নতুন দিনের গল্প

oputanvir
4.7
(66)

উবারটা যখন নীমিদের বাসার সামনে থামলো তখনই আমার মুখ গম্ভীর হয়ে গেল । আমি রফিক ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে বললাম, এখানে কেন নিয়ে এসেছেন রফিক ভাই?
রফিক ভাই বলল, আরে বাবা রাগ করিস না । চল চল । নীমির বাবা খুব করে বলেছে তোকে যেতে বলেছে । উনি আসলে খুবই লজ্জিত ।
-ভাই আমি খুবই ছোট একজন মানুষ । আমার সাথে করা আচরণ নিয়ে মানুষের এতো চিন্তিত হতে হবে না । তাকে বলে দেন । আমি ভেতরে যাবো না !
-এখানেই তো ভুল করছিস । নীমির বাবা মোটেই তেমন মানুষ নন । টাকা পয়সা আছে বলে অন্য মানুষকে ছোট করার অভ্যাস তার নেই । হ্যা এটা সত্যি যে তোর সাথে যা হয়েছে সেটা অন্যায় । আসলে ঐ সময়ে তার মাথা ঠিক ছিল না । এই কারণেই এমন করেছে । নিজের মেয়ে বলে কথা ! তুই রাগ করিস না । তোকে আর এখানে আসতে হবে না। কেবল একটু যাবি আর কথা বলবি । আর কিছু না । প্লিজ চল । রাগ করিস না। আমি কথা দিয়েছি যে তোকে নিয়ে যাবো ।

একবার মনে যে রাগ করে উবার থেকে বের হয়ে অন্য দিকে চলে যাই তবে পরে নিজেকে সামলাম। রফিক ভাই না থাকলে ঢাকা শহরে আমার টিকে থাকা একটু কষ্টকর হয়ে যেত । উনি আমার এলাকার বড় ভাই । আমাকে সেই ছোট থেকে অনেক আদর করেন । আমি কয়েক বছর উনার কাছে প্রাইভেটও পড়েছি । ঢাকাতে এসে প্রথম ওনার কাছেই ছিলাম কিছুদিন ।

আমি নীমিদের বাসায় না যাওয়ার জন্য জেদ ধরে রইলাম না । রফিক ভাইয়ের সাথেই নীমিদের বাসায় ঢুকলাম । যখন রফিক ভাই কলিংবেল চাপ দিলো তখন কেন জানি খুব অস্বস্তি লাগছিলো । কয়েক মাস আগেও এই বাসায় আমি নিয়মিত আসতাম । আজকে এই বাসায় ঢুকতে বেশ অস্বস্তি লাগছে । অবশ্য এমনটা মনে হওয়াই স্বাভাবিক । এই বাসা থেকে খানিকটা অপমানিত হয়েই বের হয়েছিলাম যদিও আমার কোন দোষ ছিল না ।

নীমি আমার ছাত্রী । ওকে আমি ইন্টার ফার্স্ট ইয়ার থেকে পড়ানোশুরু করেছিলাম। রফিক ভাই আমাকে টিউশনিটা ঠিক করে দিয়েছিলো। বছর খানেক পড়ালাম কোন ঝামেলা ছাড়াই । সপ্তাহে তিনদিন পড়াতে আসতাম । পড়িয়ে চলে যেতাম । মাস শেষে বেতন নিতাম । এই ছিল আমার কাজ । তবে মাস তিনেক আগে ঝামেলা বাঁধলো । আমি সেদিন ক্লাস শেষ করে গিয়েছিলাম মুভি দেখতে। সেখানেই আমি নীমিকে দেখতে পেলাম একটা ছেলের সাথে । বুঝতে মোটেও কষ্ট হল না যে এটা নীমির বয়ফ্রেন্ড । ঢাকা শহরে অবশ্য এটা বড় কোন ব্যাপার না। স্কুল কলেজে পড়া মেয়েদের বয়ফ্রেন্ড থাকাটা স্বাভাবিক । আমাকে দেখে নীমি কিছু সময় যেন হতচক্কিত হয়ে গেল । তারপর ঘুরে চলে গেল । আমিও দেখে না দেখার ভান করে অন্য দিকে চলে গেলাম । কিন্তু নীমুর দুর্ভাগ্যই বলা যাবে যে ও আসলে আমার সাথেই হলে ঢুকলো । এবং বসলো আমার থেকে দু সারি সামনে। শো চলাকানীন সময়ে ও মোটেই আরাম করে মুভি দেখতে পারল না । কয়েকবার খেয়াল করছিলাম যে ওর বয়ফ্রেন্ড ওকে চুমু খাওয়ার চেষ্টা করছিলো তবে নীমি সেটাতে বাঁধা দিচ্ছিলো বারবার । কারণ সে জানে যে আমি ঠিক তার পেছনে রয়েছে । মুভি শেষ করে এক প্রকার দৌড়েই পালালো সে ।

আমি ভেবেছিলাম এটা নিয়ে আসলে আমাদের মাঝে আর কোন কথা হবে না । আমি এটা দেখেও না দেখার ভান করবো কিন্তু তেমনটা হল না । পরের দিন পড়াতে গিয়ে দেখি নীমির বাবা গম্ভীর মুখে বসে আছেন ড্রয়িং রুমে । উনি ব্যস্ত মানুষ । ওনার সাথে আমার দেখা হয় না বললেই চলে। আজকে উনাকে দেখে আমি সালাম দিলাম । আমাকে সে তার সামনে বসতে বলল । তারপর গম্ভীর মুখে বলল আমি যেন আর নীমিকে পড়াতে না আসি । আমি খানিকটা অবাক হয়ে বললাম, কেন আঙ্কেল কিছু হয়েছে ? সে আমার দিকে অগ্নি চোখে তাকিয়ে বলল যে আমি রফিকের পরিচিত বলেই আমাকে সে কেবল শান্ত মুখে চলে যেতে বলছে । অন্য কেউ হলে আমাকে যে পুলিশে দিতো । আমি নাকি তার মেয়েকে কু প্রস্তাব দিয়েছি ! তার সাথে প্রেম করতে চেয়েছি !

আমি সত্যিই আকাশ থেকে পড়লাম। তবে ব্যাপারটা বুঝতে পারলাম । নীমির বাবাকে আমি যতদুর জানি তিনি ছেলে মেয়েদের এই প্রেম ভালবাসা একদম পছন্দ করেন না। আর নীমি ভেবেছে যে আমি যেহেতু তাকে তার বয়ফ্রেন্ডের সাথে দেখে ফেলেছি তাই আমি তার বাবার কাছে রিপোর্ট করবো। আমি যাতে সেটা না করতে পারি তাই সে আমাকেই দুর করে দিচ্ছে । আমার একবার মনে হল যে নীমির বাবাকে সত্যি কথা বলি কিন্তু কেন জানি বলতে ইচ্ছে হল না । কারণ মেয়ের কথা শুনে আর আমাকে বিন্দু মাত্র কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই সে আমার উপর দোষ চাপিয়ে দিয়েছে । এখনে আমার কিছু বলা না বলা সমান । মাথা নিচু করে আমি বের হয়ে এলাম।
সপ্তাহ খানেক পরে রফিক ভাই আমাকে তার অফিসে ডাকলেন । আমি রফিক ভাইয়ের কাছে সব খুলে বললাম । সে জানে আমি কেবল ছেলে । আমি যে এমন কিছু করবো না সেটা সে খুব ভাল করেই জানে । সেই আমাকে বলল যে আমি যেন মন খারাপ না করি ।

তারপর মাস তিন কেটে গেছে । আজকে আমি আবার নীমিদের বাসায় এসে হাজির হলাম ।

দরজা নীমির বাবাই খুলে দিলেন । আমি ঢুকলাম ভেতরে । বসার ঘরে সোফার উপর বসলাম । তারপর নীমির বাবা আমার কাছে ক্ষমা চাইলেন। তিনি বললেন যে তার কোন প্রকার খোজ খবর না নিয়ে কেবল নীমির কথার উপর ভিত্তি করে ঐদিন এমন আচরণ করা ঠিক হয় নি মোটেও । এই জন্য সে খুবই সরি ।

এরপর নীমিকে ডেকে আনলেন আমার সামনে । নীমি মাথা নিচু করে দাড়িয়ে ছিল। ওর বাবা জোরে একটা ধমক দিল। আমাকে সরি বলতে বলল। আমি বললাম থাক আঙ্কেল, ও বাচ্চা মানুষ ।
-না সেটা না । একে তো ও অপরাধ করেছে এবং সেটা ঢাকতে অন্য অন্য জনের উপর দোষ চাপিয়েছে । এটা খুবই বড় অন্যায় ।

আমি যতখানি অস্বস্তিতে পড়েছিলাম সেটা কেটে গেল । রাতের খাবার খেয়ে বের হতে হল । এক পর্যায়ে নীমিকে আবারও পড়ানো কথা আসলো। তবে আমি এবার মানা করলাম । বললাম, না আঙ্কুল আমি আর ওকে পড়াবো না ।
-এখনও রাগ করে আছো?
-না না সেটা না । আসলে আমার সময় নেই ওকে পড়ানোর । নতুন আরেকজনকে পড়ানো শুরু করেছি ।

যদিও এটা মিথ্যা কথা । আমি নতুন কাউকে পড়ানো শুরু করি নি । তবে ওদের এই বাসায় আর আসার কোন ইচ্ছে আমার ছিল না । আবারও রফিক ভাইয়ের সাথে বের হয়ে হয়ে এলাম । যাওয়ার সময় রফিক ভাই বলল, চাইলে পড়াতে পারতি । আমি জানি তুই নতুন কোন টিউশনি নিস নি ।
-হ্যা পারতাম । তবে কেন জানি মন থেকে সায় দিল না ।
রফিক ভাই হাসলেন । তারপর বলল, আমি তোকে চিনি খুব ভাল করেই । যাক সমস্যা নেই ।

আমি ভেবেছিলাম নীমির সাথে বুঝি আমার আর দেখা হবে না । তবে দেখা হল ঠিক । পরের বছর যখন নতুন ছাত্রছাত্রী ভর্তি হল আমাদের ডিপার্টমেন্টে আমি সেখানে নীমিকে দেখতে পেলাম । নীমি আমার ডিপার্টমেন্টেই ভর্তি হয়েছে । আমি তখন ফাইনাল ইয়ারে পড়ি । নীমির সাথে আমার প্রায়ই দেখা হত । তবে আমি ওকে আগে থেকে চিনি না এমন একটা ভাব করেই চলে যাই । নীমিও সামনে এসে ঠিক কথা বলে না ।

এমন ভাবে বেশ কিছু দিন চলে গেল । তবে একদিন আবারও আমাদের মাঝে দেখা হল । সেদিন আমি হলেই ছিলাম । আগের দিন সন্ধ্যাতে শোনা যাচ্ছিলো যে আজকে দুই গ্রুপের মাঝে ঝামেলা হবে । তাই ক্যাম্পাসে না যাওয়াই ভাল । আমি নিজের রুমে শুয়ে শুয়ে বই পড়ছিলাম । দুপুরের কিছু আগে ঝামেলা শুরু হল । আমি দুর থেকে টের পাচ্ছিলাম । তার কিছু সময় পরেই আমার ফোনে একটা অচেনা নম্বর থেকে ফোন এল । রিসিভ করলাম । ওপাশ থেকে যে মানুষটা ফোন দিয়ে কথা বলল যে আর কেউ না, নীমির বাবা । আমাকে জানাল যে নীমি আজকে ক্যাম্পাসে গেছে । মারামারির ভেতরে আটকা পড়েছে । সে খুব ভয় পেয়ে আছে । আমি কি একটু সাহায্য করতে পারবো কিনা ! সে নিজেও আসতে তবে রাস্তায় জ্যামের কারণে তার একটু সময় লাগবে !

আমি বললাম যে আমি যাচ্ছি । দ্রুত বের হয়ে এলাম জামা কাপড় পড়ে । নীমির বাবা দেখলাম নীমির ফোন নম্বরটা আমাকে টেক্সট করে দিয়েছে । আমি নীমিকে খুজে বের করলাম । আমাদের ক্লাস রুমের এক কোনে জড়সড় হয়ে বসে ছিল। আমাকে দেখে একেবারে দৌড়ে এসে আমাকে সামনে এসে কাঁদতে শুরু করলো । পায়ে দেখলাম একটা স্যান্ডেল নেই । সম্ভবত দৌড়ে পালিয়েছে । আমি ওকে অভয় দিলাম । বললাম যে ভয় নেই আমি আছি । আরো ঘন্টা খানেক পরে পরিস্থিতি শান্ত হলে আমরা বের হলাম । ডিপার্টমেন্টের সামনে এসে দেখতে পেলাম ওর স্যান্ডেলটা পড়ে আছে । সেটা নিয়ে হাটতে হাটতে বের হয়ে এলাম । বাইরে এসে দেখতে পেলাম নীমির বাবাকে । আমি নীমিকে তার হাতে তুলে দিলাম । তিনি অনেকবার আমাকে ধন্যবাদ দিলেন ।

পরের সপ্তাহে আমি ক্লাস শেষ করে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছি এমন সময়ে নীমিকে আসতে দেখলাম । আমার সামনে এসে বলল, আপনার সাথে কিছু কথা বলা যাবে?
আমি সবার সামনেই বললাম, বল !
-একটু এদিকে আসুন প্লিজ ।

একবার মনে হল যে বলি সবার সামনেই বল । তবে সেটা বললাম না । আমি উঠে গিয়ে একটু দুরে গিয়ে দাড়ালাম । নীমি বলল, আব্বু আপনাকে আজকে বাসায় যেতে বলেছে।
-কেন?
-জানি না । যেতে বলেছে । তাই বললাম।
-এটা তো ওখানেই বলা যেত ।
-হ্যা যেত ।
-আর কিছু?

নীমি কিছু সময় তাকিয়ে রইলো মাটির দিকে । আমি বললাম, আচ্ছা তাহলে আমি যাই । দেখি আজকে সন্ধ্যার দিকে সময় পেলে যাবো !

আমি যখন পা বাড়াতে যাবো তখন নীতি বলল, আপনি এখনও আমার উপর রাগ করে আছেন?
-কোন ব্যাপারে?
-আপনি জানেন কোন ব্যাপারে !
-না রাগ করে নেই । আসলে রাগ করার মত অবস্থানে তুমি নেই। আমরা কেবল কাছের মানুষের প্রতিই আমাদের রাগ অভিমান দীর্ঘদিন ধরে পুষে রাখি । তুমি তেমন কেউ নও । ইউ আর জাস্ট লাইকে এ স্ট্রেনজার টু মি ।

ঐদিন রাতে অবশ্য নীমিদের বাসায় গিয়েছিলাম । আমার জন্য বিশাল খাওয়ার আয়োজন হয়েছিলো । নীমির বাবা আমার ব্যাপারে সেদিন অনেক খোজ খবর নিলেন । আর কতদিন পড়াশোনা বাকি এরপর কী করবো এই সব । আমি যথা সম্ভব বলার চেষ্টা করলাম । আমার সাথে নীমির বেশ কয়েকবার চোখাচোখী হল । সেই সময়ে আমি হঠাৎ নীমির মাঝে অন্য রকম কিছু খেয়াল করলাম । আমার মনের ভুল ভেবে আমি সেদিকে আর নজর দিলাম না । সেদিন যখন ওদের বাসা থেকে রাস্তায় নেমে এলাম তখন পেছনে না তাকিয়েও আমি বুঝতে পারছিলাম যে নীমি ব্যালকনিতে দাড়িয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে । মনের ভেতরে কেমন যেন একটা অদ্ভুত অনুভূতি হল । এবং কেন জানি আমার আবারও মনে হল যে এই বাসায় আমাকে আবারও আসতে হবে । এবং সেটা দ্রুতই ।

মাস খানেক পরে রফিক ভাই আমার সাথে দেখা করতে ক্যাম্পাসে এসে হাজির হলেন । এবং তারপরে আমাকে যা বললেন তাতে আমি আকাশ থেকে পড়লাম । তিনি জানালেন যে নীমির বাবা আমার সাথে নীমিকে বিয়ে দিয়ে যায় । সে খুব দ্রুতই আমার বাবা মায়ের সাথে এই ব্যাপারে কথা বলবে । এবং আরেকটা ব্যাপার এই বিয়ের আগ্রহ নীমির বেশি । সেই নাকি তার বাবাকে রাজি করিয়েছে । আমি খানিকটা কিংকর্তব্যবিমুর হয়ে রইলাম ।

পরের দিন নীমি আবার আমার সামনে এসে হাজির হল । তবে আজকে সে আমাকে অন্য কোথাও ডেকে নিয়ে গেল না । কেবল যাওয়ার সময় আমার চোখে তাকিয়ে চোখের ইশারাতে হাসলো । আমাকে যেন বলে বোঝানোর চেষ্টা করলো যে তোমাকে আমি দেখে নিচ্ছি । গতদিনের ওদের বাসায় সে আমার দিকে যেভাবে তাকিয়েছিলো তার চোখে সেই দৃষ্টি দেখতে পেলাম ।

কয়েক দিনের মধ্যে মোটামুটি এটা ঠিক হয়ে গেল যে নীমির সাথেই আমার বিয়ে হচ্ছে । নীমির বাবা আমার বাবার সাথে কথা বার্তা বলল বেশ কয়েকবার । আমাকে যদিও কেউ কিছু বলল না । আমি জানতে পারলাম রফিক ভাইয়ের মাধ্যমে । তাদের ভেতরকার যোগসুত্র তিনি।

নীমি প্রতিদিন আমার সাথে ইচ্ছে করেই দেখা করতে আসে । তবে কিছু বলে না মুখ দিয়ে । চোখে চোখে কথা হয় । তারপর চলে যায় সে । এরই ভেতরে আমার ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হয়ে গেল । আমার পরীক্ষা গুলো বিকেল বেলা হত । শেষ হতে হতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে যেত । আমি সেদিন প্রথম পরীক্ষা শেষ করে বের হয়েছি তখনই নীমিকে দেখতে পেলাম । সে শুকনো মুখে ক্যাম্পাসের কাঠাল তলায় বসে আছে । এই সময়ে পুরো ক্যাম্পাসে কেউ থাকে না বললেই চলে । ক্যাম্পাসের বাস চলে গেছে অনেক আগেই । আমাকে আসতে দেখে সে উঠে দাড়ালো । আমার মনে তখন অদ্ভুত সেই অনুভূতি হল । বিশেষ করে নীমি যে আমার জন্য এতো সময় অপেক্ষা করছিলো এটা জানার পরে ।

আমি আমার বন্ধুদের বিদায় দিয়ে নীমির কাছে এসে দাড়ালাম । নীমি বলল, পরীক্ষা কেমন হল?
-ভাল ।
-হলে যাবেন এখন?
-হ্যা ।
-আচ্ছা !

আমরা ক্যাম্পাসের গেট পর্যন্ত হেটে এলাম । কেউ কোন কথা বললাম না । তবে কেন জানি আমার মনে হল কিছু বলা উচিৎ । আমি বললাম, কিছু খাবে তুমি ?
সাথে সাথেই দেখলাম যে নীমির মুখ উজ্জল হয়ে উঠলো । আমাকে হাতের ইশারাতে দেখালো ফুচকার কার্ট টা।

ফুঁচকা খেতে খেতে নীমিই কথাটা জানতে চাইলো । বলল, আপনার কি আপত্তি আছে ?
কিসে, আমি বলতে যাচ্ছিলাম । তবে সেটার আগেই বুঝে গেলাম যে নীমি কিসের কথা বলছে । আমি কিছু সময় ভাবলাম । তারপর বললাম, তার আগে তুমি আমাকে একটা প্রশ্নের জবাব দাও ।
-বলুন ।
-তোমার এতো আগ্রহ কেন ? আমি যতদুর শুনে তোমার একান্ত ইচ্ছেতে এটা হচ্ছে ।

নীমি একটা ফুচকা মুখে দিতে দিতে বলল, আমি নিজেও জানি না । তবে যেদিন যখন আপনার নামে মিথ্যা অভিযোগ করলাম তারপর থেকে আমি কখনই শান্তি পাই নি । বারবার কেবল আপনার কথা ঘুরে ফিরে মনে হয়েছে । সব সময় । একটা সময়ে আমি আবিস্কার করি যে আমার চিন্তা চেতনাতে আপনি ছাড়া আর কেউ নেই । আমি শত চেষ্টা করেও আপনাকে আমি মন থেকে বের করতে পারি নি । এখনও পারি না ।

ফুচকা খাওয়া হলে আমি ওকে বাসায় পৌছে দিলাম । ওর সাথে গাড়ি থাকলেও সেটা ও ছেড়ে দিল । রিক্সা নিয়ে টুকটুক করে এগিয়ে গেলাম ওদের বাসার দিকে । সেইদিনই নীমি প্রথম আমার হাত ধরলো । আমাদের নতুন দিনের গল্প এখান থেকেই শুরু ।

ফেসবুকের অর্গানিক রিচ কমে যাওয়ার কারনে অনেক পোস্ট সবার হোম পেইজে যাচ্ছে না। সরাসরি গল্পের লিংক পেতে আমার হোয়াটসএপ বা টেলিগ্রামে যুক্ত হতে পারেন। এছাড়া যাদের এসব নেই তারা ফেসবুক ব্রডকাস্ট চ্যানেলেও জয়েন হতে পারেন।

সরাসরি মেসেজ পাঠাতে চিঠি.মি এপ ব্যবহার করুন।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 4.7 / 5. Vote count: 66

No votes so far! Be the first to rate this post.


Discover more from অপু তানভীর

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

About অপু তানভীর

আমি অতি ভাল একজন ছেলে।

View all posts by অপু তানভীর →