আদিম খেলা

oputanvir
4.5
(74)

মিমি আমার এক ক্লাস উপরে পড়তো । সেই সুবাদে আমি ওকে আপু বলে ডাকতাম । একই বিল্ডিংয়ের উপরে নিচে থাকতাম আমরা । মিমি আর আমার বাবা একই অফিসে চাকরি করতো । সরকারী কোয়াটারে আমরা একই সাথে বড় হতে লাগলাম । এই কারণে মিমির সাথে আমার ভাব ছিল খুব । তবে একই সাথে আমরা প্রচুর মারামারি করতাম । মিমির চুল লম্বা থাকার কারণে ওর চুল ধরে টান দিয়ে আমি মারামারিতে বিশেষ সুবিধা পেয়ে যেতাম ।

মিমির চিৎকারে আমার আম্মু ছুটে আসতো । আমাকে ধরেই মাইর লাগাতো। শেষে মিমির আম্মু এসেই আমাকে রক্ষা করতো । এভাবেই আমাদের ছোট বেলা কেটেছে । প্রতিটা দুপুর বেলা মিমি আমাকে ডেকে নিয়ে যেত লুডু কিংবা ক্যারাম খেলার জন্য । কোন কোন দিন আমরা ছাদের কার্নিশে পা ঝুলিয়ে বসে গল্প করতাম পুর বিকেল । কেউ আমাদের কিছু বলতো না । মিমি আমার থেকে এক ক্লাস উপরে পড়তো আর আমি ওকে আপু বলে ডাকার কারণেই হয়তো কেউ কোন কিছু বলার প্রয়োজনই মনে  করে নি ।

আমার বয়স তখন ১৬ বছর । মিমির বয়সও আমার মতই । আমার থেকে একটু বেশি হবে হয়তো । দুপুর বেলা মিমি আমাকে ডেকে নিয়ে গেল নিজেদের বাসায় । সেদিন আন্টি বাসায় ছিলেন না । কার বাসায় যেন গিয়েছিলেন । মিমির আব্বু তখন অফিসে । আমরা প্রায় প্রতিদিনই ওদের বাসায় গিয়ে খেলা করতাম । আজও সেই জন্যই গিয়েছিলাম । কিন্তু মিমি আমাকে বলল, এই রূপম, আজকে চল অন্য খেলা খেলি ।

আমি মিমির কথা বুঝতে না পেরে বললাম, কী খেলা মিমি আপু?

মিমি একটু হেসে বলল, এটা একটা মজার খেলা । দুজন লাগে খেলতে । খেলবি ? গতকাল আমি দেখেছি সোহেলী আর আবির ভাইকে এই খেলা খেলতে । খেলবি?

আমি বললাম, চল খেলি ।

-খুব মজার খেলা । তবে খবরদার কাউকে বলতে পারবি না এই খেলার কথা । মনে থাকবে?

আমি বললাম ঠিক আছে কাউকে বলব না ।

তারপরই আমরা সেই খেলাটা খেলতে শুরু করলাম । সদ্য কৈশরে পা দেওয়া বয়সে শরীরের এই উত্তেজনায় আমার প্রথম কিছু সময় যেন অন্য কিছু মনেই রইলো না । একটা সময় যখন হুস ফিরলো তখন প্রবল লজ্জা বোধ হল নিজের কাছে । আমি এক দৌড় দিয়ে মিমিদের বাসা থেকে বের হয়ে এলাম । কতদুর যে আর কোণ দিকে যে দৌড়ালাম সেই দিকে আমার কোন খেয়াল ছিল না । কেবল দৌড়ালাম আমি । বেশ রাত করে বাসায় ফিরে এলাম খানিকটা চোরের মত । কারো চোখে আমি পড়তে চাচ্ছিলাম না । বারবার মনে হচ্ছিলো যে আমার চোখের দিকে তাকালেই সবাই বুঝে ফেলবে যে আমি কী কাজ করেছি ।

বেশ কয়েকদিন আমি মিমিকে এড়িয়ে চললাম । তবে একদিক ঠিকই ধরা পড়লাম ওর হাতে । একদিন সন্ধ্যা বেলাতে ও এসে হাজির হল আমাদের বাসায় । আমি ঠিকই ওর আসার শব্দ পেলাম । মিমি প্রথমে কিছু সময় মায়ের সাথে গল্প করলো । আমি শুনতে পাচ্ছিলাম ওর কথার শব্দ । মনের ভেতরে প্রবল এক উত্তেজনা কাজ করছিল । এই উত্তেজনার কারণ আমার কাছে অজানা । আমার তখন মনে হচ্ছিল এখনই বাসা থেকে বের হয়ে যাই । কিন্তু সন্ধ্যা বেলা হওয়ার কারণে আমি কোথাও যেতেও পারছিলাম না ।

এক সময়ে মিমি আমার রুমে এসে ঢুকলো । আমার সামনে বসে বলল, কী ব্যাপার তুই আমার কাছ থেকে দূরে দূরে থাকছিস কেন?

আমার কথা জড়িয়ে এল । আমি কোন মতে বললাম, কই কী বলছো? দূরে দূরে থাকবো কেন?

-তাই না?

-না মানে পরীক্ষা তো তাই ?

-খুব পড়াশোনা করছিস মনে হচ্ছে?

আমি আরও কিছু বলতে যাচ্ছিলাম তখনই বাইরে একটা হট্টগোলের আওয়াজ শুনতে পেলাম । আমার খুব ইচ্ছে করছিল যে বাইরে যাই কিন্তু সেটা পারছিলাম না মিমির কারণে । মিমি আমার সামনে এমন ভাবে বসে ছিল যে কোন ভাবেই ওকে টপকে আমি বাইরে যেতে পারছিলাম না । এমন সময় দেখলাম মা দরজায় এলো । আমার মনে হল এবার বুঝি আমি মুক্তি পাব কিন্তু হল উল্টো । মা বলল, পাশের বাসার জাবেদ আঙ্কেলের বাসায় মারামারি হচ্ছে । আমি আর তোর বাবা যাচ্ছি । তুই থাক বাসায় । নড়বি না কিন্তু।

আমাকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে মা চলে গেল । মিমির দিকে তাকিয়ে দেখলাম মিমি আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে মিটমিট করে । দরজা বন্ধ হওয়ার আওয়াজ পেলাম ।

ঐদিন আবারও আমাদের মাঝে সেই আদিম খেয়াল শুরু হল ।

এরপর প্রায়ই এই খেলা আমরা খেলতাম । আমার যেন মিমিকে ছাড়া অন্য কিছু ভাল লাগতো না । ওর শরীরের গন্ধের জন্য সারাটা সময় মুকিয়ে থাকতাম । অন্য কেউ আমাদের ব্যাপারে কিছু সন্দেহ না করলেও মিমির মা সম্ভবত কিছু বুঝতে পেরেছিলেন । বিশেষ করে আমার দিকে তার আগে তাকানোর ধরন আর পরে তাকানোর ধরন দেখেই আমি খানিকটা আচ করতে পেরেছিলাম সেটা । তবে সেদিকে তাকানোর আমার খেয়াল নেই । আমি তখন পুরোপুরি মিমিতে মজে আছি । মিমি ছাড়া যেন কিছুই ভাল লাগে না আমার ।

তবে সুখের দিন সহ্য হল না । মিমির এসএসসি পরীক্ষা শেষ হলেই ওরা বদলি হয়ে চলে গেল । এতো কেবল মিমির পরীক্ষার জন্যই নাকি ওর বাবাব বদলি আটকে ছিল ।

মিমিরা চলে যাওয়ার পরেও আমি মিমির জন্য সারাটা সময় ছটফট করতাম । কোন কিছু আমার ভাল লাগতো না । তবে এক সময়ে সব কিছু সহ্য হয়ে গেল । তখন ইন্টারনেটের যুগ ছিল না । যোগাযোগ করা যেত টেলিফোনে তবুও সেটা ব্যয়বহুল খুব । আমাদের মত ছাপোষা মধ্যবিত্তদের দরকার ছাড়া টেলিফোন ব্যবহার করা ছিল বিলাশিতা । আমি প্রথমে কয়েকদিন ওকে চিঠি লিখেছিলাম কিন্তু ওদিক থেকে কোন জবাব এলো না । শেষে হতাশ হয়ে সেটা বন্ধ করে দিলাম ।

এসএসসি পরীক্ষার পরে আমার বাবারও বদলি হয়ে গেল । আমরা ঢাকাতে চলে এলাম । আমার নতুন জীবন শুরু হল । তারপর কেটে গেল বেশ কয়েকটা বছর । কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শেষে কিছুদিন আমি বেকার হয়ে ঘুরে বেড়ালাম। আসলে চাকরি বাকরিতে এতো জলদিই ঢুকতে ইচ্ছে করছিল না । বাসা থেকে যদিও একটু চাপ দিচ্ছিলো । তবে আমি মনের সুখে দিন কাটাতে লাগলাম । তবে সেটা অবশ্য বেশিদিন করা গেল না । বছর দুয়েক সুখের জীবন কাটানো চাকরি জীবনে প্রবেশ করতেই হল । মিমির নামটা আমার জীবন থেকে প্রায় মুছেই যাচ্ছিলো তখনই মিমি আবার এল আমার জীবনে ।

চাকরিতে প্রবেশের দিন আমাদের অফিস থেকে আমাদের পুরো নতুন টিমদের কে সংবর্ধনা দেওয়ার দিন মিমির সাথে আমার আবারু দেখা হয়ে গেল । একই অফিসে সে আরও দুই আগে থেকেই কাজ করছে ।

আমার কল্পনাতে আমি মিমিকে যেমন ভেবেছিলাম বাস্তবে সে তার থেকেও বেশি সুন্দর হয়ে গেছে । টানা চোখ নাক, চেহারাতে বিন্দু মাত্র বয়সের ছাপ নেই । দেখে যেন মনে হচ্ছে সদ্য কিশোরী থেকে তরুনী হয়েছে ।

অফিস শেষ করে বাইরে বের হয়ে দেখলাম মিমি গেটের কাছে অপেক্ষা করছে । আমার জন্যই যে সেই অপেক্ষা সেটা আর বলে দিতে হল না । আমি ওর চোখের দিকে তাকিয়ে রইলাম কিছুটা সময় । সেই স্কুল জীবনের মিমি আপুকেই যেন খুজতে শুরু করলাম ।

আমি প্রথম কথাটাই বললাম, আঙ্কেল আন্টি কেমন আছেন ?

মিমি বলল, আঙ্কেল আন্টির চিন্তা খুব । অন্য কারো চিন্তা নেই?

-তুমি কেমন আছো?

-আমি আছি এক রকম । তোমার খবর কী বল ! বিয়েশাদী, প্রেমিকা !

-প্রেম ট্রেম আর হয় নি । মানে করি নি । তোমার মত কাউকে পাই নি যে !

মিমি হাসলো । তারপর বলল, বাহ

-তুমি?

-আমার তো বিয়েশাদী সেই কবেই হয়ে গেছে । বাচ্চাও আছে একটা ।

আমার বুকের ভেতরে একটা কিসের যেন তীর বিধলো । এটাই তো স্বাভাবিক একটা ব্যাপার তারপরেও আমার তীব্র একটা কষ্ট হতে শুরু করলো । আমি কিছুতেই সেটা লুকাতে পারলাম না । চোখে মুখে ফুটে উঠলো সহজেই । মিমি এক ভাবে আমার সেই চেহারার দিকে তাকিয়ে রইলো । তারপর, তুমি দেখি সে বাচ্চাই রয়ে গেছে রূপম । এটাই কি স্বাভাবিক না যে আমার এখন বিয়ে হবে, বাচ্চা হবে ?

-হ্যা স্বাভাবিক !

-তাহলে এমন কেন করছো? তুমি কি আশা করেছিলে যে ছোট বেলার সেই খেলার কথা মনে করে আমি সারা জীবন তোমার জন্য অপেক্ষা করবো কিংবা মহিলা দেবদাস হয়ে বসে থাকবো? ওটা কোণ প্রেম ভালোবাসা ছিল না । আমাদের মাঝে ছিল সদ্য কৈশোর পেড়োনো জৈবিক ভুল । এটা মনে করে কেন বসে আছো তুমি?

আমি কোন কথা বললাম না । কেন জানি খুব রাগ হল ! রাগটা কার উপরে হল সেটা আমি নিজেই বুঝতে পারলাম না । মিমির উপরে নাকি নিজের উপরে সেটা জানি না ।

এভাবে বেশ কিছুদিন কেটে গেল । একই অফিসে কাটানোর কারণে মিমির সাথে প্রতিদিনই দেখা হত । কথা হত । মিমির আচরণ ছিল একেবারে স্বাভাবিক । আমি যদিও স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করতাম কিন্তু কেন জানি পারতাম না । আমার কেবল ঘুরে ফিরে সেই অতীতের আদিম খেলার কথাই মনে পড়তো ! আমি প্রবল মিমিকে কামণা করতাম । ওকে কাছে পেতে চাইতাম ! কিন্তু সেটা তো হওয়ার নয় !

একদিন অফিসের লাঞ্চ আওয়ারে আমি বাইরে বের হয়েছি তখনই দেখতে পেলাম মিমি একটা দশ এগারো বছরের মেয়ের সাথে কথা বলছে । মেয়েটার পরনে স্কুল ড্রেস । একটু পরেই একজন মাঝ বয়সী মহিলাকে সিএনজি থেকে নামতে দেখলাম । সাথে সাথেই চিনে গেলাম তাকে । মিমির আম্মু সে । স্কুল ড্রেস পরা মেয়েটিকে নিয়ে মিমির আম্মু চলে গেল । আমি এগিয়ে গেলাম মিমির দিকে । ওর দিকে তাকাতেই দেখলাম ওর দৃষ্টিতে একটা কিছু লুকানোর ভাব । আমি বললাম, আন্টির সাথে ঐ মেয়েটি কে?

মিমি স্বাভাবিক ভাবে বলার চেষ্টা করলো, আমার মেয়ে !

আমি এবার সত্যি অবাক হলাম । মিমি বলেছিল ওর মেয়ে আছে কিন্তু এতো বড় মেয়ে হবে সেটা তো ভাবি নি ।  

 তার পরেই হঠাৎ আমার মাথায় একটা ধাক্কার মত লাগলো । আমি সোজা মিমির চোখের দিকে তাকিয়ে বললাম, আজকে তোমার বাসায় নিয়ে যাবে আমাকে।

কথাটা আমি অনুরোধ করি নি । কেবল বলেছি । মিমি খানিকটা চমকে উঠলো আমার কন্ঠ শুনে । বলল, কেন বাসায় কেন যাবে?

-কোন কারণ নেই । আবার আমাদের দেখা হয়েছে, তোমার মায়ের সাথে একটু দেখা করে আসি ।

-না যেতে হবে না ।

আমি এবার সরাসরি ওর চোখের দিকে তাকিয়ে বললাম, আমাকে তুমি আজই নিয়ে যাবে । কোন কথা শুনতে চাই না ।

এতোটা কঠিন কন্ঠে আমি কিভাবে বললাম কথাটা আমি সেটা নিজেই জানি না ।

অফিস শেষ করে ওর বাসায় যাওয়ার সময় মিমি একেবারে চুপ করে ছিল । একটা কথাও বলল না । আমি যখন ওর বাসার কলিংবেল চাপ দিলাম তখন অনুভব করলাম যে আমার বুকের ভেতরে একটা তীব্র উত্তেজনার অনুভূতি হচ্ছে । আমি যা সন্দেহ করছি সেটা কোন ভাবেই কি হতে পারে?

না পারে না !

নাকি পারে !

দরজাটা খুলে দিল মিমির মেয়ে । মিমির কাছে নাম শুনেছি মেয়ের নাম রেখেছে রাইসা আহমেদ !

দরজা খুলে রাইসার দিকে তাকাতেই আমার মনে সেই সন্দেহটা আরও তীব্র ভাবে জেগে উঠলো । আমি মিমির দিকে তাকিয়ে দেখলাম ও নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করছে বটে কিন্তু ভেতরে ভেতরে ও বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে । সেটা ওর চেহারাতেই স্পষ্টই ফুটে উঠেছে ।

আমি বসার ঘরে বসতে না বসতেই দেখলাম আন্টি এলেন । আমি সালাম দিয়ে কেমন আছেন জানতে চাইলাম । তার গম্ভীর মুখ দেখেই বুঝতে পারছিলাম যে তিনি ঠিক আমাকে পছন্দ করছেন না । তবে সব কিছু একেবারে বদলে গেল যখন একটু পরে রাইসা এসে বসলো আমার সামনে । ওর চোখের দিকে তাকিয়ে দেখি সে অশ্রু সিক্ত চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে । আমি ওর ঐ চোখ দেখেই যা বোঝার বুঝে গেলাম । আমার মনে আর কোন সন্দেহ রইলো না । আমি নিজেকে কোন মতে শান্ত করে বললাম, তুমি কেমন আছো মামনি?

রাইসা কোন মতে নিজেকে শান্ত করে বলল, ভাল ।

-তুমি কি জানো আমি কে?

রাইসা মাথা ঝাকিয়ে জানালো যে সে জানে । আমি ধরা গলাতে বললাম, আমি জানতাম না । বিশ্বাস কর মামনি আমি জানতাম না । আজকে যদি তোমাকে না দেখতাম তাহলে আজও আমি জানতাম না । তারপরও আমি তোমার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী ।

-আমি জানি আপনি জানতেন না । আপনা……

রাইসা আর কোন কথাই বলতে পারলো না । কাঁদতে শুরু করলো । আমার বড় ইচ্ছে হল ওকে কাছে দেকে একটু আদর করতে । আমার মেয়েটা এতো গুলো বাবা ছাড়া থেকে এখন অন্তত বাবার আদর পাক ! মনে মনে আমি নিজের কাছেই প্রতিজ্ঞা করলাম যে আজকের পর থেকে রাইসা আর কোণ দিন একা হবে না । জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আমি ওর পাশে থাকবো !

পরিশিষ্টঃ

ছাদে বসে রয়েছি আমি আর মিমি । অনেকটা রাত হয়ে গেছে । অনেকটা সময় চুপ থাকার পরে মিমি বলল, আমি কোনদিন তোমাকে দোষারোপ করি নি । আমরা ঐ সময়ে যা করেছি তার শুরুটা আমার আগ্রহে হয়েছিল । তাই এর দায়ভারও আমারই ।

-তবুও আমাকে কি একবার জানাতে পারতে না?

-নাহ । পারতাম না । কাউকে বলতে পারতাম না । কেবল মা জানতে পেরেছিলেন । বাবা আমাকে কত মেরেছেন, জানতে চেয়েছেন বাচ্চার বাবা কে আমি বলি নি । বলতে পারি নি । মা না থাকলে, তার সাপোর্ট না পেলে যে কী হত, আমি জানিও না । রাইসা হওয়ার একটা বছর আমি আমরা ছিলাম ফরিদপুরে । সেখানে সসবাই জানতো যে আমার বিয়ে হয়েছে এক প্রবাসীর সাথে । সে ডুবাই থাকে । তারপর ঢাকা চলে এলাম রাইসা কে নিয়ে । বাবা আমাদের সাথে থাকেন না এখনও । সে আমার মুখ দেখতে চান না !

কৈশোর জীবনের ঐ ভুলটা মিমির জীবনটা একেবারে বদলিয়ে দিয়েছে । যে ভুলটা আমরা দুজন মিলে করেছে সেই ভুলের মাসুল ও একা দিয়েছে । নিজেকে কেন জানি আমার বড় অপরাধী মনে হল । এই অপরাধবোধ থেকে আমার কি কোন দিন মুক্তি হবে ? আমার তা জানা নেই । তবে আমি এটা জানি যে সামনের দিন গুলোতে আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো যাতে বাকি জীবন রাইসার জীবন টা আনন্দময় হয় । সেই সাথে মিমির জীবন আরও সহজ হয়ে ওঠে !

গল্পটার মূল থিম ব্লগের গল্পকার ইসিয়াক এর কাছ থেকে নেওয়া । তার গল্পের শেষটা কষ্টের। আমি আবার কষ্ট পছন্দ করি না । তাই এই গল্পের শেষটা হল আনন্দের।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 4.5 / 5. Vote count: 74

No votes so far! Be the first to rate this post.

About অপু তানভীর

আমি অতি ভাল একজন ছেলে।

View all posts by অপু তানভীর →

One Comment on “আদিম খেলা”

  1. কষ্টের গল্প লিখেন না এইজন্যই ৬-৭ বছর ধরে পড়ছি !

Comments are closed.