রুমিন

oputanvir
4.7
(37)

আমি যে ভুতের পাল্লায় পড়েছিলাম সে গল্প আপনাদের আগে একবার করেছি মনে আছে আপনার ?

আমার কথা শুনে সবাই আমার দিকে খানিকটা কৌতুকের চোখে তাকালো । যেন আমি কোন হাসি ঠোট্টার কথা বলেছি । অবশ্য এমন কথা এই যুগে হাসির কথার মতই শোনাবে । এর বেশি কিছু না । আমরা অফিস থেকে ঘুরতে এসেছি রাঙ্গামাটিতে । সারাদিন ঘোরাঘুরির পরে আমরা লেক ভিউ রিসোর্টে অবস্থান করছি । রাতের খাওয়ার আগে বসে বসে আড্ডা দিচ্ছে । আমরা মোট দশজন আপাতত আছি । রিসোর্টটা গড়ে উঠেছে একেবারে পাহাড়ের বুকে । এক পাশে উঠে গেছে উচু পাহাড়া অন্য দিকে আবার নিচু খাঁদ । আমরা খাদের পাশে খোলা বসায় স্থানে বসে আড্ডা দিচ্ছি । এই সময়ে ভুতের গল্প বেশ ভাল জমে ।

রফিক ভাই বললেন, ভুতের গল্প জমে বেশ । শুরু করে দাও !
আমি সবার দিকে তাকালাম । রুমিনের দিকে তাকিয়ে দেখি আমার দিকে তাকিয়ে মৃদ্যু ভাবে হাসছে । আমি যে গল্প বলতে যাবো সেটা সে জানে বেশ ভাল ভাবেই । আমার সথে রুমিনের ভাবটা সবার থেকে বেশি । এটা অফিসের সবাই জানে ।

আমি আমার গল্প শুরু করলাম ।

আপনারা তো জানেনই যে আমি ছোট থেকেই গ্রামে বড় হয়েছি । গ্রামের ছেলেরা যেমন হয় আমিও ব্যতিক্রম ছিলাম না । আমার অন্যতম পছন্দের কাজ ছিল মাছ ধরা । আমার সাথে আমার বন্ধু জমিস থাকতো । আমি দিনে দুপুরে রাতে সব সময় মাছ ধরতাম যখনই সুযোগ পেতাম । এভাবেই বড় হয়েছি । গ্রামের পুকুর খাল কিংবা বিলে আমরা মাছ ধরতাম । কখন জাল দিয়ে আবার কখন বরশি দিয়ে । বিশেষ পুকুরে মাছ ধরাতাম বরশি দিয়ে লুকিয়ে । কারণ পুকুর গুলো অন্য মানুষের ছিল !
তবে আমাদের সব স্থানে যাওয়ার অনুমুতি ছিল না । বিশেষ করে বিটের ধারে বিলে আমাদের যাওয়া মানা ছিল । কেবল আমাদেরই না গ্রামের বড়রাও ওখানে যেত না । গেলেও ১০/১২ জনের বড় দল নিয়ে দিনের বেলা যেত । রাতের বেলা যাওয়ার কারো সাহস হত না । তবে আমরা সেই মানতাম না । আমরা সবার চোখ লুকিয়ে ঠিকই যেতাম সেখানে । এবং এমনই একদিন আমাদের জীবনে দুর্ঘটনা ঘটে । বিটের ধারের বিলে এতো বড় বড় মাছ পাওয়া যেত সেখানে জাল দিয়ে না আমরা কোচ দিয়ে মাছ ধরতাম । একদিন বিকেল বেলা নৌকা নিয়ে আমি আর জসিম সেখানে হাজির হয়েছি । মাছ ধরতে শুরু করলাম । এক পাশে বেঁধে রেখে আমরা দুজন একেরপর এক কোচ দিয়ে মাছ ধরছি । মাছ ধরছি আর নৌকায় গিয়ে রাখছি। কখন যে সন্ধ্যা নেমে এল টের পেলাম না । মনে হল যেন কেউ ঝুপ করেই অন্ধকার নামিয়ে দিল। আমরা দ্রুত বাসার দিকে রওয়ানা দিতে যাবো তখনই খেয়াল করলাম যে এতো সময় ধরে আমরা যে মাছ ধরছি তা নৌকায় নেই । কম করে হলেও ২৫/৩০টা মাছ আমরা ধরেছি যার একটাও নেই ।
মাছ গেল কোথায় ! আমরা এদিক ওদিক ওদিকে তাকিয়ে মাছ কোথায় গেল খুজছি তখনই জমিস আমার কাধ ঝাকিয়ে বলল, চল এখান থেকে !
-মানে?
-জলদি চল !
আমি জমিসের চোখের দৃষ্টি খেয়াল করেই তাকালাম । খালের পাড়ে বড় জারুল গাছের ডালে সেটা বসে রয়েছে । ঠিক মানুষের মত আকৃত হলেও মানুষ যে না সেটা বুঝতে কষ্ট হল না । কালো কুচকুচে দেহের রং। একটু লম্বা আর চিকন মত । হাত দুটো একটু যেন বেশি লম্বা । হাতের আঙ্গুল এবং তার নখ গুলো আমাদের থেকেও বেশি লম্বা । ওটার হাতে আমাদের ধরা কয়েকটা মাছ ।

আমাদের দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিয়ে বলল, মাছ নিবি ! আয় ! আমাদের দুজনের যে তখন কী হল আমরা কেউ বলতে পারবো না । নৌকা খুলে পালানোর সময় তখন ছিলনা । এই বিলে নৌকা ছাড়াও জঙ্গল দিয়ে যাওয়ার রাস্তাও ছিল । আমরা দুজনেই সেদিকে দৌড় দিলাম । দৌড়ানোর সময় কেবল অনুভব করছিলাম যে কেউ যেন আমাদের পেছন পেছনে দৌড়ে আসছে । একটা যখন যখন হুস হল দেখটে পেলাম আমার পেছনে জসিম নেই । আমি একা দৌড়াচ্ছি। আমি তখনও গ্রামের কাছে আসি নি । আমার তখনই উচিৎ ছিল গ্রামে গিয়ে মানুষজন ডেকে আনা। তবে সেদিকে না গিয়ে আমি আবার পেছনের পথে দৌড় দিলাম ।

কত সময় দৌড়েছি মনে নেই তবে জসিমের দেখা পেলাম পথের ধারেই । জসিম মাটিতে পড়ে আছে এবং তার উপরে সেই কালো মত প্রাণী । জসিমের গলা কামড়ে ধরেছে । আমি জানিনা আমার মাঝে কী হল ! তবে জসিমকে ঐ অবস্থায় দেখে আমি হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেললাম । হাতের কোঁচটা দিয়ে আমি সেই প্রাণীটার পিঠে আঘাত করলাম । তীব্র একটা চিৎকার করে উঠলো ওটা । আমি থামলাম না । একবার দুইবার বারবার আঘাত করতেই লাগলাম !

সবার দিকে থাকিয়ে দেখি সবাই কেমন তন্ময় হয়ে শুনছে । আমি আবারও বলতে শুরু করলাম ।
জসিমকে পরীক্ষা করে দেখলাম যে ওর জ্ঞান নেই । হলার কাছের ক্ষতটা বেশ গাঢ় । ওকে কাধে করে নিয়ে চললাম গ্রামের দিকে ।

দুদিন পরেই জসিম মারা গেল । আর আমার শরীর খারাপ হল । আমার জ্বর এল গা কাঁপিয়ে । সেই সময়ে আসলে আমার কিছুই মনে নেই ঠিক মত । আমার কেবল মনে আছে আমাকে কেউ যেন সব সময় দেখতো । আমি খুব বেশি ভয় পেতাম । আমার শরীর দিন দিন খারাপ হচ্ছিলো । আমি যে মারা যাচ্ছি সেটা বুঝতে কষ্ট হল না । তবে আমার বাবা হাল ছাড়লেন না । সে একজন বড় হুজুর ডেকে নিয়ে এলেন । সেই হুজুরই আবিস্কার করলেন যে আমাকে আসলে জ্বীনে ধরেছে । এক্সরসিজন করা হল । সেই জ্বীনকে হাজির করা হল । জ্বীনের বন্তব্য ছিল যে আমি ওর ভাইকে মেরেছি । তাই সে আমাকেও মেরে ফেলবে । হুজুর তখন বলল তার ভাইও তো আমার বন্ধুকে মেরেছে । তবে এই হুজুর বড় হুজুর ছিল । সে সেই জ্বীনকে বোতলে ভরলেন । তারপর সেটা আমার আব্বাকে দিয়ে মাটিতে পুতে ফেলতে বললেন।

(উপরের এই অংশটুকু আহমেদ বাবুর ইউটিউব চ্যানেল অডভুতুরের চ্যানেল থেকে অনুপ্রাণীত)

আমি কদিনের ভেতরেই সুস্থ হয়ে উঠলাম । তবে জসিম মারা যাওয়ার কারণে আমি আর মত কিছুই করতাম না । একেবারে নিশ্চুপ হয়ে গিয়েছিলাম । সেই সাথে আরও একটা ব্যাপার আমার মাথা থেকে কিছুতেই যাচ্ছিলো না । জ্বীনটাকে বন্দী করার ব্যাপারটা । জ্বীনটার আচরণ যে স্বাভাবিক ছিল । যত খারাপই হোক আমি তার ভাইকে মেরেছি সে আমার ক্ষতি করতে চাইবেই ।

আমি কৌশলে জ্বীনের বোতলটা কোথায় পুতে রাখা হয়েছে সেটা জেনে নিলাম । তারপর একদিন সময় সুযোগ মত সেটা তুলে নিয়ে এলাম । রাতের বেলাতেই সেটা নিয়ে গেলাম জঙ্গলে । তারপর সেটার মুখ খুলে দিলাম । অন্ধকারের ভেতরেও আমি স্পষ্ট ধোয়ার কুণ্ডলিটা দেখতে পেলাম ঠিকই । আমি ভেবেছিলাম যে ভয়ংকর দর্শন কোন কিছু দেখবো । তবে আমাকে খানিকটা অবাক করে দিয়েই একটা নারীর অবয়ব ধারণ করলো সেটা । স্নিগ্ধ শীতল শান্ত চেহারা । অন্ধকারের ভেতরেও তার শরীর থেকে আলো দেখতে পাচ্ছিলাম আমি । আমার দিকে তাকিয়ে বলল, আমাকে মুক্ত করে দিলে কেন?
-জানি না ।
-আমি যে তোামকে এখন মেরে ফেলতে পারি সেটা জানি !

আমি যদিও নিজের শরীর বন্ধ করে নিয়েছিলাম । সাথে করে একটা ছোট কোরআন শরীফও ছিল । সে আবার বলল, তোমার ঐ সব কিছু আমাকে আটকাতে পারবে না । বুঝেছো !
আমি একটু ভয় পেলাম বটে । তবে জানি আমার মনে হল জ্বীনটা এমন কিছু করবে না । আমি বললাম আসলে তুমি যা করেছো তা তোমার বেলাতে ঠিক । আমি যা করেছি সেটা আমার বেলাতেও ঠিক । তোমার ভাই আমাদের আক্রমন করেছিলম আগে । আমরা করিনি । তারপেও প্রিয়জন হারিয়েছো তুমি । তোমার রাগ প্রকাশ জায়েজ । আর সেটার কারণে তোমাকে এভাবে আটকে রাখাটা আমি সঠিক বলে মনে করি না । তাই আামর দিক থেকে আমি মুক্ত করে দিলাম । তুমি যা ইচ্ছে করতে পারো । তাতে আমার কোন আপত্তি নেই ।
জ্বীনটি আমার দিকে তাকিয়েই কী যেন ভাবলো । তারপর হাসলো । বলল, তোমরা মানুষরা বড় অদ্ভুত ।
-এইকারণেই আমরা সৃষ্টির সেরা জীব ।
-সেরা না ছাই !

আমি এই পর্যন্ত বলে চুপ করলাম । আকিব বলল, তারপর?
-তারপর আর কি ! চলে এলাম । জীবন আগের মত হল । তবে আর মাছ ধরতে যেতাম না আর । জসিমকে ছাড়া আমার ভাল লাগতো না । পড়াশোনায় মন দিলাম । ইন্টার পরীক্ষার পরে ঢাকাতে চলে এলাম ।
-ঐ মেয়ে জ্বীন?
-আর ছিলাম না গ্রামে । গ্রামে যদিও মনে হত যে কেউ আমাকে দেখছে আড়াল থেকে তবে আগের মত কেন জানি ভয় পেতাম না । মনে হত যে যদি মেরে ফেলতেই চাইতো তাহলে মেরে ফেলতে পারতো । মারে যখন নি আর কিছু বলবে না।
রফিক ভাই বলল, আমার কেন জানি মনে হচ্ছে ঘটনা এখানেই শেষ না ।
আমি হাসলাম । তারপর বললাম, হ্যা ঘটনা এখানে শেষ না । ঢাকাতে পড়তে আসার পরে গ্রামে যাওয়ার পরিমান একেবারে কমে গেল । আমার বাবা নিজের গ্রামের জমিজমা অনেকটাই বিক্রি করে দিয়ে সেই টাকা নিয়ে চলে এল ঢাকাতে । গ্রামে কেবল তখন অল্প কিছু জমি আর আবাদের বাড়িটা ছিল। তাই গ্রামে আর যাওয়াই হত না । এই তাই তখন আর মনে আসতো না । নিজের পড়াশোনা আর বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেলাম ।
আমি ভেবেছিলাম আমার জীবন থেকে ঐ ঘটনা একেবারে মুছে গিয়েছে । তবে আমার ধারণ ভুল প্রমানিত হল । বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিকে হলে থাকলেও বাবা যখন ঢাকাতে চলে আসে তখন আর হলে থাকতাম না । বাসা থেকেও ক্লাস করতাম । একবার বিশ্ববিদ্যালয়ে খুব ঝামেলা চলছিল । কিছু পলিটিক্যাল ছেলে মিলে একজন সাধারণ ছেলেকে টরচার করে মেরে ফেলছিলো । এটাতেই সাধারণ ছাত্ররা প্রতিবাদি হয়ে উঠেছিলো খুব । এবং আমি নিজেও তার ভেতরে ছিলাম । আরো ভাল করে বললে প্রথম দিকে ছিলাম । আন্দোলন থামাতে আমাকে নানান ভাবে ভয় ভীতি হুমকি দিয়ে কল আসতে লাগলো । তবে আমি দমলাম না । যদিও সাবধানেই থাকতাম তবে একদিন একটু ভুল হয়ে গেল । আমি একা একা বাড়ি ফিরছিলাম সেদিন । বুঝতে পারি নি ওরা ক্যাম্পাসের বাইরে এসেও হামলা করতে পারে ।

আমাকে একা পেয়ে ওরা রামদা নিয়ে তাড়া করলো । ওরা কম করে হলেও দশ জন ছিল। আমি ওদের সাথে একা কোন ভাবেই পেরে উঠতাম । দাড়িয়ে থাকলে মারা পরতাম । দৌড় দিলাম প্রাণ পণে । একটা নির্জন আর অন্ধকার আর পরিত্যাক্ত গলির ভেতরে ঢুকেই মনে হল ভুল করলাম । কারণ এই গলি দিয়ে বাইরে যাওয়ার উপায় নেই । কোন দিকে যাবো ভাবছি তখনই ধুপ করে বিদ্যুৎ চলে গেল । পুরো এলাকাটা একেবারে গাঢ় অন্ধকারে ভরে গেল । আমি অপেক্ষা করতে লাগলাম ওদের আসার । মরলে দুই একজনকে নিয়েই মরবো ।
তবে আমাকে অবাক করে দিয়েও গলির ঐ পাশে ভয়ংকর চিৎকার শুনতে পেলাম । এতোটাই ভয়ংকর যে আমি নিজের ভয় করতে শুরু করলো । মনে হল যেন কোন ভয়ংকর প্রাণী ওদের ভয়ংকর ভাবে আক্রমন করেছে । যেমন হঠাৎ করে শুরু হয়েছিলো তেমনি শেষও হয়ে গেল । আমি আরো কিছু সময় অপেক্ষা করে তারপর গলি থেকে বের হলাম । আর তখনই বিদ্যুৎ চলে এল । আলোতেই দেখতে পেলাম যে রাস্তার উপরেই দশজনের দলটা পড়ে আছে । কাছে গিয়ে টের পেলাম ভয়ংকর অবস্থা । মরে নি যদিও মনে কেউ ভয়ংকর কোন প্রাণী ওদের আক্রমন করেছে এবং কিছু সময়ের পরেই বুঝতে পারলাম যে কেউ এসে দাড়িয়েছে আমার পেছনে ।

আমি আবারও চুপ করলাম । সবাই যেন এক সাথে বলে উঠলো । এরপর কী হল?
-আর কী হবে? তাকেই দেখতে পেলাম । সেই একই চেহারা আর মুখে একটা তাচ্ছিল্যের হাসি নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রয়েছে । আমার দিকে তাকিয়েই বলল, এই তোমার সেরা জীব ! হুহ !

আমাকে আর কিছু না বলার সুযোগ দিয়েই সে চলে গেল ঘুরে । তারপর থেকে যত দিন আমি ছিলাম আমার মনে আর কখনই ভয় বলতে কিছু আসে নি । আমার কেন জানি মনে হয়েছে যে কোন বিপদে পড়লে একজন ঠিক ঠিক সে চলে আসবে । ঠিক ঠিকই সে চলে আসতো । এমন কি মাঝে মাঝে কোন আসন্ন বিপদ হলেও সে আমাকে আগে থেকে সতর্ক করে দিতো !
জাহান নামের সব থেকে জুনিয়র মেয়েটা বলল, এখনও সে আছে আপনার সাথে?
-এখনও আছে । এমন কি এইখানেও আছে !
-কী বলেন ভাইয়া !

দেখলাম জাহান ভয় পেল । আমি আরো কিছু বলতে যাচ্ছিলাম তার আগেই রুমিন বলল, গত মাসে মনে আছে একজন এসেছিলো আমাদের অফিসে । ওর পরিচিত । একটু শ্যামলা লম্বা করে ! আমাদেরকে দুপুরে রেখে চলে গেল !
একজন বলল, হ্যা । মনে আছে ।
-ওর নাম হচ্ছে জসিম ।

সবাই এক সাথে বলল, কী !
-হ্যা । এই গল্প সে অনেককে বলেই বোকা বানায় ।

সবাই হইহই করে উঠলো । অবশ্য আর জমলো না আড্ডা । খাওয়ার ডাক পরে গেল । আমরা খাওয়া দাওয়া শেষ করে যে যার ঘরে চলে গেল । নতুন জায়গাতে ঘুম আসতে আমার একটু সময় লাগে । আমি দরজা খুলে বাইরে বের হয়ে এলাম। আবারও সেই স্থানে বসলাম যেখানে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম । কিছু সময়ের ভেতরেই টের পেলাম কেউ এসে দাড়িয়েছে আমার ঠিক পেছনে । আমি জানি সে কে ! তাই পেছনে ফিরে তাকালাম না । রুমিন এসে বসলো আমার ঠিক পাশেই । ওর শরীর থেকে সেই দ্বীপ্তিময় আভা বের হচ্ছে । আমার দিকে বিরক্তি ভরা কন্ঠে বলল, তোমাকে না বলেছি আমাদের গল্প এভাবে না বলতে ! আমার ভাই তোমার বন্ধুকে মেরেছে আর তুমি তাকে মেরেছো ! তারপর আমি তোমাকে পজেজ করেছি । তারপর তোমার প্রেমে পড়েচি ! কী হাস্যকর সব গল্প ।
আমি বললাম কিন্তু প্রেমে তো ঠিকই পরেছো ! পর নি ! আমার রাজপুত্রের মত চেহারা দেখে !
-আমার রাজপুত্র !

আমি আরো কিছু বলতে যাচ্ছিলাম তার আগেই রুমিন যেন কিছু একটা টের পেল । আমার দিকে তাকিয়ে বলল, চল ঐ দিকে যাই ।
রুমিন নিচের খাঁদটা নির্দেশ করলো ।
-ঐ দিকে !
-আমার পরিচিত একজন থাকে ওখানে । চল দেখা করে আসি ।

আমি আর কিছু বললাম না । হ্যা সত্য যে রুমিনের সাথে আমার ওভাবে পরিচয় নি । তবে এই অশরীরি জ্বীনটা যে আমার প্রেমিকা সেই ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই এবং আমার সকল বিপদ আপদে সে আমার কাছে চলে আসে সেটাও মিথ্যা নয় । সামনে খুব জলদিই আমাদের বিয়ে হয়ে যাবে । কেউ হয়তো কোন দিন টেরও পাবে না যে রুমিনের মত কত জ্বীন রয়েছে আমাদের মাঝেই ।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 4.7 / 5. Vote count: 37

No votes so far! Be the first to rate this post.

About অপু তানভীর

আমি অতি ভাল একজন ছেলে।

View all posts by অপু তানভীর →

One Comment on “রুমিন”

  1. কাস! এমন একটা মেয়ে জ্বীন যদি আমার প্রেমিকা হতো????

Comments are closed.