব্রত করতে চাই নি ।
-আমি বিব্রত কেন হব ?
-জানি না । মনে হয়েছিলো । তারপর সাবিহার বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরে খুব ইচ্ছে করছিলো তোমার কাছে যাই । তবে কেন জানি যেতে পারি নি । মনে হয়েছিলো যে এই সময়ে লেগে মনে হবে আমি সুযোগ নিচ্ছি ।
আমি কী যে বলবো বুঝতেই পারলাম না । এই মেয়ে যে এভাবে আমাকে মনে রাখবে সেটা আমি কোন দিন ভাবিও নি । মিতু তারপর নিজ থেকেই বলল, তারপর তোমার বাবা মা যখন তোমার জন্য মেয়ে দেখা ঠিক করলো তখন মনে হল যে এইবার …

আমরা বেশ কিছু সময় কোন কথা বললাম না । আমি তারপর প্রথম কথা বলে উঠলাম । বললাম, শেষবার যখন আমাদের দেখা হয়েছিলো মনে আছে?
-হুম ।
-আমি সেদিন তোমার চোখ দেখে একটা তীব্র ভালোবাসার অনুভূতি অনুভব করেছিলাম । আমার তখন খুব করে ইচ্ছে করছিলো যে তোমাকে যেতে না দেই ।
-যদি তুমি আটকাতে আমি যেতে পারতাম না ।
-আমি কখনই ভাবি নি যে একজন মানুষ আমাকে এভাবে ভালোবাসতে পারে । সত্যি ভাবি নি । ভেবেছি যে এমন কেবল গল্প উপন্যাস হয় ! ঐ যে ব্লগে অপু তানভীর নামে এক ছোকড়া এই টাইপের গল্প লেখে খুব । এই ভাবে কি কেউ কাউকে ভালোবাসে? আমার তখন বিশ্বাস হত না । কিন্তু এখন কেন জানি বিশ্বাস হচ্ছে ।

আমি এগিয়ে গিয়ে মিতুর হাত ধরলাম । মিতু তখন ঠিক আমার সামনে দাড়িয়ে । আমি হঠাৎ করেই যেন সেই রাতের সময়ে চলে গেলাম। সেদিনও মিতু ঠিক এভাবে আমার সামনে দাড়িয়ে ছিল । আমার হাত ধরে একভাবে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল । ওর চোখে তখন যেই দৃষ্টি ছিল আমার কেন জানি মনে হল একই দৃষ্টি্তে তাকিয়ে রয়েছে । তবে আগের ছিল আমাকে ছেড়ে যাওয়ার কষ্ট আর এইবার আমাকে কাছে পাওয়ার আনন্দ !

এই গল্পটা আমি লিখেছিলাম অনেক অনেক আগে। ভ্যালেন্টাইণ ভালোবাসার গল্পে । অন্য একজনের থিমে লেখা হয়েছিলো গল্পটা । তবে সেটা ছিল কষ্টের শেষটা ছিল দুঃখের । আমি আবার দুঃখের গল্প ঠিক লিখে আরাম পাই না । মনে হয় যে মানুষ জন অন্তত গল্পে কাছে আসুক । সেই ভাবনা থেকেই এই গল্প আবার লেখা হল ।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 4.9 / 5. Vote count: 58

No votes so far! Be the first to rate this post.

About অপু তানভীর

আমি অতি ভাল একজন ছেলে।

View all posts by অপু তানভীর →