বউ হতে হবে ফর্সা

oputanvir
4.8
(56)

নওরিন আজকে ভেবে রেখেছিলো যে একটু আগে আগে অফিস থেকে বের হবে । তবে সেই কাজটা আর সম্ভব হল না । এমন একজন মানুষ তার সাথে দেখা করতে এল অফিসে যে তাকে রেখে কোন ভাবেই বাইরে বের হওয়া সম্ভব হল না । পিয়ন যখন এসে জানালো যে একজন মহিলা এসে দেখা করতে তখন নওরিন ঠিক বুঝতে পারে নি যে আসতে পারে । কিন্তু যখন সে গেস্ট রুমে গিয়ে হাজির হল তখন একটু অবাকই হল । এই মানুষটা ওর সাথে দেখা করতে আসবে সেটা ও ভাবতেই পারে নি । একবার মহিলার সাথে নওরিনের দেখা হয়েছিলো ।
আবিরের মা রওসনারা সোফার উপরে একটু সোজা হয়ে বসলো । নওরিন সত্যিই প্রস্তুত ছিল না আবিবের মায়ের সাথে দেখা করার জন্য । এভাবে হঠাৎ করেই তিনি কেন দেখা করতে এলেন সেটাও ঠিক বুঝতে পারছে না নওরিন । আবিরের কি কিছু হয়েছে ? গতরাতেই কথা হয়েছে ওর সাথে । যদিও বাসায় থাকলে খুব একটা কথা বলে না । মেসেজ আদান প্রদান হয় । সেই সময়েও সব কিছু স্বাভাবিক ছিল । তাহলে এখানে কেন এলেন ভদ্রমহিলা?
নওরিনের মনে হল যে আবিরের মা হয়তো ওকে তার ছেলের সাথে দেখা করতে মানা করবেন । এমন কিছু বলতেই তিনি এখানে এসেছেন । এটা ছাড়া আর কিছু তো হতে পারে না । নওরিন এবার মনে মনে একটু নিজেকে শাক্ত করে নিল । মনে মনে ঠিক করে নিল যে এমন কিছু যদি ভদ্রমহিলা বলেন তাহলে নওরিন এবার চুপ করে থাকবে না। শক্ত একটা উত্তর দিবে ।
নওরিন সামনে গিয়ে দাড়ালো । তারপর সালাম দিল । তারপর বলল, কেমন আছেন আন্টি?
-ভাল আছি। তুমি কেমন আছো মা ?

মা ! বাহ এতো মোলায়েন আর শান্ত কন্ঠ ! নওরিন একটু অবাক হল । প্রথমবার যখন রওসনারার সাথে তার দেখা হয়েছিলো তখন তার মুখ ছিল গম্ভীর । প্রথম দেখাতেই রওসনারা তাকে অপছন্দ করেছিলো । সেই চোখের দৃষ্টি নওরিন ভুলতে পারবে না । অবশ্য এই ব্যাপারটা ওর আগে থেকেই জানা । ওর গায়ের রংয়ের কারণে এমন কথা ওকে শুনতে হয়েছে সেই ছোট বেলা থেকেই । কিন্তু আজকে এমন মোলায়েম ব্যবহার কেন !
-আমি ভাল আছি আন্টি । আপনি আপনি চা খাবেন । চা দিতে বলি ।
-বল !

নওরিন উঠে গিয়ে পিয়নকে বলে দিলো দুইকাপ চা দিতে আর সাথে কিছু খাবার । এবং এই ফাঁকে আবিকে ছোট করে একটা মেসেজ পাঠালো তার মা এখানে এসেছে সেটা জানিয়ে । তারপর আবারও গেস্ট রুমে গিয়ে বসলো রওসনারার সামনে । চা চলে এল একটু পরেই । নওরিন চায়ে চুমুক দিতে দিতে বলল, আন্টি কোন দরকারে এসে ছিলেন?

চায়ের কাপ টা নামিয়ে রেখে রওসনারা বলল, আবিরের সাথে তোমার যোগাযোগ হয়?
এই সেরেছে ! এখন এই প্রশ্নের উত্তর কেমন করে দেওয়া যায় । তাকে তো আর বলা যায় না যে আপনি যদিও পছন্দ করেন না কিন্তু তার পরেও আমি আপনার ছেলের সাথে নিয়মিত দেখা করি । প্রেম করি ঘুরে বেড়াই । এমন কি মাস দুয়েক আগে তার সাথে কক্সবাজারও গিয়েছিলাম ! অবশ্য দুজনের বাসাতেই বলা হয়েছিলো যে অফিসিয়াল ট্যুরে গিয়েছে কিন্তু বাস্তবে গিয়েছে দুজন একসাথে ।

-আন্টি আসলে মাঝে মাঝে ও ফোন দেয় !

রওসনারা বলল, তোমার নাকি বিয়ে ঠিক হয়েছে ?

বিয়ে ঠিক ! নওরিন কিছুই বুঝতে পারলো না । হ্যা কথা সত্য যে বাসা থেকে ওর বিয়ে দেওয়ার জন্য চেষ্টা চলছে কিন্তু নওরিন সব গুলো বিয়েই এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে । এখনও নির্দিষ্ট করে কিছুই হয় নি । কিন্তু তখনই নওরিনের মনে হল যে আবিরের মায়ের এখানে হঠাৎ করে আসাটার পেছনে এই প্রশ্নের কোন সংযোগ আছে । নওরিন বলল, আসলে প্রায় কথা ঠিক । সামনের ঈদে সম্ভবত হবে ।

নওরিন দেখলো এই লাইণ শোনার পরে রওসনারার মুখটা যেন একটু কালো হয়ে গেল । সে নওরিনের দিকে তাকিয়ে বলল, আমি জানি তুমি আমার উপর রাগ করে আছে । অবশ্য আমি নিজেই যে আচরণ করেছি তার জন্য যে কোন মেয়েই আমাকে খারাপ চোখে দেখবে না ।

হ্যা এটা অবশ্য সত্য রওসনারা যে কাজটি করেছে সেটা বর্তমান সময়ের একটা ঘৃণ্য কাজই বলা যায় । গায়ের রং দেখে মানুষকে বিচার করার ব্যাপারটা এখনও মানুষকে এতোটা বিমহিত করে রাখে সেটা দেখে নওরিন অবাক না হয়ে পারে নি । অবশ্য রওসনারার যে বয়স সেই বয়সী মানুষের মাঝে এখনও এই ব্যাপারটা রয়েছে ।

আবির আর নওরিন এই অফিসেই আগে একসাথে চাকরি করতো । তারপর আবির বাংলাদেশে ব্যাংকে এডির চাকরি নিয়ে চলে গেছে । যখন আবির এই অফিসে ছিল তখন থেকেই আবির নওরিনের প্রতি দুর্বল ছিল । নওরিন সেটা বুঝতে পেরেছিল বেশ ভাল ভাবেই । মেয়েরা এই সব ব্যাপার গুলো বুঝতে পারে । অবশ্য নওরিনে আপত্তি কিছু ছিল না । আবির আপত্তি করার মত ছেলেও না ।
তবে আবির যে সারসরি ওকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে দিবে সেটা নওরিন ভাবে নি। ওকে নিয়ে যে আবির এতোটা সিরিয়াস ছিল সেটাও সে সেদিন আবিরের চোখে মুখে দেখতে পেয়েছিলো বেশ ভাল ভাবেই ।

তারপর কথা বার্তা এগোলো । নওরিনকে নিজের বাসায় নিয়ে গেল একদিন এবং সেদিনই নওরিন প্রথাম ধাক্কাটা খেল । আবিরের মায়ের আচরণ নওরিনের ভাল লাগলো না । নওরিন ঠিক বুঝতে পারলো যে রওসনারা তাকে পছন্দ করে নি । কিন্তু কেন পছন্দ করে নি সেটা নওরিন ঠিক বুঝতে পারে নি । তার মন একটু খারাপই হয়েছিলো । পরদিন অফিসে এসে দেখে আবিরের মুখ একেবারে গম্ভীর । সারা দিন কথা হল না । অফিস শেষ করে নওরিন নিজেই গেল আবিরের ডেস্কে । তখন অফিসটা প্রায় ফাঁকা হয়ে গেছে ।

তখনই আবির জানালো ব্যাপারটা ওকে । তার মা নওরিনকে পছন্দ করে নি । কারণ নওরিন ফর্সা নয়। তার গায়ের রং শ্যামলা এটা রওসনারার পছন্দ নয় । এটা জানার সাথে সাথে তীব্র একটা রাগ এসে জড় হয়ে নওরিনের । উঠে দাড়ালো । বাঙালীর মনভাব এখনও সেই আগের মতই আছে । বংশের মুখ উজ্জ্বল করতে বউ হতে হবে ফর্সা । মেয়ের আর কোণ গুণ থাকুক বা না থাকুক, গায়ের রং হতে হবে সাদা !

কঠিন স্বরে বলল, তাহলে আর কি ! ফর্সা মেয়ে দেখে বিয়ে করে ফেলো ।

এই বলে নওরিন চলে যাচ্ছিলো তখন আবির ওর হাত চেপে ধরলো । নওরিন হাত ছাড়িয়ে নিতেই যাচ্ছিলো তখনই অবাক হয়ে দেখলো আবির কাঁদছে । ওর চোখ দিয়ে পানি পরছে । সাথে সাথে নওরিনের রাগ গায়েব হয়ে গেল । কোন ছেলে তার জন্য কাঁঁদছে এই ব্যাপারটা ওর হজম করতে একটু সময়ই লাগলো ।
মানুষ মেয়েদের চোখের জল সহজ ভাবে নিলেও একটা পূর্ণ বয়স্ক ছেলের চোখের পানি সহজ ভাবে নিতে পারে না । নওরিন আর যেতে পারলো না । আপনা আপনি আবিরের কাছে চলে এল । তারপর ওকে জড়িয়ে ধরে দাড়িয়ে রওলো কিছুটা সময় । অনুভব করতে পারলো ছেলেটা তখনও চোখের পানি ফেলছে !

আবিরের শান্ত হতে সেদিন বেশ কিছুটা সময় লেগেছিলো । পুরোটা সময় নওরিন ওকে জড়িয়ে ধরেই ছিল । শান্ত হলে আবির বলল, আমি কী করবো বল, মা তো ! তাকে তো ছেড়ে যেতে পারি না । তোমাকেও ছেড়ে যেতে পারবো না ।

বেচার অবস্থা দেখে নওরিনের মায়াই লেগেছিলো সেদিন । ঠিকই তো ! বেচারা আসলে কোন দিকে যাবে ।

তারপর থেকে ওদের প্রেম শুরু হল । এবার আরো গাঢ় ভাবে । সেটা প্রায় বছর দুয়েক আগের ঘটনা । এর মাঝে আবির বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি পেয়ে যাবে । প্রথমে সে নওরিনকেই বলে চাকরির ব্যাপারটা । তখনও আর কাউকে বলে নি । আবিরের এখান থেকে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল না । এই কারণে বাসায় জানায় নি চাকরি পাওয়ার কথা । তবে নওরিন জোর করে পাঠিয়েছে । এতো ভাল চাকরিতে জয়েন না করার কোন কারণ নেই । এভাবেই চলছিলো । তাহলে আজকে হঠাৎ আবিরের মা এখানে এসে কেন হাজির হল ! নওরিন জানে না । বুঝতেও পারছে না ।

তখনই মোবাইলে আবিরের একটা মেসেজ এল । সে দেখলো সে । সেখানে একটা লাইন লেখা ।
মা জানে তোমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে ।

মেসেজের দিকে কিছু সময় তাকিয়ে রইলো । কিছু যেন বোঝার চেষ্টা করছে মেসেজ থেকে । তাহলে কি ওর বিয়ে হয়ে যাচ্ছে শুনেই আবিরের মা এখানে এসেছে !

রওসনারা বলল, আসলে কোন মুখ নিয়ে তোমার সামনে আসবো আমি নিজেও বুঝতে পারছিলাম না । কিন্তু নিজের ছেলের অবস্থা দেখে আমি আর থাকতে পারি নি । আমি জানি তুমি আমার উপরে রেগে আছো । আমি তোমার জায়গাতে হলে হয়তো দেখাই করতাম না ।
-না আন্টি সমস্যা নেই । আপনি বলুন ।
-আমার দিকটা যদি একবার ভেবে দেখতে তাহলে হয়তো তোমাকে আমার এতোটা খারাপ মনে হত না ।

এই বলে রওসনারা কিছু সময় চুপ থাকলো । তারপর বলল, আমার খালার ছোট মেয়েটার গায়ের রং ছিল চাপা । আমরা একই সাথে বড় হয়েছি । আমাদের মাঝে ভাব ছিল অনেক । আমরা যখন আস্তে আস্তে বড় হতে থাকি আমাদের দুজনের বিয়ের বয়স হয়ে যায় । আমার বিয়ে হয়েও যায় আবিবের বাবার সাথে কিন্তু গায়ের রংয়ের কারণে ওর বিয়ে হতে দেরি হয় । একটা সময়ে বেচারি এতো হতাশ হয়ে পড়ে যে ছাদ থেকে ঝাপ দেয় মারা যায় ।

এই বলে রওসনারা কিছু সময় চুপ করে রইলো । নওরিন কী বলবে সেটাও ঠিক বুঝতে পারলো না । রওসনারা আবারও বলতে শুরু করলো, আমি কেবল ভেবেছিলাম যে যদি তোমাদের মেয়ে হয় তার সাথেও যদি এমন কিছু হয় ! আমি ….

আর কথা শেষ করতে পাললো না রওসনারা । তার চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে এল । নওরিন এবার উঠে গিয়ে তার পাশে বসলো । তার কাধে হাত রেখে বলল, আন্টি আমি বুঝতে পারছি । আমি আপনার কিংবা আবিরের উপরে কোন রাগ রাখি নি । তবে এখন যুগ বদলেছে আন্টি । হ্যা এমন চিন্তার মানুষ এখনও আছে তবে এখন সময় বদলেছে ।

রওসনারা বলল, আবির তোমাকে ছাড়া আর কাউকে বিয়ে করবে না । সে আমার বাধ্য ছেলে । জীবনে কখনো আমার কথার অবাধ্য হয় নি। যখন আমি তাকে বললাম যে তোমার সাথে আমি ওর বিয়ে দেবো না তখন সেটা মেনে নিল । প্রতিবাদ করলো না । তবে কদিন পরেই আমি বুঝতে পারি যে কতখানি ভেঙ্গে পড়েছে সে । আমি ভেবেছিলাম যে হয়তো সাময়িক ব্যাপার এটা । কদিন পরে ঠিক হয়ে যাবে । আবার যখন মেয়ে দেখা শুরু করলাম সেদিন জীবনে প্রথমবারের মত আবির আমার সাথে তপ্ত কন্ঠে কথা বলল । আবির সেদিন বলেছিলো, তুমি বলেছো নওরিনকে তোমার পছন্দ নয়, তার সাথে বিয়ে দেবে না । আমি মেনে নিয়েছি । প্রতিবাদ করি নি । কিন্তু এবার আমার একটা কথা শুনে রাখো, আমি ঐ মেয়ে ছাড়া আর কাউকে বিয়ে করবো না । তাকে ঘরের বউ করতে চাও না, ফাইন, তাহলে অন্য কোন মেয়েও আমার বউ হবে না । এবং এই কথার কোন নড়চড় হবে না ।

নওরিন এই ব্যাপারটা জানে । আবির ওকে বলেছিলো । রওসনারা বলল, আমি সেদিন এতো অবাক হয়েছিলাম যে কথাই বলতে পারি নি । তারপর আমি আর কোন ভাবেই ওকে বিয়েতে রাজি করাতে পারি নি । তবে কয়েক দিন থেকে আবিরকে খুব অস্থির দেখছি আমি । ঠিক মত খায় ঘুমায় না । মা তো বুঝতে পারি । পরে জানতে পারলাম যে তোমার বিয়ে ঠিক হয়েছে !

দীর্ঘ সময় কেউ কোন কথা বলল না । তারপর রওসনারা বলল, মাগো, আমার কারণে আমার ছেলেটাকে কষ্ট দিও না ।
-কিন্তু আপনার ছেলে তো আপনার কথার বাইরে আমাকে বিয়ে করবে না ।
-এই জন্যই তো আমি এসেছি । তুমি বিয়েটা ভেঙ্গে দাও । আমি কালই তোমাদের বাসায় যাবো বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে । একটা ভুল আমার হয়েছে । এটা যদি ঠিক না করতে পারি তাহলে আমার ছেলের জীবনটা কষ্টে কাটবে সারা জীবন । আর সেটা হবে আমার কারণে । মা হয়ে এটা আমি কিভাবে নেমে নেব বল মা!

নওরিনের খুব ইচ্ছে করলো যে রওসনারাকে আরেকটু মজা দেখায় । সে যেভাবে কষ্ট পেয়েছিলো সেভাবে কয়েকটা দিন অশান্তিতে রাখে কিন্তু তারপরই মনে হল দরকার নেই । হাজার হোক সে তো আবিরেরই মা । নওরিন বলল, আচ্ছা আন্টি । বিয়ের এখন পাকাপাকি কিছু হয় নি । আমি বাসায় কথা বলছি ।

নিজের ডেস্কে এসে কিছু সময় বসে রইলো নওরিন । আবিরকে ফোন করতে যাবে তখনই আবিরের ফোন এসে হাজির ।
-মা কী বলল?
-এই বুদ্ধি কার মাথা থেকে বের হল শুনি?
-বের হয়েছে । কাজ হয়েছে তো !
-হ্যা ।
-গুড । এখন বাসায় একটু কথা বার্তা বলবে । ঠিক আছে । আমি এই মাসের ভেতরেই বিয়ে করতে চাই ।
-এতো তাড়াহুড়া কেন শুনি জবাব ! এতো দিন অপেক্ষা করলেন!
-অপেক্ষা করেছি বলেই সহ্য হচ্ছে না আর !

নওরিন ফোন রেখে কিছু সময় কী যেন ভাবলো । আবির চালাকিটা ভালই করেছে । এবং তাতে কাজও হয়েছে বেশ । তারপর মনে মনে হাসলো একটু । একবার আগে বিয়ে হোক, শাশুড়িকে কিভাবে টাইট দিতে হয় সেটা নওরিন ঠিক করেই রেখেছে ।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 4.8 / 5. Vote count: 56

No votes so far! Be the first to rate this post.

About অপু তানভীর

আমি অতি ভাল একজন ছেলে।

View all posts by অপু তানভীর →