রুমিন

oputanvir
4.7
(38)

আমি যে ভুতের পাল্লায় পড়েছিলাম সে গল্প আপনাদের আগে একবার করেছি মনে আছে আপনার ?

আমার কথা শুনে সবাই আমার দিকে খানিকটা কৌতুকের চোখে তাকালো । যেন আমি কোন হাসি ঠোট্টার কথা বলেছি । অবশ্য এমন কথা এই যুগে হাসির কথার মতই শোনাবে । এর বেশি কিছু না । আমরা অফিস থেকে ঘুরতে এসেছি রাঙ্গামাটিতে । সারাদিন ঘোরাঘুরির পরে আমরা লেক ভিউ রিসোর্টে অবস্থান করছি । রাতের খাওয়ার আগে বসে বসে আড্ডা দিচ্ছে । আমরা মোট দশজন আপাতত আছি । রিসোর্টটা গড়ে উঠেছে একেবারে পাহাড়ের বুকে । এক পাশে উঠে গেছে উচু পাহাড়া অন্য দিকে আবার নিচু খাঁদ । আমরা খাদের পাশে খোলা বসায় স্থানে বসে আড্ডা দিচ্ছি । এই সময়ে ভুতের গল্প বেশ ভাল জমে ।

রফিক ভাই বললেন, ভুতের গল্প জমে বেশ । শুরু করে দাও !
আমি সবার দিকে তাকালাম । রুমিনের দিকে তাকিয়ে দেখি আমার দিকে তাকিয়ে মৃদ্যু ভাবে হাসছে । আমি যে গল্প বলতে যাবো সেটা সে জানে বেশ ভাল ভাবেই । আমার সথে রুমিনের ভাবটা সবার থেকে বেশি । এটা অফিসের সবাই জানে ।

আমি আমার গল্প শুরু করলাম ।

আপনারা তো জানেনই যে আমি ছোট থেকেই গ্রামে বড় হয়েছি । গ্রামের ছেলেরা যেমন হয় আমিও ব্যতিক্রম ছিলাম না । আমার অন্যতম পছন্দের কাজ ছিল মাছ ধরা । আমার সাথে আমার বন্ধু জমিস থাকতো । আমি দিনে দুপুরে রাতে সব সময় মাছ ধরতাম যখনই সুযোগ পেতাম । এভাবেই বড় হয়েছি । গ্রামের পুকুর খাল কিংবা বিলে আমরা মাছ ধরতাম । কখন জাল দিয়ে আবার কখন বরশি দিয়ে । বিশেষ পুকুরে মাছ ধরাতাম বরশি দিয়ে লুকিয়ে । কারণ পুকুর গুলো অন্য মানুষের ছিল !
তবে আমাদের সব স্থানে যাওয়ার অনুমুতি ছিল না । বিশেষ করে বিটের ধারে বিলে আমাদের যাওয়া মানা ছিল । কেবল আমাদেরই না গ্রামের বড়রাও ওখানে যেত না । গেলেও ১০/১২ জনের বড় দল নিয়ে দিনের বেলা যেত । রাতের বেলা যাওয়ার কারো সাহস হত না । তবে আমরা সেই মানতাম না । আমরা সবার চোখ লুকিয়ে ঠিকই যেতাম সেখানে । এবং এমনই একদিন আমাদের জীবনে দুর্ঘটনা ঘটে । বিটের ধারের বিলে এতো বড় বড় মাছ পাওয়া যেত সেখানে জাল দিয়ে না আমরা কোচ দিয়ে মাছ ধরতাম । একদিন বিকেল বেলা নৌকা নিয়ে আমি আর জসিম সেখানে হাজির হয়েছি । মাছ ধরতে শুরু করলাম । এক পাশে বেঁধে রেখে আমরা দুজন একেরপর এক কোচ দিয়ে মাছ ধরছি । মাছ ধরছি আর নৌকায় গিয়ে রাখছি। কখন যে সন্ধ্যা নেমে এল টের পেলাম না । মনে হল যেন কেউ ঝুপ করেই অন্ধকার নামিয়ে দিল। আমরা দ্রুত বাসার দিকে রওয়ানা দিতে যাবো তখনই খেয়াল করলাম যে এতো সময় ধরে আমরা যে মাছ ধরছি তা নৌকায় নেই । কম করে হলেও ২৫/৩০টা মাছ আমরা ধরেছি যার একটাও নেই ।
মাছ গেল কোথায় ! আমরা এদিক ওদিক ওদিকে তাকিয়ে মাছ কোথায় গেল খুজছি তখনই জমিস আমার কাধ ঝাকিয়ে বলল, চল এখান থেকে !
-মানে?
-জলদি চল !
আমি জমিসের চোখের দৃষ্টি খেয়াল করেই তাকালাম । খালের পাড়ে বড় জারুল গাছের ডালে সেটা বসে রয়েছে । ঠিক মানুষের মত আকৃত হলেও মানুষ যে না সেটা বুঝতে কষ্ট হল না । কালো কুচকুচে দেহের রং। একটু লম্বা আর চিকন মত । হাত দুটো একটু যেন বেশি লম্বা । হাতের আঙ্গুল এবং তার নখ গুলো আমাদের থেকেও বেশি লম্বা । ওটার হাতে আমাদের ধরা কয়েকটা মাছ ।

আমাদের দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিয়ে বলল, মাছ নিবি ! আয় ! আমাদের দুজনের যে তখন কী হল আমরা কেউ বলতে পারবো না । নৌকা খুলে পালানোর সময় তখন ছিলনা । এই বিলে নৌকা ছাড়াও জঙ্গল দিয়ে যাওয়ার রাস্তাও ছিল । আমরা দুজনেই সেদিকে দৌড় দিলাম । দৌড়ানোর সময় কেবল অনুভব করছিলাম যে কেউ যেন আমাদের পেছন পেছনে দৌড়ে আসছে । একটা যখন যখন হুস হল দেখটে পেলাম আমার পেছনে জসিম নেই । আমি একা দৌড়াচ্ছি। আমি তখনও গ্রামের কাছে আসি নি । আমার তখনই উচিৎ ছিল গ্রামে গিয়ে মানুষজন ডেকে আনা। তবে সেদিকে না গিয়ে আমি আবার পেছনের পথে দৌড় দিলাম ।

কত সময় দৌড়েছি মনে নেই তবে জসিমের দেখা পেলাম পথের ধারেই । জসিম মাটিতে পড়ে আছে এবং তার উপরে সেই কালো মত প্রাণী । জসিমের গলা কামড়ে ধরেছে । আমি জানিনা আমার মাঝে কী হল ! তবে জসিমকে ঐ অবস্থায় দেখে আমি হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেললাম । হাতের কোঁচটা দিয়ে আমি সেই প্রাণীটার পিঠে আঘাত করলাম । তীব্র একটা চিৎকার করে উঠলো ওটা । আমি থামলাম না । একবার দুইবার বারবার আঘাত করতেই লাগলাম !

সবার দিকে থাকিয়ে দেখি সবাই কেমন তন্ময় হয়ে শুনছে । আমি আবারও বলতে শুরু করলাম ।
জসিমকে পরীক্ষা করে দেখলাম যে ওর জ্ঞান নেই । হলার কাছের ক্ষতটা বেশ গাঢ় । ওকে কাধে করে নিয়ে চললাম গ্রামের দিকে ।

দুদিন পরেই জসিম মারা গেল । আর আমার শরীর খারাপ হল । আমার জ্বর এল গা কাঁপিয়ে । সেই সময়ে আসলে আমার কিছুই মনে নেই ঠিক মত । আমার কেবল মনে আছে আমাকে কেউ যেন সব সময় দেখতো । আমি খুব বেশি ভয় পেতাম । আমার শরীর দিন দিন খারাপ হচ্ছিলো । আমি যে মারা যাচ্ছি সেটা বুঝতে কষ্ট হল না । তবে আমার বাবা হাল ছাড়লেন না । সে একজন বড় হুজুর ডেকে নিয়ে এলেন । সেই হুজুরই আবিস্কার করলেন যে আমাকে আসলে জ্বীনে ধরেছে । এক্সরসিজন করা হল । সেই জ্বীনকে হাজির করা হল । জ্বীনের বন্তব্য ছিল যে আমি ওর ভাইকে মেরেছি । তাই সে আমাকেও মেরে ফেলবে । হুজুর তখন বলল তার ভাইও তো আমার বন্ধুকে মেরেছে । তবে এই হুজুর বড় হুজুর ছিল । সে সেই জ্বীনকে বোতলে ভরলেন । তারপর সেটা আমার আব্বাকে দিয়ে মাটিতে পুতে ফেলতে বললেন।

(উপরের এই অংশটুকু আহমেদ বাবুর ইউটিউব চ্যানেল অডভুতুরের চ্যানেল থেকে অনুপ্রাণীত)

আমি কদিনের ভেতরেই সুস্থ হয়ে উঠলাম । তবে জসিম মারা যাওয়ার কারণে আমি আর মত কিছুই করতাম না । একেবারে নিশ্চুপ হয়ে গিয়েছিলাম । সেই সাথে আরও একটা ব্যাপার আমার মাথা থেকে কিছুতেই যাচ্ছিলো না । জ্বীনটাকে বন্দী করার ব্যাপারটা । জ্বীনটার আচরণ যে স্বাভাবিক ছিল । যত খারাপই হোক আমি তার ভাইকে মেরেছি সে আমার ক্ষতি করতে চাইবেই ।

আমি কৌশলে জ্বীনের বোতলটা কোথায় পুতে রাখা হয়েছে সেটা জেনে নিলাম । তারপর একদিন সময় সুযোগ মত সেটা তুলে নিয়ে এলাম । রাতের বেলাতেই সেটা নিয়ে গেলাম জঙ্গলে । তারপর সেটার মুখ খুলে দিলাম । অন্ধকারের ভেতরেও আমি স্পষ্ট ধোয়ার কুণ্ডলিটা দেখতে পেলাম ঠিকই । আমি ভেবেছিলাম যে ভয়ংকর দর্শন কোন কিছু দেখবো । তবে আমাকে খানিকটা অবাক করে দিয়েই একটা নারীর অবয়ব ধারণ করলো সেটা । স্নিগ্ধ শীতল শান্ত চেহারা । অন্ধকারের ভেতরেও তার শরীর থেকে আলো দেখতে পাচ্ছিলাম আমি । আমার দিকে তাকিয়ে বলল, আমাকে মুক্ত করে দিলে কেন?
-জানি না ।
-আমি যে তোামকে এখন মেরে ফেলতে পারি সেটা জানি !

আমি যদিও নিজের শরীর বন্ধ করে নিয়েছিলাম । সাথে করে একটা ছোট কোরআন শরীফও ছিল । সে আবার বলল, তোমার ঐ সব কিছু আমাকে আটকাতে পারবে না । বুঝেছো !
আমি একটু ভয় পেলাম বটে । তবে জানি আমার মনে হল জ্বীনটা এমন কিছু করবে না । আমি বললাম আসলে তুমি যা করেছো তা তোমার বেলাতে ঠিক । আমি যা করেছি সেটা আমার বেলাতেও ঠিক । তোমার ভাই আমাদের আক্রমন করেছিলম আগে । আমরা করিনি । তারপেও প্রিয়জন হারিয়েছো তুমি । তোমার রাগ প্রকাশ জায়েজ । আর সেটার কারণে তোমাকে এভাবে আটকে রাখাটা আমি সঠিক বলে মনে করি না । তাই আামর দিক থেকে আমি মুক্ত করে দিলাম । তুমি যা ইচ্ছে করতে পারো । তাতে আমার কোন আপত্তি নেই ।
জ্বীনটি আমার দিকে তাকিয়েই কী যেন ভাবলো । তারপর হাসলো । বলল, তোমরা মানুষরা বড় অদ্ভুত ।
-এইকারণেই আমরা সৃষ্টির সেরা জীব ।
-সেরা না ছাই !

আমি এই পর্যন্ত বলে চুপ করলাম । আকিব বলল, তারপর?
-তারপর আর কি ! চলে এলাম । জীবন আগের মত হল । তবে আর মাছ ধরতে যেতাম না আর । জসিমকে ছাড়া আমার ভাল লাগতো না । পড়াশোনায় মন দিলাম । ইন্টার পরীক্ষার পরে ঢাকাতে চলে এলাম ।
-ঐ মেয়ে জ্বীন?
-আর ছিলাম না গ্রামে । গ্রামে যদিও মনে হত যে কেউ আমাকে দেখছে আড়াল থেকে তবে আগের মত কেন জানি ভয় পেতাম না । মনে হত যে যদি মেরে ফেলতেই চাইতো তাহলে মেরে ফেলতে পারতো । মারে যখন নি আর কিছু বলবে না।
রফিক ভাই বলল, আমার কেন জানি মনে হচ্ছে ঘটনা এখানেই শেষ না ।
আমি হাসলাম । তারপর বললাম, হ্যা ঘটনা এখানে শেষ না । ঢাকাতে পড়তে আসার পরে গ্রামে যাওয়ার পরিমান একেবারে কমে গেল । আমার বাবা নিজের গ্রামের জমিজমা অনেকটাই বিক্রি করে দিয়ে সেই টাকা নিয়ে চলে এল ঢাকাতে । গ্রামে কেবল তখন অল্প কিছু জমি আর আবাদের বাড়িটা ছিল। তাই গ্রামে আর যাওয়াই হত না । এই তাই তখন আর মনে আসতো না । নিজের পড়াশোনা আর বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেলাম ।
আমি ভেবেছিলাম আমার জীবন থেকে ঐ ঘটনা একেবারে মুছে গিয়েছে । তবে আমার ধারণ ভুল প্রমানিত হল । বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিকে হলে থাকলেও বাবা যখন ঢাকাতে চলে আসে তখন আর হলে থাকতাম না । বাসা থেকেও ক্লাস করতাম । একবার বিশ্ববিদ্যালয়ে খুব ঝামেলা চলছিল । কিছু পলিটিক্যাল ছেলে মিলে একজন সাধারণ ছেলেকে টরচার করে মেরে ফেলছিলো । এটাতেই সাধারণ ছাত্ররা প্রতিবাদি হয়ে উঠেছিলো খুব । এবং আমি নিজেও তার ভেতরে ছিলাম । আরো ভাল করে বললে প্রথম দিকে ছিলাম । আন্দোলন থামাতে আমাকে নানান ভাবে ভয় ভীতি হুমকি দিয়ে কল আসতে লাগলো । তবে আমি দমলাম না । যদিও সাবধানেই থাকতাম তবে একদিন একটু ভুল হয়ে গেল । আমি একা একা বাড়ি ফিরছিলাম সেদিন । বুঝতে পারি নি ওরা ক্যাম্পাসের বাইরে এসেও হামলা করতে পারে ।

আমাকে একা পেয়ে ওরা রামদা নিয়ে তাড়া করলো । ওরা কম করে হলেও দশ জন ছিল। আমি ওদের সাথে একা কোন ভাবেই পেরে উঠতাম । দাড়িয়ে থাকলে মারা পরতাম । দৌড় দিলাম প্রাণ পণে । একটা নির্জন আর অন্ধকার আর পরিত্যাক্ত গলির ভেতরে ঢুকেই মনে হল ভুল করলাম । কারণ এই গলি দিয়ে বাইরে যাওয়ার উপায় নেই । কোন দিকে যাবো ভাবছি তখনই ধুপ করে বিদ্যুৎ চলে গেল । পুরো এলাকাটা একেবারে গাঢ় অন্ধকারে ভরে গেল । আমি অপেক্ষা করতে লাগলাম ওদের আসার । মরলে দুই একজনকে নিয়েই মরবো ।
তবে আমাকে অবাক করে দিয়েও গলির ঐ পাশে ভয়ংকর চিৎকার শুনতে পেলাম । এতোটাই ভয়ংকর যে আমি নিজের ভয় করতে শুরু করলো । মনে হল যেন কোন ভয়ংকর প্রাণী ওদের ভয়ংকর ভাবে আক্রমন করেছে । যেমন হঠাৎ করে শুরু হয়েছিলো তেমনি শেষও হয়ে গেল । আমি আরো কিছু সময় অপেক্ষা করে তারপর গলি থেকে বের হলাম । আর তখনই বিদ্যুৎ চলে এল । আলোতেই দেখতে পেলাম যে রাস্তার উপরেই দশজনের দলটা পড়ে আছে । কাছে গিয়ে টের পেলাম ভয়ংকর অবস্থা । মরে নি যদিও মনে কেউ ভয়ংকর কোন প্রাণী ওদের আক্রমন করেছে এবং কিছু সময়ের পরেই বুঝতে পারলাম যে কেউ এসে দাড়িয়েছে আমার পেছনে ।

আমি আবারও চুপ করলাম । সবাই যেন এক সাথে বলে উঠলো । এরপর কী হল?
-আর কী হবে? তাকেই দেখতে পেলাম । সেই একই চেহারা আর মুখে একটা তাচ্ছিল্যের হাসি নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রয়েছে । আমার দিকে তাকিয়েই বলল, এই তোমার সেরা জীব ! হুহ !

আমাকে আর কিছু না বলার সুযোগ দিয়েই সে চলে গেল ঘুরে । তারপর থেকে যত দিন আমি ছিলাম আমার মনে আর কখনই ভয় বলতে কিছু আসে নি । আমার কেন জানি মনে হয়েছে যে কোন বিপদে পড়লে একজন ঠিক ঠিক সে চলে আসবে । ঠিক ঠিকই সে চলে আসতো । এমন কি মাঝে মাঝে কোন আসন্ন বিপদ হলেও সে আমাকে আগে থেকে সতর্ক করে দিতো !
জাহান নামের সব থেকে জুনিয়র মেয়েটা বলল, এখনও সে আছে আপনার সাথে?
-এখনও আছে । এমন কি এইখানেও আছে !
-কী বলেন ভাইয়া !

দেখলাম জাহান ভয় পেল । আমি আরো কিছু বলতে যাচ্ছিলাম তার আগেই রুমিন বলল, গত মাসে মনে আছে একজন এসেছিলো আমাদের অফিসে । ওর পরিচিত । একটু শ্যামলা লম্বা করে ! আমাদেরকে দুপুরে রেখে চলে গেল !
একজন বলল, হ্যা । মনে আছে ।
-ওর নাম হচ্ছে জসিম ।

সবাই এক সাথে বলল, কী !
-হ্যা । এই গল্প সে অনেককে বলেই বোকা বানায় ।

সবাই হইহই করে উঠলো । অবশ্য আর জমলো না আড্ডা । খাওয়ার ডাক পরে গেল । আমরা খাওয়া দাওয়া শেষ করে যে যার ঘরে চলে গেল । নতুন জায়গাতে ঘুম আসতে আমার একটু সময় লাগে । আমি দরজা খুলে বাইরে বের হয়ে এলাম। আবারও সেই স্থানে বসলাম যেখানে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম । কিছু সময়ের ভেতরেই টের পেলাম কেউ এসে দাড়িয়েছে আমার ঠিক পেছনে । আমি জানি সে কে ! তাই পেছনে ফিরে তাকালাম না । রুমিন এসে বসলো আমার ঠিক পাশেই । ওর শরীর থেকে সেই দ্বীপ্তিময় আভা বের হচ্ছে । আমার দিকে বিরক্তি ভরা কন্ঠে বলল, তোমাকে না বলেছি আমাদের গল্প এভাবে না বলতে ! আমার ভাই তোমার বন্ধুকে মেরেছে আর তুমি তাকে মেরেছো ! তারপর আমি তোমাকে পজেজ করেছি । তারপর তোমার প্রেমে পড়েচি ! কী হাস্যকর সব গল্প ।
আমি বললাম কিন্তু প্রেমে তো ঠিকই পরেছো ! পর নি ! আমার রাজপুত্রের মত চেহারা দেখে !
-আমার রাজপুত্র !

আমি আরো কিছু বলতে যাচ্ছিলাম তার আগেই রুমিন যেন কিছু একটা টের পেল । আমার দিকে তাকিয়ে বলল, চল ঐ দিকে যাই ।
রুমিন নিচের খাঁদটা নির্দেশ করলো ।
-ঐ দিকে !
-আমার পরিচিত একজন থাকে ওখানে । চল দেখা করে আসি ।

আমি আর কিছু বললাম না । হ্যা সত্য যে রুমিনের সাথে আমার ওভাবে পরিচয় নি । তবে এই অশরীরি জ্বীনটা যে আমার প্রেমিকা সেই ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই এবং আমার সকল বিপদ আপদে সে আমার কাছে চলে আসে সেটাও মিথ্যা নয় । সামনে খুব জলদিই আমাদের বিয়ে হয়ে যাবে । কেউ হয়তো কোন দিন টেরও পাবে না যে রুমিনের মত কত জ্বীন রয়েছে আমাদের মাঝেই ।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 4.7 / 5. Vote count: 38

No votes so far! Be the first to rate this post.


Discover more from অপু তানভীর

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

About অপু তানভীর

আমি অতি ভাল একজন ছেলে।

View all posts by অপু তানভীর →

One Comment on “রুমিন”

  1. কাস! এমন একটা মেয়ে জ্বীন যদি আমার প্রেমিকা হতো????

Comments are closed.