আরিয়ানা

oputanvir
4.8
(60)

-আপনার রাগ হচ্ছে না ?

এতো সময় আমি কফির কাপের দিকে তাকিয়ে ছিলাম । একটু আগেই দুপুরের খাবার খেয়েছি । দুপুরের খাবার পরে আমি একটু বিশ্রাম নেই নিজের চেয়ারে বসে । তবে সামনে বসা এই মেয়েটির কারণে সেটা আজকে সম্ভব হয় নি । বিশ্রামের অভাবটা পূরণ করতে এখন কফি নিয়ে বসেছি । মেয়েটির সামনেও এক কাপ কফি তবে সেটা একটুই ছুয়ে দেখেছি । মনে হচ্ছে সেটা আজকে ঠান্ডাই হয়ে যাবে ।

আমি বললাম, রাগ কেন?
মেয়েটি তীব্র বিস্ময় নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, আপনার সাথে একজন চিট করেছে আর আপনার রাগ হচ্ছে না?
-আপনার হচ্ছে বুঝি?
-হচ্ছে মানে নিলয় আর আপনার গার্লফ্রেন্ডকে খুন করে ফেলি ! একেবারে বটি দিয়ে কুপিয়ে কুপিয়ে মেরে ফেলি !

লাইনটা মেয়েটা একটু জোরেই বলেছিলো । দেখলাম পাশের টেবিলে বসে থাকা একজন আমাদের দিকে তাকালো মুখ ঘুরিয়ে । মেয়েটির অবশ্য সেদিকে কোন খেয়ালই নেই । মেয়েটি আবার বলল, আপনার কাছে আপনার গার্লফ্রেন্ডের ঠিকানা আছে?
-আছে ।
-আমাকে দিন ।
-কী করবেন? গিয়ে খুন করবেন?
-হ্যা ।
-তাহলে আমিও সেই খুনের ভাগিদার হব । এটা তো করা যাবে না মোটেও ।

আমি একবার কফিতে চুমুক দিলাম । সাথে সাথেই মনটা একটু ভাল হয়ে গেল । এই রেস্টুরেন্টের কফিটা তো বেশ চমৎকার । অফিসের কাছে হলেও এখানে আগে আসা হয় নি । আজকে এই মেয়েটির কারণে আসা হল । বললাম, কফিটা খান। ভাল লাগবে !
মেয়েটি কিছু বলতে যাচ্ছিলো তবে আমি আবারও বললাম, আরে যা করার করবেন । এখন আপাতত কফিটা খেয়ে দেখুন ভাল লাগবে !

আমার কথা শুনেই মেয়েটা কফিতে চুমুক দিল । আমি তার চেহারার ভাব দেখেই বুঝতে পারলাম যে কফিটা তার ভাল লেগেছে । এই কফির ব্যাপারটাই এমন । ভাল একটা কফি যে কোন মানুষের মুড মুহুর্তেই বদলে দিতে পারে ।

আমি বললাম, আপনার নামটা আপনি বলেছিলেন । সরি আমি ভুলে গেছি ।

-আরিয়ানা !
-তো মিস আরিয়ানা । এতো ছেলে মানুষ কেন আপনি?
-আপনি কি আপনার এক্স বয়ফ্রেন্ডের আচরণে বুঝতে পারেন নি যে সে আপনার সাথে চিট করছে ? নিম্মি যেদিন থেকে নিলয়ের সাথে মেশা শুরু করেছে আমি সেদিনই টের পেয়েছি ।

আরিয়ানা অবাক হয়ে বলল, টের পেয়েও কিছু করেন নি ?
আমি একটু হেসে বললাম , কী করার আছে এখানে বলুন? একজন মানুষ আপনার উপর থেকে আগ্রহ হারিয়ে অন্য একজনের প্রতি আগ্রহী হয়েছে এখানে আমার কি আসলেই কিছু করার আছে? সে আমার বিয়ে করা স্ত্রী না । এমন কি স্ত্রী হলেও আমার আসলে কিছুই করার ছিল না । শুনুন মিস আরিয়ানা, একজন মানুষের প্রতি যেমন আমাদের হুট করে প্রেম ভালবাসা জন্মাতে পারে ঠিক একই ভাবে এক নিমিষেই সেটা চলে যেতে পারে । এখানে আসলে আমাদের কিছুই করার নেই । শত চেষ্টা করেও আমরা তাকে ফেরাতে পারবো না ।
-কষ্ট হবে না !
-একটু হবে অবশ্যই । তবে আমি আসলে আমাদের সম্পর্কের শুরুতেই জানতাম যে এই সম্পর্কে বেশি দিন টিকবে না । আজ হোক কাল হোক নিম্মি চলে যাবে । তবে কষ্ট পেয়েছি এই কারণে যে সে চিট করেচে । আমার সাথে সম্পর্ক থাকার পরেও অন্য একজনের সাথে মিশেছে শুয়েছে, এটা কষ্টের কারণ !

দেখলাম আরিয়ানার মুখটা খানিটকা কালো হয়ে গেল । সম্ভবত শোয়া শব্দটা বলা ঠিক হয় নি । ভালবাসার মানুষ অন্য কারো সাথে শারীরিক সম্পর্ক করছে এটা মেনে নেওয়া আসলে সবার জন্যই কষ্টের ।
আমি বললাম, তবে চিন্তা করবেন না । নিম্মির সাথে আপনার প্রাক্তনের সম্পর্কে বেশি দিন টিকবে না । নিম্মি তেমন মেয়েই না । দেখবেন সে হয়তো নিজের ভুল বুঝতে পেরে আবার আপনার কাছে ফিরে আসবে !

ফিরে আসবে এই লাইনটা শুনেই দেখলাম আরিয়ানার মুখটা আবার লাল হয়ে উঠলো । কঠিন কন্ঠে বলল, আসুক একবার ! সত্যি সত্যিই যদি মাথা না ফাটিয়ে দিয়েছি !!

আমি হেসে ফেললাম । আরিয়ানা আমার দিকে কিছু সময় তাকিয়ে রইলো । তারপর সেও হেসে ফেলল ।

আমাদের জীবনে কত মানুষের সাথেই না পরিচয় হয় । এই যে আরিয়ানার সাথে কেমন করে পরিচয় হল ! আমরা একই পথের পথিক । আমার প্রেমিকা এবং আরিয়ানার প্রেমিক কিভাবে নিজেদের ভেতরে একটা সম্পর্কে তৈরি করেছে। এবং ওরা আমাদেরকে প্রেমে ধোঁকা দিয়েছে ।
আরিয়ানা কিভাবে জানি আমাকে খুজে পেয়েছে । তারপর আমার সাথে যোগাযোগ করেছে । প্রথমে আমাকে সে ফোন করেছিলো । ফোনে বেশ কিছু সময় আমাদের মাঝে কথা হয়েছিলো । মানে ওর কাছ থেকেই আমি ব্যাপারটা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছিলাম যে নিম্মি অন্য ছেলের সথে ঘুরছে । যদিও ওর আচরণ থেকেই আমি টের পেয়েছিলাম । মনে মনে চাচ্ছিলাম যে ভুল হোক আমার ধারণা । কিন্তু যা হবার সেটা হবেই । তাই হয়েছে ।

আরিয়ানা আমাকে আরো সপ্তাহ খানেক আগে ফোন করেছিল । হোয়াটসএপে ছবিও পাঠিয়েছিলো কিছু । সেটা নিম্মি দেখাতে ওর অস্বীকার করলো না । তারপর আমার কাছে থেকে দুরে চলে গেল । আজকে আরিয়ানা আমার অফিসে এসে হাজির । মেয়েটা আমার ব্যাপারে এতো কিছু কিভাবে জানলো কে জানে ।

যাই হোক আরো কিছু সময় কথা বলে আরিয়ানা চলে গেল । আমি আরিয়ানার ফোন নম্বরটা আর সেভ করলাম না । আর হয়তো আমাদের দেখা হওয়ার কোন দরকারও ছিল না । সেভ করার কোন মানে নেই ।
এভাবে সময় যেতে লাগলো । আমি অপেক্ষা করতে লাগলাম । আমি জানতাম যে নিম্মির সাথে ঐ বেটার ব্রেক আপ হবেই । ওর থেকে ভাল কাউকে পেলেই নিম্মি ওকে ছেড়ে দিবে । মাস ছয়েকের ভেতরেই ব্রেকআপের খবর আমার কানে এল । এবং আমাকে অবাক করে দিয়ে নিম্মি আবার আমার কাছে ফিরে আসতে চাইলো । আমাকে কয়েকবার ফোন দিল ও । তবে আমি একবারও রিসিভ করলাম না । বুকের ভেতরে কেমন একটা কাঁপন অনুভব করলাম আমি । মনের একটা অংশ বারবার বলতে লাগলো যে নিম্মিকে আবারও নিজের জীবনে ফিরিয়ে নিই । তবে অন্য আরেকটা অংশ বলল যে কোন দরকারই নেই । এই মেয়ে একবার যা করেছে আবারও তাই করবে । কোন দরকার নেই ।
আমাকে নিম্মি বেশ কয়েকটা মেসেজও পাঠালো । তবে আমি একটাও সীন করলাম না । সারাদিন অফিসে কোন কাজে মনও বসলো না । আমি জানি আমাকে ঠিকই নিম্মির সাথে কথা বলতে হবে । ও ঠিক ঠিক আমার সামনে হাজির হয়ে যাবে । নিম্মি আমাকে খুব ভাল করেই চেনে । আমার দুর্বলতা কিসে সেটাও খুব ভাল করেই সে জানে ।

অফিস শেষ হওয়ার আগে আরেকটা ফোন এসে হাজির হল আমার ফোনে । আমি যদিও নম্বরটা সেভ করি নি তার পরেও নম্বরটা চিনতে আমার কষ্ট হল না । আমি ফোনটা রিফিভ করলাম ।
-হ্যালো ।
-কেমন আছেন ?
-ভাল । আপনি ?
-আমি খুব ভাল আছি ।

আমি আরিয়ানার কন্ঠে শুনেই বুঝে গেলাম যে কী হতে পারে । নিম্মি যেমন আমার সাথে যোগাযোগ করেছে ঠিক তেমনি ভাবে নিলয়ও আরিয়ানার সাথে যোগাযোগ করেছে । ফিরে যেতে চাইছে । আমি একটা লম্বা নিঃশ্বাস নিলাম । তারপর বললাম আপনার প্রাক্তন কি ফিরে আসতে চাইছে?
আমি হাসির আওয়াজ শুনতে পেলাম । আরিয়ানা বলল, আপনারটাও?
-হুম !
-এরা আমাদের কী ভেবেছে? যখন ইচ্ছে যাবে তারপর চলে আসবে! এতোই খেলনা আমরা !
-আপনি কি সিদ্ধান্ত নিলেন?
-সিদ্ধান্ত নেওয়ার কী আছে! আপনি নিশ্চয়ই আবার ফিরে যাওয়ার কথা ভাবছেন না, তাই না ?

আমি কোন কথা বললাম না । আরিয়ানা বলল, আপনি নিশ্চিত জানেন যে সে আবারও একই কাজ করবে !
-জানি করবে!
-তাহলে?
-জানি না ।
-শুনুন ঐদিকে যাবেন না মোটেও ! আমিও যাবো না ।

আমরা কেউ কোন কথা বললাম না কিছু সময় । তারপর আরিয়ানা বলল, আমি আপনার অফিসে আসছি । এমন কিছু করা দরকার যাতে দুজনই বুঝতে পারে যে আমরা আর ঐদিকে যাবো না ।
-কী করবেন শুনি?
-ওদের দেখাবো যে ওদের আর দরকার নেই । আমাদের দুজনকে ওরা এক সাথে দেখবে তখন টের পাবে!
-মানে?
-মানে হচ্ছে, এখন থেকে ওদের দেখাতে হবে যে আমি আর আপনি এক সাথে !
-আর ইউ কিডিং
-নো আই এম নট !

সত্যি সত্যিই আরিয়ানা আমার অফিসে এসে হাজির হল । তারপর আমাকে নিয়ে আবারও সেই কফি সপে নিয়ে গেল। আমি অবশ্য সেদিনের পর থেকে প্রায় দিনই ওখানে কফি খেতে যাই । আরিয়ানা নিজের পরিকল্পনা বলতে শুরু করলো । কিভাবে কী করতে হবে । ওদেরকে দেখাতে হবে যে আমরা এখন এক সাথে ! ওদের আর দরকার নেই মোটেও । আমার কেন জানি মজা লাগলো বেশ । বিশেষ করে আরিয়ানার ছেলে মানুষী আগ্রহ দেখে আমারও কেন জানি ওর সাথে নাচতে ইচ্ছে হল ।

আমরা এক সাথে বেশ কয়েকটা ছবি তুললাম । কয়েকটা সেলফিও তুললাম । দুজনেই এবার গল্পটা একটু সাজিয়ে নিলাম । মানে কিভাবে আমাদের দেখা পরিচয় এসব ।

নিম্মির সাথে দেখা হল পরের সপ্তাহে । এবং কপাল আর কাকে বলে তখন আরিয়ানা আমার সাথেই ছিল । নিম্মি কেবল তীব্র বিস্ময় নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল কিছু সময় । ওর যেন বিশ্বাস হচ্ছিলো না যে আমি এমন কিছু করতে পারি। আমার সামনে আসতে গেল বটে তবে আরিয়ানা এবার পথ রোধ করে দাড়ালো। ওর দিকে কড়া কন্ঠে বলল, এবার তুমি আমার কাছে মার খাবে ! বুঝেছো !
-কী বললে তুমি?
-খুব ভাল করেই শুনেছো !
-আমার বয়ফ্রেন্ডের সাথে ঘুরছো আর আমাকে শাসাচ্ছো?
-তাই না । কে কার বয়ফ্রেন্ড একবার ভাল করে দেখো ।

আরিয়ানা এবার আমার দিকে তাকালো । আমাকে চোখের ইশারায় কিছু বলতে বলল । আমার মনে হল যে আমার কিছু বলা উচিৎ নয়তো এরা একে অন্যের সাথে হয়তো সত্যি সত্যিই মারামারি শুরু করে দিবে । আমি নিম্মির দিকে তাকিয়ে বলল, তুমি নিজেই আামর সাথে কী করেছ মনে আছো কী? এরপরে আবার কিভাবে এখানে এসেছো বুঝতে পারছি না ! পরিস্থিতি আর আগের মত নেই নিম্মি । তোমার এটা বোঝা উচিৎ । আর আমার চোখের সামনে আমার প্রেমিকার সাথে কেউ খারাপ ব্যবহার করবে ব্যাপারটা আমার মোটেই ভাল লাগবে না ।

আমার কাছ থেকে এমন ঠান্ডা উত্তর পেয়ে নিম্মি এবার সত্যিই অবাক হয়ে গেল । ওর চোখের অশ্রুর জল আমি ঠিক দেখতে পেলাম। মনে মনে কেন জানি এই অশ্রু আমার কষ্ট হল না । বরং ভাল লাগলো । নিম্মি চলে গেল ।

আরিয়ানা খুব হাসলো । আরিয়ানার সাথে দেখা শোনা আরো বাড়তে লাগলো । একদিন নিলয়ের সাথেও দেখা হল । আমাকে দেখে কেবল জ্বলন্ত চোখে তাকিয়ে রইলো । কাছে এল না । মনে হল যেন আমাদের নাটক আর না চলালেও চলবে । কিন্তু ঝামেলা শুরু হল অন্য স্থানে ।

আমাদের এই মেলামেশার ব্যাপার আমার বাসায় কিভাবে জানি জেনে গেল । তারা একটু আভাস ঠিকই পেয়েছিলো আমার একটা প্রেমিকা আছে । মানে যখন নিম্মি ছিল তখন । কিন্তু তারা নিম্মির জায়গায় আরিয়ানার সাথে আমার ঘুরে বেড়ানোটা দেখে ফেলল । এবং কিভাবে জানি আরিয়ানার নাম পরিচয় সব বের করে ফেলল । তারপর আমাকে না জানিয়ে তাদের বাসায় গিয়ে হাজির হল ।

আমি সব থেকে বড় ধাক্কা খোল সেদিন । সেদিন অফিস থেকে বাসায় গিয়েছি । দরজার সামনে এসে দাড়িয়েই টের পেলাম যে ভেতরে কেউ এসেছে । বাইরে এক জোড়া হিল দেখতে পেলাম । কেমন যেন পরিচিত মনে হল নীল হিলটা । দরজা খুলে ভেতরে ঢুকতেই চোখ কপালে উঠলো । আরিয়ানা বসে রয়েছে সোফার উপরে । আমার মায়ের সাথে গল্প করছে । আমার দিকে চোখ পড়তেই একটু অপ্রস্তুত হয়ে হাসলো ।

আরিয়ানা এখানে কিভাবে এল ? ওর তো এখানে আসার কথা না । কোন ভাবেই না !

রাতে খাবার টেবিলে মা সব খুলে বলল । আমাকে জানি আরিয়ানার সাথে বসুন্ধরাতে দেখেছে আমার ছোট মামা । সে আবার কোন ভাবে আরিয়ানাকেও চেনে । সেই সব খোজ খবর বের করেছে । এবং মা সেই ওদের বাসায় গিয়ে হাজির হয়েছে । আমার সব কিছু শুনে ওরাও কোন আপত্তি করে নি । আজকে আরিয়ানাকে নিয়ে এসেছে আমাদের বাসায় !

আমি একটা কথাও বলতে পারলাম না । কী বলতাম !

রাতে যখন আরিয়ানাকে বাসায় পৌছে দিয়ে আসছিলাম আরিয়ানও কেমন যেন নিশ্চুপ হয়ে ছিল । সম্ভবত ঘটনা যে এই দিকে যাবে সেটা নিজেও ভাবে নি । রাতে আমাকে সে একটা মেসেজ দিল । সেখানে লেখা ছিল ”আপনার আপত্তি থাকলে আমাকে জানাবেন। আমি সামলে নিবো ব্যাপারটা । চিন্তা করবেন না ।’

দুইদিন আমাদের মাঝে কোন যোগাযোগ হল না । তৃতীয় দিন সারা দিন বৃষ্টি হচ্ছিলো । ছুটির দিন ছিল । সারা দিন শুয়ে বসে পার করে দিলাম । সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ আমার আরিয়ানা আমাকে ফোন করলো ।
-কী করছেন?
-কিছু না । শুয়ে আছি । আজকে আবহাওয়াই শুয়ে থাকার মত ।
-একটু বাইরে বের হবেন?
-বাইরে ? এখন?
-হুম !
-কেন?
-আমার অনেক দিনের ইচ্ছে এমন বৃষ্টির দিনে কারো সাথে বৃষ্টিতে ভিজবো । কোন দিন সুযোগ হয় নি ! আজকে দুপুর থেকে আপনাকে কতবার যে ফোন করার চেষ্টা করেছি সেটা বলে বোঝানো যাবে না । আমাদের মাঝে সামনে কী হবে সেটা জানি না । ফেইকই হোক, একটা বার ভিজবেন আমার সাথে? এরপরে আর জ্বালাত্বন করবো না আপনাকে !

আরিয়ানার কন্ঠে কী যে এক আকুলতা ছিল সেটা আমি বলে বোঝাতে পারবো না । আমি কেবল বললাম, আমি আসছি । এখনই আসছি !

আমি গেট দিয়ে বের হতে না হতেই পুরো পুরি ভিজে গেলাম । তবে সেদিকে আমার খেয়াল ছিল না । আরিয়ানাকে দেখতে পেলাম বাসার সামনের রাস্তায় দাড়িয়ে রয়েছে । কালো রংয়ের একটা শাড়ি পরেছে ও । আমার দিকে ধীর পায়ে এগিয়ে এল । ল্যাম্প পোস্টের আলোতে ওর চোখে এক অদ্ভুত মাদকতা আমি দেখতে পেলাম । সেখানে আমার জন্য যে আবেগ রয়েছে সেটাকে আমার কোন ভাবেই মিথ্যা মনে হল না । মনে হল যেন এই মেয়েটা কেবল মাত্র আমার জন্যই সৃষ্টি হয়েছে । কেবল মাত্র আমার জন্য ।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 4.8 / 5. Vote count: 60

No votes so far! Be the first to rate this post.

About অপু তানভীর

আমি অতি ভাল একজন ছেলে।

View all posts by অপু তানভীর →