গল্পটা লন্ডন শহরের । দুই বোনের গল্প । বিয়াট্রিস এবং জেসি। দুই বোন এবং তার সাথে আরও দুই ছেলে স্পাইক এবং বিলি । চারজন একে অন্যের বন্ধু । এই দুনিয়াতে তাদের আর কেউ নেই । এই কুটিল শহরে ওরা একে অন্যের জন্য রয়েছে । একটা বদ্ধ স্থানে বসবাস করে ।
জেসির ভেতরে কিছু অস্বাভাবিকত্ব রয়েছে । সে ঘুমালে ভয়াল দুঃস্বপ্ন দেখে । এবং তার আরও একটা বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে । সে যে কাউকে স্পর্শ করার সাথে সাথে তার মনের ভেতরে ঢুকে পড়তে পারে । তার মনের গভীর লুকায়িত স্মৃতি গুলো খুজে বের করতে পারে । ঠিক এই ক্ষমতার জন্য তাদের সামনে এসে হাজির হয় জন ওয়াটসন । জি ঠিকই ধরেছেন । এটা সেই বিখ্যাত বেকার স্ট্রিটের টুটুওয়ান বির জন ওয়াটসন । শার্লক হোমসের সঙ্গী জন ওয়াটসন ।
জন ওয়াটসন বিয়াট্রিস এবং জেসিকে ইনভেস্টিগেশনের জন্য নিয়োগ করে । তার ভাষ্যমত লন্ডন শহরে একটা কিছু চলে এসেছে । অতিপ্রকৃত কিছ । সেটা থেকে মানুষ কোন কালো ক্ষমতা পাচ্ছে এবং সেটা দিয়ে খারাপ কাজ করছে । এইটার তদন্তের জন্যই সে জেসি এবং বিয়াট্রিসকে নিয়োগ করতে চায় । যখন বিয়াট্রিস জানতে চায়, তারাই কেন তখন জন ওয়াটশন বলে তার বোন জেসির একটা বিশেষ ক্ষমতা আছে যা আর কারো নেই । সে এই অতিপ্রকৃত ক্ষমতার কারণেই সে অনেক কিছু দেখতে পারে ।
বিয়াট্রিসের জন ওয়াটশনকে ঠিক পছন্দ হয় না কিন্তু তার তখন দরকার টাকা । এই জন্য সে রাজি হয়ে যায় এবং চারজন মিলে তদন্তের কাজে লেগে যায় । এই সিরিজের আরেকটা চরিত্র হচ্ছে লিও । সে হচ্ছে ইংল্যান্ডের প্রিন্স । তবে শারীরিক ভাবে সে খানিকটা অসুস্থ । তার পায়ে কিছু সমস্যা রয়েছে । এই কারণে ছোট বেলা থেকেই সে প্যালেসের ভেতরেই বন্দী থাকে । সে নিজেকে বন্দী মনে করে । তার কিছু ভাল লাগে না । একদিন রাতের বেলা গাড়িতে করে ঘুরতে গিয়েই সে বিয়াট্রিসকে দেখতে পায় । মেয়েটির আচরন কেন জানি তার ভাল লাগে । সে স্ট্রিটের নামটা মনে রাখে । পরদিন প্যালেস থেকে লুকিয়ে সে চলে আসে সেখানে । এবং বিয়াট্রিসের খোজ পেয়ে যায় । বিয়াট্রিস তখন তদন্তের ব্যাপারটা নিয়ে ভাবছে । কেউ নবজাত বাচ্চাদের চুরি করছে এবং ঘরের আশে পাশে কাকের পালক পড়ে থাকছে । লিও তাকে এই ব্যাপারে সাহায্য করে এবং এক সময়ে তাদের দলের সাথে যুক্ত হয়ে যায় । এই পাঁচজনের দল মিলে কয়েকটা কেস সমাধান করে ।
ঠিক এমন একটা কেস সমাধান করতে গিয়েই তারা গিয়া হাজির হয় শার্লকের বড় ভাই মাইক্রফট হোমসের বাসায় । শার্লকের ডায়রী খুজে পায় তারা । সেখান থেকে জানতে পারে যে বিয়াট্রিস এবং জেসির মায়ের সাথে তাদের পরিচয় ছিল । বিয়াট্রিস এবার শার্লককে খুজতে থাকে । তার মায়ের সাথে কি হয়েছিলো সেটা জানা দরকার তার । কিন্তু এই কারণে আগে শার্লককে খুজে বের করা দরকার । কিন্তু জন কোন কারণে চায় না যে শার্লকের দেখা তারা পাক । কিন্তু কেন? তাহলে জন ওয়াটশনের হাত রয়েছে এর পেছনে ।
এই ভাবেই শেস পর্যন্ত কাহিনী সামনের দিকে এগিয়ে যায় । আমার অতিপ্রাকৃত সব কিছুর প্রতি আগ্রহ বেশি । আর এই রকম বিখ্যাত চরিত্রের সাথে মিলিয়ে যখন কিছু আসে তখন তো কথাই নেই । আমার খুব চমৎকার লেগেছে কাহিনীটা । শেষ পর্যন্ত আসলে কী বের হয়ে সেটা বলে দিতে ইচ্ছে করলেও বলছি না । কারণ তাতে ড্রামাটা দেখার আগ্রহ শেষ হয়ে যাবে । মোট আট পর্বের ড্রামা । ড্রামার নাম The Irregulars । নেট ফ্লিক্স থেকে খুব সহজেই দেখতে পারবেন । নয়তো টরেন্ট থেকে নামিয়েও দেখা যাবে ।