বই পড়ে খুনী

oputanvir
4.6
(28)

আমার বন্ধুটি আমার দিকে বেশ কিছু তাকিয়ে রইলো । আমার কথা যেন ঠিক মত বুঝতে পারছে না কিংবা ঠিক বিশ্বাস করতে পারছে না ।
রিয়াদ বলল, তার মানে তুই কি বলতে চাস?
-আমি আসলে বলতে চাই যে মেয়েটা বাড়ির বাইরে যায় নি । আজকে পাঁচ দিন। পাঁচ দিন সে বাড়ির ভেতরেই রয়েছে ।
-তো ? থাকতেই পারে । সমস্যা কি?
-সমস্যা হচ্ছে মেয়েটা এই বাসার বাসিন্দা না ।
-তুই কিভাবে জানিস ?
-আরে বাবা আমি থাকি তো এখানে। নাকি আমি জানবো না ? কে আসলে এখানে থাাকে আর কে থাকে না সেটা আমি জানি খুব ভাল করেই । এই মেয়ে কোন ভাবে আমাদের বাসায় থাকে না । বাইরের মেয়ে । বাইরের একটা মেয়ে বাড়ির ভেতরে ঢুকলো আর পাঁচদিন বের হল না, ব্যাপারটা অন্য রকম লাগছে না?
রিয়াদ আরও কিছু সময় চুপ করে রইলো । আমার কথা সত্য নামি মিথ্যা সেই বোঝার চেষ্টা করছে ।

ঘটনা আসলে তেমন কিছু না । আমি আমার নতুন কেনা সাইকেলটা চুরির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য একটা সিসিটিভি ক্যামেরা লাগিয়েছি ঠিক সিড়ির পাশে । এমন একটা স্থানে সিসিটিভিটা লাগানো যে খুব ভাল করে খেয়াল না করলে কেউ দেখতে পারবে না । আমি উপর থেকে নিজের সাইকেলের উপর সব সময় নজর রাখি । মোবাইলেই সব সময় দেখা যায় সাইকেলটা ।

পাঁচ দিন আগের ঘটনা । কলেজ থেকে বাসায় পৌছাতে পৌছাড়ে বিকেল হয়ে গেছে । আমি সাইকেল নিয়ে ভেতরে ঢুকলাম । আমার ঠিক পেছন পেছনে একটা মেয়ে ঢুকলো । মেয়েটাকে ভাল করে লক্ষ্য করলাম । একটু যেন ভীত মেয়েটা । আমার দিকে কিছু সময় তাকিয়ে থেকে সিড়ি দিয়ে উঠে গেল উপরে । আমি নিশ্চিত যে মেয়েটা এই বাসায় থাকে না । অন্য কারো কাছে এসেছে ।
কার কাছে আসতে পারে?
সাত তলা বাড়ি । মোট ছয়টা ফ্ল্যাট । আমরা থাকি দ্বিতীয় তলাতে । তিন থেকে সাত তলায় আরও তিনটা পরিবার আছে । ওদের বাসায় কি?
এছাড়া একজন প্রোফেসর থাকেন একেবারে সাত তলাতে । আর ছয় তলাতে একজন ব্যাংকার থাকেন । যদিও সে বিবাহিত তবে বউ এখানে তার সাথে থাকে না । আমার মনে যা প্রথমে আসলো তা হচ্ছে সম্ভবত মেয়েটা সেই ব্যাংকারের প্রেমিকা । তার সাথে দেখা করতে এসেছে । এর আগেও তার কাছে আমি মেয়ে আসতে দেখেছি । সবাইযে প্রেমিকা তা না । কেন তার কাছে মেয়ে আসে সেটা বুঝার মত বয়স আমার হয়েছে ।

যাই হোক ঘটনা সেখানেই শেষ হয়ে গেলে কিছু হত না । রাতের বেলা কি মনে হল আমি সিসিটিভি ফুটেজ গুলো দেখতে লাগলাম । মেয়েটা যখন এসেছিলো তখন ছিল বিকেল । এখন রাত বারোটা প্রায় । আমি পুরো ভিডিও দেখলাম । মেয়েটা যখন ঢুকলো তখনও মেয়েটাকে দেখলাম কিন্তু মেয়েটাকে বের হতে দেখলাম না । তাহলে কি মেয়েটা রয়েই গেল ?
কিন্তু মেয়েটার কাছে কোন প্রকার সাইড ব্যাগ ছিল না । কেবল একটা ছোট হ্যান্ডব্যাগ দেখেছিলাম ।
মনের ভেতরে একটু সন্দেহ করলো বটে তবে মনে হল রাতে মেয়েটা থাকতেই পারে । কিন্তু পরের দুইদিনেও যখন মেয়েটা বের হল না তখন আমার মনে সন্দেহের দানা বিধলো । মেয়েটা গেল কোথায়?
নিজে পায়ে পায়ে এগিয়ে উঠে গেলাাম ছয় তলাতে । দরজাতে কান পেতে শুনতে চেষ্টা করলাম । কিন্তু ভেতর থেকে কোন মেয়ের আওয়াাজ পেলাম না ।
পরপর পাঁচ দিন পার হয়ে গেল কিন্তু মেয়েটা বের হল না । আমি কোথাও দেখতে পেলাম না মেয়েটাকে । আমার মনে আর কোন সন্দেহ রইলো না যে মেয়েটার সাথে খারাপ কিছু হয়েছে । হতে বাধ্য । তাই বন্ধু রিয়াদের বাসায় এলাম । রিয়াদের বড় ভাই একজন পুলিশ অফিসার । সে যদি কিছু করতে পারে ।

রিয়াদ প্রথমে রাজি না হলেও আমার সাথে ওর ভাইয়ের কাছে যেতে রাজি হল । আমরা দুজনে বের হয়ে পড়লাম ওর বাসা থেকে । ওর ভাই তখন থানাতে । লাঞ্চ আওয়ারে হওয়াতে রিয়াদের বড় ভাই রিয়াজ আমাদের সময় দিলেন । আমার কথা মন দিয়ে শুনলেন তারপর বললেন, তোমার সিসিটিভি কি সব সময় চলে?
-হ্যা সব সময় ।
-ওয়াইফাইয়ে চলে । তাই তো?
-হ্যা ।
-যদি বিদ্যুৎ চলে যায় তখন ? তখন ওটা বন্ধ হয়ে যেতে পারে । এর ফাঁকে হয়তো মেয়েটা চলে গেছে।

মুখের কাছে এসেও আটকে গেল । একে তো সে পুলিশ তার উপর বন্ধুর বড় ভাই । বললাম, ভাইয়া ওয়াইফাই না চললেও ওটা চলবে । আর বিদ্যুতের কথা বলছেন তো গত পাঁচ দিনে একবারও বিদ্যুৎ যায় নি আমাদের বাসায় ।
-তাই নাকি?
-আচ্ছা ফুটেজ গুলো রেখে যাও । দেখা যাক আমরা কি করতে পারি ।

আমি ভিডিও ফুটেজ রেখে বাসায় ফিরে এলাম । একটু হতাশ লাগছিলো । বুঝতে পারলাম যে আর কিছু হবার নয় । মেয়েটার সাথে আসলে কি হয়েছে সেটা জানার আর কোন উপায় নেই । হয়তো মেয়েটা সত্যিই কোন সময়ে চলে গেছে, তখন কোন কারণে আমার ক্যামেরা অফ ছিল । ক্যামেরাতে ধরা পরে নি । আমি যদিও জানি যে আমার এই মনকে শান্তনা দেওয়া কথা টা কোন ভাবেই সত্য নয় । মেয়েটা সম্ভবত এখনও ঐ ঘরের ভেতরেই আছে । হয়তো এখনও মেয়েটি বেঁচে আছে । কোন কারণে মেয়েটাকে ঐ ব্যাংকার সাহেব আটকে রেখেছে ।

ঠিক দুইদিন পরে রিয়াদ আমাকে ফোন ফোন দিয়ে বলল যে আমি দ্রুত ওদের বাসায় গিয়ে হাজির হই । ওর বড় ভাই আমাকে নিয়ে থানাতে যেতে বলেছে । আমার বুকের মাঝে যেন বোমা ফাঁটলো । আম দ্রুত তৈরি হয়ে বের রওয়ানা দিলাম । রিয়াদকে নিয়ে হাজির হলাম থানাতে । আমাদের জন্যই যেন রিয়াজ অপেক্ষা করে ছিলো । আমি ঘরে ঢুকতেই আমার দিকে একটা ছবি বাড়িয়ে দিল । বলল, তুমি যে ফুটেজ রেখে গিয়েছিলে সেখান যে মেয়েটির যে ছবি আমরা পেয়েছি সেটার সাথে এই মেয়েটার চেহারার মিল রয়েছে অনেক বেশি । তবে তুমি যেহেতু মেয়েটাকে দেখেছো সরাসরি তুমি আরও নিশ্চিত করে বলতে পারবে ।

আমি ছবিটা হাতে দিলাম । প্রথম দেখাতেই মেয়েটাকে চিনতে পারলাম আমি । কোন সন্দেহ নেই । এটাই সেই মেয়ে । আমি রিয়াজ ভাইয়ের দিকে তাকালাম । আমার কিছু বলতে হল না । রিয়াজ ভাই বুঝতে পারলো যে এটাই সেই মেয়ে । রিয়াজ ভাই বলল, মেয়েটার নাম রিমা। অনার্সে থার্ড ইয়ারে পড়ে । তুমি যেদিন যেভাবে বললে সেদিনই মেয়েটা তার বাসার সাথে শেষ কথা বলেছে । তারপর আর কোন খোজ নেই । তার বাবা ঢাকা এসে থানায় রিপোর্ট করেছে । পুলিশ খোজ নিতে সেই মেয়ের হোস্টেলে গেল । সেখানে মেয়ের ব্যাপার অনেক তথ্যই পাওয়া গেল । আর ছবি যোগার করা হল । ছবিটা আমাদের থানাতে আজকে আসতেই আমার কেন জানি চেনা মনে হল । ভিডিও ফুটেজ থেকে ছবিটা বের করিয়েছিলাম আমি । মিলিয়ে মনে হল একই মেয়ে । তার মানে তোমার সন্দেহ একেবারে অমূলক নয় ।
-এখন ?
-এখন আর কি ! চল ঐ ফ্লাটে যাওয়া যাক । মেয়েটার আসলে কি হল সেটা দেখা যাক !

যদিও এটা পুলিশের কাজ, আমি আর রিয়াদ সাথেই গেলাম । আমার মাঝে তখন প্রবল উত্তেজনা কাজ করছে । আসলেই মেয়েটার সাথে কি হবে ! মেয়েটাকে কোন অবস্থায় পাওয়া যাবে সেটা আমি আর রিয়াদ বেশ উত্তেজিত হয়ে রইলাম । ব্যাংকার সাহেব ঘরেই ছিল । পুলিশ দেখে অনেক অবাক হলেন । বারবার বলতে লাগলেন যে পুলিশের কোন ভুল হচ্ছে কিন্তু কোন কাজ হল না । তার পুরো বাসা তন্ন তন্ন করে খোজা হল । কিন্তু মেয়েটার কোন খোজ পাওয়া গেল না ।
রিয়াজ ভাই আমার দিকে তাকিয়ে বলল, কিছুই তো পাওয়া গেল না । কোন ফ্ল্যাটে ঢুকেছে?
-সিড়ি দিয়ে উঠেছে দেখেছি । কিন্তু কোন ফ্ল্যাটে ঢুকেছে সেটা তো জানি না ।
-তাহলে কি সব ফ্ল্যাটে সার্চ করতে হবে?
-উপরের ফ্ল্যাটে দেখবেন না?
-বললে না উনি রিটায়ার্ড ।
-হ্যা । \
রিয়াজ ভাই কি যেন ভাবলো । তারপর বল, আচ্ছা চল । যাওয়া যাক । সেখানেও দেখা যাক । তারপর একে একে সবার ফ্ল্যাট দেখা যাবে ।

প্রফেসরের বয়স ৬০ এর বেশি হবে । তবে দেখতে এখনও বেশ কর্মঠ । বেশ সুন্দর স্বাস্থ্য । আমাদের দেখে খানিকটা বিরক্তই হলেন যেন । আমরা কেন এসেছি শুনতেই বললেন, এভাবে ঘর সার্চ করতে দিবেন না । আগে ওয়ারেন্ট লাগবে ।
অনেক মানুষ আছে যারা পুলিশ দেখলেই ভয় পেয়ে যায় । তারা যা বলে তাই করে । কোন প্রশ্ন করতে সাহস পায় না। কিন্তু কিছু মানুষ আইন জানে ভালোভাবেই । প্রফেসর সাহেব তেমনই একজন । তবে আমাদের রিয়াজভাইও বললেন ওয়ারেন্ট আসছে । এই সময়ে আমরা কি আপনার ঘরে বসতে পারি একটু । এটাতে অবশ্য প্রফেসর সাহেব মানা করলেন না । আমরা সহ দুজন অফিসার ঢুকলো ভেতরে । বাকিরা নিচে চলে গেল ।
ড্রয়িং আর ডাইনিং রুম এক সাথে । আমি বুঝতে পারছি যে রিয়াজ ভাই ভেতরে কেন ঢুকতে চাইলেন । তিনি দেখতে চাইছিলে যে ঘরে কাউকে আটকিয়ে রাখা আছে কিনা । তবে যখন প্রফেসর সাহেব আমাদের ভেতরে ঢুকতে দিলেন তখনই আমরা বুঝতে পারলাম যে ভেতরে কাউকে আটকিয়ে রাখা হয় নি । রিয়াজভাই চারিদিকে চোখ বুলাতে লাগলাম । মোট তিনটা ঘর । সব ঘরের দরজাই খোলা । খুব সহজেই অনুমান করা যায় এখানে কাউকে আটকিয়ে রাখা হয় নি । তার মানে অন্য ফ্ল্যাট গুলোতেও খোজ নিতে হবে।

আমি একটু উঠে সেলফে রাখা বইগুলোর দিকে এগিয়ে গেলাম । সেখানে বেশ অনেক বই রয়েছে । বই গুলো দেখছিলাম আর কি যেন ভাবছিলাম । প্রফেসর সাহেব তখন রিয়াজ ভাইয়ের সাথে কথা বলছেন । তাকে বোঝানোর জন্য চেষ্টা করছেন যে তিনি কেন কোন মেয়েকে নিয়ে আটকে রাখবেন । এমনটা ভাবার কোন মানে নেই ।
আমি এদিকে বই গুলোর দেখছি । হঠাৎ আমার মাথায় কি যেন একটা কাজ করলো । আমি দ্রুত পাে এগিয়ে গেলাম ফ্রিজটার দিকে । ততক্ষনে দেখলাম প্রফেসর সাহেব আমার দিকে ফিরে তাকিয়েছে । আমি কী করতে যাচ্ছি সেটা সে বুঝতে পেরেছে । চিৎকার করে বলল, এই ছেল……
তার কথা শেষ হল না তার আগেই আমি ফ্রিজটা খুলে ফেললাম । এবং একটা চিৎকার আমার মুখ দিয়ে আপনা আপনি বের হয়ে গেল ।
-আপনারা এভাবে আমার ঘরের জিনিস পত্র দেখতে পারেন না । আপনারা এখনই বের হন এখনই বের হন !

তবে রিয়াজ ভাই সেদিকে কোন খেয়াল দিল না । সে দ্রুত এগিয়ে এল আমার দিকে । আমার চোখ কে লক্ষ্য করে তাকালো খোলা ফ্রিজের দিকে । সেখানে জমা যাওয়া একটা মেয়ের কাটা মাথা রাখা ।

প্রফেসর সাহেবকে নিয়ে যাওয়া হল একটু পরেই । পুরো ফ্ল্যাট ভর্তি পুলিশ গিজগিজ করতে লাগলো । আমি আর রিয়াদ একপাশে চুপ করে বসে সব দেখতে লাগলাম । আমার চোখের সামনে সব কিছু হতে লাগলো ।

ঘন্টা দুয়েক পরে যা জানা গেল তার সারমর্ম হল হল ফ্রিজ ভর্তি মানুষের মাংস ভর্তি । পিচ পিচ করে কেটে রাখা হয়েছে । এবং সব থেকে ভয়ংকর ব্যাপার হচ্ছে কাঁচা মাংস ছাড়াও রান্না করা যে মাংস রয়েছে সেটাও মানুষেরও । এই লোক মানুষের মাংস খায় । মাই গড ! রান্না করে !

দুইদিন পরে আরও বিস্তারিত জানা গেল । প্রফেসর এর আগে আরও দুইজন মেয়েকে মেরেছে এবং সেই মাংস সে রান্না করে খেয়েছে । এইবারও হয়তো পার পেয়ে যেত । কিন্তু আমার সিসিটিভি ফুটেজের কারণে পারে নি । রিয়াদ আরও বিস্তারিত বলল সব । মেয়ে গুলো সব কলগার্ল ছিল বিধায় তাদের খোজ পাওয়া যায় নি । রিমা পড়াশুনা করলেও সেও এই পেশাতেই ছিল ।

রিয়াদ বলল, তুই কি মনে করে ফ্রিজ খুলেছিলি বলতো?
-আসলে বললে হাসবি ।
-বল শুনি ।
-প্রফেসরের বই গুলো দেখে । সেখানে ওখানে একটা বই দেখে মনে হল ফ্রিজের কথা ।
-কি বই?
-রবীন্দ্রনাথ এখানে কোনদিন খেতে আসে নি । বইটা আমার পড়া । সেখানে এই ভাবে মানুষের মাংস খাওয়ার কথা আছে ।
রিয়াদ আমার দিকে খানিকটা সময় অবিশ্বাস্য চোখে তাকিয়ে রইলো । তারপর বলল, তুই আর তোর বুদ্ধি । যাই হোক, বেটা যে ধরা পরেছে সেটাই সব চেয়ে বড় কথা !
-হ্যা সত্য । ভাবতে পারিস ! মানুষকে মেরে ফেলে তার মাংস খাওয়া ! আমার মনে হয় তো বেটা ঐ বই পড়েই এই আইডিয়া পেয়েছে ।

আমরা আরও কত কিছু আলোচনা করলাম । কিন্তু আমার এই সামান্য ফুটেজের কারনে যে একজন ভয়ংকর খুনী ধরা পড়লো এটা জেনে আনন্দ অনুভব করলাম ।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 4.6 / 5. Vote count: 28

No votes so far! Be the first to rate this post.


Discover more from অপু তানভীর

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

About অপু তানভীর

আমি অতি ভাল একজন ছেলে।

View all posts by অপু তানভীর →