মিতিশা

অপু তানভীর
4.6
(25)

আমাদের মাঝে একটা দীর্ঘ নিরবতা বিরাজ করলো। কারো যেন কোন কথাই বলার ছিল না। কফির কাপের দিকে মিতিশার একভাবে তাকিয়ে থাকা দেখে আমার কেন জানি মিতিশার প্রতি একটা অচেনা মায়া জন্মালো। এই মায়াটা কেন জন্মালো আমি নিজেও জানি না। এই মেয়েটাকে আমি আজকের আগে দেখি নি। যদিও কয়েকবার কথা বার্তা হয়েছে, তবে সরাসরি আজকেই প্রথম দেখা। মেয়েটার চোখ অসম্ভব বিষন্ন। এই বিষন্নতার কারণ আমি কিছুটা জানি। আচ্ছা এই ব্যাপারটা কি আসলেই অনেক বড় কিছু? জীবনে বেঁচে থাকার জন্য সন্তান কি লাগেই? কেন লাগে?

আমি মিতিশার দিকে তাকিয়ে বললাম, আপনার কি মত নেই?

মিতিশা কফির কাপ থেকে চোখ তুলে আমার দিকে তাকাল। তারপর বলল, আপনার মত আছে? আমার মত একজনকে আপনি কেন বিয়ে করবেন? আপনি নিশ্চয়ই জানেন যে আমার আগের বিয়ের ডিভোর্স কেন হয়েছে? 

-জ্বী জানি। এই কারণেই বলছি। 

-মানে?

আমি মিতিশার চোখে কিছুটা বিস্ময় লক্ষ্য করলাম। সে আমার কাছে এই উত্তর সম্ভবত আশা করে নি। 

-আপনার বাবা আপনাকে কিছু বলে নি?

মিতিশার চেহারার ভাব দেখে আমি বুঝলাম যে তার বাবা আসলে তাকে কিছু বলে নি। আমি মিতিশার দিকে তাকিয়ে বললাম, এই যে আমি এতোদিন বিয়ে করি নি, এটার পেছনে কী কারণ থাকতে পারে বলে আপনার মনে হয়?

মিতিশা এখনও আগের মত আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি বললাম, আপনি যদি অন্য কিছু ভেবে থাকেন তবে সেটা সত্যি না। আমার এর আগে একজন প্রেমিকা ছিল। বুঝতেই পারছেন এটা দিয়ে আমি বোঝাতে চেয়েছি। তার সাথে পরে ঝামেলা শুরু হওয়ার পরে আমাদের ব্রেকআপ হয়ে যায়। 

আমি কিছু সময় চুপ করলাম। মিতিশা তখনও আমার দিকে একই ভাবে তাকিয়ে আছে। সে সম্ভবত এমন কিছ শোনার আশা করছে যা সে অন্য আর কারো কাছে শুনে নি। একটা ছেলে কেন বিয়ে করে নি? 

আমি একটা লম্বা দম বিয়ে বললাম, আই হেইট কিডস? পিচ্চি পোলাপাইন আমার দুই চোখে দেখতে ইচ্ছে করে না। 

মিতিশার চোখে এবার আরও বড় বড় হয়ে গেল। সম্ভবত এমন একটা কথা যে সে শুনবে সেটা ভাবতেও পারে নি। আমি বললাম, আমি একটা লম্বা সময় আমার বাবার বাসায় ছিলাম। আমাদের বড় পরিবার। আমার দুই ভাইও থাকে বাবার সাথেই। এছাড়া আমাদের চাচারা আমাদের পাশেই থাকে। সব মিলিয়ে বাসা এবং বাসার আশে পাশে বাচ্চাকাচ্চাদের জঙ্গল। আমার চোখের সামনে ওগুলো বড় হয়েছে। আসলে এতো প্যারা আমি নিতে পারব না। সত্যি পারব না। মূলত এই কারণেই আমি এই দিকে যায় নি। যাচ্ছি না। 

মিতিশা বলল, এভাবে জীবন যাবে? মানুষের একটা সঙ্গি সাথির তো দরকার?

-হ্যা সেটা দরকার। আমি অস্বিকার করছি না। আমার মাঝে মেঝে ইচ্ছে করে বটে। তবে যখন এই প্যারাগুলো দেখি তখন সেই ইচ্ছে আমার উবে যায়। আমি কোন ভাবেই এই প্যারা নিতে চাই না। 

এবার আমি মিতিশার চোখে একটা অন্য রকম ভাব দেখতে পেলাম। সে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, এই কারণে আমি আপনার জন্য যুতসই, তাই তো?

দেখুন, আপনি ব্যাপারটা অন্য ভাবে কেন নিচ্ছেন? বিয়ের ক্ষেত্রে আমার এমন কিছু চাহিদা আছে যা আপনার আছে, সত্যি বলতে কী সত্যি আপনার কাছেই আছে। আমি আগে যে কয়জনকে আমার মনের এই ইচ্ছের কথা বলেছি তারা সেদিনই আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। বুঝতেই পারছেন ব্যাপারটা।

মিতিশা তবুও আমার দিকে দ্বিধা নিয়ে তাকাল। তার যেন যেন দ্বিধা কাটছে না। আমার মত কেউ যে থাকতে পারে সেটা এখনও বিশ্বাস হচ্ছে। বিয়ের পরে প্রত্যেক পুরুষের অন্যতম চাহিদা থাকে সন্তানের বাবা হওয়া। আর সেখানে আমি কিনা এটা একদমই চাচ্ছি না।

মিতিশা বলল, এখন হয়ত মনে হচ্ছে প্যারা কিন্তু এক বয়সে এসে যদি আপনার মনে হয় যে আপনার একটা মেয়ে বা ছেলে দরকার তখন? আমার তো সেই উপায় থাকবে না। দেখুন আমি একবার তীব্র ভাবে অপমানিত হয়েছি। আমার এক্স হাজব্যান্ড এবং তার পরিবারের চোখে মুখে আমার প্রতি যে বিতৃষ্ণার দৃষ্টি আমি দেখেছি সেটা আমি আর দেখতে চাই না। এই অপমান আমি আর সহ্য করতে পারব না। আমি দেখেছি এতোদিনের ভালোবাসার মানুষ কিভাবে এক নিমিষেই বদলে গেছে! আমি আর ঐদিকে যেতে চাই না।

আমি মিতিশার ব্যাপারটা বেশ ভাল করেই জানি। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকেই সে একজনের সাথে সম্পর্কে ছিল এবং তাকেই শেষ পর্যন্ত বিয়ে করেছিল। বিয়ের পরে বছর খানেক ভালই চলছিল তাদের সংসার। কিন্তু যখন বাচ্চা নেওয়ার ব্যাপারটা এল তখন ওরা কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না। এভাবে আরও বছর খানেক পার হওয়ার পরে এবার ওরা ডাক্তারের কাছে গেল। রিপোর্টে জানা গেল যে মিতিশার কিছু কমপ্লিকেশন আছে। সে মা হতে পারবে না।

ব্যাস! এরপর থেকে মিতিশার জীবন একেবারে বদলে গেল। তার ভালবাসার মানুষটা একেবারে অন্য রকম হয়ে গেল। শেষে মিতিশার সাথে ছাড়াছাড়া হয়ে যায়। 

এরপর মিতিশার আর বিয়ের ইচ্ছে ছিল না। চাকরি করত, একা একাই থাকত। তবে মিতিশার বাবা মেয়ের এই অবস্থা ঠিক্ক মেনে নিতে পারছিলেন না। কোন বাবাই মেয়ের এই অবস্থা মেনে নিতে পারে না। সে যেকোন ভাবেই মেয়ের বিয়ে দিতে চায়। এই জন্য সে এমন ছেলে খুজছিল যেই ছেলে কিনা তার মেয়ের এই সমস্যা মেনে নিবে। 

  অন্যদিকে আমার এই বিয়ে এবং বাচ্চাভীতির ব্যাপারটা আমার অফিসের অনেকেই জানতো। আমার ইমিডিয়েট বস তাদের একজন। সে একজন নিজের শালীর সাথে আমার বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। সেই সময়ে তাকে আমি বুঝিয়ে বলেছিলাম ব্যাপারটা। তার ব্যাপারটা মাথায় ছিল। তার কেমন জানি পরিচিত মানুষ এই মিতিশার বাবা। সেই মিশিতার বাবা আর আমার সাথে মাঝে সেতুবন্ধনের কাজ করে। তার পরেই আমাদের এই মিটিং।

আমার কেন জানি মনে হল মিতিশার সাথে জীবন শুরু করা যায়? মানুষের পক্ষে একা একা টিকে থাকাটা একটু কষ্টের।

এইবার আমার মনে হল যে আমার আরেকটু এগিয়ে যাওয়া উচিত। আমি এবার খুব সাহস করে মিতিশার হাতের উপরে হাত রাখলাম। একটু ভয় ছিল যে ও হয়তো রেগে যেতে পারে, কিংবা হাত সরিয়ে নিতে পারে। তবে দেখলাম তেমন কিছুই করলো না। 

আমার সাহস যেন একটু বেড়ে গেল। আমি বললাম, আমার কাছ থেকে আপনাকে কোন দিন এই ব্যাপারে কোন কথা শুনতে হবে না। আমি আপনাকে নিশ্চিত করে কথা দিতে পারছি না যে আমাদের বিবাহিত জীবন কেমন হবে। হয়তো খারাপ হতে পারে তবে এটা আমি আপনাকে কথা দিতে পারি যে আমি আমার দিক থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। এবং যদি আমাদের এক সাথে নাই থাকা হয় তবে কারণ আর যাই হোক না কেন আপনার এই কারণটা হবে না। একবার কি চেষ্টা করে দেখবেন? 

মিতিশা আমার দিকে ফিরে তাকালো। আর আমার তখন কেন জানি মনে হল মিতিশা আরু একবার চেষ্টা করে দেখতে রাজি!

আমাদের বিয়ে হল আরও মাস তিনেক পরে। আরও কয়েকবার আমরা মাঝে দেখা করলাম। কয়েকবার ডেটেও গেলাম। তারপর মিতিশা রাজি হল। তবে ও শর্ত দিল যে প্রথমে আমরা একটু লো প্রোফাইল থাকব। আমাদের বিয়েটা কেবল নিজেদের ভেতরেই রাখব। পরে আনুষ্ঠানিকতা হবে। আমার তাতে কোন আপত্তি ছিল না। 

বিয়ের পরে মিতিশা আমার ফ্লাটে উঠে এল। সত্যি বলতে কী দিল্লির লাড্ডু খেয়ে আমার খারাপ লাগল না। মনে হল আমার জীবনের মিসিং ব্যাপারটা ফিরে পেলাম। জীবনের এই আনন্দ বুঝি এখানেই ছিল। আমি ঠিকই বুঝতে পারছিলাম যে আমি আর মিতিশা একে অন্যকে আস্তে ধীরে ভালোবাসতে শুরু করেছিলাম। স্বপ্নের মত জীবন কেটে যাচ্ছিল। 

কিন্তু তারপরেই সেই ঘটনা ঘটল। 

সেদিন আমি অফিস থেকে ফিরে এসে দেখি মিতিশা কেমন একটা উদ্ভ্রান্তের মত বসে রয়েছে খাটের উপরে। আজকে মনে হল ও একটু আগে আগেই অফিস থেকে ফিরে এসেছে। আমি দ্রুত ওর কাছে এসে ওর কপালে হাত দিলাম। তারপর বললাম, কী হয়েছে তুমি ঠিক আছো?

মিতিশা আমার দিকে কেমন ঘোলা চোখে তাকাল। তারপর বলল, আজকে অফিসে আমার একটু মাথা ঘুরে উঠেছিলাম। কয়েকবার বমি হল। তারপর ওখান থেকেই ক্লিনিকে গেলাম। সেখানে ডাক্তার কিছু টেস্ট দিয়েছিল। আমি সেই টেস্টগুলো করে বাসায় এসে শুয়ে ছিলাম। একটু আগে সেই টেস্টের রিপোর্ট এসেছে মেইলে।

-খারাপ কিছু?

মিতিশা আমার দিকে তাকাল। তারপর বলল, আমি প্রেগনেন্ট!

আমার মনে হল আমি যেন ভুল শুনলাম। বললাম, কী বললে?

-আমি মা হতে চলেছি,

-মানে?

-মানে আমি আমি মা হতে চলেছি তুমি বাবা হতে চলেছো!

পুরো ব্যাপারটা হজম হতে আমার বেশ খানিকটা সময় লাগল। আমি বাবা হতে লাগল । কয়েকটা দিন একেবারে ঘোরের ভেতরে কেটে গেল আমার। আমার কিছুই যেন ঠিক বিশ্বাস হচ্ছিল না। যে ব্যাপারটা আমার কাছে প্যারার মত হত সেই কাজটাই আমার সাথে ঘটতে যাচ্ছে। আমি এখন কী করব?

সাথে হাত মিলিয়ে এই কাজটা করেছে। তার প্রাক্তন স্বামী নিজের অপমানটা মিতিশার উপরে চাপিয়ে দিয়েছে। আর মিতিশাও খানিকটা বোকাই আছে। সে আর অন্য ডাক্তারের কাছে যায়ও নি। একজনের কাছেই বারবার গিয়েছে। আর সেই ডাক্তারটা মিতিশার প্রাক্তন স্বামীর পরিচিত। 

মিতিশা অবশ্য অন্য কিছু ভাবছেই না। তার আনন্দ দেখে কে! যে মা হতে চলেছে এটাই তার সব থেকে বড় আনন্দ। আর এদিকে মিতিশার ডেলিভারির দিন যতই এগিয়ে আসছে আমি ততই অস্থির হয়ে উঠছি। আমার জীবনের সব শান্তি এবার বুঝি চলে যাবে। আমি আর জীবনে শান্তি পাবো না।

এরই মাঝে আরেকটা ঘটনা ঘটল। তখন সাত মাস চলছে। আমি ওকে নিয়ে গেছি ডাক্তারের কাছে চেকাপের জন্য। চেকপার শেষ করে হাসপাতালের করিডোর দিয়ে হাটছি ওকে নিয়ে এমন সময় মিতিশা একটা থমকে দাড়াল। তাকিয়ে দেখলাম ও এক ভাবেই কার দিকে যেন তাকিয়ে আছে। আমি ওর চোখের দৃষ্টি বরাবর তাকিয়ে দেখি সে ওয়েটিং করিডোরের দিকে তাকিয়ে আছে। ওখানে অনেকেই এসেছে ডাক্তার দেখাতে। বসে আছে।

আমি দেখলাম মিতিশা সেদিকেই এগিয়ে গেল ধীরে ধীরে। আমি তার পেছন পেছন হাটতে লাগলাম। মিশিতা মাঝ বয়সী এক মহিলার কাছে সামনে গিয়ে থামল। মহিলাও মিতিশার দিকে তাকিয়েছে। ওকে চিনতে পেরেছে । তার চোখে আমি বিস্ময় দেখতে পেলাম। মহিলার দিকে মিতিশা হাসিমুখে তাকিয়ে বলল, কেমন আছেন?

মহিলা একবার মিতিশার চেহারার দিকে আরেকবার মিতিশার পেটের দিকে তাকাচ্ছে? তার চোখে বেশ বড় বিস্ময়।

মিতিশা আমার দিকে ইশারা করে বলল, আমার হাসব্যান্ড। আপনার অক্ষম ছেলে যা পারে নি। ও পেরেছে।

তারপর মিতিশা একটা বিদ্রুপের হাসি দিল। আমি মিতিশার আচরণে একটু অবাক হলাম। মিতিশা সব সময় মোলায়েম কন্ঠে কথা বলে কিন্তু এই মহিলার সাথে কথা বলার সময় তার কন্ঠে বিদ্রুপ বেশ ভাল ভাবেই স্পষ্ট হয়ে আছে। সম্ভবত এই মহিলা মিতিশার প্রাক্তন শ্বাশুড়ি। মিতিশা বলল, আপনি বলেছিলেন না আপনার বংশের বাতি দেওয়ার জন্য কাউকে লাগবেই! সরি টু সে সেই বাতি আর কেউ দিতে আসবে না।

আমি দেখলাম মহিলার চেহারা লাল হয়ে গেছে। সে যেন কথা বলতে পারছে না।

মিতিশা তাকে সেখানেই রেখে আবার ঘুর পথে ধরল। আমি কিছু সময় মিতিশার চলে যাওয়া আর কিছু সময় মহিলার অপমানে লাল হয়ে যাওয়া চেহারার দিকে তাকিয়ে রইলাম বোকার মত। অবশ্য খুব বেশি সময় অপেক্ষা করার উপায় নেই। আমি আবারও মিতিশার পেছনে হাটা দিলাম।

ফেরার পথে মিতিশাকে খুব খোজ মেজাজে মনে হচ্ছিল। আমি বললাম, এটা কী ছিল?

-ইনি আমার শ্বাশুড়ি ছিলেন।

-বুঝতে পারছি।

-বিয়ের শুরু থেকেই আমাকে তিনি ঠিক পছন্দ করতেন না। বিশেষ করে আমার চাকরি করাটা। আমি চাকরি ছাড়ি নি। তারপর যখন আবির ফলস রিপোর্ট নিয়ে এল তখন তাকে আর পায় কে। আমাকে এমন কোনো কথা নেই যে এই মহিলা শোনায় নি। আরো কিছু কথা বললে ভাল হত তবে বললাম না।

আমি হেসে বললাম, তোমার ভেতরে যে এই ব্যাপারটা আছে সেটা তো আমি জানতামই না।

মিতিশা হাসল। আর কিছু বলল না।

অবশেষে সেই দিনটা চলেই এল। ওটিতে প্রবেশের আগে আমি মিতিশার বেডের কাছে বেশ কিছুটা সময় বসেই রইলাম। আমাদের পরিবারের অনেকেই এসেছে হাসপাতালে। মিতিশা হঠাৎ আমার হাত ধরে বলল, আমি জানি তুমি বাচ্চাকাচ্চা পছন্দ কর না। আমি কথা দিচ্ছি তুমি যাকে সব থেকে কম ঝামেলায় পড় এই ব্যাপারটা আমি দেখব। কেমন? কিন্তু যদি আমার কিছু হয়ে যায়, বাচ্চা জন্মদিতে গিয়ে যদি মারা যাই তবে আমার বাবুটার তুমি ছাড়া আর কেউ থাকবে না। ওকে দূরে ঠেলে দিও না, কেমন?

মিতিশা এমন কন্ঠে কথাটা বলল যে আমাকে পুরো ভেতরে থেকেই নাড়িয়ে দিল। একজন মায়ের এই আকুতি কারো পক্ষে ফেলে দেওয়া সম্ভব না। আমি ওকে জড়িয়ে ধরে বললাম, তোমার কিছু হবে না। আর আমি কখনও অভিযোগ করব না। কথা দিলাম।

ওটিতে অঘটন কিছু ঘটলো না। আমাদের মেয়ে সুস্থ ভাবেই পৃথিবীতে এল। নার্স যখন আমাকে ছোট্ট মেয়েটাকে আমার কোলে দিল আমার পুরো পৃথিবী যে এক মিনিষেই পরিবর্তন হয়ে গেল। আমি অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম আমার চোখ দিয়ে আপনা আপনি পানি চলে বের হয়ে এসেছে। তীব্র আনন্দে মানুষের চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে, বুকের আবেগটার তীব্র প্রতফলন হল। আমি আসলে ব্যাপারটা কোন ভাবেই ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না।

আমার তখন মনে হল যে এই ছোট বাবু মেয়েটার জন্য পৃথিবীর সব কষ্ট হাসি মুখে সহ্য করে নিতে পারব।  

একটু সমস্যা হওয়ার কারণে আপাতত মেইল সার্ভিসটা বন্ধ করতে হয়েছে। এখন থেকে আর নতুন গল্পের মেইল যাবে না। নতুন করে আবার মেইল সার্ভিস সেটআপ করতে হবে।

ফেসবুকের অর্গানিক রিচ কমে যাওয়ার কারনে অনেক পোস্ট সবার হোম পেইজে যাচ্ছে না। সরাসরি গল্পের লিংক পেতে আমার হোয়াটসএপ বা টেলিগ্রামে যুক্ত হতে পারেন। এছাড়া যাদের এসব নেই তারা ফেসবুক ব্রডকাস্ট চ্যানেলেও জয়েন হতে পারেন।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 4.6 / 5. Vote count: 25

No votes so far! Be the first to rate this post.

About অপু তানভীর

আমি অতি ভাল একজন ছেলে।

View all posts by অপু তানভীর →