সে এখন অন্য কেউ

oputanvir
4.8
(53)

আমি ঠিকই জানতাম যে নেহা আমাদের বাসায় আসবে । কদিনের আমার অস্বাভাবিক আচরণ ওর ঠিকই নজরে এসেছে । আসাটা স্বাভাবিক । ওর সাথে আমার পরিচয় অনেক দিনেরই । কলেজের কোচিং থেকে শুরু হয়েছে । এখন ক্যাম্পাসেও একই সাথে আমাদের পড়াশোনা । আমাদের বাসাতেও আসে নিয়মিত । সেই আমি যদি হঠাৎ করে ওর সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিই কিংবা এড়িয়ে চলি তাহলে সেটা যে ওর চোখে বাঁধবে সেটা খুবই স্বাভাবিক।

আমি ওর গলার আওয়াজ পেলাম রুম থেকেই । মায়ের সাথে কথা বলছে । আমি কোথায় লুকিয়ে আছি সেটা জানতে চাইছে । এছাড়া আমি জানি কদিন থেকে ওকে একেবারেই এড়িয়ে চলছি সেটাও অভিযোগ করছে । মাও বলছে যে আমি নাকি কদিন থেকেই অস্বাভাবিক আচরণ করছি । ঠিক মত খাওয়া দাওয়া করি না, কোথাও যাই না এইসব ।

আমি টিশার্টটা পরে নিলাম । হাফ প্যান্ট বদলে একবার ফুল প্যান্ট পরার পরিকল্পনা করলাম বটে তবে সেটা বাদ দিলাম । তারপর নিজের বিছানার উপরেই শুয়ে থাকলাম যেমন ছিলাম । হাতে ফোন নিয়ে টিপছি একভাবে যদিও আমার মনযোগ দরজার দিকে । আমি জানি নেহা একটু পরেই দরজা দিয়ে ঢুকবে । আমার দিকে কিছু একটা ছুড়ে মারবে । অবস্য প্রতিবার আমাদের বাসায় আসার সময় সে আমার জন্য চকলেট নিয়ে আসে । দামী কোন চকলেট না অবশ্য । আমাদের বাসার সামনে একটা কনফেকশনারির দোকান আছে । সেখান থেকে এক টাকা করে হাত মুঠো ভর্তি চকলেট নিয়ে আসে । মূলত সেগুলোই আমাদের দিকে ছুড়ে ঘরে ঢুকেই ।

আজও তাই হল । দরজাটা খোলার আওয়াজ পেলাম । আমি যদিও তাকাই নি ওর দিকে তারপরেও অনুভব করলাম যে ও ঘরের ভেতরে ঢুকলো । ঠিক তার পরপরই আমার শরীরের উপরে চকলেট গুলো পড়লাম । আমি উঠে বসলাম । তাকালাম নেহার দিকে । আমার দিকে তাকিয়ে রয়েছে কিছুটা গোমরা মুখে । আমি ওকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত ভাল করে দেখলাম একবার ।

নেহা বেশির ভাগ সময়েই সেলোহার কামিজ পরে আমাদের এখানে আসার সময় । তবে আজকে সে একটা কালো টিশার্ট আর জিন্স পরে এসেছে । হলার একটা বড় ওড়না জড়ানো । এখানে আসার জন্যই হয়তো ওড়ণাটা পরেছে । নয়তো ওটা পরতো না । নেহা যখন যা পরে তা পুরোপুরি পরে । ওয়েস্টার্ন পরলে পুরোপুরি ওয়েস্টার্ন আবার দেশী পরলে পুরোটুকুই দেশি ।

আমার দিকে তাকিয়ে বলল, তোর কী হয়েছে শুনি?
আমি যথা সম্ভব নিজের কন্ঠস্বর শান্ত করে বললাম, কী হবে?
-তাহলে এমন ঢং করছিস কেন শুনি কদিন থেকে ? কতবার ফোন দিয়েছি ! বলিস না যে দেখি নি । আমি জানি তোর হাতে সব সময় ফোন থাকে । তুই ফোন ধরিস নি কারণ তুই ধরতে চাস নি । কেন?

আমি যুতসই কোন উত্তর দিতে পারলাম না । নেহা আমার স্বভাব খুব ভাল করেই জানে । কোন কাজে আমি কেমন আচরণ করি সেটাও ও খুব ভাল করেই জানে । তাই ওকে ঠিক ভূগোল বোঝানো সম্ভব না । আমি তাই সেদিকে গেলাম না । বললাম, কই না তো এমন কিছু না ।

নেহা এবার ধীর পায়ে আমার দিকে এগিয়ে এল । বিছানার এককোনে বসে বলল, কী হয়েছে ?
-কিছু হয় নি।
-সৌরভ আমি কদিন থেকে বুঝতে পারছি কিছু একটা হয়েছে । আমি তোর আচরণ ঠিক ঠিক বুঝি । কী হয়েছে খুলে বল । ট্যুরের পর থেকেই দেখছি ব্যাপারটা !

ট্যুরের কথা মনে হতেই সেই দৃশ্যটা চোখের সামনে চলে এল । আমি সাথে সাথে ওর দিক থেকে চোখ সরিয়ে নিলাম । জানালার দিকে তাকিয়ে রইলাম একভাবে । যতই আমি চোখের সামনে থেকে দৃশ্যটা সরিয়ে দিতে চাইলাম ততই সেটা আমার চোখের সামনে চলে এল । এই কদিনে এই দৃশ্যটা আমাকে শান্তি দেয় নি একবারও । বারবার নিজেকে কেবল ছোট মনে হয়েছে । বারবার মনে হয়েছে যে আমি কিভাবে এমন কিছু ভাবতেও পারলাম ! নেহা আমার এতো কাছের একজন বন্ধু তারপরেও ওর দিকে আমি এভাবে কিভাবে তাকাতে পারলাম !

আমি তখনই অনুভব করলাম যে নেহা উঠে এসে আমার পাশে বসলাম । একদম আমার পাশে । তারপর আমার হাত টা ধরলো । নেহা এর আগেও আমার হাত ধরেছে । আমার তখন কিছুই মনে হয় নি কিন্তু আজকে কেমন যেন একটা অচেনা অনুভূতি হল । এই অনুভূতি হল আমার ভেতরে । আমি চাইলাম নেহার হাত থেকে হাতটা সরিয়ে নিতে কিন্তু পারলাম না । নেহা বেশ শক্ত করেই ধরেছে হাতটা । আমি যদি হাত ছাড়ানোর জন্য শক্তি প্রয়োগ করি তাহলে নেহাকে ব্যাথা দিতে হবে ।
নেহা বলল, কী হয়েছে বলবি আমাকে?
-আই এম সরি !
-সরি ? তুই কী এমন করলি !

আমি কিছুটা সময় কেবল চুপ করে রইলাম । তারপর বলল, ট্যুরের কথা মনে আছে?
-হুম ।
-তুই আদিবার সাথে বসেছিলি প্রথমে তারপর আমার পাশে এলি ।
-হ্যা ।
-তারপর এক সময়ে ঘুমিয়ে গিয়েছি । সবাই আমরা ঘুমিয়েছিলাম ।
-হ্যা ।
-আমি ঘুমিয়েই ছিলাম । কুমিল্লার কিছু আগে আমার ঘুম ভেঙ্গে যায় । তখনই খেয়াল করি যে তুমি আমার হাত ধরে ঘুমিয়ে আছিস । তোর দেহটা আমার উপরেই খানিকটা ঝুকে এসেছে । শরীরের সাথে শরীর লেগেছে । আমি এর আগে কখনোই তোর এতো কাছে আসি নেহা । এতো কাছে ……!!

আমি কী যে বলবো খুজে পেলাম না । আবারও সেই দৃশ্য চোখের সামনে ভেসে এল । নেহার শরীরটা আমার শরীরের উপরেই চলে এসেছে অনেকটা । বাসের ঝাকুনিতে সেটা নড়ছে ।

নেহা আমার পাশে বসে আছে । আমি জানি আমার দিকে তাকিয়ে রয়েছে । আমি ওর দিকে তাকাতে সাহস পাচ্ছি না । আমি নিচের দিকে তাকিয়ে বললাম, আমি ঐদিন কিভাবে নিজেকে নিয়ন্ত্রন করেছি সেটা আমি নিজে জানি । কিন্তু সেই সাথে আমি বুঝতে পেরেছি যে তোর প্রতি আমার অনুভূতি একেবারে বদলে গেছে নেহা । একেবারে । তোমাকে আমি আগে যেভাবে দেখতাম এখন চাইলেও সেভাবে দেখতে পারছি না । চোখের সামনে কত খেয়াল চলে আসছে বারবার । এরপরে আবারও যদি ঐ রকম পরিস্থিতি আসে আমি নিজেকে নিয়ন্ত্রন করতে পারবো না নেহা । খারাপ কিছু হয়ে যাবে । তাই এর থেকে দুরে এসে এসেছি । আমাকে প্লিজ মাফ করে দিস তুই ।

নেহা আর কথা বলল না । সম্ভবত আমার কাছ থেকে এমন কথা সে আশা করে নি । দেখলাম হাত ছেড়ে দিল । তারপর একটু পরে ঘর থেকে বের হয়ে গেল । আমি যখন ঘুরে তাকালাম তখন নেহা দরজা বন্ধ করে দিয়ে চলে গেছে ।

আমি আর কিছু ভাবতে চাইলাম না । মনের ভেতরে একটা কষ্ট হচ্ছে কেন জানি । নেহা আমার খুব কাছের মানুষ ছিল । এখনও আছে কিন্তু ছেলে মেয়ের এই দেয়ালের কাছে আমি না চাইলেও একটা ভাবনা চলে আসছে বারবার । এই আকর্ষণ আমি কিছুতেই ঝেড়ে ফেলতে পারছি না । আর এই কারণেই আমাদের মাঝে একটা দেয়াল তৈরি হয়ে গেছে আপনা আপনি । নেহাকে আমি কোন ভাবেই কষ্ট দিতে চাই না । আমি কখনই চাই না আমি এমন কোন আচরণ করি যাতে নেহা কষ্ট পাক কিংবা আমার কোন খারাপ আচরণ আমাকে নেহার সামনে একটা পার্ভাট হিসাবে উপস্থান করুক । তাই নিজের উপর নিয়ন্ত্রন হারানোর আগেই ওর কাছে থেকে আমার দুরে সরে আসা উচিৎ । সেই কাজই আমি করলাম । জানি না নেহা আমাকে কী মনে করলো ।

আমি জানি আমার মত সেও কষ্ট পাবে । পাক একটু । অন্য কিছু যদি হয় তাহলে সে কষ্ট তো পাবেই, আমাকে সে ঘৃণাও করবে । এটা চাই না মোটেও আমি । আমি কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনতে শুরু করলাম । কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি সেটা নিজেও জানি না । ঘুম ভেঙ্গে দেখি দুপুর হয়ে গেছে । ঘড়িতে আড়াইটার বেশি বাজে । একটু ক্ষুধা অনুভব করলাম ।

দরজা খুলে যখন ডাইনিং এ এলাম তখন অবাক হয়ে দেখতে পেলাম নেহা ডাইনিংয়ে খাবার সাজাচ্ছে । ওকে এখানে আমি দেখবো ভাবি নি । ভেবেছিলাম ও চলে গেছে । আমাকে দেখে নেহা আম্মুকে উদ্দেশ্য করে বলল, আন্টি আপনার গুনধর ছেলে উঠেছে । দিনের বেলা এতো ঘুম কেউ দেয় আমার জানা ছিল না । বাসার একটা কাজ করিস না । সারা দিন করিস কী তুই !
আম্মু রান্নাঘর থেকে বলল, তোমার আঙ্কেলও ঠিক একই স্বভাবের । এক গ্লাস পানি পর্যন্ত ঢেলে খায় না ।
-আমি হলে এদের ছেড়ে কবেই চলে যেতাম । আপনি বলে আছেন ।

আমি আসলে একটু অবাকই হয়েছি নেহার আচরণে । নেহা এর আগেও আমাদের বাসায় এসেছে । আম্মুর সাথে রান্না করেছে । দুপুরে খাওয়া দাওয়াও করেছে একসাথে । এটা একটা স্বাভাবিক আচরণ ওর জন্য কিন্তু আমার কাছ থেকে সব শোনার পরেও ও এমন স্বাভাবিক আচরন করবে সেটা আমি ভাবি নি ।

দুপুরের খাওয়া দাওয়া শেষ করতে করতেই সাড়ে তিনটা বেজে গেল । আম্মু খাওয়ার পরে একটু বিশ্রামের জন্য নিজের ঘরে গেলেন । নেহা আবারও আমার ঘরে এল । আমি আসলে কী বলব খুজে পেলাম না । ওর আচরণ আমাকে একটু দ্বিধান্বিত করে দিয়েছে ।

নেহা বলল, বস আমার সামনে ।
আমি কোন কথা না বলে বসলাম ওর সামনে । নেহা বলল, আমি বুঝতে পারছি তোর মনের অবস্থা । আমি সব সময় তোর কাছে সেইফ ফিল করেছি । শারীরিক এবং মানসিক দুই দিক থেকেই । আমার সব সময়ই মনে হয়েছে তোর কাছে কিছু বললে কিংবা তোর কাছাকাছি থাকলে আমি নিরাপদই থাকবো । অনেক ছেলেই এই বিশ্বাসটা ধরে রাখতে পারে না । কয়েক বছর আমাদের ক্যাম্পাসেই এমন ঘটনা ঘটেছিল । মনে আছে তোর?

আমার ঘটনাটা মনে আছে । আমি কেবল মাথা ঝাকালাম । নেহা বলল, তুইও কিন্তু ঐ রকম কিছু করতে পারতি । পারতি না? কিন্তু করিস নি । এই যে নিজেকে নিয়ন্ত্রন করে নিয়েছিস তারপর সামনে এই রকম কিছু যাতে না হয় সেই জন্য দুরে চলে যেতে চাচ্ছিস, এমন মানুষ খুজে পাওয়া যায় না । আমি জানি আমার প্রতি তোর অনুভূতি একেবারে বাদলে গেছে । আমাকে তুই আর কেবল বন্ধুর চোখে দেখতে পারবি না কোন দিন । তাই না?
-হুম ।

নেহা একটু থামলো । তারপর আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বলল, তো বয়ফ্রেন্ড হবি আমার?

আমি একটা ধাক্কার মত খেলাম নেহার কথা শুনে । নেহা যে এমন কিচু বলতে পারে সেটা আমি ভাবতে পারি নি । আমি খানিকটা চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে রইলাম ওর দিকে । নেহা যেন আমার তাকিয়ে থাকা দেখে একটু মজাই পেল । আমার আরো একটু কাছে এসে বসলো । তারপর আমার হাত ধরে বলল, আমাদের মেয়েরা জানিস কোন জিনিসটা সবাই ফেস করি খুব বেশি !
-কোনটা?
-এই যে আমাদের বডি, দেহটা এটা ! সুযোগ পেলেই সবাই এর প্রতি অন্যায় করে । ভিড়ের ভেতরে দেখবি সুযোগ পেলেই মেয়েদের শরীরে হাত দেয় । খুব কম মানুষ রয়েছে এটা করে না । তুই যদি ঐদিন এই সুযোগটা নিতিস, সত্যি আমার কষ্ট লাগতো অনেক । এই যে নিজেকে নিয়ন্ত্রন করেছিস, এটাতে তোর প্রতি আমার আকর্ষণ আরো বেজে গেছে অনেক অনেক বেশি । এখন আমার মনে হয়েছে যে নাহ, এই ছেলেকে কোন ভাবেই হাত ছাড়া করা যাবে না
তারপর নেহা আমার আর একটু কাছে এল । আমার ডান হাতটা নিজের দুই হাত দিয়ে ধরে কিছু সময় নাড়ানাড়ি করলো । তারপর সেটা নিজের ঠোঁটের কাছে নিয়ে মৃদু স্বরে চুমু খেল একটা । তাপর বলল, যে কোন কিছুর আগে অবশ্যই অনুমতি নিবি । ঠিক আছে ?
-চুমু খাওয়ার ক্ষেত্রেও!
নেহা আমার দিকে বলল, এখন প্রেমিক হতে পারিস নি এখন থেকে ডিমান্ড শুরু করা শুরু করে দিয়েছিস!
-সরি !
-হয়েছে তোর সরি । হ্যা সব ক্ষেত্রেই অনুমতি । মনে থাকে যেন । আর আাপতত কাউকেই জানানোর দরকার নেই । সময় মত আমিই জানাবো । ওকে !
-আচ্ছা ।
-আর এখন থেকে ভাববি যে আগের মত তোকে ছাড় দেব আমি ।

আমি সেটা জানি । এখন নেহা আর আমার কেবল বন্ধু নেই । সে আমার প্রেমিকা হয়ে গেছে । এখন তো অনেক কিছুই সে নিয়ন্ত্রন করবে । এটাই তো স্বাভাবিক ।

আমাদের গল্প নতুন করে শুরু হল, এখান থেকেই ।

একটা মানুষ এবং একটা পশুর ভেতরে পার্থক্য হচ্ছে যে কোন অবৈধ জিনিসের বেলায় মানুষ নিজেকে নিয়ন্ত্রন করতে পারে আর পশু পারে না । এই যে উপরের গল্প পড়লেন, প্রায় সব ক্ষেত্রেই এসব হয় না । এমন ভাবে গল্পের শেষ হয় না । গল্পের শেষ হয় বড় কুৎশিত ভাবে । বেশির ভাগ মানুষ তার ভেতরের পশুত্ব বিষর্জন দিতে পারে না । সময়ে সময়ে তা বের হয়ে আসে । এই জন্য এই ব্যাপারে সাবধান হওয়া ছাড়া আসলে আর কোন উপায় নেই ।

গল্পের লিংক সরাসরি পেতে হোয়াটসএপ গ্রুপ কিংবা টেলিগ্রাম চ্যানেলে জয়েন করুন । লিংক পাবেন এই ওয়েব সাইটের একদম নিচে ।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 4.8 / 5. Vote count: 53

No votes so far! Be the first to rate this post.


Discover more from অপু তানভীর

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

About অপু তানভীর

আমি অতি ভাল একজন ছেলে।

View all posts by অপু তানভীর →

One Comment on “সে এখন অন্য কেউ”

  1. Slight touch of eroticism. A light beginning of romance. Overall well written.

Comments are closed.