সকালে ঘুম কিছু সময় তন্বী বিছানার মুখ গুজে বসে রইলো । কয়েক মুহুর্ত লাগলো তার মনে করতে গত রাতে তার সাথে কী কী হয়েছে সে কী কী করেছে সেগুলো আস্তে আস্তে মনে পড়লো সব । রাতে যে কাজটা ও করেছে সেটা সে কেন করলো? নিজের কাছে জানতে চাইলো কারণটা?
নিজের কাজে কোন ব্যাখ্যা ওর জানা ছিল না । এমন একটা ভয়ংকর কাজ সে কিভাবে করে ফেলল?
তাও আবার সায়নের সাথে ?
কেন করলো সে !
তখনই তার ফাহমির কথা মনে পড়লো । এবং অনুভব করলো যে গতকাল রাতে যতখানি খারাপ লাগছিলো বুক ফেঁটে কান্না আসছিলো এখন সেটা মনে হচ্ছে না । বরং কোন কিছুই মনে হচ্ছে না । এমনটা কেন মনে হল? মাত্র একদিনের ভেতরে কষ্টটা গায়েব কিভাবে হল?
ব্যাপারটা বুঝতে একটু সময় লাগলো তন্বী । কষ্ট হচ্ছে না কারণ স সে নিজেও একই কাজ করেছে । গতকালকে এতো কষ্ট হচ্ছিলো কারণ সে এতোদিন একক ভাবে কেবল ফাহমিকে ভালোবেসেছে । কখনও তাকে বিট্রে করার কথা চিন্তা করে নি । তার জন্য ফাহমিই ছিল সব । কিন্তু যখনই জানতে পারলো ফাহমি তাকে প্রতারিত করেছে তখন নিজের অবস্থা কথা চিন্তা করে কষ্টের পরিমানটা ছিল বেশি । এখন ও আর ফাহমি বলতে গেলে একই রকম হয়ে গেছে । সেও গতকাল রাতে তাই করেছে যা ফাহমি এতোদিন করে এসেছে ওর সাথে । হিসাব সমান । এটাই কী ব্যাখ্যা ? নিজের মনকে বোঝানোর চেষ্টা করলো সে ।
ঘড়ির দিকে তাকালো । দশটা বেজে গেছে । সায়ন কি বাসায় আছে নাকি চলে গেছে ?
তন্বী বিছানা ছেড়ে ওঠে বসলো । তখনই দেখলো যে ওর পরনে কোন পোশাক নেই । এতো গুলো বছর ও পার করে এসেছে । কোন দিন নিজেকে এভাবে কারো সামনে উপস্থাপন করে নি । এমন কি ফাহমিকেও কোন দিন অন্য রকম কোন ছোট সে দেয় নি । আর আজকে সে একেবারে নগ্ন হয়ে অন্য একজনের বেডরুমে বসে আছে ।
তন্বী চারিদিকে তাকালো । গতরাতে ওয়াশরুমে সে তার পরনের পোশাক খুলে রেখেছিলো । সেগুলো যে এখনও ভেজা সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না । এখন সে বের হবে কি পরে? এখানে তো সারা দিন বসে থাকবে না । ওর বেশ ক্ষুধাও লেগেছে । তখনই সে সায়নের শার্টটা দেখতে পেল । বিছানার এক পাশে পরে আছে । রাতের দৃশ্যটা আবার চোখের সামনে ভেসে উঠলো । ঘরের আলো বন্ধ থাকলেও সব কিছু দেখা যাচ্ছিলো বেশ পরিস্কার ভাবে । সায়ন যখন ঘরের ভেতরে ঢুকল তখন তন্বী বসে রয়েছে খাটের উপর । দুজনের চোখ দুজনের চোখের দিকে তাকিয়ে ছিল কেবল । সায়ন ধীরে ধীরে নিজের শার্ট খুলে এক পাশে রাখলো । তারপর ওর ঠিক সামনে দাড়ালো । তখনও একে অন্যের দিকে তাকিয়েই রয়েছে। সায়ন ওর চোখে কী দেখেছিলো সেটা তন্বী জানে না তবে তন্বীর চোখে কেবল ফাহমির আর ঐ মেয়েটির সঙ্গম দৃশ্য ভাসছিলো । অন্য কিছু যেন ওকে আর ভাবাচ্ছিলো না ।
তন্বী উঠে দাড়ালো । দেওয়ালে টাঙ্গানো বড় আয়নাটার দিকে তাকিয়ে রইলো কিছু সময় । নিজের দেহটাকে তার কেন জানি বড় বেশি আকর্ষনীয় মনে হল । এর আগে সে নিজেকে এভাবে দেখে নি কোন দিন । সায়নের শার্টটা পরে নিল সে । তারপর ঘর থেকে বের হয়ে এল । ভেবেছিলো ফ্লাটে বুঝি সায়ন থাকবে না । তবে সায়নকে দেখতে পেল । সে ডাইনিং রুমে বসে নাস্তা করছে । ওর ফিরে তাকালো । তারপর একটু হাসলো । বলল, ক্ষুধা লেগেছে?
-হুম ।
হাতের ইশারাতে নাস্তার প্লেটটা দেখিয়ে দিল । তন্বী বলল, আপনি বানিয়েছেন?
-হ্যা । কেন?
-বাহ। তবে এতো টাকা থেকে লাভ কি যদি নিজের হাতেই নাস্তা বানিয়ে খেতে হয় ।
সায়ন হেসে ফেলল । বলল, এখানে আমি সব সময় থাকি না । মাঝে মাঝে আসি । এই জন্য এখানে কিছু নেই । বাসায় লোক আছে নাস্তা বানানোর । আর নিজের কাজ নিজে করার ভেতরে খারাপ কি আছে?
তন্বী চেয়ার টেনে বসতে বসতে বলল, বাহ আমাকে তো খাটিয়ে মেরেছেন । কী প্যারাটা দিয়েছেন মনে নেই?
-ইউ ডিজার্ভ ইট ।
-মোটেই না । আমি কেবল আমার ডিউটি করছিলাম । ঐ রকম টাইটস পরা কাউকে হোটেলে কেউ ঢুকতে দেয়? কেউ যদি আপনার অফিসে হাফপ্যান্ট পরে কাজ করতে আসে তাহলে কী করতেন?
তন্বী একটা পাউরুটি আর ডিম ভাজার কিছু অংশ মুখে দিতে দিতে বলল, আমি যদি সত্যি জয়েন না করতাম আপনার অফিসে তাহলে কী করতেন? সত্যিই ঐ কাজ গুলো করতেন?
সায়ন হাসলো । তারপর বলল, আমাকে কি এতো খারাপ মানুষ মনে হয়েছে তোমার ? হ্যা একটু বদমেজাজী আমি তবে এতোটাও খারাপ না । অবশ্যই সেই কাজ গুলো আমি কখনই করতাম না । জানতাম যে তুমি ঠিক ঠিকই আসবে । এদেশের মানুষ জানে যে যার টাকা আছে সে সব কিছু করতে পারে । তবে যদি তুমি সত্যিই না জয়েন করতে তখন আমি সত্যিই অবাক হতাম । আর …..
-আর?
-আর…. আর …. থাকুক । সেটা নাই শুনলে । যাই হোক খাওয়া শেষ কর । তোমাকে বাসায় পৌছে দিই ।
বাসায় পৌছানোর কথা শুনেও তন্বী নিজের দিকে তাকালো । সে কেবল একটা শার্ট পরে আছে আর কিছু নেই । এবং অবাক করা ব্যাপারে তন্বীর এই ব্যাপারে লজ্জা লাগছে না । কেন লাগছে না সেটা তন্বীর নিজের জানা নেই । সায়ন বলল, তোমার জন্য ঐ যে ওখানে এক সেট কাপড় রাখা আছে । আপাতত এটা পরে যাও । একজন লোক আছে যে প্রতিদিন এসে ঘরবাড়ি পরিস্কার করে, তাকে বলে রাখবো যাতে তোমার জামা কাপড় গুলো ধুয়ে রাখে ।
তন্বী খাওয়া শেষ প্যাকেটে রাখা কাপড় বের হল । একটা কারো রংয়ের জিন্স আর টিশার্ট । শোবার ঘরে গিয়ে পড়ে দেখলো মোটামুটি ভালই ফিট হয়েছে । পুরো রাস্তা দুজন চুপই ছিল । ড্রাইভারের সামনে কেউ কোন কথা বলে নি । তন্বীর বাসার সামনে গাড়িটা থামলো। তন্বী বের হয়ে এল গাড়ি থেকে । সায়নও বের হল । শেষ কিছু কথা বলতে চাইছিলো । তখন হঠাৎ তন্বী বলল, আপনি আমাকে খুব খারাপ মেয়ে ভাবছেন, তাই না?
সায়ন বললল, কোন হিসাবে?
-আপনি জানেন।
-তাহলে আমিও খারাপ হয়ে ছেলে হয়ে গেলাম ।
একটু থামলো সায়ন । তারপর বলল, তুমি কাল যে পরিস্থিতির ভেতরে ছিলে আমি হলে কি করতাম আমি নিজেই জানি না । স্বাভাবিক ভাবে তোমার ব্রেন কাজ করছিলো না । সেই হিসাবে বলা যায় আমি এডভানটেজ নিয়েছি । দোষটা আমার বেশি । তবে আমি মোটেই দুঃখিত নই ।
শেষ লাইনটা শুনে তন্বী চোখ তুলে তাকালো । সায়ন বলল, আমি নিজে ধৌয়া তুলসি পাতা নই ।এবং এসব আমার কাছে নতুনও না । তবে ….
-তবে ?
-তবে আমার মনে হয় গতকাল রাত আমার জীবনের সেরা রাত ছিল ।
এই এতো সময়ে তন্বীর কেমন যেন লজ্জা লাগলো । লাল হয়ে উঠলো গালটা । সায়ন বলল, আমি জবের অফারটা আবার দিতে চাই তোমাকে । তুমি চাইলে আবার জয়েন করতে পারো । যদি চাও। পিএসের চাকরিটা কিংবা রেস্টুরেন্টের । যেটা চাও । আর আমি ফাহমিকে ফায়ার করবো আজকে ।
-কেন?
-ওকে চাকরি দিয়েছিলাম কেবল তোমাকে দেখানোর জন্য । সেটা শেষ । সো এখন আর ওকে রাখার কোন মানে নেই ।
তন্বী বলল, ওকে কি আর কটা দিন রাখা যায়?
-কেন ? এখনও মায়া আছে?
-না । মায়া না । আমি রিভেঞ্জ নিতে চাই আসলে ।
তন্বীর কথা শুনে সায়ন যেন খুব মজা পেল । তারপর বলল, কেমন ?
তন্বী বলল, আমি আপনার পিএসের পোস্টে জয়েন করতে চাই । এবং কোন ভাবে যদি আপনি ওকে একই অফিসে নিয়ে আসেন । ও তো লুকিয়ে লুকিয়ে আমাকে বিট্রে করেছে আমি ওর চোখের সামনে কাজটা করতে চাই । যদিও এটা সম্পূর্ণই আপনার হেল্পের উপরে নির্ভর করছে । তবে কেন জানি মনে হচ্ছে আপনি আমাকে হেল্প করবেন ।
সায়ন হাসলো । তারপর বলল, কেন এমন মনে হল?
-আপনার সাথে আমার যা পরিচয় যা দেখেছি আমার সাথে আপনি যা যা করছেন তাতে মনে হয়েছে যে আপনি এই সব কাজ গুলো করতে পছন্দ করেন। তাই নয় কি?
-সত্য বলেছো । ওকে আই উইল ডু দ্যাট । লেটস সি ফাহমি সাহেব কি করেন ।
দুই সপ্তাহ পার হয়ে গেছে । তন্বী আবারও সেই আগের পোস্টে ফিরে গেছে । তবে আগের মত সায়ন আর ওকে দিয়ে খাটাখাটনি করা না । ওর কাজ কর্মও কম এখন । তন্বীর জয়েনের দুইদিন পরে ফাহমি এসে জয়েন করেছে অফিসে । ফাহমির আগের অফিস থেকে ওকে এখানে বদলি করা হয়েছে । সায়ন অবশ্য বলেছিলো যে ফাহমি হয়তো জয়েন নাও করতে পারে । তকখন তন্বী তাকে নিশ্চিত করে বলেছে সে ফাহমি ঠিকই জয়েন করবে । কারণ ফাহমির একটা চাকরি খুব বেশি দরকার । ও এই সুযোগ হাত ছাড়া করবে না । হয়েছেও তাই ।
ঐদিনের পর ফাহমি তন্বীর সাথে কয়েকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছে । তবে তন্বী একটা বারও ওর কথা শোনে নি । তন্বীর কাছে ক্ষমা চেয়েছে বারবার । সে কেবল বলেছে তাকে আর একটা সুযোগ দিতে । যতবার ফাহমির কাছ থেকে ফোন এসেছে ততবার তন্বীর চোখে সামনে সেই দৃশ্য সামনে এসেছে আর ততই রাগে ওর শরীর জ্বলে উঠেছে ।
ফাহমির অফিসে জয়েনের দিনই তন্বী প্রথম ধাক্কাটা দিল । জয়েন করার দিনই ফাহমি এসে হাজির হল সায়নের সাথে দেখা করতে । ওর সামনে এসে বলল, স্যারের সাথে দেখা করতে এসেছি ।
তন্বী শান্ত মুখে বলল, ওয়েট । আমি জিজ্ঞেস করে নিই ।
ফোন দিতেই ভেতরে যেতে বলল। তন্বী এখন কি করবে সেটা বলাই আছে ।
মিনিট দুয়েক পরেই তন্বী ঢুকলো ভেতরে । হাতে কফির কাপ । একটা । কেবল সায়নের জন্য । তন্বীর সেটা সায়নের সামনে রাখলো । তারপর টেবিল ঘুরে গেল সায়নের চেয়ারের কাছে । সায়নের স্যুটের উপরে কিছু যেন লেগে আছে এমন একটা ভাব করে সেটা একটা হাত দিয়ে একটু পরিস্কার করে দিল । তারপর খানিকটা আদুরে কন্ঠে বলল, বিস্কিট খেতে দিয়েছিলাম, কাপড়ে ফেলতে নয় । অথচ সেখানে কিছুই ছিল না । এটা আসলে কেবল ছিল ফাহমিকে দেখানো যে দুজনের ভেতরে কেমন একটা সম্পর্ক । সায়ন হাসলো । সায়নের চোখ তখন ফাহমির দিকে। ফাহমি একটা বড় রকমের ধাক্কা খেয়েছে সেটা ওর চোখই বলে দিচ্ছে ।
তন্বী ওদের রেখে চলে গেল নিজের ডেস্কে । কিছু সময় পরে ফাহমি বের হয়ে গেল । যাওয়ার সময় তন্বীর দিকে তাকালো না । ও বেরিয়ে যেতেই সায়নের কেবিনে তন্বীর ডাক পরলো । তন্বী ভেতরে ঢুকে বলল, সরি ওভাবে আচরন করার জন্য ।
সায়ন তখন খুব মজা পেয়ে হাসছে । হাসতে হাসতে বলল, তন্বী তুমি সত্যিই খুব ইন্টারেস্টিং একটা মেয়ে । আই এম রিয়্যালি গোয়িং টু ইনজয় দিস । ডিড ইউ সি হিস ফেইস ? ও মাই গড ! একটা ব্যাপার কি জানো বাঙালী পুরুষ যতই নিজে দশটা মেয়ের সাথে পরকীয়া করুক যখন দেখে নিজের প্রেমিকা কিংবা বউ অন্য কারো সাথে কিছু করছে তখন সেটা সে কোন ভাবেই সহ্য করতে পারে না ।
#
-সায়ন চৌধুরীর সাথে তোমার কী চলছে?
তন্বী ক্যান্টিনে বসে ছিল লাঞ্চ আওয়ারে । ফাহমি কখন সামনে এসে দাড়িয়েছে সেটা খেয়াল করে নি । তন্বী ফিরে তাকালো ফাহমির দিকে । তারপর বলল, সেটা তোমার বিজনেস না ।
-দেখো তন্বী আই এম সরি । আমি যা করেছি তা ভুল করেছি । আমি মানছি । একটা সুযোগ তো দাও প্লিজ । দিবার সাথে আমার যা ছিল সবটুকুই ফিজিক্যাল । ওখানে ইমোশনের কোন ব্যাপার না । তুমি জানো আমি তোমাকে ভালবাসো । জানো না? প্লিজ। গিম এ চান্স।
তন্বী বলল, আচ্ছা । তা কত দিন ধরে এই ফিজিক্যাল ব্যাপারটা চলছে? কত দিন চলছে ?
ফাহমি চুপ করে রইলো । তন্বী বলল, বল শুনি? কত দিন ? কত দিন ধরে ঐ ফ্ল্যাটে থাকছো একসাথে ।
ফাহমি মৃদু স্বরে বলল, মাস চারেক ।
-আর কতবার তোমাদের মাঝে ফিজিক্যাল রিলেশন হয়েছে? লজ্জা পেও না । বলে ফেল । কতবার?
ফাহমি কোন কথা বলল না। তন্বী বলল, তুমি যে ক্ষমার কথা বলছো, যদি আমি বলতাম যে আমিও একজনের সাথে কেবল ফিজিক্যাল রিলেশন হয়েছে । কিন্তু তোমাকেই ভালোবাসি । তাহলে সেটা শুনে তোমার কেমন লাগতো?
-প্লিজ তন্বী । আমি তো সরি বলছি ।
-আমিও সরি বলছি । তুমি এবার দেখবে যে তোমার সামনেই এই অফিসেই আমি এমন কিছু করবো। তারপর তোমার সামনে এসে তোমাকে সরি বলবো । তখন দেখবো তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিয়ে কাছে টেনে নাও কিনা । ওকে ?
-প্লিজ ডোন্ট ডু দিস । আমি আবারও ক্ষমা চাইছি ।
-তোমাকে ক্ষমা করে দিয়েছি । তবে তোমাকে যা বললাম তা আমি করবো ।কিংবা বলা যায় হয়তো করে ফেলেছিও ।
ফাহমি যেন নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না । তন্বী সেদিকে তাকিয়ে রইলো কিছু সময় । তন্বী পরিস্কার বুঝতে পারছে না ও যা বলছে কিংবা করছে তা ফাহমিকে আঘাত করছে । এবং সেটাই তন্বী চাচ্ছে । আরও কিছু সময় সে তাকিয়েই রইলো । তারপর উঠে চলে গেল । মজা সবে শুরু হয়েছে ।