পাপ স্বীকার

4.8
(45)

নিমুকে স্কুলে নামিয়ে আমি গাড়িটা স্কুলের সামনেই দাড় করিয়ে রেখেছি । কোন দিকে যাবো ভাবছি । আজকে আমার ডিউটি রাতের বেলা । সকাল বেলা নাস্তা করেই বের হয়েছি । তাই এখনই বাসায় যাওয়ার কোন দরকার নেই । কোন দিকে যাবো যখন ভাবছি তখনই গাড়ির পেছনের দরজা খোলার আওয়াজ পেলাম । তখনই মনে হল নিমু বের হয়ে যাওয়ার পর আমার গাড়িটা লক করতে মনে নেই । এই ভুলটা আমার বারবার হয় । আমি পেছনে তাকিয়ে দেখলাম একটা মেয়ে গাড়ির ভেতরে উঠে বসলো । আমার দিকে শান্ত চোখে তাকিয়ে বলল, এটা নিমুদের গাড়ি না?

আমি কোন কথা না বলে মেয়েটার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম । অনেক দিন পরে নিখুত চেহারার কোন মেয়েকে আমি দেখলাম । চোখের রং ঠিক কালো নয় । বিড়ালী মত চোখ । পাতলা ঠোটে গাঢ় করে লিপস্টিপ দেওয়া । সেই তুলনাতে মুখে মেকআপ নেই বললেই চলে । চুলগুলো স্ট্রেইট করে এক পাশে রাখা । হাতে একটা কালো রংয়ের হ্যান্ডব্যাগ । আমার দিকে মেয়েটা আবার বলল, নিমু হৃদি একই সাথে পড়ে । আমি হৃদির খালা হই । আমাকে একটু বাংলামোটর নামিয়ে দাও দেখি ।

এতো সময়ে পরে আমার মনে হল মেয়েটা আমাকে গাড়ির ড্রাইভার মনে করছে । কিছু বলতে গিয়েও বললাম না । কেন বললাম না সেটা আমি নিজেও জানি না । আমার পরনে একটা পুরানো টিশার্ট । নিচে একটা থ্রিকোয়াটার পরা । যেদিন রাতে আমার নাইট ডিউটি থাকে সেদিন আমি বেলা করেই ঘুমাই । আজও তাই করছিলাম । এমন সময় ভাবী এসে আমাকে ডেকে তুলল । ভাইয়া নাকি সকালেই অফিসে বের হয়ে গেছে। একটু পরে এ লোক আসবে পানির পাইপের কাজ করানোর জন্য । তাই ভাবীর এখন বাসায় থাকাটা জরূরী । নয়তো সে নিজে নিমুকে স্কুলে নিয়ে যেত । আমার যেহেতু কোন কাজ নেই তাই আপাতত আমি যেন একটু নিমুকে স্কুলে নিয়ে যাই । ভাইয়া গাড়ি রেখে গেছে ।

কি আর করা । ভাতিজীকে নিয়ে চলে এলাম স্কুলে । তাকে নামিয়ে দিয়ে ফিরে যাবো ভাবছি তখনই এই মেয়ে গাড়িতে উঠে আমাকে ড্রাইভার ডেকে ফেলল । আমি আয়নাতে নিজের চেহারাটা আরেকবার দেখার চেষ্টা করলাম । আমাকে কি কোন ভাবে এই গাড়ির ড্রাইভারের মত লাগছে? নিজের পুরানো টিশার্টের দিকে আরেকবার চেয়ে রইলাম । ভাবী বলছিলো শার্ট পরে আসতে আমিই বলেছিলাম কোন দরকার নেই । গাড়িতে করে যাবো আর ফিরে আসবো এখানে শার্ট গায়ে দেওয়ার কো দরকার দেখছি না ।

আমি গাড়ি চালু করলাম । মেয়েটা গাড়িতে উঠেই নিজের মোবাইলে ব্যস্ত হয়ে গেছে । আমি লুকিং গ্লাসে মেয়েটাকে বারবার দেখতে লাগলা । সত্যি বলতে কি মেয়েটার চেহারার কারণেই মেয়েটাকে আমি কোন কথা বললাম না । বলতে পারলাম না । চেহারা নিয়ে আমার কোন ফ্যাসিনেশ কোন দিনই ছিল না তাহলে এই মেয়ের চেহারা আমার মনে এমন ভাবে ধাক্কা কেন দিলো ।

বাংলামোটরে মেয়েটা নেমে গেল । নামার সময় আমার দিকে একটা ৫০টাকার নোট বাড়িয়ে দিলো । আমাকে কোন কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে মেয়েটা বিশ্ব সাহিত্যকেন্দ্রের গলিতে ঢুকে পড়লো । আমি আরও কিছু সময় তাকিয়ে থাকতে চেয়ে ছিলাম মেয়েটার চলে যাওয়া পথের দিকে কিন্তু পেছন থেকে গাড়ির হর্ন শুনে সামনে এগিয়ে যেতে হল । খুব ইচ্ছে হল গাড়িটা এক পাশে রেখে আমিও গলির ভেতরে ঢুকে পড়ি। বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের গলি তাই খুব সম্ভবনা রয়েছে মেয়েটা সম্ভবত বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে নয়তো বাতিঘরে ঘুরেছে । বাতিঘরে ঢোকার সম্ভবনা বেশি । কিন্তু চিনন্তাটা বাতিল করে দিলাম । আমি কোন টিনএজ ছোকরা না । আমার এই সব হ্যামলামো মানায় না ।

মেয়েটার সাথে আমার দেখা হল আবার । এবার আমার নিজের এড়িয়াতে । সেদিনও আমার নাইট ডিউটি ছিল । রাত এগারোটার দিকে ওয়ার্ডের গেটের কাছে একটু হইচই শুনে এগিয়ে দেখি আমাদের দারোয়ান কাউকে আটকে রেখেছে । ভেতরে ঢুকতে দিবে না কিন্তু সেই মানুষটা ভেতরে আসবেই । এবং সেই মানুষটা আর কেউ নয় হৃদির খালামনি । আমি সামনে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম কি সমস্যা সারোয়ার?
সরোয়ার ওয়ার্ডের দারোয়ানের নাম । সে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, দেখুন তো স্যার আমি বলছি দশটার পরে বাইরের কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না কিন্তু ইনি শুনছেনই না । আমার দিকে তাকাতেই একটু যেন থমকে দাড়ালো সে । চোখে খানিকটা অবিশ্বাস দেখতে পেলাম । সেদিন আমাকে ড্রাইভার ভেবে ভুল করেছিলো । আজকে সেটা বুঝতে পেরেছে । আমি সরোয়ারকে বললাম, আচ্ছা সমস্যা নেই । উনাকে আসতে দাও । তারপর তার দিকে তাকিয়ে বললাম, বেশি সময় দেওয়া যাবে না । আধা ঘন্টা ! ঠিক আছে?
সে বলল, হ্যা । তাতেই চলবে !

মেয়েটির নাম আমি কৌশলে নিমুর কাছ থেকেই জেনে নিয়েছিলাম । মৌমিতা রহমান । ঢাবি থেকে মাস্টার্স করছে । মৌমিতা হাতের ব্যাগ নিয়ে ভেতরে ঢুকে গেল । আমার সাথে সাথে হাটতে লাগলো । আমার খানিকটা কৌতুহল জাগলো যে মেয়েটা কার সাথে এতো রাতে দেখা করতে এসেছে । পরিবারের কেউ কি ! আমরা পরিবারের একজনকে রাতে রোগীর সাথে থাকতে দেই । কিন্তু আর সবাইকে চলে যেতে হয় রাত দশটা বাজলেই । আমি একটু গলা খাখারি দিয়ে জানতে চাইলাম, কাকে দেখতে এসেছেন?
মৌমিতা বলল, আমার এক বন্ধু । ওর আসলে ঢাকাতে দেখার মত কেউ নেই ।

হঠাৎই মনের ভেতরে একটা অচেনা অনুভূতি হল । আমি বুঝতে পারলাম না এই অনুভুতির উৎস টা কি ! কেন এমন টা মনে হচ্ছে আমার ! এমনটা হওয়ার কোন কারণ আছে কি ?
আমি ওয়ার্ডের দরজা পর্যন্ত গিয়ে থেমে গেমাল । মৌমিতাকে দেখলাম একটা বেডের কাছে গিয়ে দাড়াতে । ছেলেটাকে চিনতে আমার কষ্ট হল না । বাদল নাম । লিউকোমিয়ার পেসেন্ট । এখন অবস্থা বেশ খারাপের দিকে । কতদিন আর বাঁচবে সেটা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না । এবং ছেলেটা যতদুর জানি এতিম । কাউকেই আসতে দেখি নি ভর্তি হওয়া পর্যন্ত ! এতোদিন ছেলেটার প্রতি আমার একটা মায়া জন্মেছিল কিন্তু হঠাৎ করেি বাদলকে কেন জানি আমার অপছন্দ হতে শুরু করলো । কোন কারণ নেই তবুও আমি ছেলেটাকে ঈর্ষা করতে শুরু করলাম ।

আধা ঘন্টা পরে মৌমিতা যখন বের হল তখন ওর চোখ মুখ কেমন বিষণ্ণ দেখলাম । আমার দিকে তাকিয়ে বলল, ঐদিনের ব্যবহারের জন্য আমি সরি । আমি আসলে চিনতে পারি নি আপনাকে !
-না না ঠিক আছে । কোন সমস্যা নেই । আর তাছাড়া ঐদিন আমি ড্রাইভারই ছিল ।
-আপনি নিমুর ছোট চাচু হন । আপনার কথা শুনেছি ভাবীর মুখে । আমার বোঝা উচিৎ ছিল ।
আমি হাসলাম ! মৌমিতা আবার বলল, আর আজকের জন্য ধন্যবাদ !

কিছু সময় দুজন চুপ করে দাড়িয়ে রইলাম দরজার কাছে । মৌমিতা কিছু যেন জানতে চেয়েও চাচ্ছিলো না । এক সময় বলেই ফেলল, বাদলের অবস্থা কি খুব খারাপ?
-হ্যা । একটু বেশিই খারাপ । আমার মনে হয় না এ যাত্রায় ও সারভাইভ করবে !
মৌমিতার চোখে একটা অশ্রুর রেখা দেখতে পেলাম আমি । আমার মনের ভেতরে আবারও যেন একটা তীব্র ঈর্ষাবোধ জমে উঠলো । আমি নিজের ভেতরের এই অনুভূতি দেখে নিজেই অবাক হয়ে গেলাম । সত্যি বলতে কি মৌমিতার সাথে ঐদিন দেখা হওয়ার পর থেকেই মনের ভেতরে একটা ছোট স্বপ্ন জেগেছিল যে ওকে বিয়ে করার । আমার বিয়ের জন্য মেয়ে খোজা হচ্ছে । আমার ইচ্ছে ছিল বাসায় বলবো যেন পাত্রী হিসাবে মৌমিতাকেই পছন্দ করা হয় । কিন্তু এখানে যা দেখটে পাচ্ছি বাদল নামের ঐ পেসেন্টের প্রতি মৌমিতার একটা তীব্র অনুভূতি রয়েছে ।
আমার বারবার কেবল মনে হচ্ছে কেন থাকবে !

মৌমিতা চলে যাওয়ার পরে আমি বেশ কয়েকবারই বাদলের বেডের সামনে গিয়ে হাজির হলাম । কয়েকবার সব কিছু চেক করতে থাকলাম । বারবার মনে হতে থাকলো এই বেটা যদি বেঁচে না থাকে তাহলে মৌমিতা আমার হবে । ওকে পাওয়া সহজ হবে । পরক্ষণেই নিজের কাছেই নিজেকে ভৎসনা দিয়ে দিলাম । কি ভাবছি আমি ! আমি একজন ডাক্তার ! একজন ডাক্তার হয়ে আমি এমন কিছু কিভাবে ভাবতে পারি !

কিন্তু বাদল বেশি দিন বাঁচলো না । দুইদিন পরেই বাদলের করোনা ধরা পড়লো । এবং সেটা বুঝে ওঠার আগেই খারাপের দিকে মোড় নিল । বাদলের শারীরিক অবস্থা আগে থেকেই বড় নাজুক ছিল, করোনা তাই খুব দ্রুত এফেক্ট করলো ওর দেহে ! এগারো দিনের মাথায় বাদল মারা গেল । আমি জানতাম যে বাদল বেশিদিন বাঁচবে না কিন্তু এতো দ্রুত যে মারা যাবে সেটা আমি বুঝতে পারি নি । প্রতিটি মৃত্যুতে আমার মন সিক্ত হয় । কিন্তু এই মৃত্যুতে আমার কেন জানি মোটেই মন খারাপ হল না ।

এরপর সব কিছু যেন বেশ দ্রুতই হতে শুরু করলো । মৌমিতাদের বাসায় বিয়ের প্রস্তাব পাঠানো হল । পাত্র হিসাবে আমি মোটেই খারাপ নই । আমি জানতাম ভাবী ঠিকই রাজি করিয়ে ফেলবে সবাইকে । তবে মৌমিতার ব্যাপারে আমি নিশ্চিত ছিলাম না । মনে হচ্ছিলো যেন ও হয়তো নাও রাজি হতে পারে । মানে সদ্যই সে তার প্রিয় একটা মানুষকে হারিয়েছে । এমন সময়ে সে হয়তো রাজি নাও হতে পারে ! কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়েই মৌমিতা রাজি হয়ে গেল । পরের মাসেই আমাদের বিয়ে হয়ে গেল । প্রথম প্রথম একটু বিষন্ন থাকলেও মৌমিতা সব সামলে উঠলো । আমাকে ভালবাসতে শুরু করলো সেও । একটা সময়ে আমি নিজেও সেটা অনুভব করতে পারলাম । মেয়েটা সত্যি আমাকে ভালবাসতে শুরু করেছে ।

তবে আমার মনের মাঝে একটা খচকচানী রয়েই গেল । আমি সেই সময়ে বাদলের মৃত্যু চেয়েছিলাম । এই কাজটা আমার করা মোটেও উচিৎ হয় নি । মোটেই না । বারবারই কেবল মনে হয় যেন বাদলের ঐ মৃত্যুর জন্য বুঝি আমি নিজে দায়ী ! এই অপরাধবোধটা আমাকে কোনদিনই পরিপূর্ণ ভাবে শান্তি দেয় নি । তাই ঠিক করলাম যে এই কথাটা আমি মৌমিতার কাছে স্বীকার করবো । এটা স্বীকার করলে হয়তো আমার শান্তি লাগবে !

অপরাধ স্বীকার

আমি যখন মৌমিতাকে সব টুকু খুলে বললাম তখন মনের ভেতরে একটা সম্ভবনা দেখা দিচ্ছিলো যে মৌমিতা বুঝি আমাকে ঘৃণা করা শুরু করবে । ওকে বলেছিলাম যে আমি যদিও চেয়েছিলাম তবে আমি বাদলের চিকিৎসার কোন ত্রুটি করি নি । একজন প্রেমিক যে ভাবে ঈর্ষা করে আমার ঈর্ষা টুকু ছিল সেই রকম !

মৌমিতা আমার দিকে তাকিয়ে থেকে একটু যেন হাসলো । তারপর বলল, তুমি এই টুকুর জন্য শান্তি পাচ্ছো না? এমন বোকা কেন তুমি !
আমি কিছু না বলে চুপ করে তাকিয়ে রইলাম । মৌমিতা আমার কাছে এসে বসলো । তারপর আমার হাত ধরে বলল, তোমার চোখ দেখেই আমি সেদিন বুঝেছিলাম যে তুমি আমাকে পছন্দ করেছো । আর এটা খুব স্বাভাবিকই যে পছন্দের মানুষকে অন্য কোন পছন্দ থাকলে সেটা ভাল লাগবে না । মনে যেন সে ধ্বংশ হয়ে যাক । এটা নিয়ে মন খারাপ কিংবা অপরাধবোধ ধরে রাখার কোন দরকার নেই । বুঝতে পেরেছো কি !
-হুম !
-এই তো ভাল লক্ষ্যী ছেলে ! এবার আসো তো শুয়ে পড়া যাক ! কাল সকালে তোমার ডিউটি রয়েছে !

আমি ভাবতে পারি নি ব্যাপারটা মৌমিতা এভাবে নেবে । মনটা খুশি হয়ে গেল এক নিমিষেই । সেই সাথে মনের ভেতরে যে অপরাধবোধ ছিল সেটাও দুর হয়ে গেল । আমি মোমিতাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়লাম !

পরিশিষ্টঃ

রাত গভীর হয়েছে । মৌমিতা তাকিয়ে দেখলো তার স্বামী গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন । ওকে জড়িয়ে শুয়ে ছিল । খুব সাবধানে নিজেকে তার বাহু বন্ধন থেকে মুক্ত করে মৌমিতা বিছানা থেকে উঠে এল । দাড়ালো ঘরের লাগোয়া বারান্দায় গিয়ে । দুরে তাকিয়ে দেখলো । শূন্য অন্ধকার ছাড়া আর কিছুই দেখতে পেল না সে । যদিও কিছু দেখছে না সে । মনের ভেতরে বাদলের চিন্তাটা খেলা করছে । দুর করতে পারছে না কিছুতেই ।
বাদল এমনি এমনি মারা যায় নি । যদিও সব কিছু স্বাভাবিকই মনে হয়েছে তবুও মোমিতা জানে যে বাদলের শরীরে কিভাবে করোনার ভাইরাস ঢুকেছে । সেটা কোন দুর্ঘটনা ছিল না । বরং ইচ্ছাকৃত ছিল । ঐদিন মৌমিতা খুব ভাল করেই জানতো যে সে নিজে করোনা পজেটিভ ।একটু আগেই সে রিপোর্ট পেয়েছিলো । সেই জন্য সে তাড়াহুড়া করে বাদলের সাথে ঐ রাতের বেলা দেখা করতে গিয়েছিলো । ইচ্ছে করেই বাদলের হাত ধরেছিলো, মুখ তুলে খাইয়ে দিয়েছিলো । মৌমিতা খুব ভাল করেই জানতো বাদলের করোনা হলে সে আর টিকতে পারবে না !
মৌমিতা ক্লান্ত হয়ে উঠেছিলো ওদের সম্পর্কের উপরে । বিরক্ত ধরে গিয়েছিলো । না পারছিলো বাদলকে ছেড়ে দিতে না পারছিলো কাছে টেনে নিতে । বুঝে গিয়েছিলো বাদলের মৃত্যু ছাড়া তার মুক্তি নেই । হয়তো কয়েক মাস পরেই বাদল মারা যেট কিন্তু মৌমিতার একটুও সহ্য হচ্ছিলো না।

এসব ভেবে আর লাভ নেই এখন । মৌমিতা আবারও ঘরে ফিরে এল । ঘুমন্ত স্বামীর দিকে তাকিয়ে মনটা ভাল হল ওর । বাদল ওর জীবনে একটা ভুল ছিল । এমন কি বাদল যদি সুস্থ থাকতো, ওর বাবা মা কোনদিন বাদলকে মেনে নিতো না । মেনে নেওয়ার মত ছেলে বাদল ছিল না । মাঝে মাঝে মৌমিতা নিজেই বুঝতে পারে না কি দেখে সে বাদলের প্রেমে পড়েছিলো !
এখনও কি বাদলকে ভালোবাসে ?
না ! দৃঢ় ভাবে নিজের মনকেই শোনালে সে । বাদল একটা ভুল ছিল ওর জীবনে । যেটা সে ঠিক করে নিয়েছে । এখন ওর নতুন জীবন ।এটা নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে ।

স্বামীর পাশে শুয়ে পড়লো সে । সকালে উঠে তারও ক্লাসে যেতে হবে !

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 4.8 / 5. Vote count: 45

No votes so far! Be the first to rate this post.


Discover more from অপু তানভীর

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

About অপু তানভীর

আমি অতি ভাল একজন ছেলে।

View all posts by অপু তানভীর →

One Comment on “পাপ স্বীকার”

  1. এই গল্পটির সূত্র টেনে একটি হরর রাফায়েল সিরিজ করলে খুশি হবো।

Comments are closed.