আসফিমার গল্প

অপু তানভীর
4.9
(71)

আসফিমার এতো কান্না আসছে সেটা সে নিজেই বলে বোঝাতে পারবে না । বারবার নিজের পরিবারের উপরে রাগ হচ্ছে । আচ্ছা ভাল চাকরি করে বলেই কি নিজের সত্ত্বা বিক্রি করে দিয়ে তার সামনে দাড়াতে হবে ! নিজেকে ভেঙ্গে চুড়ে সেই মানুষটার মনের মত হতে হবে ? এদেশের বাবা মায়েরা কি কোন দিন এই ব্যাপারটা বুঝতে পারবে না?

আসফিমা মাথা নিচু করে বসে রয়েছে । মাথা তুললেই সামনের মানুষটা ওর চোখের ভাষা পড়ে ফেলতে পারে । তখন হয়তো ওর পক্ষে চোখের পানি আটকানো কষ্টকর হয়ে যাবে ।
সামনে বসে থাকা মানুষটা বলল, আপনি এমন অস্বস্তি নিয়ে বসে আছেন কেন ?
আসফিমা কিছু বলতে গেল কিন্তু কথা বের হল না । এতো অস্বাভাবিক কেন লাগছে ! কেন ?
কোন মতে বলতে গেল, আসলে …..
-আসলে?
এবার আসফিমা চোখ তুলে তাকালো । শেষ কবে নিজের হিসাব ছাড়া সে বাইরে বের হয়েছে সেটা তার মনেও নেও । কিন্তু আজকে বের হতে হয়েছে তাও তার পরিবারের কথায় । সামনের ছেলেটার সাথে তার বিয়ের কথা বার্তা চলছে । তার সাথেই আজকে দেখা করতে এসেছে । মেয়ের বাবা মায়ের কাছে পাত্র হিসাবে সামনে বসা রাশেদুল হাসান নামের ছেলেটা একেবারে পার্ফেক্ট একজন মানুষ। দেখতে সুদর্শন, ভাল সম্রান্ত বংশের ছেলে, এলাকাতে তাদের প্রভাব প্রতিপত্তি আছে বেশ । সব থেকে বড় কথা ছেলেটা সরকারি চাকরি করে । গত বছর বিসিএস ক্যাডার হয়েছে । ফরেন ক্যাডার । প্রথম পোস্টিংই হয়েছে ইুরোপের একটা দেশে । আসফিমা দেশটার নাম মনে করতে পারলো না । এবার দেশে এসেছে বিয়ে করতে । বউ নিয়ে চলে যাবে । এর থেকে ভাল পাত্র এই দেশে কোন ভাবেই পাওয়া সম্ভব না ।

আসফিমার এক মামা এই খোজ নিয়ে এসেছে । বিয়ের কথা বার্তা চলছে কিন্তু পাত্র আগে মেয়ের সাথে দেখা করতে চেয়েছে । আগে দুজনের কথা বলে ভাল লাগলেই কথা বার্তা সামনে এগোবে । এবং পাত্রের ইচ্ছে দেখা করার সময় পরিবারের কোন বড়রা থাকবে না ক্যাজুয়াল ভাবে কথা বার্তা হবে । তারপর পরেরটা পরে ।
আসফিমা শুনেছে ছেলের নাকি কাউকেই পছ্দ হচ্ছে না । এমনটাই স্বাভাবিক । এমন যা যোগ্যতা তার কি আর যেন তেন কাউকে পছন্দ হয় । তাই আফসিমার বাবা মায়ের জোর চেষ্টা যে তাদের মেয়েকে যেন ছেলেটার পছন্দ হয়ই । সব খোজ খবর নিয়ে নেওয়া হয়েছে । বিশেষ করে ছেলে কি পছন্দ করে না করে । কি ব্যাপার নিয়ে কথা বলতে হবে এই সব । আসফিমাকে সেই হিসাবেই তালিম দেওয়া হয়েছে । বিশেষ করে ছেলে নাকি গল্পের বই পড়তে পছন্দ করে । ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্র ছিল সে । আসফিমাকে বেশ কিছু বিখ্যাত বইয়ের সারমর্ম পড়তে হয়েছে । মুখস্ত করে নিতে হয়েছে যাতে করে এই ব্যাপারে সে কথা বলতে পারে । ছেলেকে বোঝাতে পারে যে সেও এসব পড়ে । ছেলে নাকি ইংরেজি গানেরও ভক্ত । তাই এই কদিনে আসফিামকে সেই ব্যাপারে জ্ঞান অর্জন করতে হয়েছে । যে কোন ভাবেই রাশেদুল হাসান নামের এই পাত্রকে ইম্রেস করতেই হবে । সব থেকে ভয়ংকর যে কাজটা আসফিমাকে করতে হয়েছে সেটা হচ্ছে আজকে ওকে হিজাব পরে আসতে দেওয়া হয় নি । স্কুল থেকেই আসফিমা সব সময় হিজাব পরেই বাইরে বের হয় । তার ছোট মামা খোজ এনেছে যে ছেলে খুবই আধুনিক মনা। হিজাব টিজাব তার পছন্দ না । আসফিমা কিছুতেই তার পরিবারকে বোঝাতে পারে নি যে আধুনিক হওয়ার সাথে হিসাব পরা না পরার কোন সম্পর্ক নেই । যে কুপমান্ডুক সে বিকিনিতেও কুপমান্ডুক আর যে আধুনিক সে হিজাবেও আধুনিক । কিন্তু তারা বুঝতে চায় নি । তাদের এক কথা । এই ছেলে কোন ভাবেই হাত ছাড়া করা যাবে না ।

রাশেদ আবার জিজ্ঞেস করলো, আপনি কোন কারণে নার্ভাস?
আসফিমা জোরে একটা দম নিলো । তারপর বলল, আসলে ছোট থেকেই হিজাব পরে বাইরে বের হই । আজকে বের হই নি তাই অস্বস্তি লাগছে ।
-আজকে কেন বের হননি?

আসফিমা কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারলো না । অনুভব করলো ওর চোখে পানি জমতে শুরু করেছে । এখন সে রাশেদকে কি বলবে? বলবে যে আপনাকে ইম্প্রেস করার জন্য এমন ভাবে বের হয়েছি! এর থেকে লজ্জার আর কি হতে পারে ? আসফিমার কিছু বলতে হল না । রাশেদ বুদ্ধিমান ছেলে । সে ঠিকই ধরে ফেলল । বলল, আপনাদের ধারনা হয়েছে যে আমি যেহেতু বাইরে থাকি আমার হয়তো হিজাব পছন্দ না । তাই ….।
রাশেদ কথাটা শেষ করলো না । আসফিমার মাটির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছে করলো একেবারে । ইচ্ছে হল এখনই এখান থেকে দৌড়ে চলে যায় সে ।
রাশেদ খানিকটা বিরক্ত কন্ঠে বলল, আপনি অর্ডার দিন । আমি একটু আসছি ।

আসফিমা লক্ষ্য করলো রাশেদ রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে গেল । এবার সত্যিই সত্যিই চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে এল । বাবা আর মায়ের উপরে খুব রাগ হল । এমন ভাবে তাকে অন্যের সামনে পন্য না করে পাঠালেই হত ! এমন কেন করলো ! অবশ্য এই দেশে এমন ঘটনা অহরহ হয় । ভাল পাত্রের হাতে তুলে দিতে মেয়ের বাবা মায়েরা কি না করে !
টিস্যু দিয়ে চোখ মুখলো সে । সামলে নিয়েছে সে । এখন এখান থেকে চলে যেতে পারলে বাঁচে । এই ছেলের সাথে তার বিয়ে হবে সেটা বুঝে গিয়েছে । এবং মনে মনে খানিকটা খুশি হল । বিশেষ করে বাবা মায়ের একটা শিক্ষা হল । মিনিট দশেক পরেই রাশেদ ফিরে এল । ওর সামনে বসতে বসতে বলল, কি ব্যাপার অর্ডান দেন নি এখনও?
-না মানে ….
কথা বলতে গিয়ে থেমে গেল সে রাশেদ একটা প্যাকেট এগিয়ে দিল ওর দিকে । আসফিমার বুকের ভেতরে একটা ছোট খাটো ধাক্কা লাগলো । সে স্পষ্ট বুঝতে পারছে এটা । রাশেদ বলল, এখানেও পরে নিতে পারেন কিংবা ওয়াশরুমে গিয়েও পরে আসতে পারেন । আমি মোটেই চাই না আমার কারণে আপনি আপনার কম্ফোর্ট জোন থেকে বের হয়ে আসুন ।

আসফিমা প্যাকেট টা হাতে নিয়ে ওয়াশ রুমের দিকে দ্রুত হাটা দিল । ওখানেও হিজাব টা পেঁচিয়ে নেওয়া যেত তবে আসফিমা চায় না তার চোখের জল ছেলেটা দেখতে পাক ।
ওয়াশরুমে সে যখন হিজাবটা পরছিলো তখন কেবল অবাক হয়ে খেয়াল করলো ওর চোখ দিয়ে পানি বের হচ্ছে । এই পানি অস্বস্থির না, বরং কাউকে তীব্র ভাবে ভালো লাগার । এক ধাক্কাতে রাশেদ নামের এই ছেলেটাকে তার ভাল লেগে গেল ।

পরের সময় টুকু আসফিমার মনে হল এটা ওর জীবনের সব থেকে মধুর তম সময় । ছেলেটা টুকটাক গল্প করতে নিজের ক্যাম্পাস জীবনের কথা বলছে, আসফিমা নিজেও তাই । ওর কেবল মনে হল এই মানুষটার সাথে বুঝি আজীবন কথা বলা যাবে !

দুই
রাশেদ কে ঠিক ছুটিতে দেশে পাঠানো হয় নি । দেশে ওকে ছয় মাস থাকতে হবে । এখানকার পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের অধীনে ছয় মাসের একটা ট্রেনিং করে আবার নতুন কোথাও যেতে হবে । প্রতিদিন অফিস ঠিকই করতে হচ্ছে । সেই সাথে আরেকটা ঝামেলা শুরু হয়েছে পাত্রী দেখা । ভেবেছিলো আরও বছর দুয়েক পরে বিয়ে শাদী করবে । এখনও সেই রকমই প্লান । মায়ের এক কথা, এই বারই বিয়ে করতে হবে । নয়তো সে তার মুখ দেখবে না । রাশেদ শর্ত দিয়েছে আগে মেয়ে তার নিজের পছন্দ হতে হবে । পরে অন্য কিছু । একটার পর একটা পাত্রী দেখছে আর পছন্দ হচ্ছে বলে কাটিয়ে যাচ্ছে । এই ভাবে মাস ছয় পার দিতে পারলে এ যাত্রায় বেঁচে যায় সে ।
নিজের ডেস্কে কাজ করছিলো এমন সময় পিয়ন এসে বলল যে একজন নাকি তার সাথে দেখা করতে এসেছে? নাম বলেছে আযাদ আহমেদ ।
নামটা মনে করার চেষ্টা করলো রাশেদ কিন্তু মনে করতে পারলো না । গ্রাম থেকে কেউ এসেছে নাকি ? এই পোস্টে আছে শুনে অনেকেই আসে তকদীর নিয়ে । রাশেদের এসব ভাল লাগে না । তবে কিছু বলতেও পারে না । তার বাবা সারা জীবন মানুষহের উপকার করেছে । তারও উচিৎ সম্ভব হলে মানুষের জন্য যতটুকু করা । কিন্তু উপকারের নামে তো আর অনৈতিক কাজ করা যায় না । পিয়নকে বলে দিলো যেন ভেতরে পাঠিয়ে দেয় ।

আযাদ আহমেদ নামের মানুষটা ভেতরে ঢুকলো একটু পরেই । ওর দিকে হাত বাড়িয়ে দিল । চেহারা দেখে রাশেদ তাকে চিনতে পারলো না । আযাদ আহমেদ বসতে বসতে বলল, আমি আসফিমার বড় ভাই ।
এবার চিনতে পারলো তাকে । গত সপ্তাহে আসফিমা নামের মেয়েটার সাথে তার দেখা হয়েছে । দেখা বলতে বিয়ের দেখা । মেয়েটা বেশ চমৎকারই । তবে একটু যেন বেশিই সরল মনে হয়েছে ওর কাছে । রাশেদ ঠিক বুঝতে পারলো না তার বড় ভাই এখানে কেন এল । রাশেদ বলল, বলুন ভাইয়া ! কোন দরকারে এসেছেন কি?
আযাদ আহমেদ একটু যেন অস্বস্তি নিয়ে তাকালো রাশেদের দিকে । তারপর বলল, আসলে তোমাকে যে কি ভাবে বলবো নিজেই বুঝতে পাড়ছি না । আসফিমার ব্যাপারে কথা বলতে এসেছিলাম । নিজের বোন বলে আমি বলছি না, তবে আমার বোনটার মত লক্ষী মেয়ে আমি অন্য কোথাও দেখি নি । ছোট বেলা থেকে সে আমার কাছে কিংবা বাবার কাছে মুখ ফুটে কিছু চায় নি কোন দিন । আমরা যেটা ওর জন্য যেভাবে ঠিক করেছি চুপচাপ মেনে নিয়েছে । জীবনে প্রথমবারের মত গত কাল রাতে আমার কাছে বলেছে সে তোমাকে তার খুব পছন্দ হয়েছে । তোমাকে সে বিয়ে করতে চায় ।
আযাদ আহমেদ কিছুটা সময় থামলো । তারপর বলল, মিমু যদি আমার কাছে সব থেকে দামী কিছু চাইতো যেটা টাকা দিয়ে কেনা যায় তাহলে যে ভাবেই হোক ওটা আমি যোগার করে দিতাম কিন্তু এমন জিনিস চেয়েচে যা আমার হাতে নেই । আমি কেবল তোমাকে অনুরোধ করতে পারি । আমি এখনও জানি না যে তোমার মত কি ! তবে আরেকবার কি মিমুর কথা ভেবে দেখবে ! বউ হিসাবে সে তোমাকে কোন দিন হতাশ করবে না । তুমি যেমন চাইবে তেমন তোমার মন মত হবে সে ! এই টুকুই কেবল বলতে এসেছিলাম ।

আসফিমার ভাই আর বসলো না । চলে গেল । রাশেদ নিজের অফিসে চুপচাপ বসে রইলো । কী করবে সেটা নিজেই বুঝতে পারছে না ।

তিন
-হ্যালো !
-মিমু বলছেন?

আসফিমা নাম্বারটা আরেকবার দেখলো । মিমু ওর ডাক নাম হলেও খুব কাছের মানুষজন ছাড়া ওকে এই নামে কেউ ডাকে না । বাইরের প্রায় সবাই ওকে আসফিমা নামেই চেনে । অপরিচিত নাম্বারটা দেখে একটু অবাকই হল । বলল,
-হ্যা বলছি । আপনি কে?
-আমি আপনার বাসার সামনে এসেছি । দয়া করে একটু নিচে আসবেন?
-মানে? আপনি কে ? আমার বাসার সামনে এসে বলছেন নিচে নামতে? নামে কি ?
-আমার নাম রাশেদ । কদিন আগে আপনাকে একটা হিজাব দিয়েছিলাম না, ওটা আসলে আমার বৌয়ের জন্য কেন । সেটা ফেরৎ নিতে এসেছি ।

আসফিমার মনে হল যেন ওর দম বন্ধ হয়ে আসবে । রাশেদ ওর বাসার সামনে এসেছে । ওর সাথে দেখা করতে । আসফিমা কাউকে কিছু বলল না । রাত এগারোটার মত বাজে । ভাইয়া ভাবি নিজেদের ঘরে । বাবা মা টিভি দেখছে । দরজা দিয়ে বের হতে গেলে তাদের চোখে পড়বে । তখন যদি জিজ্ঞেস করে তাহলে কি বলবে?
রাশেদ এসেছে শুনলে তারা মানা করবে না । হয়তো তাকে উপরে নিয়ে আসতে বলবে । এটা আসফিমা চায় না । কেন চায় না সেটা সে নিজেও জানে না । মাথায় সেদিনের হিজাবটাই পেঁচিয়ে নিল । দরজা ড্রয়িং রুমে খুব স্বাভাবিক ভাবে বাবা মায়ের সামনে দিয়ে হেটে দরজার কাছে গেল । বাবা একবার ওর দিকে তাকিয়ে আবারও টিভি দেখায় মন দিল । কিছু জানতে চাইলো না ।
আসলে জানতে চাওয়ার কিছু নেই । তারা ভেবেই নিয়েছে যে আসফিমা হয় ছয় তলার নীলাদের বাসায় যাচ্ছে নয়তো ছাদে । এর বাইরে কোথাও যে যাবে না ।
আসফিমা পায়ে পায়ে সিড়ি দিয়ে নিচে নামতে শুরু করলো । কেবল অনুভব করলো যে ওর বুকের ভেতরটা কেমন যে কাঁপছে । দুরু করছে । গেট দিয়ে বের হতেই দেখতে পেল রাশেদ কে ।
রাশেদ এগিয়ে এসে আসফিমার দিকে তাকিয়ে বলল, এস।
-কোথায়?
-এতো তো!
এই বলে খুব স্বাভাবিক ভাবেই আসফিমার হাত ধরলো । তারপর রাস্তার ওপাশে নিয়ে গেল । একটা কালো রংয়ের প্রাইভেট কার দাড় করানো রয়েছে । সেটাতে ভেতরে উঠে বসলো । আসফিমা তখনও জানে না কোথায় যাচ্ছে ! তবে সে জানে রাশেদ যাই করুক তার আসলে বাঁধা দেওয়ার কোন ক্ষমতা নেই । ওর পুরো শরীরটা কেমন কাঁপছে । ভাল লাগার এক কাঁপন ।
ঘন্টা খানেক গাড়িতে করেই ঘুরে বেড়ালো এদিক ওদিক । তারপর আবারও আসফিমাকে বাসার কাছে নামিয়ে দিয়ে গেল । ওদের মাঝে খুব একটা কথাও হল না । কেবল দুজন চুাপচাপ বসে ছিল পাশাপাশি । গেট দিয়ে আসফিমা ভেতরে ঢুকতে যাবো তখনই রাশেদ ডাকলো ।
-মিমু
-বলুন।
-দাড়াও ।
এই বলে সে নিজেই আসফিমার কাছে এগিয়ে গেল । পকেট থেকে একটা আংটি বের করে নিজেই পরিয়ে দিল । বলল, ভেবেছিলাম সবার সামনে দেব তবে সিদ্ধান্ত বদলে ফেললাম । আজই এঙ্গেইজ করে রাখলাম ।
আসফিমা তখনও কেবল তাকিয়ে রয়েছে নিজের হাতের আংটিটার দিকে । ওর যে কি আনন্দ হচ্ছে সেটা ও কিছুতেই বলে বোঝাতে পারবে না ।
-আরেকটা কথা!
-কী?
-বাইরে সবার সামনে হিজাব পরে থাকো আমার তাতে কোন আপত্তি নেই । তুমি কী করবে সেটা একন্তই তোমার ব্যাপার । তবে?
-তবে ?
-তবে আমি যখন বাসায় থাকবো তখন এই সব পরা যাবে না । মাঝে মাঝে তো কিছুই পরতে দেব না ।
কথাটা শুনে আসফিমার কান গরম হয়ে গেল । পুরো চেহারাতে একটা লজ্জার আভা ফুটে উঠলো ।
-আপনি খুব অসভ্য !
-শোন যা বললাম মনে করে । এটা শর্ত ! বিয়ে আগে হোক তোমার মজা বুঝাবো ! রেডি থাকো ।

এই বলে রাশেদ গাড়ির দিকে ঘুরলো । পেছন থেকে আসফিমা বলল, শুনুন।
-বল।
-সাবধানে যাবেন । আর বাসায় পৌছে একটা টেক্সট করবেন ।
রাশেদ হাসলো । বলল, আচ্ছা !

আসফিমা যখন বাসায় ঢুকলো তখন ওর মন জুড়ে অন্য রকম একটা অনুভুতি খেলা করছে । সেই অনুভূতি ব্যখ্যা করার মত ভাষা ওর জানা নেই ।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 4.9 / 5. Vote count: 71

No votes so far! Be the first to rate this post.

About অপু তানভীর

আমি অতি ভাল একজন ছেলে।

View all posts by অপু তানভীর →

One Comment on “আসফিমার গল্প”

Comments are closed.