শশীর গল্প

4.8
(80)

সন্ধ্যা বেলা যেদিন আমার টিউশনী থাকে না সেদিনটা সাধারনত আমি ঘরে শুয়ে বসেই কাটাই । ল্যাপটপে কাজ করি নয়তো বই পড়ি । আজকেও বিছানাতে শুয়ে শুয়ে বই পড়ছিলাম । এমন সময়ে দরজাতে টোকা পড়লো । আমি উঠে বললাম, আন্টি ভেতরে আসুন । দরজা খোলা রয়েছে ।

আমি জানতাম আন্টি এসেছে । অনিক আসার সময় এতো টোকা ফোটা দেয় না । আমার ঘরে সে এমনিতেই ঢুকে পড়ে । আর অন্য দিকে শশী কখনও আমার ঘরে ঢোকে না ।

আন্টির মুখটা আজকে বেশ হাস্যজ্জ্বল । অনেক দিন আজকে এই পরিবারে একটা খুশীর কারণ ঘটেছে । এদেরকে আমি এই কবছরে খুব কাছ থেকে দেখেছি । এদের কষ্টের ব্যাপারটাও আমি খুব ভাল করেই জানি । তাই আন্টির মুখে হাসি দেখে ভাল লাগছে । আমি বিছানায় বসতে বসতে বললাম, আসুন আন্টি । বলুন !
আন্টি একটু হেসে বলল, দেখেছো পাগলি মেয়েটা ঘরে বিছানাতে মুখ ডুবিয়ে কাঁদছে ।
আমি বললাম, সেকি !! কাঁদবে কেন ? চান্স না পেলে না কাঁদবে । একে তো চান্স পেয়েছে তার উপরে ডিএমসিতে । ওর তো খুশিতে লাফানো উচিৎ ।
-আমিও তাই বলছি কিন্তু বোকা মেয়েটা সেই কখন থেকে কাঁদছে ।
আমি বললাম, ঠিক ওকে রেডি হতে বলেন । বলেন যে আজকে ওকে অনিককে আইসক্রিম খেতে নিয়ে যাবো । জলদি বলেন ।
-আমিও সেটাই বলছিলাম । তোমার কথা শুনবে ।
-ওকে তৈরি হতে বলেন । আমি রেডি হচ্ছি !

আন্টি একটু হেসে ঘর থেকে বের হয়ে গেল ।

সম্পর্কে শশীরা আমার কোন আত্মীয় হয় না । আমি ওদের বাসায় থাকি পেয়িংগেস্ট হিসাবে । আজকে প্রায় চার বছর আমি এখানই আছি । আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রায় পুরোটা সময়ই আমি এখানে রয়েছে । মেস কিংবা হলের কোলাহল আমার কোন কালেই পছন্দ ছিল না । ঢাকাতে আসার পর কিছু দিন আমি মেসে ছিলাম বটে কিন্তু সেখানে আমার মন টেকে নি একদম । তারপরই এই বাসাটার খোজ পেয়ে গেলাম । প্রথমে যদিও কেবল থাকার কথা বলেই উঠেছিলাম । পরে খাওয়াটাও শশীদের সাথেই যুক্ত করে নিয়েছি ।

শশী আর অনিক বেশ কষ্ট করেই মানুষ হচ্ছে । ওদের বাবা নেই । মারা গেছেন । মারা যাওয়ার সময়ে তেমন কিছুই ছেলে মেয়েদের জন্য রেখে যেতে পারেন নি । কেবল এই ফ্লাটটা কিনে রেখেছিলেন । সেটা ধরেই আঁকড়ে রয়েছে এই পরিবারটি । এবং সত্যি বলতে কি এরপর আমি এখানে আসার পরে এদের জন্য একটু ভাল হয়েছে । আমাকে ঘর ভাড়া দিয়েছে । পরে এক সময়ে দেখলাম আমি যে টাকা দিয়ে খাওয়া দাওয়া করি সেটা যদি আন্টিকে দেই তাহলে এটা আন্টির জন্য ভাল হবে । আন্টিদের ভেতরে খাওয়া দাওয়া করায় আরেকটা সুবিধা হয়েছে যে আমি এখন চাইলেই বাজার করতে পারি । আন্টি মানা করেন না ।

যদিও আমি এখনও ছাত্র তবে আমার টাকা পয়সা বেশ ভালই আয় হয় । একে তো বাসা থেকে কিছু টাকা আসে অন্য দিকে আমি টিউশনী করে । সেখান থেকে ভাল টাকাই আসে মাস শেষে । আমার খুব একটা সমস্যা হয় না ।

শশী আধা ঘন্টা পরে বের হল । ওর চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝলাম ও আসলেই একটু কান্নাকাটি করেছে । আমি ওর দিকে তাকিয়ে বলল, তুমি দেখছি আচ্ছা বোকা মেয়ে ! জানো আমাদের এক বান্ধবী মেডিক্যালে চান্স না পেয়ে সুইসাইড করতে গিয়েছিলো । আর তুমি এতো ভাল জায়গাতে চান্স পেয়ে কাঁদছো ?

শশী কোন কথা না বলে মাথা নিচু করলো । তারপর ওর দিকে আমি ভাল করে খেয়াল করলাম । আজকে মেয়েটাকে বেশ সুন্দর লাগছে । শশী খুব একটা সাজে না কখনই । এমনকি লিসস্টিক পর্যন্ত দেয় না । আজকে দেখলাম দিয়েছে । গোলাপী রংয়ের একটা কামিজের সাথে গোলাপি লেগিংস পরেছে । হাতে চুড়ি পরেছে অনেক গুলো । সত্যিই চমৎকার লাগছে ওকে । আমি ওর দিকে কিছু সময়ে তাকিয়ে থেকে বললাম, অনিক কোথায় ?
শশী বলল, ওর পড়া আছে । স্যারের কাছে যাবে পড়তে ।
-আচ্ছা চল তাহলে আজকে কেবল তোমার ট্রিট !

শশীকে নিয়ে রিক্সাতে উঠলাম । শশী অন্য দিকে তাকিয়ে ছিল । আমি এটা ওটা নিয়ে কথা বলছিলাম । হঠাৎ শশী আমার দিকে তাকালো । তারপর বলল, আইরিন আপুর সাথে আপনার ব্রেকআপ হয়ে গেছে । তাই না ?
আমি থেমে গেলাম কিছু সময় । তারপর বলল, তোমাকে কে বলল শুনি?
-হয়েছে কিনা বলেন ?
-হ্যা ।
-আমার জন্য !
-তোমার জন্য কেন হবে ! আসলে ও এমনই । ব্রেকাপের একটা কারণ খুজছিলো । সেটা পেয়েছে ।
-আমিই তো কারণ । তাই না ?
-না তুমি না । কোন ভাবেই না ।
-আমি জানি । আমাদের ছেলে গেলে আপনার সম্পর্ক টিকতো ।

আমি জোরে করে হেসে ফেললাম । বললাম , শুনো তোমাদের এখানে আমি যত শান্তিতে আছি এক মাত্র নিজের বাড়ি ছাড়া আর কোথায় যাবো না । ঢাকা শহরে এতো আরামে থাকার উপায় নেই বুঝেছো ।
-এমনি এমনি তো থাকছেন না । আমার তো মনে হয় বেশি টাকা দিয়ে থাকছেন ।
-মোটেই তেমন না । শুনো আমি যদি হোস্টেলে কিংবা মেসে থাকতাম হয়তো এখানে থেকে কিছু টাকা কম খচর হত কিন্তু এখানের মত শান্তি কোথাও পেতাম না । বুঝেছো !
-আইরিন আপু মনে করে আপনি আমাদের উপর করুণা করছেন । তাই এখানে আছেন !
-আমরা এটা নিয়ে কথা বলেছি । বলি নি ?

শশী কোন উত্তর না দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো একভাবে । আমি বেশি সময় শশীর চোখে দিকে তাকিয়ে থাকতে পারলাম না । আইরিন আসলে ঠিকই ছিল । শশী মেয়েটা আমাকে ভালোবাসে । সেটা আমি যেমন বুঝতে পেরেছিলাম ঠিক তেমনি আইরিনও বুঝতে পেরেছিলো ভাল ভাবেই । এই কারণেই শশীকে সে একদম পছন্দ করতো না । আমরা একই বাসায় থাকি এই টাও তার পছন্দ ছিল না । তার কেবলই সন্দেহ হত আমি হয়তো কিছু করছি ওর সাথে । আমাকে বারবার বলতো এই বাসা ছেড়ে দিতে অন্য কোথাও উঠছে । আমি সেটা মোটেও চাইছিলাম না । একে তো এখানে এতো শান্তিতে আছি অন্য দিকে আমি যদি এখন থেকে হুট করে চলে যাই তাহলে শশীরা আসলেই একটু বিপদে পড়ে যাবে । আবার কে না কে আসবে আর সে আমার মত এভাবে তার প্রতি আচরন করবে কিনা সেটা আমার জানা ছিল না । নিজের ভেতর থেকেই আমি শশীদের পরিবারের জন্য একটা দায়িত্ব অনুভব করতাম । কেন করতাম সেটা আমি জানি না নিজেও ।

লেক পাড়ে বসে গল্প করলাম বেশ কিছু সন্ধ্যা পেড়িয়ে রাত হয়ে গে । শশী ওর ছোট বেলার কথা বলছিলো । আমার শুনতে ভালই লাগছিলো । হঠাৎ শশী একটা অদ্ভুত কাজ করলো । আমার হাত ধরলো । এমন ভাবে ধরলো যেভাবে প্রেমিক প্রেমিকারা হাত ধরে গল্প করে । ব্যাপারটা আমি প্রথমে ঠিক বুঝতে পারলাম না । এমন কাজ শশী কোন দিন করে নি । আজকে হঠাৎ করলো কেন ?
তারপরেই দেখতে পেলাম আইরিন কে । অন্য একটা ছেলের সাথে গল্প করতে করতে এগিয়ে আসছে । আমাকে দেখতে পেল । তারপর শশীর ধরা হাতটাও । দেখলাম ওর মুখের ভাবটা বদলে গেল সাথে সাথেই ।
শশী আমার সাথে এমন ভাবে কথা বলতে লাগলো যেন সত্যিই আমি ওর প্রেমিক । ব্যাপারটা বুঝতে পারলাম আমি বেশ ভাল ভাবেই । দেখলাম আইরিন দ্রুত পায়ে হেটে আমাদের পার হয়ে গেল । চোখের আড়াল যেতেই শশী হাসতে শুরু করলো ।
আমি শশীর দিকে তাকিয়ে বললাম, তুমি দেখি আসলেই দুষ্ট আছো !
-আজকে বুঝলেন আপনার প্রাক্তন প্রেমিকার রাতে আর ঘুম আসবে না ।
আমিও জানি কথাটা । আসলেই ওর ঘুম আসবে না । আইরিন বেশ ঈর্ষা প্রবন একটা মেয়ে ।

আবার যখন ফিরতি পথ ধরলাম শশী বলল, আপনার হাতটা একটু ধরবো?
-ধর !
-জানেন একটা মেয়ের প্রথম প্রেম কে হয় ? তার বাবা । প্রতিটি মেয়েই তার বাবাকে সত্যিই কারের ভালো বাসে । সব সময় তার ভালোবাসার মানুষের মাঝে বাবার ছায়া খোজে । সে যেমন ছোট বেলা থেকে দেখে আসে তার বাবা কেমন করে তাকে আগলে রাখছে, তার জন্য কাজ করছে তার ইচ্ছে পূরণ করছে । এই গুন গুলো সে তার ভালোবাসার মানুষের মধ্যে খুজতে শুরু করে ।

আমি চুপচাপ হাটতে শুরু করলাম ওর পাশা পাশি । শশী বলল, মনে আছে আপনি যখন সাইকেল কিনলেন । এই বছর দুয়েক আগে ।
-হ্যা ।
-আমি খুব ভাল করেই জানি আপনি মোটেও নিজের জন্য সাইকেলটা কিনেন নি । কিনেছিলেন অনিকের জন্য । ওর সব বন্ধুরা বিকেলে হলে সাইকেল নিয়ে পাশের মাঠে খেলা করে । আমি আমার ভাইকে দেখতাম মাঠে সেই সাইকেল গুলোর দিকে কেমন চোখে তাকিয়ে থাকতে । বুঝলেন এতো খারাপ লাগলো । এতো কান্না আসছো । কিন্তু কিছু করতে পারতাম না । কিছু করার ছিল না । তারপর একদিন দেখলাম আপনি ক্যাম্পাস থেকে ফেরার পথে মাঠের ধারে দাড়িয়ে দাড়িয়ে অনিককে দেখছেন । ঠিক তার দুইদিন পরে আপনি সাইকেল কিনলেন । বললেন এখন থেকে সাইকেল চালিয়ে পড়াতে যাবেন । পরদিনই অনিক সাইকেল নিয়ে মাঠে দৌড়াদৌড়ি করতে লাগলো । আপনি জানেন ঐদিন ওয়াশরুমে গিয়ে আমি কত সময় কেবল হাউমাউ করতে কেঁদে ছিলাম । কেন কেঁদেছিলাম সেটা আমি নিজেও জানি না । রাতে কতবার আপনার দরজার সামনে গিয়ে দাড়িয়েছি তার ঠিক নেই । কেবল মনে হচ্ছিলো আপনাকে ডাক দেই একবার জড়িয়ে ধরি ।

আমি শশীর দিকে তাকিয়ে দেখি ওর চোখে পানি । তবে সেটা সে মোটেই মোছায় চেষ্টা করছে না । আমার হাত ধরেই আছে সে ।

রিক্সা করে যখন ফিরে এলাম বাসায় তখন প্রায় নয়টা বেজে গেছে । শশী কোন কথা বলে নিজে ঘরে চলে গেল । আমি ঘরে এসে দেখি অনিক আমার পিসিতে বসে গেম খেলছে । আমার ঘরে অনিক সব সময়ই আসে । আমার কম্পিউটারে মানে তার কম্পিউটার । নিজের মত করে চালায় ।

রাতে কেন জানি আমার ঘুম আসছিলো না । শশীর কথাই ভাবছিলাম । শশী যে কথাটা আজকে বলল সেটা আমি অনেক দিন থেকেই জানি । প্রায়ই আমি বুঝতে পারি আমার ঘুরের সামনে কেউ এসে দাড়িয়েছে । চুপচাপ দাড়িয়ে রয়েছে । মাঝে মাঝে খুব মৃদু কান্নার আওয়াজ শুনতে পাই ।

আজকে রাত একটার দিকে আমার মোবাইলে একটা মেসেজ এসে হাজির । শশীর নম্বর থেকে ।

”একটু ছাদে আসবেন?”

আমি ছাদে গিয়ে হাজির হলাম । দেখলাম শশী একটা টিশার্ট পরে আছে । টিশার্ট টা চিনতে পারলাম । আসলে এটা আমার টিশার্ট । আমি ওর সামনে গিয়ে দাড়াতেই শশী কোন কথা বলে আমাকে জড়িয়ে ধরলো । শক্ত ভাবে আমাকে জড়িয়ে ধরেই রইলো । তারপরই অনুভব করলাম মেয়েটা কাঁদছে । আমি ওর মাথায় হাত রাখলাম কেবল । কিছু বললাম না । কিছু বলার দরকার পড়লো না ।

একেবারে ভোর পর্যন্ত ছাদেই রইলাম দুজন । শশী তারপর নেমে গেল নিচে । আমি আরও কিছু সময় ছাদে রইলাম ।

এরপরের গল্প অন্য রকম । শশী প্রথম বর্ষ থেকে কোচিংয়ে ক্লাস নিতে শুরু করলো । সেই সাথে আমি নিজেও টিউশনী যোগার করে দিলাম ওকে । দেখতে দেখতে ওদের আর্থিক সমস্যাটা একটু কমে এল । আমার পড়াশুনা শেষ হল । আমি একটা চাকরিতে ঢুকে গেলাম । শশী তখন থার্ড ইয়ারে । শশী ততদিনে আমাদের সম্পর্কের ব্যাপারে আর রাখঢাক করে না কিছু । আগে ওর মায়ের সামনে আমাকে আপনি করে বলতো । তারপর সেটাও বাদ হয়ে গেল । আমাকে তুমি করেই ডাকা শুরু করলো সবার সামনে । অবশ্য ওর মায়ের কোন আপত্তি ছিল না ।

তবে একদিনের ঘটনা উল্লেখ না করলেই না । সেদিন শশীর বড় মামা এসেছে বাড়িতে । শশীর মেডিকেলে চান্স পাওয়ার পর থেকে ওর আত্মীয় স্বজনেরা টুকটাক যোগাযোগ করা শুরু করেছিলো । এতোদিন যারা একদম খোজ খবর নেয় তারাও খোজ নেওয়া শুর করেছিলো । কারণটা বুঝতে খুব একটা কষ্ট হওয়ার কথা না ।

শশীর বড় মামা এসেছে তার ছেলের সাথে শশীর বিয়ের কথা বার্তা বলছে । আমি এ ঘর থেকেই শুনতে পাচ্ছি সব । বড় মামার কথাটা নিজেদের মেয়ে । তাই কোন দাবিদাওয়া নেই তাদের ।
হঠাৎ আমার দরজায় ধাক্কা পড়লো । আমি দরজা খুলে দেখি শশী দাড়িয়ে । ওর মুখে রাগে লাল হয়ে গেছে । আমাকে কিছু না বলে আমার হাত ধরলো । তারপর এক প্রকার টানতে টানতেই নিয়ে গেল ড্রয়িং রুমে । সেখানে শশীর মামা আর মা বসে রয়েছে । আমার হাত ধরে দেখে বড় মামা একটু কেমন চোখে তাকালো । আমাকে অবাক করে দিয়ে শশী তার মামাকে বলল, মামা আমার বিয়ের জন্য আপনাকে চিন্তা করতে হবে না । এতোদিন যেমন আমাদের কোন কিছু নিয়ে আপনি চিন্তা করেন নি তাই বিয়ে নিয়ে চিন্তা না করলেই চলবে । তবুও যখন চিন্তা করছেনই তখন আপনাকে বলি, এই যে এই ছেলেটাকে দেখছেন একে আমি গত বছর বিয়ে করেছি । বুঝতে পেরেছেন কি?

আমি অবাক হয়ে একবার শশীর দিকে আরেকবার শশীর মায়ের দিকে তাকালাম । শশী আমার দিকে তাকিয়ে বলল, যাও উনি তোমার মামা শ্বশুর । মামা শ্বশুরকে সালাম করে এসো ।
আমি ততক্ষণে একটু সামলে নিয়েছি । তারপরেও শশী যে এমন কিছু করবে সেটা আমি নিজেও ভাবতে পারি নি । আন্টিও সম্ভবত ভাবতে পারেন নি । তবে সে কোন কথা বলল না । কোন প্রতিবাদ করলো না ।
আমি বিনাবাক্য বেয়ে সামনে এগোলাম . এমন মামা কে সামাল করলাম ।
পেছনে থেকে শশী বলল, মামা জামাই প্রথমবার আপনাকে সালাম করলো । তাকে উপহার দিবেন না ? উপ হার না দিলে তখন আামর শ্বশুর বাড়িতে কথা উঠবে । ভাববে কি খচ্চর আর কঞ্জুস পরিবার আমার ! দিন দিন উপহার দিন !

শশীর মামাও সম্ভবত একটা শক খেয়েছিলো । সে দেখলা নিজের মানি ব্যাগ বের করে আমাকে দুই হাজার টাকা দিল । আমি সেটা নিয়ে আবার নিজের ঘরে চলে এলাম । শশী এল আমার পেছন পেছন । আমি ঘরে ঢুকে সেই হাসতে শুরু করলাম । তাকিয়ে দেখি শশী তখনও রাগে লাল হয়ে আছে ।
মামা বিকেল বেলাতেই চলে গেল । বিকেল বেলা শশী মাও আমার ঘরে এসে সে হাসি । বলল যে শশী একেবারে ওর বাবার মত হয়েছে । হাসি থামিয়ে আমি বললাম, আন্টি শশীর কথা আমি বাসায় বলেছি । মায়ের সাথে শশী কথাও বলেছে । আমি সত্যিই ওকে বিয়ে করতে চাই ।
আন্টি বললেন, শশী যদি তোমাকে বিয়ে করতে চায় তাহলে আমি চাইলেও বাঁধা দিতে পারবো না । এতো দিনে নিশ্চয় বুঝতে পেরেছো ও কী পরিমান জেদি । কেবল তোমার সাথে জেদ দেখায় না ও !

শশীর পড়াশুনা শেষ করার আগেই আমাদের বিয়ে হয়ে যায় । তবে ছোট খাটো ভাবে । ঠিক হয় যে শশী ডাক্তার হয়ে গেলে তারপর ধুমধাম করে বিয়ের অনুষ্ঠান হবে ।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 4.8 / 5. Vote count: 80

No votes so far! Be the first to rate this post.


Discover more from অপু তানভীর

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

About অপু তানভীর

আমি অতি ভাল একজন ছেলে।

View all posts by অপু তানভীর →