নতুন শিকার কে?

oputanvir
4.5
(26)

স্কুল ছুটির পরেও মিতুকে কিছু সময় স্কুলে থাকতে হয় । স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা হওয়ার কারণে ওর অনেক দায়িত্ব রয়েছে । সেগুলো সব শেষ করে বাসায় যেতে যেতে আরও ঘন্টা খানেক দেরি হয় প্রতিদিন । আজকে ছুটির পরে স্কুল ফাঁকা হয়ে গেল । সামনের সপ্তাহ থেকে পরীক্ষা শুরু হচ্ছে । আজকের পরে আর ক্লাস হবে না । তাই আজকে একটু দেরি হয়ে গেল । মিতু যখন কাজ শেষ করলো তখন স্কুল একেবারে ফাঁকা হয়ে গেছে । পিয়ন এসে দাড়িয়ে রয়েছে ঘরে তালা লাগানোর জন্য । পিয়নের দিকে তাকিয়ে মিতু বলল, রশিদ, সবাই চলে গেছে?
-জে আফা ! কেবল জয় স্যার আছে ।
-সে কি করছে?
-কি জানি ! কি জানি করতেছে । আমি তালা খুইলা দিয়া আসছি । সে বাইর হওয়ার সময় তালা লাগাইয়া আসবে ।

মিতু বারান্দায় এসে দাড়ালো । আকাশের দিকে চোখ পড়তেই দেখলো কালো মেঘে ছেঁয়ে গেছে । ঠান্ডা বাতাস দিচ্ছে । মিতুর বুঝতে কষ্ট হল না যে বাসায় যাওয়ার আগেই বৃষ্টি শুরু হবে । আজকে সে সাথে করে কোন ছাতা নিয়ে আসে নি । তার মানে বৃষ্টিতে ভিজতে হবে । ব্যাগে ছাতাটা নিতে গিয়েও নেয় নি আজকে । নিজের নেওয়া সিদ্ধান্তের কারণে নিজের উপরে খানিকটা বিরক্ত হল সে । এখন দ্রুত এটকা রিক্সা পেতে হবে । তাহলে হয়তো কিছুটা হলেও বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে । কিন্তু এই সময়ে এখান থেকে রিক্সা খুব একটা পাওয়া যায় না । স্কুলটা শহরের এক দিকে । যে সব রিক্সা এখানে দাড়িয়ে থাকে তা ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে চলে যায় । মিতু যখন যায় তখন আর কেউ এখানে থাকে না । মিতুকে তখন বেশ কিছু সময় হেটে তারপর রিক্সা নিতে হয় । এখন সেই পর্যন্ত যাওয়ার আগে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলে আর কিছু করার থাকবে না ।

-ম্যাম । এই ছাতাটা নিন ।
মিতু নিজের ভাবনাতে এতো মগ্ন ছিল যে অন্য দিকে কোন খেয়াল ছিল না । কখন যে পাশে একজন এসে দাড়িয়েছে সেটা খেয়াল করে নি । একটু চমলে উঠলো । তবে সেটা সামলে নিল । পাশে দাড়ালো জয় কবিরের দিকে তাকিয়ে দেখলো নীল রংয়ের ছাতাটা সে মিতুর দিকে বাড়িয়ে দিয়েছে ।
মিতু বলল, আমাকে ছাতা দিলে আপনি কিভাবে যাবেন?
-আমার সমস্যা নেই । আমার বাসা কাছেই । এই যে স্কুলের ডান দিকে যে পথ গিয়েছে সেটা থেকে সামনে গেলে । আপনি অনেক দুরে যাবেন ।
এই বলে জয় কবির আর কথা বলল না । ছাতাটা একেবারে মিতুর দিকে গুজে দিয়ে বাইরে বের হয়ে গেল । মিতু দেখতে পেল স্কুল গেটের কাছ পর্যন্ত যাওয়ার আগেই বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল । মিতুর মনে হল যে হয়তো জয় কবির আবার স্কুলের দিকে হাটা দিবে । তবে সেটা সে করলো না । স্কুলের গেট দিয়ে বের হয়ে গেল । গেটের কাছে গিয়ে একবার ফিরে তাকালো মিতুর দিকে ।একটু যেন হাসলো । তারপর দেওয়ালের আড়ালে হারিয়ে গেল । মিতু কিছু সময় সেদিকে তাকিয়ে রইলো । ওর মনে আসলে কি যে অনুভূতি হচ্ছে সেটা সে নিজেও জানে না । হয়তো এটা খুবই স্বাভাবিক একটা ঘটনা কিন্তু ওর কাছে কেন জানি স্বাভাবিক মনে হল না । এমনটা মনে হওয়ার পেছনে কি কোন কারণ আছে?

জয় কবির ছেলে এই স্কুলে এসেছে মাস দুয়েক আগে । একটু যেন অদ্ভুত সে । কারো সাথে ঠিকঠাক মত মেশে না । নিয়ম করে ক্লাস নেয় । তবে ক্লাসে সে বেশ জনপ্রিয় । ছাত্র ছাত্রীরা তাকে পছন্দ করে । তার পড়ানোর ধরনটা বেশ ভাল । কলিগদের সাথে কথা বার্তা খুব একটা কথা বার্তা না বললেও মিতুর প্রতি জয় কবিরের আচরন আলাদা । মিতুর সাথে সে বেশ ভাল আচরন করে । সব সময় কথা বলে নিজ থেকে এগিয়ে এসেই । যে কোন দরকারেই মিতুকে সাহায্য করে । মিতু ব্যাপারটা ঠিক ভাল করে বুঝতে পারে । জয় সাহেব তাকে পছন্দ করে । হয়তো সরাসরি বলে না কিন্তু তার আচরনে সব পরিস্কার বুঝা যায় ।

মিতু ছাতা নিয়ে বৃষ্টির ভেতরে ভের হয়ে গেল । বৃষ্টি খুব জোরে পড়ছে না । মিতু আস্তে আস্তে হাটতে লাগলো । আজকে ঘুরে ফিরে কেন জানি কেবল জয় সাহেবের কথা চিন্তায় ভেতরে আসছে । জোর করে চিন্তাটা বের করে দিতে চাইলো । এই সব চিন্তা করতে এখন আর মিতুর ভাল লাগে না । মানুষ কিছু কুৎসিত রূপ দেখেছে ।

পরদিন যদিও স্কুল ছুটি ছিল, তবে সেটা শুধু মাত্র ছাত্র ছাত্রীদের জন্য । স্যারদের পরীক্ষা সংক্রান্ত কাজ করতে স্কুলে আসতে বলা হয়েছে । কিন্তু আজকে জয় কবির স্কুলে আসে নি । মিতুর মনে হল সম্ভবত জয় কবিরের শরীর খারাপ হয়েছে । গতকাল বৃষ্টিতে ভিজেছে সে । এই কারণে আজকে আসতে পারে নি । মোবাইলটা হাতে নিয়ে কয়েকবার ফোন দিতে গিয়েও মিতু ফোন দিল না । কেন দিলো না সেটা সে নিজেই জানে না । সে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা । যে কোন দরকারে স্কুলের যে কাউকে সে ফোন দিতে পারে কিন্তু জয় কবিরকে সে ফোন দিতে একটু ইতস্তকর করে সব সময় । এই ইতস্তর করার কারণ সে নিজেই জানে না ।

মিতুর প্রধান শিক্ষিকা হওয়ার ব্যাপারটা স্কুলের অনেকেই ঠিক পছন্দ করে না । কারণ হিসাবে মিতুর বয়সটা সবার চোখে পড়ে খুব বেশি । একে তো মিতু মেয়ে । একটা প্রতিস্থানের প্রধান মেয়ে, এই ব্যাপারটা আমাদের দেশে খুব ভাল চোখে দেখা হয় না । অন্য দিকে মিতুর বয়স কম। বিসিএস দিয়ে সে নন ক্যাডার থেকে এই খানে ঢুকেছে । হিসাব করে দেখলো স্কুলের সব থেকে কম বয়সী শিক্ষিকা মিতু নিজে । এই কারণে মিতুকে একটু প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যে কাজ করতে হয় । এক মাত্র ব্যতিক্রম জয় কবির । অথচ তার সাথেই মিতুর কথা বলতে যত সংকোচ । অন্য সবাইকে সে কে একেবারে দৌড়ের উপর রাখে সব সময় অথচ জয় কবির কে সব সময় এড়িয়ে চলতে চায় ।

আজকে অবশ্য তেমন আচরন করলো না । স্কুল শেষে নিজে আজকে জয় কবিরের বাসার দিকে রওয়ানা দিলো । কেন যে দিল সেটা নিজে ঠিক মত জানে না । আজকেও আকাশ বেশ মেঘলা হয়ে আছে । হয়তো মাঝ পথে বৃষ্টি নামবে । অবশ্য আজকে নিজের ছাতাটা সে সাথে করে নিয়ে এসেছে । জয় কবিরের ছাতাটাও আজকে সাথে আছে ।

স্কুল থেকে মিনিট পনের দুরে জয় কবিরের বাসা । একটা বড় আম বাগান পার হয়ে ছোট একটা টিনের বাসা । মিতু ঠিক বুঝতে পারলো না যে এমন একটা জায়গাতে মানুষ কিভাবে থাকে । কী দরকার এমন একটা জায়গাতে থাকার ? লোকালয়ে চমৎকার সব বাসা পাওয়া যায় । সে নিজেও তো থাকে । যতই ব্যাচেলর ভাড়া না দিতে চান, স্কুলের শিক্ষক শুনলে মানুষ ঠিকই বাসা ভাড়া দিতো । তাহলে এখানে থাকার মানে কি?

গেটের কাছে এসে আরেকবার সে আরেকবার ভাবলো ! কেন এলো আজকে এখানে ? ছাতা দিতে?
নিজের কাছেই কারণ টা কেমন যেন হাস্যকর শোনালো ! সে আজকে এখানে কেন এসেছে সেটা মিতুর নিজের কাছেই অস্পষ্ট । মিতুর মনে হল এখানে আসা তার ঠিক হয় নি । কাল ছাতা দিলেই হবে । গেট থেকে ফেরৎ চলে যাবে এমনটা সময় সময় জয় কবির দরজা খুলে বের হয়ে এল । ওর দিকে তাকিয়ে হাসলো । তারপর মিতুকে অবাক করে দিয়ে ওর নাম ধরে বলল, মিতু এসো । বাইরে দাড়িয়ে কেন ?
মিতু কিছু সময়ের জন্য যেন খানিকটা থিমিয়ে গেল । তবে সেটা সামনে নিল সাথে সাথেই । বলল, আজকে আপনি স্কুলে আসেন নি যে?
-এই জন্য দেখা করতে এলে?
-আমি আপনার স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা । তুমি করে কেন বলছেন আমাকে শুনি?
জয় হাসলো । তারপর বলল, স্কুলের বাইরে পছন্দের মানুষকে তুমি করে বলাই যায় । নাকি?
মিতু বলল, আমি আসি । এই নিন আপনার ছাতা ।

তখনই মেঘ ডাকার আওয়াজ হল । এবং সাথে সাথেই বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল । জয় কবির বলল, দেখছো তো প্রকৃতিও চায় যেন তুমি ভেতরে আসো ।
মিতু কঠিন স্বরে বলল, আমি চাই না । এই নিন ছাতা । আমি গেলাম ।

এই বলে সে পেছনে ঘুরে হাটা শুরু করলো । নিজের আচরনে বড় বিকক্তবোধ করলো । কী দরকার ছিল আজকে আসার ! কেন সে আসতে কেন ? কোন দরকার ছিল কি? ছিল না ।

আস্তে আস্তে বৃষ্টির বেগ বাড়তে শুরু করলো । পুরো এলাকা কেমন যেন অন্ধকার হয়ে আসছে । বড় আম বাগানের ভেতরে ঢুকতেই মিতুর মনে হল যে চারিদিকটা একেবারে অন্ধকার হয়ে এসেছে । আশে পাশে কেউ নেই । মিতু দ্রুত হাটতে যাবে তখনই পেছন থেকে কেউ এসে ওর হাত চেয়ে ধরলো । একটু চমকে উঠলো মিতু । তবে তাকিয়ে দেখি জয় দাড়িয়েছে । বৃষ্টিতে ভিজে গেছে ও । মিতুর দিকে তাকিয়ে বলল, নিজেকে কেন এমন করে দুরে রাখো ? কেন?
মিতু কিছু বলতে যাবে তখন জয় একটা কাজ করে ফেলল । মিতুকে জড়িয়ে ধরে ওর ঠোঁটে চুমু খেলল । কান্ডটা এতোটাই আকস্মিক ছিল যে মিতু যেন অবাক হওয়ার সময় টুকু পেল না । তবে এতো সময় ধরে নিজের সামনে যে দেওয়া সে তুলে রেখেছিলো সে একেবারে ভেঙ্গে গেল । জয়কে সে ছাড়িয়ে তো দিলোই না বরং জয়ের চুমুতে আরও ভাল করে নিজেও সংযুক্ত হল । এটাই যেন চাইছিলো জয় । ঐ বাগানের মাটিতে বৃষ্টির ভেতরে মিতুকে চুমু খেতে শুরু করলো প্রবল ভাবে । এবং এক সময় সেটা কেবল চুমুতে সীমাবদ্ধ রইলো না । এতো গভীর ভাবে ওরা একে অন্যকে ভালোবাসতে শুরু করলো যে স্থান, কাল পাত্র কিছুরই খেয়াল রইলো না ।

যখন ওরা শান্ত হল তখনও বৃষ্টি পরছে । তবে ওদের দুজনের কারো শরীরেই বলতে কোন কাপড় নেই । মিতু প্রবল লজ্জা নিয়ে জয়ের দিকে তাকিয়ে বলল, কী করলাম আমি এটা?
-যা করেছো ঠিক করেছো । আসো?
-কোথায়?
-আজকে তোমাকে এতো সহজে ছেড়ে দিবো না বুঝছো ?
মিতুর একবার মনে হল যে বাঁধা দেয় কিন্তু মিতু নিজেও জানে সে নিজেও তীব্র ভাবে এটাই চায় । জয়ের প্রতি একটা তীব্র একটা আকর্ষন সে বোধ করে । এই আকর্ষনবোধ কোন ভাবেই সে এড়িয়ে যেতে পারে না ।

মিতুকে এক প্রকার কোলে করেই জয় নিয়ে যায় নিজের বাসার ভেতরে । বাসার ভেতরে ঢুকে মিতু একটা কটু গন্ধ পায় । তবে সেদিকে খেয়াল দেওয়ার সময় পায় না । জয় আবারও ওর উপরে ঝাপিয়ে পড়ে । দুজনে আমারও হারিয়ে যায় উনমত্ত্ব উন্মাদনায় । একটা সময় মিতুর মনে হল যেন মিতুর পুরো শরীর একেবারে কোথায় হারিয়ে যাচ্ছে । সব কিছু যেন ঘোরের ভেতরে চলে যাচ্ছে । মিতুর আর কিছু মনে করতে পারে না । এক সময়ে সে সব অনুভূতি হারিয়ে ফেলে । চোখ বন্ধ করার আগে সে জয়ের দিকে তাকিয়ে দেখে । ওর দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসছে । সেই ঝাপসা দৃষ্টির ভেতরেই মিতুর মনে হতে থাকে জয়ের চেহারা কেমন যেন বদলে গেছে । সেখানে ভয়ংকর একটা চেহারা এসে দেখা দিয়েছে ।

মিতুর আর কিছুই করার থাকে না । মিতুর কেবল মনে হয় এই মিলনের ফলে ওর দেহ থেকে সব কিছু যেন শুষে নিচ্ছে জয় । মিতুর চেতনা হারায় । তারপরেও জয় থামে না । একটা সময়ে মিতুর শরীরের সকল প্রাণ শক্তি শুষে নেয় । মিতুর দেহটা একেবারে যেন শুকিয়ে গেল আরও কিছু সময়ের ভেতরেই । জয় থামলো । তারপর উঠে দাড়ালো । তাকিয়ে রইলো মিতুর শুকিয়ে যাওয়া দেহটার দিকে । এতো দিন পরে একটা সুস্থ দেহ সে পেল । মনে মনে সন্তুষ্ট হল সে । নতুন জীবন এসে জড় হয়েছে তার ভেতরে ।

জয় স্বাভাবিক কেউ নয় । মানুষের মত দেখতে হলেও ও কোন মানুষ নয় । প্রাচীন এক জীব সে । ওর প্রজাতীর প্রায় সব বিলুপ্ত হয়ে গেছে । প্রাচীন কোন লেজেন্ডে এখনও কিছু কিছু কথা উল্লেখ আছে ওদের ব্যাপারে । ওদেরকে বলে বলে টারটিউলিওন । টারটিউলিওনদের বেঁচে থাকার জন্য স্বাভাবিক খাদ্য দরকার হয় না । ওর দরকার হচ্ছে মানুষের প্রাণ শক্তি । এবং সেটা সে নিতে পারে বিপরীত লিঙ্গের কোন মেয়ের কাছ থেকেই । একটা মেয়ের ভেতরকার প্রাণ শক্তি তখনই জয়ের ভেতরে স্থানান্তরিত হতে পারে যখন সেই মেয়েটা তীব্র ভাবে জয়ের সাথে মিলিত হয় স্ব ইচ্ছেতে । জোর করে কিছু করলে তার থেকে খুব সামান্যই কিছু জয়ের দেহে প্রবেশ করে । অবশ্য জয়ের ভেতরে এমন কিছু আছে যা মেয়েদেরকে আকর্ষিত করে ।

জয় উঠে দাড়ালো । ওর মাথার উপরে শক্ত দুটো শিং গজিয়েছে । নাকটা সমান হয়ে গেছে । সেখানে কেবল দুটো ফুটো চোখ দুটো আরও বড় হয়েছে । লাল আকার ধারন করেছে । গায়ের রং টা হয়ে গেছে হাকলা নীল । লম্বা আরো ফুট খানেক বেড়েছে । এটাই ওর আসল চেহারা । জয় আয়নাতে নিজেকে আরও একবার দেখলো । এখনও ওর শরীর উত্তেজিত । শান্ত হয়ে এল আবারও মানুষের চেহারায় ফিরে আসবে । তবে এবারও নতুন চেহারা নিতে হবে । আগের চেহারা আর নেওয়া যাবে না । অন্য কারো চেহারা নিতে হবে । খুজে নিতে হবে নতুন কোন শিকার কে । সেটা অবশ্য জয়ের জন্য খুব একটা ঝামেলার না ।

পরিশিষ্টঃ

কদিন আলমপুর থানার লোকজনের মাঝে খুব চাঞ্চল্য দেখা দিল । কারণ তাদের ছোট এলাকাতে অস্বাভাবিক একটা ঘটনা ঘটেছে । তাদের সরকারী স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার মৃত দেহ পাওয়া গেছে অন্য আরেক শিক্ষকের বাসায় । শিক্ষিকার নাম সানিয়া জামান মিতু । সব চেয়ে অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে মিতুর দেহটা এমন ভাবে পড়ে ছিল যেন সেখানে কোন কিছুই নেই । দেহের ভেতরটা একেবারে ফাঁফা মনে হয়েছে । শরীর থেকে সমস্ত রক্ত মাংস যেন কেউ শুষে নিয়েছে । কিভাবে এটা সম্ভব হয়েছে সেটার ব্যাখ্যা কারো কাছে নেই । অন্য দিকে সেই ঘরে আরও একটা লাশ পাওয়া গেছে । লাশটা পলিথিন দিয়ে পেঁচানো ছিল । সেটা একেবারে পঁচে গলে গেছে । লাশটা অন্তত মাস দুয়েকে পুরানো । এবং লাশটা একই স্কুলের জয় কবিরের ।
সবার মনে এই একটা প্রশ্নই জন্মেছে যে যদি লাশটা জয় কবিরের হয় এবং লাশটা মাস দুয়েকের পুরানো হয় তাহলে এই দুই মাস যে জয় কবির তাদের স্কুলে ক্লাস নিয়েছে সে কে ছিল ।
এই প্রশ্ন গুলোর কোন জবাব পাওয়া গেল না। পুলিশ কোন সমাধান করতে পারলো না ।

আলমপুর থেকে প্রায় দুইশ মাইল দুরে আজকে অজিপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সপ্তাহখানেক আগে নতুন একজন ডাক্তার জয়েন করেছে । সুদর্শন চেহারার ডাক্তার মানুষের সাথে মিশে কম । তবে নিজের কাজ সে ঠিকই ভাল ভাবে করে ।

দ্য রাবার গার্ল গল্পটার শেষ পর্ব প্রকাশ হয়েছে আজকে । যারা পড়েন নি, পড়ে আসুন ।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 4.5 / 5. Vote count: 26

No votes so far! Be the first to rate this post.

About অপু তানভীর

আমি অতি ভাল একজন ছেলে।

View all posts by অপু তানভীর →