সন্ধ্যা বেলা যেদিন আমার টিউশনী থাকে না সেদিনটা সাধারনত আমি ঘরে শুয়ে বসেই কাটাই । ল্যাপটপে কাজ করি নয়তো বই পড়ি । আজকেও বিছানাতে শুয়ে শুয়ে বই পড়ছিলাম । এমন সময়ে দরজাতে টোকা পড়লো । আমি উঠে বললাম, আন্টি ভেতরে আসুন । দরজা খোলা রয়েছে ।
আমি জানতাম আন্টি এসেছে । অনিক আসার সময় এতো টোকা ফোটা দেয় না । আমার ঘরে সে এমনিতেই ঢুকে পড়ে । আর অন্য দিকে শশী কখনও আমার ঘরে ঢোকে না ।
আন্টির মুখটা আজকে বেশ হাস্যজ্জ্বল । অনেক দিন আজকে এই পরিবারে একটা খুশীর কারণ ঘটেছে । এদেরকে আমি এই কবছরে খুব কাছ থেকে দেখেছি । এদের কষ্টের ব্যাপারটাও আমি খুব ভাল করেই জানি । তাই আন্টির মুখে হাসি দেখে ভাল লাগছে । আমি বিছানায় বসতে বসতে বললাম, আসুন আন্টি । বলুন !
আন্টি একটু হেসে বলল, দেখেছো পাগলি মেয়েটা ঘরে বিছানাতে মুখ ডুবিয়ে কাঁদছে ।
আমি বললাম, সেকি !! কাঁদবে কেন ? চান্স না পেলে না কাঁদবে । একে তো চান্স পেয়েছে তার উপরে ডিএমসিতে । ওর তো খুশিতে লাফানো উচিৎ ।
-আমিও তাই বলছি কিন্তু বোকা মেয়েটা সেই কখন থেকে কাঁদছে ।
আমি বললাম, ঠিক ওকে রেডি হতে বলেন । বলেন যে আজকে ওকে অনিককে আইসক্রিম খেতে নিয়ে যাবো । জলদি বলেন ।
-আমিও সেটাই বলছিলাম । তোমার কথা শুনবে ।
-ওকে তৈরি হতে বলেন । আমি রেডি হচ্ছি !
আন্টি একটু হেসে ঘর থেকে বের হয়ে গেল ।
সম্পর্কে শশীরা আমার কোন আত্মীয় হয় না । আমি ওদের বাসায় থাকি পেয়িংগেস্ট হিসাবে । আজকে প্রায় চার বছর আমি এখানই আছি । আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রায় পুরোটা সময়ই আমি এখানে রয়েছে । মেস কিংবা হলের কোলাহল আমার কোন কালেই পছন্দ ছিল না । ঢাকাতে আসার পর কিছু দিন আমি মেসে ছিলাম বটে কিন্তু সেখানে আমার মন টেকে নি একদম । তারপরই এই বাসাটার খোজ পেয়ে গেলাম । প্রথমে যদিও কেবল থাকার কথা বলেই উঠেছিলাম । পরে খাওয়াটাও শশীদের সাথেই যুক্ত করে নিয়েছি ।
শশী আর অনিক বেশ কষ্ট করেই মানুষ হচ্ছে । ওদের বাবা নেই । মারা গেছেন । মারা যাওয়ার সময়ে তেমন কিছুই ছেলে মেয়েদের জন্য রেখে যেতে পারেন নি । কেবল এই ফ্লাটটা কিনে রেখেছিলেন । সেটা ধরেই আঁকড়ে রয়েছে এই পরিবারটি । এবং সত্যি বলতে কি এরপর আমি এখানে আসার পরে এদের জন্য একটু ভাল হয়েছে । আমাকে ঘর ভাড়া দিয়েছে । পরে এক সময়ে দেখলাম আমি যে টাকা দিয়ে খাওয়া দাওয়া করি সেটা যদি আন্টিকে দেই তাহলে এটা আন্টির জন্য ভাল হবে । আন্টিদের ভেতরে খাওয়া দাওয়া করায় আরেকটা সুবিধা হয়েছে যে আমি এখন চাইলেই বাজার করতে পারি । আন্টি মানা করেন না ।
যদিও আমি এখনও ছাত্র তবে আমার টাকা পয়সা বেশ ভালই আয় হয় । একে তো বাসা থেকে কিছু টাকা আসে অন্য দিকে আমি টিউশনী করে । সেখান থেকে ভাল টাকাই আসে মাস শেষে । আমার খুব একটা সমস্যা হয় না ।
শশী আধা ঘন্টা পরে বের হল । ওর চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝলাম ও আসলেই একটু কান্নাকাটি করেছে । আমি ওর দিকে তাকিয়ে বলল, তুমি দেখছি আচ্ছা বোকা মেয়ে ! জানো আমাদের এক বান্ধবী মেডিক্যালে চান্স না পেয়ে সুইসাইড করতে গিয়েছিলো । আর তুমি এতো ভাল জায়গাতে চান্স পেয়ে কাঁদছো ?
শশী কোন কথা না বলে মাথা নিচু করলো । তারপর ওর দিকে আমি ভাল করে খেয়াল করলাম । আজকে মেয়েটাকে বেশ সুন্দর লাগছে । শশী খুব একটা সাজে না কখনই । এমনকি লিসস্টিক পর্যন্ত দেয় না । আজকে দেখলাম দিয়েছে । গোলাপী রংয়ের একটা কামিজের সাথে গোলাপি লেগিংস পরেছে । হাতে চুড়ি পরেছে অনেক গুলো । সত্যিই চমৎকার লাগছে ওকে । আমি ওর দিকে কিছু সময়ে তাকিয়ে থেকে বললাম, অনিক কোথায় ?
শশী বলল, ওর পড়া আছে । স্যারের কাছে যাবে পড়তে ।
-আচ্ছা চল তাহলে আজকে কেবল তোমার ট্রিট !
শশীকে নিয়ে রিক্সাতে উঠলাম । শশী অন্য দিকে তাকিয়ে ছিল । আমি এটা ওটা নিয়ে কথা বলছিলাম । হঠাৎ শশী আমার দিকে তাকালো । তারপর বলল, আইরিন আপুর সাথে আপনার ব্রেকআপ হয়ে গেছে । তাই না ?
আমি থেমে গেলাম কিছু সময় । তারপর বলল, তোমাকে কে বলল শুনি?
-হয়েছে কিনা বলেন ?
-হ্যা ।
-আমার জন্য !
-তোমার জন্য কেন হবে ! আসলে ও এমনই । ব্রেকাপের একটা কারণ খুজছিলো । সেটা পেয়েছে ।
-আমিই তো কারণ । তাই না ?
-না তুমি না । কোন ভাবেই না ।
-আমি জানি । আমাদের ছেলে গেলে আপনার সম্পর্ক টিকতো ।
আমি জোরে করে হেসে ফেললাম । বললাম , শুনো তোমাদের এখানে আমি যত শান্তিতে আছি এক মাত্র নিজের বাড়ি ছাড়া আর কোথায় যাবো না । ঢাকা শহরে এতো আরামে থাকার উপায় নেই বুঝেছো ।
-এমনি এমনি তো থাকছেন না । আমার তো মনে হয় বেশি টাকা দিয়ে থাকছেন ।
-মোটেই তেমন না । শুনো আমি যদি হোস্টেলে কিংবা মেসে থাকতাম হয়তো এখানে থেকে কিছু টাকা কম খচর হত কিন্তু এখানের মত শান্তি কোথাও পেতাম না । বুঝেছো !
-আইরিন আপু মনে করে আপনি আমাদের উপর করুণা করছেন । তাই এখানে আছেন !
-আমরা এটা নিয়ে কথা বলেছি । বলি নি ?
শশী কোন উত্তর না দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো একভাবে । আমি বেশি সময় শশীর চোখে দিকে তাকিয়ে থাকতে পারলাম না । আইরিন আসলে ঠিকই ছিল । শশী মেয়েটা আমাকে ভালোবাসে । সেটা আমি যেমন বুঝতে পেরেছিলাম ঠিক তেমনি আইরিনও বুঝতে পেরেছিলো ভাল ভাবেই । এই কারণেই শশীকে সে একদম পছন্দ করতো না । আমরা একই বাসায় থাকি এই টাও তার পছন্দ ছিল না । তার কেবলই সন্দেহ হত আমি হয়তো কিছু করছি ওর সাথে । আমাকে বারবার বলতো এই বাসা ছেড়ে দিতে অন্য কোথাও উঠছে । আমি সেটা মোটেও চাইছিলাম না । একে তো এখানে এতো শান্তিতে আছি অন্য দিকে আমি যদি এখন থেকে হুট করে চলে যাই তাহলে শশীরা আসলেই একটু বিপদে পড়ে যাবে । আবার কে না কে আসবে আর সে আমার মত এভাবে তার প্রতি আচরন করবে কিনা সেটা আমার জানা ছিল না । নিজের ভেতর থেকেই আমি শশীদের পরিবারের জন্য একটা দায়িত্ব অনুভব করতাম । কেন করতাম সেটা আমি জানি না নিজেও ।
লেক পাড়ে বসে গল্প করলাম বেশ কিছু সন্ধ্যা পেড়িয়ে রাত হয়ে গে । শশী ওর ছোট বেলার কথা বলছিলো । আমার শুনতে ভালই লাগছিলো । হঠাৎ শশী একটা অদ্ভুত কাজ করলো । আমার হাত ধরলো । এমন ভাবে ধরলো যেভাবে প্রেমিক প্রেমিকারা হাত ধরে গল্প করে । ব্যাপারটা আমি প্রথমে ঠিক বুঝতে পারলাম না । এমন কাজ শশী কোন দিন করে নি । আজকে হঠাৎ করলো কেন ?
তারপরেই দেখতে পেলাম আইরিন কে । অন্য একটা ছেলের সাথে গল্প করতে করতে এগিয়ে আসছে । আমাকে দেখতে পেল । তারপর শশীর ধরা হাতটাও । দেখলাম ওর মুখের ভাবটা বদলে গেল সাথে সাথেই ।
শশী আমার সাথে এমন ভাবে কথা বলতে লাগলো যেন সত্যিই আমি ওর প্রেমিক । ব্যাপারটা বুঝতে পারলাম আমি বেশ ভাল ভাবেই । দেখলাম আইরিন দ্রুত পায়ে হেটে আমাদের পার হয়ে গেল । চোখের আড়াল যেতেই শশী হাসতে শুরু করলো ।
আমি শশীর দিকে তাকিয়ে বললাম, তুমি দেখি আসলেই দুষ্ট আছো !
-আজকে বুঝলেন আপনার প্রাক্তন প্রেমিকার রাতে আর ঘুম আসবে না ।
আমিও জানি কথাটা । আসলেই ওর ঘুম আসবে না । আইরিন বেশ ঈর্ষা প্রবন একটা মেয়ে ।
আবার যখন ফিরতি পথ ধরলাম শশী বলল, আপনার হাতটা একটু ধরবো?
-ধর !
-জানেন একটা মেয়ের প্রথম প্রেম কে হয় ? তার বাবা । প্রতিটি মেয়েই তার বাবাকে সত্যিই কারের ভালো বাসে । সব সময় তার ভালোবাসার মানুষের মাঝে বাবার ছায়া খোজে । সে যেমন ছোট বেলা থেকে দেখে আসে তার বাবা কেমন করে তাকে আগলে রাখছে, তার জন্য কাজ করছে তার ইচ্ছে পূরণ করছে । এই গুন গুলো সে তার ভালোবাসার মানুষের মধ্যে খুজতে শুরু করে ।
আমি চুপচাপ হাটতে শুরু করলাম ওর পাশা পাশি । শশী বলল, মনে আছে আপনি যখন সাইকেল কিনলেন । এই বছর দুয়েক আগে ।
-হ্যা ।
-আমি খুব ভাল করেই জানি আপনি মোটেও নিজের জন্য সাইকেলটা কিনেন নি । কিনেছিলেন অনিকের জন্য । ওর সব বন্ধুরা বিকেলে হলে সাইকেল নিয়ে পাশের মাঠে খেলা করে । আমি আমার ভাইকে দেখতাম মাঠে সেই সাইকেল গুলোর দিকে কেমন চোখে তাকিয়ে থাকতে । বুঝলেন এতো খারাপ লাগলো । এতো কান্না আসছো । কিন্তু কিছু করতে পারতাম না । কিছু করার ছিল না । তারপর একদিন দেখলাম আপনি ক্যাম্পাস থেকে ফেরার পথে মাঠের ধারে দাড়িয়ে দাড়িয়ে অনিককে দেখছেন । ঠিক তার দুইদিন পরে আপনি সাইকেল কিনলেন । বললেন এখন থেকে সাইকেল চালিয়ে পড়াতে যাবেন । পরদিনই অনিক সাইকেল নিয়ে মাঠে দৌড়াদৌড়ি করতে লাগলো । আপনি জানেন ঐদিন ওয়াশরুমে গিয়ে আমি কত সময় কেবল হাউমাউ করতে কেঁদে ছিলাম । কেন কেঁদেছিলাম সেটা আমি নিজেও জানি না । রাতে কতবার আপনার দরজার সামনে গিয়ে দাড়িয়েছি তার ঠিক নেই । কেবল মনে হচ্ছিলো আপনাকে ডাক দেই একবার জড়িয়ে ধরি ।
আমি শশীর দিকে তাকিয়ে দেখি ওর চোখে পানি । তবে সেটা সে মোটেই মোছায় চেষ্টা করছে না । আমার হাত ধরেই আছে সে ।
রিক্সা করে যখন ফিরে এলাম বাসায় তখন প্রায় নয়টা বেজে গেছে । শশী কোন কথা বলে নিজে ঘরে চলে গেল । আমি ঘরে এসে দেখি অনিক আমার পিসিতে বসে গেম খেলছে । আমার ঘরে অনিক সব সময়ই আসে । আমার কম্পিউটারে মানে তার কম্পিউটার । নিজের মত করে চালায় ।
রাতে কেন জানি আমার ঘুম আসছিলো না । শশীর কথাই ভাবছিলাম । শশী যে কথাটা আজকে বলল সেটা আমি অনেক দিন থেকেই জানি । প্রায়ই আমি বুঝতে পারি আমার ঘুরের সামনে কেউ এসে দাড়িয়েছে । চুপচাপ দাড়িয়ে রয়েছে । মাঝে মাঝে খুব মৃদু কান্নার আওয়াজ শুনতে পাই ।
আজকে রাত একটার দিকে আমার মোবাইলে একটা মেসেজ এসে হাজির । শশীর নম্বর থেকে ।
”একটু ছাদে আসবেন?”
আমি ছাদে গিয়ে হাজির হলাম । দেখলাম শশী একটা টিশার্ট পরে আছে । টিশার্ট টা চিনতে পারলাম । আসলে এটা আমার টিশার্ট । আমি ওর সামনে গিয়ে দাড়াতেই শশী কোন কথা বলে আমাকে জড়িয়ে ধরলো । শক্ত ভাবে আমাকে জড়িয়ে ধরেই রইলো । তারপরই অনুভব করলাম মেয়েটা কাঁদছে । আমি ওর মাথায় হাত রাখলাম কেবল । কিছু বললাম না । কিছু বলার দরকার পড়লো না ।
একেবারে ভোর পর্যন্ত ছাদেই রইলাম দুজন । শশী তারপর নেমে গেল নিচে । আমি আরও কিছু সময় ছাদে রইলাম ।
এরপরের গল্প অন্য রকম । শশী প্রথম বর্ষ থেকে কোচিংয়ে ক্লাস নিতে শুরু করলো । সেই সাথে আমি নিজেও টিউশনী যোগার করে দিলাম ওকে । দেখতে দেখতে ওদের আর্থিক সমস্যাটা একটু কমে এল । আমার পড়াশুনা শেষ হল । আমি একটা চাকরিতে ঢুকে গেলাম । শশী তখন থার্ড ইয়ারে । শশী ততদিনে আমাদের সম্পর্কের ব্যাপারে আর রাখঢাক করে না কিছু । আগে ওর মায়ের সামনে আমাকে আপনি করে বলতো । তারপর সেটাও বাদ হয়ে গেল । আমাকে তুমি করেই ডাকা শুরু করলো সবার সামনে । অবশ্য ওর মায়ের কোন আপত্তি ছিল না ।
তবে একদিনের ঘটনা উল্লেখ না করলেই না । সেদিন শশীর বড় মামা এসেছে বাড়িতে । শশীর মেডিকেলে চান্স পাওয়ার পর থেকে ওর আত্মীয় স্বজনেরা টুকটাক যোগাযোগ করা শুরু করেছিলো । এতোদিন যারা একদম খোজ খবর নেয় তারাও খোজ নেওয়া শুর করেছিলো । কারণটা বুঝতে খুব একটা কষ্ট হওয়ার কথা না ।
শশীর বড় মামা এসেছে তার ছেলের সাথে শশীর বিয়ের কথা বার্তা বলছে । আমি এ ঘর থেকেই শুনতে পাচ্ছি সব । বড় মামার কথাটা নিজেদের মেয়ে । তাই কোন দাবিদাওয়া নেই তাদের ।
হঠাৎ আমার দরজায় ধাক্কা পড়লো । আমি দরজা খুলে দেখি শশী দাড়িয়ে । ওর মুখে রাগে লাল হয়ে গেছে । আমাকে কিছু না বলে আমার হাত ধরলো । তারপর এক প্রকার টানতে টানতেই নিয়ে গেল ড্রয়িং রুমে । সেখানে শশীর মামা আর মা বসে রয়েছে । আমার হাত ধরে দেখে বড় মামা একটু কেমন চোখে তাকালো । আমাকে অবাক করে দিয়ে শশী তার মামাকে বলল, মামা আমার বিয়ের জন্য আপনাকে চিন্তা করতে হবে না । এতোদিন যেমন আমাদের কোন কিছু নিয়ে আপনি চিন্তা করেন নি তাই বিয়ে নিয়ে চিন্তা না করলেই চলবে । তবুও যখন চিন্তা করছেনই তখন আপনাকে বলি, এই যে এই ছেলেটাকে দেখছেন একে আমি গত বছর বিয়ে করেছি । বুঝতে পেরেছেন কি?
আমি অবাক হয়ে একবার শশীর দিকে আরেকবার শশীর মায়ের দিকে তাকালাম । শশী আমার দিকে তাকিয়ে বলল, যাও উনি তোমার মামা শ্বশুর । মামা শ্বশুরকে সালাম করে এসো ।
আমি ততক্ষণে একটু সামলে নিয়েছি । তারপরেও শশী যে এমন কিছু করবে সেটা আমি নিজেও ভাবতে পারি নি । আন্টিও সম্ভবত ভাবতে পারেন নি । তবে সে কোন কথা বলল না । কোন প্রতিবাদ করলো না ।
আমি বিনাবাক্য বেয়ে সামনে এগোলাম . এমন মামা কে সামাল করলাম ।
পেছনে থেকে শশী বলল, মামা জামাই প্রথমবার আপনাকে সালাম করলো । তাকে উপহার দিবেন না ? উপ হার না দিলে তখন আামর শ্বশুর বাড়িতে কথা উঠবে । ভাববে কি খচ্চর আর কঞ্জুস পরিবার আমার ! দিন দিন উপহার দিন !
শশীর মামাও সম্ভবত একটা শক খেয়েছিলো । সে দেখলা নিজের মানি ব্যাগ বের করে আমাকে দুই হাজার টাকা দিল । আমি সেটা নিয়ে আবার নিজের ঘরে চলে এলাম । শশী এল আমার পেছন পেছন । আমি ঘরে ঢুকে সেই হাসতে শুরু করলাম । তাকিয়ে দেখি শশী তখনও রাগে লাল হয়ে আছে ।
মামা বিকেল বেলাতেই চলে গেল । বিকেল বেলা শশী মাও আমার ঘরে এসে সে হাসি । বলল যে শশী একেবারে ওর বাবার মত হয়েছে । হাসি থামিয়ে আমি বললাম, আন্টি শশীর কথা আমি বাসায় বলেছি । মায়ের সাথে শশী কথাও বলেছে । আমি সত্যিই ওকে বিয়ে করতে চাই ।
আন্টি বললেন, শশী যদি তোমাকে বিয়ে করতে চায় তাহলে আমি চাইলেও বাঁধা দিতে পারবো না । এতো দিনে নিশ্চয় বুঝতে পেরেছো ও কী পরিমান জেদি । কেবল তোমার সাথে জেদ দেখায় না ও !
শশীর পড়াশুনা শেষ করার আগেই আমাদের বিয়ে হয়ে যায় । তবে ছোট খাটো ভাবে । ঠিক হয় যে শশী ডাক্তার হয়ে গেলে তারপর ধুমধাম করে বিয়ের অনুষ্ঠান হবে ।
Discover more from অপু তানভীর
Subscribe to get the latest posts sent to your email.