আমি নিজের চোখ সরাতে পারছিলাম না । আবার তাকিয়েও থাকতে পারছিলাম না সরাসরি । কোন মেয়ের দিকে এভাবে তাকিয়ে থাকাটা কি ঠিক হচ্ছে?
তখনই মনে হল এই কোন মেয়েটি আর কেউ নয়, আমার বউ হয় । আমার বিয়ে করা বউ । এই মেয়ের দিকে আমি তাকাতেই পারি । পারি কি?
মিতু সবে মাত্র গোসল করে বের হয়েছে । আমি ড্রয়িং রুমে বসে টিভি দেখছি । শোবার ঘরের দরজা বন্ধ করা নয় । আমি যেখানে বসে রয়েছি সেখানে সেখান থেকে ঘরের ড্রেসিং টেবিলটা পরিস্কার দেখা যায় । মিতু সেখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে ।
মিতুর পরনে কেবল মাত্র একটা তোলায়ে জড়ানো । বুকের নিচ থেকে হাটুর উপর পর্যন্ত । মিতুর দিকে আমার বারবার চোখ চলে যাচ্ছে । ও তখন নিজের চুল শুকাতে ব্যস্ত । আমার দিকে তার খেয়াল নেই । আমি আরও কয়েকবার ফিরে তাকালাম ।
আমাদের বিয়ে হয়েছে মাস খানেক । এখনও আমাদের মাঝে ঠিক অস্বস্তিটা কাটে নি । পুরোপুরি ফ্রি হতে পারি নি । এখনও কথা বলতে কেমন যেন লাগে নিজের কাছেই ।
আমি আবার ফিরে তাকালাম ওর দিকে । তবে এবার ওকে দেখতে পেলাম না । আয়নার সামনের থেকে সে সরে গেছে । তবে একটু পরে ফিরে এল । দেখলাম ততক্ষণে সে একটা কামিজ আর লেগিংস পরে ফেলেছে । এবার যেন ওকে আরও বেশি আকর্ষনীয় লাগছে । আজকে আমাদের একটু বাইরে যাওয়ার কথা । বিকেল বেলা এক সাথে একটা মুভি দেখার কথা । সেটার জন্যই ও তৈরি হচ্ছে ।
এবার মিতু আমার দিকে ফিরে তাকালো । হাসলো একটু । তারপর বলল, তৈরি হয়ে নাও। আমার আর বেশি সময় লাগবে না ।
আমি জামা পরার জন্য ঘরের দিকে রওয়ানা দিলাম । ততক্ষণে মিতু বসে পরেছে চেয়ারে । নিজেকে সাজাতে ব্যস্ত যদিও সে খুবই কম সাজে । আমি শার্ট পরে নিলাম । প্যান্ট টা হাতে নিয়ে ওয়াশ রুমে গেলাম । ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখি ও মুখে যেন কি মাখছে । আমি বের হয়ে আবারও বসার ঘরে বসলাম ।
আরও দশ মিনিট পরে মিতু একেবারে তৈরি হয়ে গেল । বের হওয়ার আগে ও দরজার কাছে দাঁড়িয়ে স্যান্ডেল পরতে শুরু করলো । এক পা টুলটার উপরে তুলে দিতেই ওর লেগিংস পরা পা টার দিকে আমার চোখ আবার চোলে গেল । চোখ সরাতে গিয়েও সরাতে পারলাম না ।
এটা কি দোষের?
অন্য মেয়েদের দিকে তাকানোটা আমার কাছে খারাপ মনে হয় । আমি কখনই এই কাজটা করি না । অনেকেই দেখি অন্য মেয়েদের চোখে কেমন লোলুপ চোখে তাকায় । তাদের ভাষ্য হচ্ছে আমরা তো কিছু করছি না, দেখছি কেবল ! এটাও আমার কাছে খারাপ মনে হয় । কিন্তু নিজের বউয়ের দিকে তাকানোটা কি খারাপ !
ও যদি দেখে ফেলে তাহলে কি আমাকে খারাপ ভাববে?
রিক্সাতে উঠার পরে দেখলাম মিতু আমার হাত ধরে রেখেছে । ব্যাপারটা আমার ভাল লাগলো ! আমি সামনের দিকে তাকিয়ে রইলাম । ইচ্ছে করছিল মিতুর দিকে তাকাতে । মিতু হঠাৎ বলল, বাহ নিজের বউয়ের দিকে তো তাকাতে লজ্জা পাও তা মেয়ের দিকে তাকানো হচ্ছে !
আমি বললাম, কি বললে ! মোটেই না । আমি কোন মেয়ের দিকে তাকাই নি ।
মিতু হেসে ফেলল আমার কন্ঠস্বর শুনে । তারপর বলল, আমার দিকে তাকাতে তো ঠিকই লজ্জা পাও !
আমি এবার সত্যিই লজ্জা পেয়ে গেলাম । নিজের বউ সামনে লজ্জা পাওয়াটা মোটেই ভাল কথা না ।
মিতু বলল শুনো মিস্টার হাসব্যান্ড এতো ভাল সাজার দরকার নেই । আমি তোমার বিয়ে করা বউ । এতো লুকিয়ে লুকিয়ে দেখার কিছু নেই । সরাসরিই দেখতে পারো । আর ……
-আর?
-আর তোমার বোঝা উচিৎ কখন কোন দরজা খোলা থাকে কেন থাকে !
আমি অবাক হয়ে তাকালাম মিতুর দিকে । মানে মিতু ইচ্ছে করে দরজা খোলা রেখেছিল যাতে আমি ওর দিকে তাকাই । এই মেয়ে দেখি দুষ্টু আছে । নাহ আজ থেকে আর বেশি ভাল হাজব্যান্ড সাজার দরকার নেই । একটু দুষ্টু হতেই হবে ।
Discover more from অপু তানভীর
Subscribe to get the latest posts sent to your email.