মিনু যখন চোখ খুলে তাকাল তখন কিছু সময় সে বুঝতে পারল না যে সে কোথায় আছে। চারিদিকের সব কিছু তার কাছে অপরিচিত মনে হচ্ছে। কিছুই যেন সে ঠিক মত চিনতে পারছে না। যখন যে নিজের হাতটা সামনে নিয়ে আসার চেষ্টা করল তখনই অনুভব করল যে তার হাতটা পেছন দিক দিয়ে বাঁধা। সাথে সাথেই একটা আতঙ্ক পেয়ে বসল তাকে। মিনুর এখন যথেষ্ঠ বড়। সে সব কিছু জানে, বুঝতে পারে।
তাকে কেউ ধরে নিয়ে এসেছে?
কেন ?
মিনু অনেক মুভি সিনেমাতে দেখেছে বাচ্চা বাচ্চা ছেলে মেয়েদের শয়তান মানুষেরা ধরে নিয়ে যায়। তারপর তাদের বাবা মায়ের কাছে মুক্তিপণ চাবি করে। এই মুক্তিপনের কথা মনে হতেই মিনুর মনের ভেতরে একটা তীব্র ভয় এসে জড় হল। তারা বাবা একজন সাধারণ মাইক্রো ড্রাইভার। যদিও মাইক্রোটা তাদের নিজের তারপরেও দিন আনতে দিন চলে যায় তার বাবা সাইফুল মিয়া। তার পক্ষে কি কোন মুক্তিপণ দেওয়া সম্ভব? এই কথা তো কিডন্যাপারদের জানার কথা। এটা জেনে তো তাকে কিডন্যাপ করার কোন কারণ নেই।
কিন্তু এই কথাটা মনে হতেই মিনুর মনে আরেকটা ভয় এসে জড় হল । এমন হতে পারে যে যারা ওর পরিচয় জানার পরেও ওকে ধরে নিয়ে এসেছে তাদের উদ্দেশ্য টাকা পয়সা না। বরং অন্য কিছু। কী সেই অন্য কিছু?
এই চিন্তাটা মাথায় আসতেই মিনুর ভয়ে পুরো শরীর জমে গেল। ওকে কি মেরে ফেলবে? নাকি ওকে কোথাও বিক্রি করে দিবে? মিনু এবার ক্লাস নাইনে উঠেছে। এই ব্যাপার গুলো সে খুব ভাল করেই জানে। মিনুর চোখ ফেঁটে কান্না এল। বাবা আর মায়ের মুখটা মনে করার চেষ্টা করল সে।
মায়ের কথা মনে হতেই মনের ভেতরে একটা চিন্তা এসে জড় হল । ওর মা কোথায়?
আজকে স্কুল থেকে বাসায় ফেরার সময় ওর মা ছিল সাথে। মায়ের কাছে ওর পছন্দের নান্না বিরিয়ানী খাওয়ার বায়না ধরেছিল। মা বলেছিল আজে না অন্য দিন। এই আরণে মনটা খারাপ ছিল ওর। আস্তে আস্তে সব কিছু মনে পড়ে গেল তার। আজকে স্কুল থেকে ফেরার সময় রিক্সা নিয়েছিল ওরা। শহর থেকে ওদের এলাকাতে আসতে একটা নির্জন রাস্তা পড়ে। সেই রাস্তায় কোন ঘর বাড়ি বা দোকান পাট নেই। এই জায়গাটাতে আসতেই ঘটনাটা ঘটলো। একটা মাইক্রো বাস পেছন থেকে ওদেরকে ধাক্কা দিল। একেবারে উল্টেই পড়ল ওরা । কিছু বুঝে ওঠার আগেই মিনু খেয়াল করল কেউ কিছু একটা ওর মুখে চেপে ধরল। তারপর আর কিছু মনে নেই ওর। এখন চোখ মেলে সে নিজেকে এখানে আবিস্কার করল। ওর মা তাহলে কোথায়?
মিনু যখন এসব চিন্তা করছে তখন দরজা খোলার আওয়াজ হল। মিনু ভয়ে ভয়ে তাকাল দরজার দিকে। তার মনের ভেতর থেকে মায়ের জন্য চিন্তাটা গায়েব হয়ে গেল। তার বদলে আবারও নিজের জন্য ভয়টা ফিরে এল। মিনু আশা করেছিল যেন ভয়ংকর কেউ দরজা খুলবে তবে দরজা খুলে যখন একজন ঢুকল তখন তাকে দেখে মিনুর ভয় লাগল না। বরং তাকে দেখলে মনে হল যেন কোন স্কুলের শিক্ষক। মিনুর দিকে কিছু সময় তাকিয়ে রইল মানুষটা। মিনুর যেন ভয়টা একটু কমে এল। বিশেষ করে লোকটার চেহারা দেখেই ভয় পাওয়ার ভাবটা কমে এল। তবে ভয়টা একেবারে চলে গেল না । তাকে এই মানুষটা যে ধরে নিয় এসেছে সেই ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু কেন? কেন তাকে ধরে নিয়ে এসেছে?
কী করবে?
মিনুর মনে প্রশ্ন রয়েছে কিন্তু কোন উত্তর নেই। মিনু মানুষটার দিকে ভাল করে তাকাল। বয়স ৪০ এর বেশি হবে না কোন মতেই। তাদের স্কুলের বিজিএস স্যারের বয়সী হবে সে। মিনু দেখল সে মিনুর সামনে একটা ছোট টেবিল এনে রাখল। তারপর সেখানে একটা মোবাইল স্ট্যান্ডের সাহায্যে সেট করল । কয়েকবার ঘরের বাইরে চলে গিয়ে আবারও ফিরে এল। এই পুরো সময় মিনু কোন কথা বলে নি। বলতে সাহস করে নি। লোকটাও এমন আচরণ করেছে যেন মিনু এই ঘরেই নেই।
তবে এইবার লোকটা ঘরে এসে মিনুর দিকে তাকাল। তারপর বলল, তোমার কপালে কী আছে সেটা আমি বলতে পারছি না। তোমার কিছু নাও হতে পারে আবার তোমার সাথে খুব খারাপ কিছু হতে পারে।
-মানে? আপনি কী বলতে চাইছেন???
-কী বলতে চাইছি সেটা টের পাবে একটু পরেই।
-আমার মা কোথায়?
-আছে ! তোমার মা আছে জায়গা মতই। তোমার মতই তোমার মায়ের অবস্থা। তাকে নিয়ে চিন্তা বাদ দিয়ে বরং তুমি নিজেকে নিয়ে কর।
কথাটা শুনে মিনুর মনের ভেতরে একটা ভয়ের সঞ্চার হল। মুখ দিয়ে সে আর কোন কথা বের হল না। সে বয়ে বয়ে কেবল তাকিওয়ে রইলো লোকটার দিকে। লোকটা মুখে কোন মাস্ক পরে নি। এর অর্থ একটাই হতে পারে । লোকটা নিজেকে লুকানোর কোন চেষ্টা করছে না। তার ধরা পড়ার কোন ভয় নেই। অথবা কেউ তাকে চিনতে পারব না। এছাড়া এর একটাও অর্থ হতে পারে যে বা যারা দেখেছে তাকে চিনিয়ে দিতে পারবে না। আরও ভাল করে বললে চিনিয়ে দেওয়ার জন্য বেঁচে থাকবে না।
মিনুর এই কথাটা মনে হতেই আবারও ভয়ের একটা ধারা বয়ে গেল পুরো শরীর জুড়ে। তার মানে এই মানুষটা সত্যিই তার সাথে খারাপ কিছু করবে? কিন্তু একটু আগে সে কী বলল যে তার সাথে খাবারও হতে পারে আবার নাও হতে পারে! এই কথাটার মানে মিনু বুঝতে পারল না।
লোকটা এবার ফোনটা দিয়ে একটা নম্বরে ফোন দিল। ইমুতে ভিডিও কল। ফোনের মুখটা ঠিক মিনুর দিকে মুখ করা। মিনু নিয়ের চেহারা ফোনের স্কিনে দেখতে পেল। সেই সাথে তার নম্বরটাও খুব চেনা চেনা মনে হল। যখন সে নম্বরটা চিনতে পারল তখনই ফোনটা রিসিভ হল। পরিচিত মুখটা চোখের সামনে ভেসে উঠল।
তার বাবা সাইফুল মিয়া। ফোনের ওপাশে তার বাবা সাইফুল মিয়া রয়েছে।
সাইফুল মিয়ে কিছু সময় যেন ঠিক বুঝতে পারল না যে কী হচ্ছে। তবে একটা অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন এসেছে এবং সেই ফোনের ওপাশে তার মেয়ে রয়েছে এটা তার কাছে স্বাভাবিক মনে হল না।
-মিনু তুই!
-বাবা !
বাবাকে দেখেই সে কেঁদে ফেলল। মেয়েকে কাঁদতে দেখে সাইফুল মিয়া বলল, কী হইছে মিনু?/ তুই এইখানে ক্যান? কাঁদিস ক্যান?
-বাবা আমারে ধইরা নিয়া আইছে!
-কেডা আনছে?
এই লাইনটা বলতেই লোকটা সামনে এগিয়ে এল। তারপর বলল, আমি এনেছি।
-কেডা তুই? আমার মাইয়ার যদি কিছু হয়, তাইলে ……
-তাহলে তুমি কিছুই করতে পারবে না। কিছুই করার নেই তোমার সাইফুইল মিয়া। এখন চুপচাপ আমার কথা মন দিয়ে শোন। যদি তুমি তোমার মেয়েকে বাঁচাতে চাও।
-তোরে আমি খাইয়া ফালামু শুয়োরের বাচ্চা তরে…
ঠিক এই সময় একটা সজোড়ে চড় এসে লাগল মিনুর গালে। মিনু হতভম্ভ হয়ে গেল। ব্যাথায় না, বিস্ময়ে। ওদিকে সাইফুল মিয়াও একদম থমকে গেল। সে এটা মোটেই আশা করে নি।
লোকটা বলল, একদম চুপ । কোন কথা না। একটা কথা না।
সাইফুল মিয়া বলল, আমারে মাইয়ারে মাইরেন না। বলেন আপনি কী চান? কত টাকা চান? আমি সব দিমু।
লোকটা এবার হাসল। তারপর বলল, এই তো লাইনে এসেছেন। একদম চুপ করে শুনতে হবে কথা। এবার আপনি আপনি আপনার মেয়ের সামনে বলেন যে আপনি কী করেন?
আমি ড্রাইভারি করি। নিজের মাইক্রো চালাই। আপনি কইলে এইটা বিক্রি কইরা আপনেরে টেকা দিয়া দিমু। আমার মাইয়ারে ছাইড়া দেন।
-আমি আবারও জিজ্ঞেস করছি। আপনি কী করেন?
-আমি ড্রাইভারি…
একটা চড় এসে পড়ল মিনুর গালে আবার।
মিনু এবার কান্না কান্না করে দিল।
-আমি ড্রাইভারি…।।
আবার চড়।
-দাড়ান দাড়া ভাই। আমি কইতাছি।
-আমি ড্রাইভারি করি কিন্তু মাঝে মাঝে আমি ডাকাতি করি। গাড়ি নিয়া নির্জন কোন কোন জায়গা কাউরে পাইলে আমি আর আমার হেলপার তাগো কাছ থেকে সব কাইড়া নিই।
মিনু নিজের বাবার কাছ থেকে এই কথাটা শুনে যেন থমকে গেল। যেন সে নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না।
লোকটা বলল, এই তো ঠিক হয়েছে। সাইফুল মিয়া এবার বল যে আর কী কী অন্যায় তুমি করেছো? মনে রাখবা প্রতিটাআ ভুল উত্তরের জন্য তোমার মেয়ে মাইর খাবে।
সাইফুল মিয়াকে একটু দ্বিধান্বিত মনে হল। সে নিজের ম্যের দিকে তাকালেন না। তাকাতে পারলেন না।
-চুপ থেকে লাভ নেই সাইফুল মিয়া। আমি তোমার সব কীর্তি কপাল জানি। আমি কেবল তোমার মুখ থেকে সত্যটা শুনতে চাই। বল । জলদি বল।
-আমি ডাকাতি বাদ দিয়ে, ডাকাতির সময় গুলি চালাইছি। এই পর্যন্ত দুইজন মরছে আমার গুলিতে।
-আর ?
-আর কিছু না।
-সাইফুল মিয়া মিথ্যা বলবা না বলেছি। আরেকবার সুযোগ দিলাম।
-আমি আর কিছু করি…
-আবার চড়। এবার পরপর দুইটা। তবে এই চড়ে মিনু কেন জানি ব্যাথা পেল না । সে কেবল অবাক হয়ে নিজের বাবার দিকে তাকিয়ে আছে। সে ঠিক বিশ্বাস করতে পারছে না যে তার বাবা এই কাজ করছে। তার বাবা ডাকাতি আর খুন করেছে। আরও করেছে কী? মিনুর মনে হঠাৎ একটা ভয়ংকর চিন্তা এসে হাজির হল। সে অনেক পত্রিকাতে কিংবা সোস্যাল মিডিয়াতে পড়েছে যে ডাকাতির সাথে সাথে ডাকাতরা মেয়েদের ধর্ষনও করে। এই কাজটা তার বাবা করেছে?
-খাড়ান খাড়ান, কইতাছি, মাইরেন না। আমার মাইডারে মাইরেন না। আমি দুইবার বাস ডাকাতির পরে দুইডা মাইয়ারে ধর্ষণ করছি।
মিনুর মনে হ্ল যেন বুকের ভেতরে একটা তীক্ষ্ণ তীর এসে বিঁধল।
-সর্ব শেষ কোন মেয়েটাকে ধর্ষন করছ? কয়দিন আগে?
-বছর দুয়েক আগে।
-মেয়েটা ঢাকায় আসছিল। মাঝে পথে তাদের গাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। তখন সে নেমে বিকল্প পথ দেখে। পথের মধ্যে তোমার গাড়িতে ওঠে। তুমি তখন ট্রিপ শেষ করে ঢাকায় ফিরতেছিলা।
-হ।
-ঐ মেয়েটা আমার বোন ছিল।
ঘরের ফোনের ওপাশে কিংবা ঘরের ভেতরে বেশ কিছু সময় কেউ কোন কথা বলল না। লোকটা এবার বলল, তোমার খোজ আমি অনেক দিন ধরেই করছিলাম। এবার তোমাকে বলি যে আমি কী করব এখন? তোমার সামনেই এখন আমি তোমার মেয়েকে ধর্ষণ করব। বুঝতে পেরেছো? এটা তুমি দেখবে। আমি এতোদিন যে কষ্ট নিয়ে বেঁচে আছি এরপর থেকে তুমিও ঠিক একই কষ্ট নিয়ে বেঁচে থাকবে। বুঝলা সাইফুল মিয়া।
-না না না। আফনের পায়ে পড়ি। ভাই আপনের পায়ে পড়ি আমার মাইয়াডারে ছাইড়া দেন। আপনে যা কইবেন তাই করুম । আমি ধরা দিমু। সব দোষ স্বীকার করুম । সব দোষ স্বীকার করুম
-তোমার দোষ স্বীকার দিয়ে আমি কী করব সাইফুল। চোখের বদলে চোখ । ধর্ষণের বদলে ধর্ষণ ।
-আমার দোষের শাস্তি আমার মাইয়াডারে দিয়েন না। দিয়েন না।
-ওকে দিব না। তাহলে এক কাজ কর। তুমি যে এখন যে বিল্ডিংয়ে আছো ঐটার ছাদ থেকে ছাপ দাও। তুমি ঝাপ দিলে আমি তোমার মেয়েকে ছেড়ে দিব। তুমি ঝাপ দিয়েই আমি খবর পাবো। তখনই তোমার মেয়েকে ছেড়ে দিব। আর না দিলে এখন থেকে ঠিক এক ঘন্টা পরে তোমার মেয়ের সাথে ঠিক ঐ কাজটাই করব যা তুমি করেছিলে।
এই বলে লোকটা ফোনটা কেটে দিল। তারপর সেটা বন্ধ করে দিল মিনুর সামনে।
এতোটা সময় মিনু কেবল অবাক হয়ে নিজের বাবাকে দেখছিল। সে কোন দিন ভাবতেও পারে নি তার বাবা এমন একজন মানুষ হবে। সত্যি এমন একজন মানুষ তার বাবা ! এতো নিকৃষ্ট?
মিনুর চোখ দিয়ে পানি পড়া বন্ধ হয়ে গেছে। সেখানে এক শূন্য দৃষ্টি এসে জড় হয়েছে। তার কাছে মনে হচ্ছে যে তার সাথে যা হবে সেটাই তার প্রাপ্য। যারা বাবা এতো ভয়ংকর তার আর এই দুনিয়াতে বেঁচে থাকার আসলে কোন অধিকার নেই।
লোকটা ঘরের বাইরে চলে গেল। ফিরে এল একটু পরে। মিনু দেখল লোকটার হাতে একটা প্যাকেট। সেটা মিনুর সামনে রেখে লোকটা মিনুর হাতের দড়ি কেটে দিল। তারপর বলল, তোমাকে চড় মারার জন্য আমি দুঃখিত। কতবার যে ইচ্ছে হয়েছে যে তোমার সাথে ঠিক ভয়ংকর ঐ কাজটা করি তবে শেষ পর্যন্ত আর পারি নি। আমি তোমার বাবার মত না। কিন্তু ভাই হিসাবে এই প্রতিশোধ না নিতে পারলে আমার শান্তি আসতো না। এখন আমি একটু শান্তি পাবো। চাইলে তুমি আমার নামে পুলিশ রিপোর্ট করতে পারো আমার কোন আপত্তি নেই। আর এটা নাও।
লোকটা প্যাকেটটা দেখিয়ে বলল, এখানে তোমার পছন্দের নান্নার বিরিয়ানী আছে। তোমার পাশের ঘরে আছেন। তাকে নিয়ে চলে যাও।
মিনু অবাক হয়ে তাকাল লোকটার দিকে যেন বিশ্বাস করতে পারছে না। লোকটা আবার বলল, তোমার বাবা সত্যিই ঝাপ দিবেন কিনা আমি জানি না। অবশ্য তার মত মানুষ মরার কথা না। আমিও চাই যেন সে না মরুক তাহলে প্রতিদিন সে তোমার সামনে বেঁচে থাকবে। এটাই তার শাস্তি। আর সত্যিই যদি ঝাপ দিয়ে দেয় তাহলে তো ভাল। বেঁচে গেল।
লোকটা আর দ্বিতীয় বাক্য ব্যয় না করে ঘর ছেড়ে চলে গেল। মিনু কিছু সময় শূন্য দৃষ্টি লোকটার চলে যাওয়া পথের দিকে তাকিয়ে রইল। তার কাছে সব কিছু অর্থহীন মনে হচ্ছে। এমন হতে পারে যে তার বাবা সত্যিই সত্যিই তাকে বাঁচানোর জন্য বিল্ডিং থেকে ঝাপ দিতে পারে তবে এই চিন্তা মিনুর কাছে মোটেই বড় ইছু মনে হল না। যেন এতে কিছুই যায় আসে না।
মিনু টেবিলের উপরে রাখা বিরিয়ানির প্যাকেটের দিকে তাকাল। সে প্যাকেটটার দিকে । সেটার দিকে হাত বাড়াল । হাত দিয়েই বুঝল যে সেটা এখনও গরম। এতো কিছুর পরে মিনুর কেন জানি বিরিয়ানি খেতে ইচ্ছে হল।
তারপরের গল্পটা অনেক রকম হতে পারে। হয়তো দেখা যাবে সাইফুল মিয়া সত্যিই নিজের মেয়েকে বাঁচাতে ছাদ থেকে লাফ দিয়েছে। অথবা সে হয়তো লাফ দেয় নি। ঘটনা যেদিকেই যাক না কেন ফলাফল মোটামুটি একই রকম হবে। মিনু আর কোন দিন তার বাবাকে আগের মত ভালবাসতে পারবে না।
Discover more from অপু তানভীর
Subscribe to get the latest posts sent to your email.