এই সব মিথ্যা গল্প 2.6

oputanvir
4.9
(83)

মিতুকে আমি কোন দিন ভালবাসি নি । কিন্তু মিতু আমাকে ঠিকই ভালবেসেছিলো । বলা যায় মনপ্রাণ উজাড় করে ভাল বেসেছিলো । প্রথম জীবনের ভালবাসা যাকে বলে । কোন চিন্তা ভাবনা না করেই প্রেমে পরা । কেবল ভাল লাগা থেকে ভালোবাসা কিংবা অন্য যে কোন কারণে ভালোবাসা । বড় বেলার প্রেম গুলো বড্ড হিসাব নিকেশ করেই হয় । সেখানে অনেক লাভ ক্ষতি আর পাওয়া না পাওয়ার ব্যাপার থাকে । কিন্তু প্রথম জীবনের প্রেমের ব্যাপারে এই সব কিছু থাকে না । সেখানে থাকে কেবল প্রিয় মানুষটার প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসার অনুভূতি । আমার প্রতি মিতুর প্রেমও বুঝি সেই রকম ছিল ।

ঠিক কোন জিনিসটা দেখে সে আমার প্রেমে পড়েছিলো আমি ঠিক তা বুঝতে পারি নি । তবে একদিনের কথা আমার পরিস্কার মনে আছে । সেদিন কলেজ ছুটির সময় হঠাৎ করেই বৃষ্টি এসে হাজির । আমি ভাগ্য গুণে একটা রিক্সা পেয়ে গেলাম । কিছুদুর যেতেই লক্ষ্য করলাম মিতু একটা একটা গাছের নিচে দাড়িয়ে বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচার চেষ্টা করছে । ঐ গাছে আরও কয়েকজন পুরুষ মানুষ দাড়িয়ে রয়েছে । ব্যাপারটা মিতুর জন্য বেশ বিব্রতকর ছিল । আবার গাছের তলা থেকে ঠিক বের হতে সাহসও হচ্ছিলো না । আমি রিক্সা থাকিয়ে ওকে তুলে নিলাম রিক্সাতে ।

প্রথমে রিক্সাতে উঠতে চাচ্ছিলো না কিন্তু পরে ভেবে দেখলো যে এই বৃষ্টির ভেতরে এতো গুলো অপরিচিত পুরুষ মানুষের সাথে থাকাটা মোটেই নিরাপদ নয় । এর থেকে আমার সাথে রিক্সাতে ওঠাই বরং ভাল ।

রিক্সাতে উঠে দেখলাম মিতু একটু একটু কাঁপছিলো শীতে । অনেক খানিই ভিজে গেছে সে । আমি পকেট থেকে রুমাল বের করে দিলাম । বেশ খানিকটা পথ তখনও বাকি । আর তীব্র বৃষ্টির কারনে রিক্সা খুব দ্রুত চলছিলোও না । বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা পেতে আমরা পলিথিনের ভেতরে বসেছি । শরীরের কাছাকাছি চলে এসেছি অনেকটাই । সেই সময়ে সবে মাত্র আমি এই ব্যাপার গুলো বুঝতে শিখেছি । আর সাবিহার সাথে প্রেমটাও শুরু হয়েছে । মিতুকে দেখলাল কেমন যে জড়সড় হয়ে বসে রয়েছে । আমি টুকটাক কথা বলতে শুরু করলাম ।

মিতু আর আমাদের বাসা পাশাপাশি । আমরা একই স্কুলে আর একই ক্লাসে পড়ে এসেছি সেই ছোট বেলা থেকে । একই কলেজে ভর্তি হয়েছি আমরা । ভাল ছাত্রী হিসাবে ওর নাম ডাক পুরো এলাকাতে । আমার মা তো প্রায়ই আমাকে মিতুর পায়ে ধোয়া পানি খেতে বলে । কেবল আমাকে না আমার ধারণা আমাদের এলাকার সকল মায়েরাই এই কথা বলে । ক্লাস ফাইভ আর এইটে বৃত্তি পাওয়া মেয়ে । এসএসসি পুরো জেলার ভেতরে সব থেকে ভাল রেজাল্ট ওর । এই ইন্টারেও যে খুব ভাল কিছু করবে সেই ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই ।

যখন ওকে ওর বাসার সামনে নামিয়ে দিলাম তখন বৃষ্টি ধরে এসেছে । নামার সময়ে ও কেবল মৃদু স্বরে বলল ধন্যবাদ । তারপর নেমে গেল ।

বলা চলে তারপর থেকেই ওর সাথে আমার কথা বলা শুরু হয় । এর আগে ক্লাসে দেখা হলেও ঠিক কথা হত না । দুর থেকেই কেবল চিনতাম ওকে ।

মিতুকে আমি গম্ভীর আর কম কথা বলা মেয়ে হিসাবেই চিনতাম । কিন্তু একটা সময় আবিস্কার কালম যে মেয়েটা প্রচুর কথা বলে । অন্য মানুষের সামনে কথা বলতে লজ্জা বোধ করতো কারন তাদের সাথে কথা বলে ও মজা পেত না । আমি ছিলাম ওর কমফোর্ট জোন । একবার মেয়েরা যদি নিজেদের কোমফোর্ট জোনের ভেতরে ঢুকে পড়ে তাহলে তাদের আর থামানো মুস্কিল ।

এর ভেতরে ওকে সাবিহার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলাম । সাবিহা তখন অন্য কলেজে পড়ে । সাবিহার সাথেও মিতুর বেশ ভাব হয়ে গেল । মাঝে মাঝেই আমরা তিনজন এদিক ওদিক চলে যেতাম । আমি তখনও বুঝতে পারি নি যে মিতু আমাকে ভালবাসে । একদিন সাবিহা আমাকে বলল কথাটা । আমি শুনে আকাশ থেকে পড়লাম !

সাবিহা বলল,তুমি কি বুঝতে পারো যে মিতু তোমাকে পছন্দ করে ?
আমি অবাক হয়ে বললাম, মানে ? পছন্দ বলতে ? ফ্রেন্ড হিসাবে পছন্দ নাকি তোমার আমার পছন্দর মত পছন্দ?
সাবিহা বলল, তুমি আসলেই একটা গাধা । মেয়েদের পছন্দের ধরন বুঝতে পারো না । তোমার আমার পছন্দের মত পছন্দ !
আমি বললাম, নাহ ! এতো দিন ধরে ওকে চিনি । ওর মত মেয়ে এইদিকে আসবে না । ওর ধ্যান ধারণা সব পড়ালেখা নিয়ে । আমি তো কিছু বুঝলাম না !
-তুমি বুঝবাও না কোন দিন ! একটা মেয়ে একটা ছেলের দিকে কোন ভাবে তাকায় সেই দৃষ্টিতে কি বলে এটা একটা মেয়ে খুব ভাল করে বোঝে !

কথা সত্য । আমরা যেন অন্য ছেলের দৃষ্টি বুঝতে পারি তারা মেয়েদের দিকে কিভাবে তাকায় মেয়েরাও মেয়েদের এই চাহনী ঠিকই বুঝে ! আমি বললাম, তো ? আমাকে কি করতে বল ?
-কিছুই না । দেখো মিতু ভাল মেয়ে । আমার কোন সমস্যা নেই তাতে কিন্তু ও তোমাকে পছন্দ করে এটা বুঝতে পেরে আমার ওকে সহ্য হচ্ছে না । ও তোমার আশে পাশে থাকলে ভাল লাগে না ।

এমনটা হওয়াই স্বাভাবিক । আমি সাবিহার স্থানে হলে হয়তো আমারও ভাল লাগতো না । আমি সাবিহাকে বললাম
-আচ্ছা আমি ওর সাথে কথা বলে ব্যাপারটা এখানেই মিটিয়ে ফেলবো !

পরদিন মিতুকে কথাটা বলতেই ও চোখ সরিয়ে নিল অন্য দিকে । যেন ওর একটা অপরাধ ধরা পড়ে গেছে । আমি কি বলবো বুঝতে পারলাম না । কিছু সময় তাকিয়ে রইলাম অন্য দিকে । মিতুই বলল, দেখো এটা একদমই আমার নিজের ব্যাপার ! তোমার এই ব্যাপারে চিন্তিত হতে হবে না । সাবিহাকে বল যে ওকে চিন্তা করতে হবে না । আমি কোন দিন তোমাদের দুজনের মাঝে আসবো না ।
-আমি জানি ।
মিতু বলল,আমি জানি সাবিহা যেদিন থেকে বুঝতে পেরেছে সেদিক থেকে ও আমাকে ঠিক পছন্দ করছে না । কিন্তু কি করবো বল? আমি তোমার প্রতি অনুভূতিটা কিছুতেই নিয়ন্ত্রন করতে পারছি না । কিছুতেই পারছি না । তোমার থেকে দুরে যাবো সে শক্তিও আমার নেই । আমি জীবনে এতো অসহায় বোধ করি নি কোন দিন ।
আমি আসলে সেই সময়ে বুঝতে পারলাম যে আমার প্রতি এই মেয়েটার অনুভূতি কতটা তীব্র !

কি অদ্ভুত এক পরিস্থিতিতে পড়ে গেলাম আমি ! এখানে এমনটা ঘটনা ঘটেছে যে আমার মিতুর কারোই কিছু করার নেই !

এভাবেই কয়েকদিন চলে গেল । আমি মিতুর সাথে আগের মত মিশতে গেলেই বারবার কেবল ঐ কথা মন হয় । সাবিহার চেহারা ভেসে ওঠে । একটা সময় আমাদের মাঝে দুরুত্ব তৈরি হয়ে গেল । আমি জানি এটা ওকে কষ্ট দিত কিন্তু মনে হল যে এটাই সব থেকে ভাল উপায় । বেশি বেশি মিশলেই বরং আমার প্রতি ওর আকর্ষন আরও বেড়ে যাবে ।

কলেজ শেষ করে আমরা যখন ইউনিভার্সিটি কোচিংয়ের জন্য ঢাকা যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি মিতু তখন আমাদের এলাকা ছেড়ে পাড়ি দিল ওর মামার কাছে সিলেটে । ও নাকি ঢাকাতে কোচিং করবে না । ও করবে সিলেট গিয়ে । যাওয়ার আগে শেষ বারের মত আমার সাথে দেখা করতে চাইলো ।

সেদিন রাতে ওর বাস ছিল । সন্ধ্যা বেলা আমি হাজির হলাম ওর বাসার পাশের বাগানটাতে । বেশ কিছুটা সময় কেবল বসে রইলো । কেউ কোন কথা বললাম না । হঠাৎ মিতু আমাকে জড়িয়ে ধরে হুহু করে কেঁদে উঠলো । সে কান্নার যে তীব্রতা ছিল সেটা আমাকে পুরোপুরি নাড়িয়ে দিল । কেউ আমার জন্য এমন ভাবে কাঁদছে এটা ভাবতেই মনটা সিক্ত হয়ে উঠলো ।

চলে আসার কেবল ও ঠোঁটে মৃদুর ভাবে একটা চুমু খেল । আর বলল, ভাল থেকো আমার ভালবাসা । তোমাকে কোনদিন ভুলবো না ।

তারপর জীবনটার মোড় ঘুড়ে গেল । আমি ঢাকা চলে এলাম । মিতু চলে গেল সিলেট । আর সাবিহা ঢাকাতে এল না । ওর বাসা থেকে ওকে একা একা বাইরে থাকতে দিতে রাজি হল না । তখন অবশ্য আমাদের দেশের মফস্বলের বাবা মায়েরা এতো উদার ছিল না মেয়েদের ব্যাপারে । আর সেই সময়ে একটা ধারণা ছিল যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়া মেয়েদের নাকি ভাল বিয়ে হয় না, ওখানে গেলে মেয়েরা খারাপ হয়ে যায় ।

আমি ঢাকাতে চান্স পেয়ে গেলাম । সাবিহা আমাদের এলাকার কলেজে ভর্তি হল । মিতুর খবর আমি আর জানি না । এক বছর দেখলাম ওর পরিবারও আমাদের এলাকা থেকে চলে গেল । সেই সময়েই জানতে পারলাম যে মিতু নাকি লন্ডন চলে গেছে । কেন জানি মনের ভেতরে একটা কষ্টের অনুভূতি এসে নাড়া দিল ।

মিতুর সাথে আর কখনই দেখা হবে না এমনটাই ভেবেছিলাম আমি । তবে আমাদের কপালে অন্য কিছু লেখা ছিল । আমি যখন অনার্স শেষ বর্ষে পড়ি তখন সাবিহার একজন সরকারি অফিসারের সাথে বিয়ে হয়ে গেল । আমি যে খুব কষ্ট পেয়েছিলাম ব্যাপারটা আসলে তেমন না । দুরত্বের কারণে আমাদের ভেতরকার সেই প্রেম আর আগের মত ছিল না । ছোট বেলার প্রেম বড় হতে মিলিয়ে যায় । আমরা যত বড় হই আমাদের আবেগ তত পরিপক্ষ হতে থাকে । আমরা ততই বাস্তবা বুঝতে শিখি । এই কারণে আগের মত আর ভালোবাসা অনুভব হয় না আমাদের । কিন্তু সবার বেলাতে এমনটা হয় না সম্ভবত । অন্তত মিতুর বেলাতে এমনটা হয় নি । ছোট বেলার সেই আবেগ তার ভেতরে সেই একই ভাবে কাজ করছিলো ।

আমি পড়াশোনা শেষ করে কিছুদিন এদিক ওদিক ঘুরে বেড়ালাম । তারপর চাকরিতে ঢুকে গেলাম । শুরু হল কামলার জীবন । প্রতিদিন অফিস যাই বাসায় আসি ঘুমাই খাই । ছুটির দিনে বন্ধুবান্ধবদের বিয়েতে যাই । অন্য দিকে বাসায়ও মেয়ে দেখা শুরু হল আমার বিয়ের জন্য ।

এক ছুটির দিনের বিকেলে মা আমাকে প্রস্তুত হতে বলল । আমি বললাম, কোথায় যাবো ?
-মেয়ে দেখতে । গত সপ্তাহে না বললাম ।
বললাম, মা তোমরা যাও । পছন্দ হলে আমাকে জানিও । আমি তখন মেয়ের সাথে কথা বলব।
-আমরা আগেই দেখে ফেলেছি । মেয়ে আমাদের পছন্দ । আজকে আমরা আংটি পরাতে যাচ্ছে ।

আমি একটু অবাক হয়ে বললাম, কী আশ্চর্য একেবারে আংটি ! আমার বউ আমি দেখবো না, কথা বলবো না?
-শোন এই মেয়েকে দেখার কিছু নেই । এই মেয়েকে তোর পছন্দ হবেই ।
-তুমি কীভাবে জানো যে পছন্দ হবেই ।

মা কোন কথা বলে কেবল হাসলো । আমি আসলে কিছুই বুঝতে পারলাম না । তখনও আমি আসলে ঠিক জানতে পারি নি যে আমার জন্য কী অপেক্ষা করছে । তবে বিয়ে যেহেতু করবোই মায়ের পছন্দ করতে খুবএকটা সম্যা নেই তবে একবার তো দেখতে হবে ।

আমরা সন্ধ্যার দিকে মেয়ের বাসায় হাজির হলাম । একজন ভদ্রলোক দরজা খুলে দিলেন । আমার কেন জানি তার চেহারাটা একটু পরিচিত মনে হল । তবে ঠিক মনে করতে পারলাম না । বাবার কোন বন্ধু হবে হয়তো । হয়তো আগে আমাদের বাসায় এসেছিলেন এই জন্য পরিচিত মনে হচ্ছে ।
আমি বাবা মায়ের পেছনে ঢুকলাম বাসায় । বেশ সাজানো গোছানো বাসা । বিশেষ করে ড্রয়িং রুমে সাজানো বইয়ের দিকে তাকিয়ে একটু খুশিই হয়ে উঠলো মনটা । বই গুলো যে কেবল সাজিয়ে রাখার জন্য কেনা নয় সেটা দেখেই বুঝতে পারলাম । যদি মেয়ের বাবার পড়ার অভ্যাস থাকে তাহলে নিশ্চিত মেয়েরও থাকবে । এটা আমার জন্য বেশ ভাল একটা ব্যাপার !

তারপর ঘটলো জীবনের সব থেকে আশ্চর্য জনক ঘটনা । আমি মিতুকে দেখছি প্রায়৭/৮ বছর পরে । কিন্তু ওকে চিনতে আমার একটু সময় লাগলো না । একটা নীল রংয়ের সেলোয়ার কামিজ পরে, হাতে ট্রে নিয়ে সে ঘরে ঢুকলো । আমাদের সামনে সেটা রেখে বসলো সামনের সোফাতে । আমি তখনও কেবল তাকিয়ে রয়েছে ওর দিকে । চোখের পলক যেন পড়ছে না ।

আসলে তারপর কে কি বলছিলো সেটা আমার কানে ঢুকলো না কিছুতেই । দেখলাম মা মিতুর হাতে আংটি পরিয়ে দিল আমার সামনেই । তারপর একটা লাইন কানে এল যে ওরা নিজেদের ভেতরে কথা বলুক । আমাকে মিতু ইশারা করলো ওর পেছন পেছন আসতে ।

মিতুর ঘরে এসে বসলাম ওর বিছানার উপর । মিতু বসলো পাশের একটা চেয়ারে । আমার দিকে তাকালো না । অন্য কিছু ভাবছে না । আমার দিকে তাকাতে লজ্জা পাচ্ছে । আমি বললাম, তুমি দেশে এসেছো কবে?
-গ্রাজুয়েশনের পর পরেই ।
-আমার খবর জানতে?
-হ্যা । জানবো না কেন?
-তাহলে যোগাযোগ কেন কর নি?
-তোমাকে বিব্রত করতে চাই নি ।
-আমি বিব্রত কেন হব ?
-জানি না । মনে হয়েছিলো । তারপর সাবিহার বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরে খুব ইচ্ছে করছিলো তোমার কাছে যাই । তবে কেন জানি যেতে পারি নি । মনে হয়েছিলো যে এই সময়ে লেগে মনে হবে আমি সুযোগ নিচ্ছি ।
আমি কী যে বলবো বুঝতেই পারলাম না । এই মেয়ে যে এভাবে আমাকে মনে রাখবে সেটা আমি কোন দিন ভাবিও নি । মিতু তারপর নিজ থেকেই বলল, তারপর তোমার বাবা মা যখন তোমার জন্য মেয়ে দেখা ঠিক করলো তখন মনে হল যে এইবার …

আমরা বেশ কিছু সময় কোন কথা বললাম না । আমি তারপর প্রথম কথা বলে উঠলাম । বললাম, শেষবার যখন আমাদের দেখা হয়েছিলো মনে আছে?
-হুম ।
-আমি সেদিন তোমার চোখ দেখে একটা তীব্র ভালোবাসার অনুভূতি অনুভব করেছিলাম । আমার তখন খুব করে ইচ্ছে করছিলো যে তোমাকে যেতে না দেই ।
-যদি তুমি আটকাতে আমি যেতে পারতাম না ।
-আমি কখনই ভাবি নি যে একজন মানুষ আমাকে এভাবে ভালোবাসতে পারে । সত্যি ভাবি নি । ভেবেছি যে এমন কেবল গল্প উপন্যাস হয় ! ঐ যে ব্লগে অপু তানভীর নামে এক ছোকড়া এই টাইপের গল্প লেখে খুব । এই ভাবে কি কেউ কাউকে ভালোবাসে? আমার তখন বিশ্বাস হত না । কিন্তু এখন কেন জানি বিশ্বাস হচ্ছে ।

আমি এগিয়ে গিয়ে মিতুর হাত ধরলাম । মিতু তখন ঠিক আমার সামনে দাড়িয়ে । আমি হঠাৎ করেই যেন সেই রাতের সময়ে চলে গেলাম। সেদিনও মিতু ঠিক এভাবে আমার সামনে দাড়িয়ে ছিল । আমার হাত ধরে একভাবে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল । ওর চোখে তখন যেই দৃষ্টি ছিল আমার কেন জানি মনে হল একই দৃষ্টি্তে তাকিয়ে রয়েছে । তবে আগের ছিল আমাকে ছেড়ে যাওয়ার কষ্ট আর এইবার আমাকে কাছে পাওয়ার আনন্দ !

এই গল্পটা আমি লিখেছিলাম অনেক অনেক আগে। ভ্যালেন্টাইণ ভালোবাসার গল্পে । অন্য একজনের থিমে লেখা হয়েছিলো গল্পটা । তবে সেটা ছিল কষ্টের শেষটা ছিল দুঃখের । আমি আবার দুঃখের গল্প ঠিক লিখে আরাম পাই না । মনে হয় যে মানুষ জন অন্তত গল্পে কাছে আসুক । সেই ভাবনা থেকেই এই গল্প আবার লেখা হল ।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 4.9 / 5. Vote count: 83

No votes so far! Be the first to rate this post.


Discover more from অপু তানভীর

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

About অপু তানভীর

আমি অতি ভাল একজন ছেলে।

View all posts by অপু তানভীর →