বখাটের প্রেম

oputanvir
4.5
(53)

সামনের টেবিলে একটা কোকাকোলার বোতল আর একটা ক্যান রাখলো মন্য় । তারপর লিনার দিকে তাকিয়ে হেসে বলল, আফা মনি, এই যে দুইটা আনছি । একটা নরমাল কোক আরেকটা ডায়েট ! আপনি যেইটা খান !

লিনা রাগান্বিত চোখে মন্টুর দিকে কিছু সময় তাকিয়ে রইলো । তবে বুঝতে পারলো যে এখন আসলে ওর কিছুই করার নেই । সকালের েই ভয়টা এখন আর নেই । একটু আগে হাজির বিরিয়ানি খেয়েছে ও । তারপরই কোক খেতে চেয়েছে । মন্টু একটু পরেই তার ব্যবস্থা করেছে । কেউ দেখলে বুঝতে পারবে না যে লিনাকে এই কজন কিডন্যাপ করে নিয়েছে সকালবেলা। ইউনিভার্সিটি যাওয়ার পথে ওকে ভরা বাজার থেকে সবার সামনে লিনা এরা তুলে নিয়েছে । সবাইকে কেবল চেয়ে চেয়ে দেখেছে । কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে নি । যখন গাড়িটা চলতে শুরু করলো, লিনার পা হাত একেবারে অবশ হয়ে গেল ভয়ে । এমনটা যে ওর সাথে হতে পারে সেটা কোন দিন ভাবে নি । এই নির্জন জায়গায় এসেই মন্টুকে দেখতে পেল সে । ভয়টা একটু কমে তবে সেই সাথে অন্য আরেকটা ভয় এসে জড় হল ।

যদিও মন্টু ছিল ওদের দলপতি তবে লিনা খুব ভাল করেই জানে যে এর পেছনে কমিশনারের ছেলে রাকিবের হাত রয়েছে । রাকিব অনেক দিন ধরে লিনার পেছনে ঘুরঘুর করছে । ওকে পছন্দ করে সেটা লিনা খুব ভাল করে জানে । তবে বখাটে বলে কোন দিন পাত্তা দেয় নি । তাই হয়তো আজকে ওকে তুলে নিয়ে এসেছে । এবার হয়তো ওকে জোর করে বিয়ে করবে কিংবা রেপ !
শেষ সম্ভবনা টা মাথায় আসতেই বুকের মাঝে দুরু দুরু করতে শুরু করলো । তার ঠিক পরেই রাকিব এসে হাজির হল । রাকিবকে দেখে লিনা বলল, আপনি এতো নিচে নামবেন আমি কোন দিন ভাবি নি ।
রাকিব একটু হাসলো । তারপর বলল, ভালোবাসা আর যুদ্ধে সব কিছু জায়েজ আছে । তুমি এটা জানো !
-এই আপনার ভালোবাসা !
-আরে না না । আমি আমার ভালোবাসা প্রমাণের জন্য তোমাকে এখানে আনি নি । আমি কেবল এটা নিশ্চিত করতে চাই যে যার সাথে তোমার বিয়ে হতে চলেছে তার ভালোবাসা যেন সত্যি হয় !

লিনার বিয়ে ঠিক হয়েছে মাস খানেক আগে । কথা বার্তা সব কিছু পাকা । কেবল সামনের মাসে লিনার মাস্টার্স ফাইনাল পরীক্ষা হলেই বিয়ে হবে । আগে থেকেই মাসুকের সাথে ওর পরিচয় ছিল । মাসুকই প্রথম কথাটা বলে । পরে লিনা আর না করে নি । পারিবারিক ভাবেই বিয়ের কথা বার্তা এগিয়েছে ।

লিনা ঠিক বুঝতে পারলো না । বলল, কী বলতে চান আপনি?
-এই যে তোমাকে এখানে ধরে নিয়ে এলাম, এই খবর তোমার হবু শ্বশুর বাড়ির লোকজনের কাছে পৌছাবে । তখন তাদের রিএকশন কী হবে সেটা আমি দেখতে চাই । এবং তোমার হবু বর কী করে সেটা । খুব ভাল করেই জানো যে আমাদের দেশে কোন মেয়েকে ধরে নিয়ে গেলে তার উপর কী প্রভাব পড়ে । যদিও সেখানে মেয়েটার কোন হাত থাকে না, কোন দোষ থাকে না । তবুও সমাজ তাকেই দোষ দেয় । সমাজ দিক তাতে কিছু যায় আসে না কিন্তু ভালোবাসার মানুষও দিলে সমস্যা !

লিনা অদ্ভুত চোখে তাকিয়ে রইলো । রাকিব আবার বলল, সো ডিলটা হচ্ছে, এখন এখানে থাকবে তুমি, বিকেল পর্যন্ত । তারপর পুলিশ এখান থেকে তোমাকে উদ্ধার করবে । তোমাকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হবে । এরপর যদি তোমার বিয়ে হয়, বিয়েটা যদি ওরা না ভেঙ্গে দেয় বিশ্বাস কর লিনা আমি আর কোন দিন তোমার সামনে আসবো না । বরং তোমার বিয়ের সকল আয়োজন আমি করবো । কিন্তু যদি না হয় … মানে যদি ওরা বিয়েটা ভেঙ্গে দেয় …।
লিনা রাকিবের কথা শেষ করতে দিল না । বলল, এমনটা হবে না । মাসুক এমন টা করবে না ।
-না করলে তো ভালই । কোন সমস্যা নেই । তুমি জিতে গেলে ! তবে শর্ত একটাই যে আমি যে এই কারণে তোমাকে ধরে নিয়ে এসেছি এটা বলবে না । হ্যা বলতে পারো যে আমিই তোমাকে কিডন্যাপ করেছি । সেটাতে সমস্যা নেই ।

রাকিব তারপরই চলে গেল । লিনা বসে রইলো ঘরের ভেতরে । কিছু পরপরই মন্টু ফিরে আসছে আর সাথে নানান রকম খাবারের জিনিস নিয়ে আসছে । মোবাইলটা ওরা আগেই নিয়েছে । তাই সময় কাটানোর জন্য রাকিব সাথে করে একটা বই নিয়ে এসেছি । সেটা দিয়ে গেল । সেই বই পড়েি দিন কেটে গেল । তবে দরজাটা বন্ধই রইলো ।

সন্ধ্যার একটু আগে পুলিশ এসে হাজির হল । মন্টু কিংবা রাকিব কঊকেই অবশ্য পাওয়া গেল না । যখন লিনার কাছে জানতে চাওয়া হল ওকে কারা এখানে ধরে এনেছে লিনার একবার মনেও হয়েছিলো যে রাকিবের নাম বলে দেয় । তারপরই মনে হল যে নাম বলে রাকিবের খুব একটা কিছু যাবে আসবে না । যেহেতু রাকিব সব প্লান করেছে তাই এর থেকে কিভাবে রক্ষা পাবে সেটাও রাকিব খুব ভাল করে জানে । লিনা বলল যে ও কারো চেহারা দেখে নি । ওকে অজ্ঞান করে নিয়ে আসা হয়েছিলো । মুখে কালো কাপড় ছিল ।

রাতে যখন বাসায় ফিরলো প্রথম ধাক্কাটা ও পেল ওর নিজের মায়ের কাছ থেকে । লিনার মা ওকে আলাদা ঘরে ডেকে নিয়ে গিয়ে বলল, তোর সাথে কিছু করেছে ওরা?
এমন সময়ে এই প্রশ্ন ! লিনা মায়ের গলার স্বর শুনেই বুঝতে পালরো যে মা আসলে কি বলতে চাচ্ছে । বলল, না মা কিছু করে নি ।
-সত্যি করে বল !
-সত্যি করেই বলছি । মিথ্যা কেন বলবো !

মায়ের চোখের দৃষ্টি দেখে লিনা সত্যই অবাক হয়ে গেল । এমন একটা দৃষ্টি সে মোটেই আশা করে নি । নিজের ফোনটা তখনও লিনা হাতে পায় নি । রাকিবের কাছেই ফোনটা রয়েছে । সেটা দিয়ে যায় নি । মায়ের ফোন দিয়ে কয়েকবার মাসুককে ফোন দেওয়ার চেষ্টা করলো কিন্তু মাসুক ফোন ধরলো না । মনের ভেতরে একটা কু ডেকে উঠলো তখনই । রাকিব যা বলেছিলো সেটা সত্যি হবে না তো !

ঠিক এক সপ্তাহ পরে মাসুকের সাথে কথা বলতে পারলো লিনা । মাসুক এই কদিনে ওকে এড়িয়ে চলেছে । তবে আজকে দেখা করতে চেয়েছে । ওদের পছন্দের রেস্টুরেন্টে দেখা হল । মাসুকের মুখ দেখেই মনে হল হল যে মাসুক যেন কেমন অস্বস্তিতে রয়েছে । লিনার দিকে ঠিক তাকাচ্ছে না । এটা ওটা নিয়ে কথা বলছে তবে লিনার বুঝতে মোটেও কষ্ট হল না যে মাসুক আসলে অন্য কিছু বলতে চাচ্ছে ।
মাসুক অবশেষে কথাটা বলেই ফেলল ।
-বাবা চাচ্ছেন না আমাদের বিয়েটা হোক !
লিনা আসলে জানতও যে এমন কিছু বলবে । লিনা মানসিক ভাবে সেই প্রস্তুতি নিয়েই রেখেছিলো । বিশেষ করে এই সাত দিয়ে বাসার মানুষ সহ আশে পাশের সবার আচরণে যে পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছে সে অবাক হচ্ছে কেবল । রাকিব ঠিকই বলেছিলো ।

লিনা শান্ত কন্ঠে বলল, তুমি কী চাচ্ছো ?
-দেখো আমি আসলে বাবার সিদ্ধান্তের বাইরে যেতে পারবো না ।
লিনা কিছু সময় চুপ করে রইলো । তারপর বলল, আসলে কী কারণ ? মানে কারণ টা কি আমাকে কয়েকজন ধরে নিয়ে গিয়েছিলো এটা ? এটাই সম্ভবত ! তাই না । যদিও আমি বলেছি ওরা আমার সাথে কিছুই করে নি । আমার কথা আসলে কেউ বিশ্বাস করে নি । এমন কি আমার নিজের পরিবারও না । ওয়েল ধরে নিলামও যদি ওরা আমাকে রেপ করেছে এখানে আমার কী দোষ বলতে পারো? আমাদের সমাজের এই দিকটা আমি সত্যিই কোন দিন বুঝতে পারি না । একটা মেয়ের সাথে এমন দুর্ঘটনা ঘটলে সবাই এমন একটা ভাব করে যেন দোষটা আসলে মেয়েটারই । কী অদ্ভুত !

লিনা অনুভব করলো ওর ভেতর থেকেই একটা রাগ রের হচ্ছে । নিজেকে নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করলো । শান্ত হতে আরও কিছু সময় লাগলো । লিনা হাত থেকে মাসুকদের দেওয়া অংটিটা খুলে টেবিলের উপর রাখলো । তারপর বলল, থ্যাঙ্ক গড যে আমার সাথে এটা ঘটেছে । তাতে তোমার মত কিছু মানুষের আসল চেহারা বের হয়ে এল । যেখানে তোমাকে আমার সসব থেকে বেশি দরকার ছিল সেই সময়েই তুমি লেজ গুটিয়ে পালালে ।

লিনা আর কোন কথা না বলে উঠে দাড়ালো । তারপর সোজা রেস্টুরেস্ট থেকে বের হয়ে গেল । অন্ধকার রাস্তায় কত সময় উৎভ্রান্তের মত হাটলো সেটা নিলা নিজেও জানে না । একটা সময়ে কেবল খেয়াল করলো যে ও পথ হারিয়ে ফেলেছে । কেন জানি পথ খুজতে ঠিক ইচ্ছে হল না । রাস্তার পাশে বসে পড়লো । রাস্তা দিয়ে হুসহাস করে গাড়ি চলে যাচ্ছে । সেদিকে তাকিয়ে রইলো কেবল । খুব কান্না আসতে লাগলো ।

তখনই অনুভব করলো কেউ ওর পেছনে এসে দাড়িয়েছে । কিভাবে লিনা ব্যাপারটা বুঝতে পারলো সেটা নিজেও জানে না তবে লিনা বুঝতে পারলো যে পেছনে যে মানুষটা এসে দাড়িয়েছে সে অন্য সবার মত ওকে ছেড়ে কোন দিন চলে যাবে না ।

দুই
মন্টু দাত বের হরে একটা হাসি দিয়ে প্যাকেট লিনার দিকে বাড়িয়ে দিল । ক্যাম্পাসে যাওয়ার জন্য রিক্সার জন্য অপেক্ষা করছিলো মোড়ের মাথায় । মন্টুর বাড়িয়ে দেওয়া প্যাকেট নিয়ে বলল, কী এটা ?
-আপনার ফোনটা ভাইয়ের হাত থেকে পরে ভেঙ্গে গেছে । তাই নতুন ফোন !
প্যাকেটটা খুলে দেখলো সেটা একটা আইফোন !
লিনা বলল, তোমার ভাইকে বল আমার ফোন এতো দামী ছিল না । আমি এটা নিবো না ।
-এইটা আফা আমি বলতে পারবো না । আপনিই বলবেন । আমি যাই ।
লিনাকে আর কিছু বলার সুযোগ ন দিয়ে মন্টু দৌড়ে দিয়ে চলে গেল । সময় ছিল না দেখে লিনা ক্যাম্পাসের দিকে পা বাড়ালো । বিকেলে ক্যাম্পাস থেকে ফিরে আসার সময় প্রাইমারি স্কুলের মাঠের দিকে তাকাতে দেখলো কয়েকজন ছেলে মিলে একটা ছেলেকে কলার চেপে ধরে ধরে নিয়ে যাচ্ছে । ছেলে গুলোকে চিনতে মোটেও কষ্ট হল না । রিক্স থেকে নেমে সোজা সেই স্কুলের পেছনে গিয়ে হাজির হল । যা ভেবেছিলো তাই । একটা ছেলেকে ওরা ধরে নিয়ে এসেছে । বিচার বসেছে । আর সবার সামনে বসে আছে রাকিব । ওকে দেখেই সবাই কেমন একটু যেন নড়ে চড়ে উঠলো ।
লিনা সোজা ওদের সামনে গিয়ে বলল, কী হচ্ছে এখানে ?
মন্টু এগিয়ে এসে একটু হেসে বলল, কিছু না আফামনি । আপনি কষ্ট করে আবার এদিকে কেন আসছেন !
-ছাড়ো ওকে । ছেড়ে দাও ।

সবাই রাকিবের দিকে তাকালো । লিনা আবার বলল, ওর কেন তাকাচ্ছো । ছাড়তে বলছি না । ছাড় বলছি !

রাকিব মাথা ঝাকাতেই সবাই ছেড়ে দিলো ছেলেটাকে । লিনা সেই ছেলেটার উদ্দেশ্যে বলল, যাও বাসায় চলে যাও ।
ছেলেটা তবুও যেন একটু দ্বিধান্বিত হয়ে আছে । এখন থেকে পালিয়ে গেলে হয়তো আবার ধরবে । লিনা বলল, যাও বলছি । কোন সমস্যা নেই ।
ছেলেটা তারপর ভয়ে ভয়ে হাটা দিল । লিনা এবার বাকি ছেলেদের দিকে তাকিয়ে বলল, তোমরাও যাও ।
মন্টু একটু বিগলিত হাসি দিয়ে বলল, এই সবাই চল ।

সবাই চলে যেতে লিনা রাকিবের সামনে এসে দাড়ালো । তারপর বলল, আমার ফোনটা কোথায়?
-মন্টু বলে নি ? ভেঙ্গে গেছে ।
-সেই ভাঙ্গা ফোনটাই কোথায় ?
-ফেলে দিয়েছি ।
-আমার জিনিস ! ফেলে দিয়েছেন? পেয়েছেন?
রাকিব কোন কথা বলে তাকিয়ে রইলো লিনার দিকে । কারণ সে লিনার চোখে মোটেই বিরক্তি দেখতে পাচ্ছে না । বরং সেখানে একটা আমুদে ভাব দেখতে পাচ্ছে ।
রকিব বলল, ঐ ফোনের সব ছবি তো নতুন ফোনে দিয়ে দিয়েছি। দিয়েছি না ? সব কিছু ট্রান্সফার করা ।
-তো ? আমি আপনার ফোন কেন নিবো?
-নিবে ….
-হ্যা বলেন কেন নিবো? আমি কে হই আপনার?
-তুমি ,,,,,,
রাকিব এবার সত্যি কেমন যে কনফিউজ হয়ে গেল । লিনার আচরণ একটু যেন অপরিচিত লাগছে ।

লিনা রাকিবের এই দ্বিধান্বিত ভাবটা কিছু সময় উপভোগ করলো । তারপর বলল, আজ থেকে এই সব মারামারি সব বন্ধ ! এরপর থেকে যেন একদম না শুনি এসব !
রাকিব কেবল মাথা ঝাকালো ।
লিনা বলল, আমি এখন যাই । আর আপনার এই ফোনটা আমি আমার প্রি-ওয়েড গিফট হিসাব নিলাম ।

লিনার পুরো লাইনটা বুঝতে রাকিবের একটু সময় লাগলো । প্রথমে রাকিব ঠিক বুঝতে পারে নি কথাটা । কিন্তু যখন বুঝতে পারলো তখন চেহারাতে একটু একশ পাওয়ারের আলো জ্বলে উঠলো । লিনা অবশ্য ততক্ষণে ঘুরে হাটা দিয়েছে । রাকিবের খুব ইচ্ছে করলো তখনই লিনাকে গিয়ে জড়িয়ে ধরে । তবে নিজেকে সামলে নিলো সে ! সামনে আরও অনেক সময় পাওয়া যাবে ।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 4.5 / 5. Vote count: 53

No votes so far! Be the first to rate this post.

About অপু তানভীর

আমি অতি ভাল একজন ছেলে।

View all posts by অপু তানভীর →

2 Comments on “বখাটের প্রেম”

  1. বাস্তবতার আর্টপেপারে কল্পনার রং ঘষে আঁকা তৈরি ছবির মত গল্প ‘বখাটের প্রেম’। গল্পের ধারণা নতুন নয়, তবে এমন গল্পের ভিন্ন ভিন্ন উপস্থাপন আর দৃশ্যপট, ঘটনাপ্রবাহ সবসময়ই মনে ভালোলাগার দোল দিয়ে যায়।

Comments are closed.