ডায়েরিটার দিকে এক ভাবে কিছু সময় তাকিয়ে রইলাম। টেবিলের উপরে পলিথিনের পেপার দিয়ে মোড়ানো কালো ডায়েরীটা দেখতে একেবারেই সাধারণ একটা খাতা ছাড়া আর কিছু মনে হচ্ছে না। কিন্তু ডায়েরিটা কোন সাধারণ ডায়েরি না। একজন মৃত মানুষের ডায়েরি কি সাধারণ কোন ডায়রি হতে পারে? আমার মনে হল যে এই ডায়েরিটা পড়ার কোন দরকার নেই। যার ডায়েরি সে দুইদিন আগে মারা গেছে। আত্মহত্যা করেছে। পুলিশ নিজে দরজা ভেঙ্গে লাশ উদ্ধার করেছে। কোন সন্দেহ নেই যে, সে আত্মহত্যা করেছে। অন্য কেউ তাকে হত্যা করে নি। এছাড়া মেয়েটা একটা সুইসাইড নোটও লিখে রেখে গেছে। সেখানে এক লাইনে স্পষ্ট করে লেখা ছিল ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়, দায়ী আমি নিজেই।’ এরপরে আর কিছু বলার থাকে না। ইতিমধ্যে লাশটা তার আপনজনের কাছে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। সম্ভবত এতো সময়ে লাশ দাফনও হয়ে গেছে।
আমার একবার মনে হল যে এই ডায়েরিটা পড়ার কোন মানে নেই। এমনিতেই আমার জীবনে সমস্যার কোন শেষ নেই। আরও কত চিন্তা যে আমাকে সব সময় আমাকে ঘিরে ধরেছে। সেখান দিয়ে এখন আবার নতুন করে একজন মৃত মানুষের ডায়েরি পড়ার কোন মানে নেই। যে এই পৃথিবী থেকে চলে গেছে, তাকে একেবারে চলে যেতে দেওয়াই ভাল। কিন্তু তবুও কৌতুহল বলে একটা কথা আছে। প্রথম যখন আমি তার ঘরে ঢুকলাম, জিনিস পত্রের মাঝেই এই ডায়েরিটা দেখতে পেয়েছিলাম। কয়েকটা পাতায় চোখ বুলিয়ে মনে হল যেন সাধারণ একটা ডায়েরি । তবে এক সময়ে নিজের কাছেই মনে হল যে পুরোটা পড়ে দেখা দরকার। ইনচার্জ অফিসার হওয়ার কারণে ডায়েরিটা নিজের কাছে নিয়ে আসতে খুব বেশি কষ্ট হয় নি। আমি জানি এভাবে একজন মৃত মানুষের ডায়েরি পড়াটা মোটেই ভাল কোন কাজ হবে না। তবুও আমি সেটা নিয়েই এলাম নিজের কাছে।
মৃত মেয়েটার নাম নীলিমা রহমান। মেয়েটা পেশায় একজন স্কুল শিক্ষিকা। ধানমণ্ডির রকটেইল ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে পড়াত। প্রায় আট বছর সেখানে চাকরি করছে। স্কুলে তার সুনাম রয়েছে ভাল শিক্ষিকা হিসাবে। বিবাহিত তবে কোন বাচ্চা হয় নি। স্বামী আমেরিকা গেছে পিএইচডি করতে। খুব জলদি নীলিমারও স্বামীর কাছে যাওয়ার কথা ছিল। কাগজপত্র তৈরি হয়ে গেলেই যাবে। এমন একটা নিশ্চিত জীবনের হাতছানি যখন সামনে তখন মেয়েটা কেন আত্মহত্যা করল ? অবশ্য সম্প্রতি মেয়েটার পরিবারেরর উপরে বেশ বড় ধরণের ঝড় বয়ে গেছে। মেয়েটির বাবা মারা গেছে সপ্তাহ খানেক আগে । হার্ট এটাকে। এই কারণে মেয়েটা একটু বিষন্নতায় ভুগছিল। মেয়েটা তার বাবার খুব কাছের ছিল। বাবার মৃত্যুতে খুব ভেঙ্গে পড়েছিল। এটাকেই আত্মহত্যার কারণ হিসাবে ধরা হচ্ছে।
আমি ডায়েরিটা পড়তে শুরু করলাম। প্রথম তেমন কিছুই নেই। সাধারণ একটা ডায়েরি যেমন হয় ঠিক তেমন । একটা মেয়ের ডায়েরি যে রকম হয়। নানান অহেতুক ব্যাপার নিয়ে লিখেছে। আমি একের পর এক পৃষ্টা উল্টিয়ে গেলাম । যখন মনে হল যে আর তেমন কিছু পাওয়া যাবে না । কিন্তু তার পরেই মনে হল যে লেখার ধরণ কেমন একটু বদলে গেল। কয়েকটা পেইজ কেবল হিজিবিজি দাগ টানা । কিছু যেন লিখতে গিয়ে থেমে গেছে। কেটে দিয়েছে। তার কয়েক পাতা পরে একটা লম্বা লেখা পেলাম। সেটাই আমি পড়তে শুরু করলাম। আমার কাছে এটা অনেকটা স্বীকারোক্তির মত মনে হল ।
‘আমি কোন দিন ভাবি নি ব্যাপারটা ভাবে সত্যি হয়ে যাবে। আমি নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যখন আমি দিবার মৃত্যুর সংবাদ শুনলাম। তাও একবার ঠিক আমি যেভাবে যেভাবে লিখেছি ঠিক সেভাবে । বাসটা ওর শরীরের উপর দিয়ে উঠে গিয়েছিল । একেবারে থেতলে গিয়েছিল পুরো ডান পাশটা । আমি ঠিক এই ভাবেই ওর মৃত্যুর গল্পটা লিখেছিলাম । আমি নিজের চোখকে যেন বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।
কিন্তু যখন রবির বেলাতেও একই রকম ঘটনা ঘটল, তখন আমি আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না। আমার বুঝতে কষ্ট হল না যে আমি বাকি যে দুইটা গল্প লিখেছি ওরাও ঠিক একই ভাবে মারা যাবে। একে একে সবাই মারা গেল। প্রতিটা মৃত্যু থেকে পরের মৃত্যুর দুরত্ব ছিল সাত দিন । আমি এতো উত্তেজিত ছিলাম এক সাথে চারটা গল্প লিখে পোস্ট করে ছিলাম ।
ওয়েবসাইটটার ঠিকানা আমি কিভাবে পেয়েছিলাম সেটা আমি বলতে পারব না। তবে মনে হয় গল্প লেখার জন্য আমি একটা সাইট খুজছিলাম । এই লিখে গুগলে সার্চ দিতেই সাইটটা আমার সামনে আসল । প্রথম একটা সতর্কতা বার্তা এল । ভেতরের গল্পগুলো ভয়ংকর হবে, এমন আমি যদি দূর্বল হৃদয়ের মানুষ হই তাহলে যেন আমি না ঢুকি। আমি ঢুকে পড়লাম । তারপর একাউন্ট খুলে কয়েকটা গল্প পড়ে ফেললাম। সবগুলো গল্প ছোট ছোট এবং প্রতিটা গল্পেই মৃত্যুর বর্ণনা দেওয়া হয়েছে । বেশির ভাগই সাদামাটা ভাবে লেখা । গল্পগুলো পড়ে আমার মনে হল যে আমিও খুব ভাল করে লিখতে পারব ।
যখন লিখতে গেলাম, তখন কয়েকটা শর্ত এসে হাজির হল । প্রথম শর্তটা ছিল গল্প লিখতে হবে আমার পরিচিত কাউকে কল্পনা করে, তাদের আসল নাম ব্যবহার করে । অর্থ্যাৎ গল্পের চরিত্র এমন কেউ হবে যে বাস্তবে জীবিত । এবং লেখকের পরিচিত । দুই একবার লিখলে প্রতি সপ্তাহে অন্তত একটা করে মোট সাত সপ্তাহ গল্প লিখতে হবে। সাতটার কমে গল্প লেখা যাবে না । নয়তো ফল ভাল হবে না।
একে একে চারটা গল্প লিখে পোস্ট করে ফেললাম। সব গুলো ছোট ছোট গল্প । আমার অপছন্দের মানুষ গুলোকে নিয়ে লেখা গল্প । সবাইকে নানান ভাবে আমি মেরে ফেলেছি গল্পে। পোস্ট বাটনে চাপ দিয়ে আবারও সেই সর্তকতা এসে হাজির হল । আমি সবগুলো ঠিক মত পড়লামও না। উত্তেজনার কারণে আমি সেগুলো একে একে সবগুলো গল্প পোস্ট করে দিলাম । দেখলাম গল্প গুলো পোস্ট করার পরে আমার ড্যাশবোর্টে একটা স্টপওয়াচ শুরু হল । সেখানে একটা সময় দেওয়া । এই সময়ের আগেই আমাকে আরেকটা গল্প লিখতে হবে। হিসেব করে দেখলাম সেটা ঠিক সাত পাঁচ সপ্তাহ পরের সময়। এই সময় শেষ হওয়ার আগেই আমাকে পাঁচ নম্বর গল্পটা লিখতে হবে।
কিন্তু ঠিক পরের দিন যখন আমি দিবার এক্সিডেন্টের খবর শুনতে পেলাম আমি কিছুতে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। অবিশ্বাস ভরা চোখে আমি একবার খবরের কাগজের বর্ণনা আর আমার গল্পের বর্ণনার দিকে তাকিয়ে রইলাম । আমার কেবল মনে হল যে কেউ যেন আমার গল্পের কথাগুলোই পত্রিকায় বসিয়ে দিয়েছে।
আমার মনে কী কু ডেকে উঠল আমি দ্রুত লগিন করলাম । নিজের ড্যাশবোর্ডে গিয়ে গল্পটা ডিলিট করতে গিয়ে দেখলাম যে সেখানে ডিলিটের কোন অপশন নেই। যে চারটা গল্প আমি পোস্ট করেছি সেগুলো আমি কোন ভাবেই আর ডিলিট করতে পারছিলাম না । এমন কি আমার আইডি বন্ধ করার কোনো অপশন আমি খুজে পেলাম না।
আমি নিজের মাথা থেকে চিন্তাটা দুর করার চেষ্টা করলাম । বারবার মনে হল যে এটা কোন ভাবেই সম্ভব না । এটা আমার উর্বর মস্তিস্কের কল্পনা মাত্র । এটা কোন ভাবেই হতে পারে না। ভাগ্যগুনে মিলে গেছে। কিন্তু ঠিক সাত দিন পরে যখন রবির মৃত্য হল তখন আমার মনে আর কোন সন্দেহ রইলো না । আমি গল্পে রবিকে ঠিক যেভাবে মেরেছিল বাস্তবেও রবি ঠিক সেভাবেই মারা গেল । তারপর একে একে বাকি দুইজনো মারা গেল একেবারে গল্পের মত। সবার শেষজন ছিল এই বাড়ির দারোয়ান। এই দারোয়ানকে আমি দুই চোখে দেখতে পারতাম না। মেয়েদের দিকে কী বাজে ভাবেই না তাকাত লোকটা । আর দারোয়ানের মুখের ভাষা খুব খারাপ । কতবার বাড়িওয়ালার কাছে অভিযোগ করেই লাভ হয় নি। কিন্তু যখন দারোয়ানের উপরে ছাদ থেকে একটা ফুলের টব পড়ল আর সে মারা গেল আমার কেন জানি নিতে পারছিলাম না। সত্যিই আমার কাছে কেবল মনে হল যে এই ছয়টা খুন আমি করেছি। আমি করেছি।
কিন্তু যখন পাঁচ নম্বর গল্পটা লেখার সময় এল তখন আমি আড়ষ্ট অনুভব করলাম । আগের গুলো তো আমি না জেনেই লিখে ফেলেছি কিন্তু এইবার তো আমি ঠিক ঠিক জানি যে আমি যাকে নিয়ে লিখব সে মারা যাবে। গল্পের শর্ত ছিল যে আমার পরিচিত মানুষকে নিয়ে গল্প লিখতে হবে। আমি যাকে চিনি এমন কাউকে নিয়ে গল্প লিখলে চলবে না।
একবার মনে হল যে কোন গল্প লেখার দরকার নেই। চুপচাপ বসে থাকি কিন্তু তারপরেই সাবধানী বানীটা আমার মনে পড়ল । আমি তখন বাধ্য হয়ে আরেকটা গল্প লিখলাম । যাকে নিয়ে গল্প লিখলাম সেই মানুষটা আমাদের এ পাড়ার একজন সন্ত্রাসী। সারাদিন মোড়ের মাথায় বসে থাকে । নেশা করে আর মেয়েদের বিরক্ত করে। আমি সেই মুরগি রাজুকে নিয়ে গল্পটা লিখলাম । সুইসাইডের মৃত্যু দিলাম তাকে ।
সময় পার হয়ে যেতেই খবরটা আমার কানে এল । রাজু আসলেই গলায় ফাঁস নিয়ে মরেছে। আমি কী করব বুঝতে পারছিলাম না। এর আগের গুলোর সাথে এটার মূল পার্থক্য ছিল আগের গুলোর ব্যাপারে আমি কিছুই জানতাম না। কিন্তু এইবার আমি সব জানতাম । আমি জেনে শুনে একটা মানুষকে মেরে ফেললাম । আমার মনের অবস্থা যে কী কেমন সেটা আমি বলে বোঝাতে পারব না। আমার একবারের জন্য অন্য কিছু মনে হল না। আমার কেবল মনে হল যে আমি এই মানুষটাকে মেরে ফেলেছি। সব কিছু জানার পরেও আমি নিজের হাতে একটা মানুষকে মেরে ফেলেছি। আমার কাছে অন্য কোন কথা আর মনে হল না । কেবল এই কথাটাই বারবার মনে হতে লাগল যে আমি একটা একজন মানুষকে মেরে ফেলেছি। পরের দিনগুলো আমার আর অন্য কোন কাজে মন বসল না । আমি মনে মনে ঠিক করে নিলাম যে আমি কোন গল্প লিখব না । যা হয় হবে । আমি ওয়েবসাইটে আর লগিন করলাম না। কিন্তু আমি কখনো জানতেও পারি যে আমার কপালে কী লেখা ছিল । আমার এই একটা ভুলের কারণে আমি আমার বাবাকে হারিয়ে ফেললাম । আমার বাবা আমাকে ছেড়ে চলে গেল । সবাই বলতে যে সেটা স্বাভাবিক মৃত্যু কিন্তু আমি জানি যে এটা কোন ভাবেই স্বাভাবিক কোন মৃত্যু না । আমি জানি আমার কারণেই আবার বাবা মারা গেছে।
আমি যদি আর গল্প না লিখি বা আরও আল করে বললে আমি যদি নতুন করে কাউকে না মেরে ফেলি তাহলে আমার পরিবারের কেউ মারা যাবে । নিজের পরিবার বা কাছের মানুষকে বাঁচাতে আমাকে অন্য মানুষকে মেরে ফেলতে হবে । আমি আর এই কাজ করতে পারব না । আমার দ্বারা এই কাজ আর হবে না । আর হবে না । ……’’
ডায়রিটা এখানেই শেষ। আমি লেখাটা পড়ে কিছু সময় চুপ করে রইলাম । আমার এখন কী মনে করা উচিত সেটা ঠিক বুঝতে পারছি না। এমন কিছু কি আসলেই সত্য হতে পারে? মানে আমি একটা ওয়েব সাইটে একটা একটা করে কারো মৃত্যুর বর্ণনা দিলাম আর পরের দিন দেখলাম সেই ঘটনা ঘটে গেছে? এটা সম্ভব?
মেয়েটা যে মানসিক ভাবে ভারসাম্যহীন ছিল সেটা আমার বুঝতে কষ্ট হল না । আমি এটা নিয়ে আর কিছু চিন্তা করলাম না । মেয়েটা আত্মহত্যা করেছে এটা নিয়ে আমার আর কোন সন্দেহ রইলো না।
তারপর কয়েক মাস কেটে গেল । আমি নিজেও কাজের কারণে ব্যস্ত হয়ে গেলাম । আমার মন থেকে পুরো ব্যাপারটা হারিয়ে গিয়েছিল । কিন্তু মাস ছয়েক পরে আমি সেই ওয়েব সাইটটার খোজ পেলাম । আমি অনুভব করতে পারলাম যে আমার এক বারেই মেয়েটার কথা মনে পড়ল । আমি মানসিক ভাবে কিছুটা অস্থির ছিলাম । একটা মামলায় স্পষ্টই দেখতে পেলাম মূল আসামী হাত ফসকে বের হয় যাচ্ছে । আমা কিছুই করা নেই । এই কারণেই উদ্দেশ্যহীন ভাবে আমি মোবাইলে ব্রাউজ করছিলাম । তখনই আমি ওয়েবসাইটটার এড দেখতে পেলাম । আমি কেবল কৌতুহল নিয়ে সেখানে ক্লিক করলাম।
নীলিমা রহমান তার ডায়েরিতে ওয়েব সাইটের কোন বর্ণনা দেয় নি এমন কি কোন ঠিকানাও লেখে নি। সম্ভবত সে চায় নি অন্য কেউ এই ওয়েবসাইটের ঠিকানা জানুক এবং তারমত অবস্থা হোক। আমি পুরো সাইটটা একবার ঘুরে এলাম । তারপর লেখকের নামের তালিকাতে নীমিমা রহমান লিখে সার্চ দিলাম। একটা নাম উঠে এল । এবং তার নামের নিচে পাঁচটা গল্পের লিস্টও পেলাম । তবে গল্পগুলো আমি পড়তে পারলাম না । কারণ সেগুলো মেম্বার্স অনলি করা । মনে মনে একটা দ্বিধা কাজ করল । গল্পগুলো পড়তে আমার এখন এখানে একাউন্ট খুলতে হবে আর একাউন্ট খুললে যদি আমাকে গল্প লিখতেই হয় তখন? আমি খুনী হয়ে যাব?
কিন্তু পরক্ষণেই মন থেকে চিন্তাটা দূর করে দিলাম । সহজেই একাউন্ট খুলে পেলাম । বেশ কয়েকটা সতর্কতা বানী এল। এগুলো আগে থেকেই জানি। আমি সব মেনে নিয়েই খুললাম একাউন্ট। তারপর তীব্র বিস্ময় নিয়েই খেয়াল করলাম যে মেয়েটার লেখা পাঁচটা গল্প আসলেই বাস্তবে ঘটেছে। কারণ গল্পের মত হুবাহু বর্ণনা আমি পত্রিকাতেই খুজে পেলাম । অবাক করার ব্যাপার হচ্ছে গল্পের পোস্টের সময় পত্রিকার খবরের সময়ের আগে। অর্থ্যাৎ লেখাগুলো পত্রিকা থেকে কপি করা নয়।
আমি কেবল অনুভব করলাম যে আমার বুকের ভেতরে একটা দুরুদুরু ভাব শুরু হয়ে গেছে । আসলেই এমন কিছু কি বাস্তবে ঘটতে পারে? এটা কি আসলেই হতে পারে?
তখনই আমার মনের ভেতরে একটা ভয়ংকর চিন্তা এসে হাজিরর হল। আমার কাছে এক ভয়ংকর এক ক্ষমতা এসে হাজির হয়েছে । যদি একবার আমি এটার ভেতরে পা দিলে আর বের হওয়ার উপায় নেই। আমি মনযোগ দিয়ে নিয়মগুলো আবার পড়লাম । কেবল পরিচিত হলেই হবে। মানে হচ্ছে এমন সব মানুষকে আমি খুন করতে পারব যাদের আমি বাস্তবে চিনি। লাইক আজকে যে কনক রহমান ক্ষমতার বলে পার পেয়ে যাচ্ছে তাকে আমি চিনি খুব ভাল কররেই। তার সম্পর্কে সব জানি । কিন্তু কিছুই করতে পারছি না। আসলেই পারছি না?
আমি আর চিন্তা করলাম না। সরাসরি রাইটার্স ট্যাব ওপেন করলাম । যখন ৫০০ শব্দের গল্পটা লিখে শেষ করলাম তখন আমার হাত একটু একটু কাঁপছে। যখন পোস্ট বাটনে চাপ দিলাম তখন আমার সামনে বেশ কয়েকটা সতর্কতা বানী এল । আমি জানি সেগুলোতে কী লেখা আছে। নীলিমার ডায়েরি থেকেই আমি সেগুলো জানি । আর আর চিন্তা করলাম না । আমি বাটনে চাপ দিয়ে দিয়ে দিলাম । গল্প পোস্ট হয়ে গেল । সাথে সাথে আমার ড্যাশবোর্ডে একটা টাইম ওয়াচ শুরু হয়ে গেল । সময়টা ঠিক সাত দিন । আগামী সাত দিনের ভেতরে আবার আমাকে নতুন একটা গল্প লিখতে হবে আরও ভাল করে বললে, আগামী সাত দিনের ভেতরে আমাকে নতুন একজনকে খুনের জন্য খুজে বের করতে হবে। কে হবে সেই জন?
অবশ্য আমি এটা নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করলাম না। আমার এই পেশায় মানুষের অভাব হবে না ।
ফেসবুকের অর্গানিক রিচ কমে যাওয়ার কারনে অনেক পোস্ট সবার হোম পেইজে যাচ্ছে না। সরাসরি গল্পের লিংক পেতে আমার হোয়াটসএপ বা টেলিগ্রামে যুক্ত হতে পারেন। এছাড়া যাদের এসব নেই তারা ফেসবুক ব্রডকাস্ট চ্যানেলেও জয়েন হতে পারেন।
সরাসরি মেসেজ পাঠাতে চিঠি.মি এপ ব্যবহার করুন।
Discover more from অপু তানভীর
Subscribe to get the latest posts sent to your email.